গল্প :-অবৈধ -----♥
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :-০৭ ~~~~
.
.
.
আয়াত: সে আর কেউ না।
তোমার নিজের "মা"
তনয়া "মা" কথাটি শুনে ঠিক বিশ্বাস করতে পারলো না। তাই আবার জিজ্ঞেস করলো,,,,
কার নাম বললা আয়াত???
আয়াত: জানি আমার কথাটা তুমি ঠিক হজম করতে পারছো না বা বিশ্বাস করতেও তোমার কষ্ট হবে। কিন্তু এটাই সত্যি যে আমাকে কিডনাপ তোমার মা ই করিয়েছে।
তনয়া: আয়াত!! তুমি কি বলছো এসব??? তোমার মাথা ঠিক আছে তো???
আয়াত: তনয়া আমি জানি আমার কথা তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না। হবার কথাও না। কারণ আমি জানি পৃথিবীতে তুমি তোমার মাকে সব থেকে বেশি ভরসা করো। কিন্তু আমি যেটাই বলছি সেটাই সত্যি। আমাদের অনাগত সন্তানকে ছুয়ে বলছি,,,,
(তনয়ার পেটে হাত রেখে) আমি সত্যিই বলছি।
তনয়া: দেখো আয়াত আমি জানি তুমি সত্যি বলছো। কিন্তু আমার মনে হয় তুমি হয়তো ভুল দেখেছো বা জেনেছো। দেখো অনেক সময় চোখ যেটা দেখা সেটা তো ভুলও হয়। মা তোমার সাথে এমনটা কেন করবে???
আয়াত: সে প্রশ্নতো আমার মনেও???
তনয়া: কিন্তু তুমি কি করে বুঝলা যে তোমাকে মা কিডনাপ করেছে???
আয়াত: দেখো তনয়া এর আগেও মানে তিন চারমাস আগে আমি একবার পালাতে সক্ষম হয়েছিলাম। পালিয়ে সোজা মেইন রোডে আসলাম। ভাবলাম কোনো গাড়িতে লিফট নিয়ে শহরে চলে আসবো। আমাকে দেখে একটা গাড়ি থামলো। গাড়ি থেকে তোমার মা বেরোলেন। আমি ভাবলাম হয়তো আল্লাহ আমার উপর রহমত করেছেন।
তিনি প্রথমে আমার সাথে খুব ভালো করে কথা বলছিলেন। গাড়িতে উঠে কিছুদুর আসার পর আমার মাথায় কেউ ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করলো। আমি আবার বেহুস হয়ে গেলাম।
জ্ঞার সিজেকে আবার বন্ধ ঘরে বাধা অবস্থায় আবিষ্কার করলাম। কিন্তু চোখ খুলতেই দেখি আন্টি আমার সামনে এতটা চেয়ারে বসে আছে। আর আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আমি আন্টির এমন রুপ দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম। আর তাকে জিজ্ঞেস করলাম,,,,,
আন্টি আপনি এমন কেন করছেন?? আর আমাকে কেন এখানে বেধে রেখেছেন???
আন্টি: আয়াত তুমি খুব বোকা। এখোনো বুঝতে পারো নি???
আয়াত: কিন্তু আন্টি আপনি আমার সাথে এমন কেন করছেন??? কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার???
আন্টি: তুমি আমার কোনো ক্ষতি করো নি। কিন্তু তোমার তনয়া করেছে।
আয়াত: মানে?? ও তো আপনার মেয়ে??
আন্টি: মানে টা না পরে একদিন জানলে।
আয়াত: প্লীজ আমাকে ছেড়ে দিন আন্টি। এখন আমার তনয়ার পাশে থাকা দরকার।
আন্টি: সেজন্যই তো তোমাকে কিডনাপ করলাম।
দেখো আয়াত তোমার সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই। কিন্তু তনয়াকে আমি ঘৃণা করি। প্রচন্ড ঘৃণা। তনয়াকে কষ্ট দেওয়ার জন্যই তোমাকে আটকে রেখেছি। কাজ শেষ হলে তোমাকে ছেড়ে দিবো। তার আগে চালাকি করলে বেচে ফিরতে পারবে না।
আয়াতের কথা শুনে তনয়া যেনো নিজেকে সামলাতে পারলো না। মাথাটা ঘুরছে। আয়াত তনয়ার হাত ধরে। নিজেকে প্লীজ সামলাও তনয়া।
এই জন্যই তোমাকে আমি বলতে চাই নি।
তনয়া: কিন্তু আয়াত মা কেন আমাকে ঘৃণা করে??? আর তুমি কেন পুলিশকে এ ব্যাপারে বললে না???
আয়াত: আমি চাই নি আমাদের পরিবারের মধ্যে পুলিশ আসুক।
তনয়া: কিন্তু মা এমনটা কেন করলো??? তনয়া খুব কান্না করতে ছিলো। তনয়া শত চেষ্টা করেও যেনো নিজেকে সামলাতে পারছে না।
আয়াত তনয়াকে ঠিক কি দিয়ে সান্ততনা দিবে তা ভেবে পাচ্ছে না।
তনয়া: আমি এখনই মাকে সবটা জিজ্ঞেস করবো?? কেন সে এসনটা করলো??
আয়াত: প্লীজ তনয়া এমনটা করো না। আর হাসপাতালে বসে নিজেদের ঘরের কথা বলা ঠিক না। হ্যা জিজ্ঞেস কইরো কিন্তু এখন না কিছুদিন পর।
তনয়া: কিন্তু আয়াত যতোক্ষন না জানতে পারছি আমি শান্তি পাবো না।
আয়াত: তোমাকে শান্তিু দেওয়ার উপায় আমার কাছে আছে।
তনয়া: কি উপায়??
আয়াত: আমার কাছে আসো,,,
তনয়া: আসলাম তো।
আয়াত তনয়াকে নিজের বুকের মাঝে চেপে ধরলো। খুব শক্ত করে।
আয়াত: এখন শান্তু খুজে পেয়েছো???
তনয়া: পৃথিবীর সব থেকে বেশি খুশি তো এখানেই লুকিয়ে থাকে। জানো একটা মেয়ের জন্য পৃথিবীতে সব থেকে শান্তির আর সুরক্ষিত জায়গা হলো তার স্বামীর বুক।
প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলো,,,,,,
আয়াত এখন একটু সুস্থ। কিন্তু শরীর খুব ক্লান্ত। পুরো পুরী সুস্থ হতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। এ কয়দিন আয়াতকে পুরো সিকিউরিটির মধ্যে রাখা হয়েছে।
এই কয়দিন তনয়া তার মায়ের সাথে একটা কথাও বলে নি। তাকে আয়াতের কাছে যেতে দেই নি। আর তাকে সব সময় চোখে চোখে রেখেছে। তনয়া সবসময় আয়াতের পাশে থেকেছে।
আজ আয়াতকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। তনয়া আয়াতকে বলেছে বাড়ি যাবার সাথে সাথে সব কিছু ফয়সালা করবে। আয়াতকে নিয়ো সবাই আয়াতদের বাড়ি গেলো। তনয়ার বাবা মাও ওদের সাথে গিয়েছে। বাড়ি গিয়ে বসার সাথে সাথে আয়াতদের বাড়ি পুলিশ আসলো।
আয়াতের বাবা: কি খবর অফিসার???
অফিসার: মি. আয়াত যে ছেলেটার কথা বলেছিলো তাকে আমরা খুজে পেয়েছি। আর সেই ছেলে সেই লোকের নাম বলেছে যে আয়াতকে এতোদিন আটকে রেখেছিলো।
আয়াতের মা: কে সেই পাপি শয়তান???
অফিসার: মিসেস তনয়ার মা।
পুলিশের মুখ থেকে এ কথা শুনার পর সবার পায়ের নিচের মাটি যেনো কেপে উঠলো।
আয়াতের বাবা: কি বলছেন এসব??? বেয়ান এসব কাজ কেন করবে??? আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে।
অফিসার: জ্বি না। আমরা সব কিছু জেনে শুনেই তদন্ত করেই এসেছি। আর আমরা সাদাফকে এরেস্ট করেছি। সেই আমাদের আমাদের সব বলেছে।
আয়াতের বাবা: কিন্তু???
তনয়া: বাবা ওনারা সত্যি কথা বলেছেন?? এসব কিছু আমার মা ই বলেছে।
আয়াতের বাবা: তনয়া তুমি এসব কি বলছো???
তার মানে তুমি সব জানতে তনয়া??
তনয়া: হ্যা বাবা জানতাম। আয়াত হাসপাতালে বসে আমাকে সব বলেছে। কিন্তু আয়াতের অনুরোধে আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু আর না।
এবার তনয়ার মা মুখ খুললেন,,,,,
তনয়ার মা: কি বলছিস এসব??? আমি কেন এমনটা করবো???
তনয়া: সে প্রশ্নতো আমার মনেও মা?? কেন???
তনয়ার মা: আয়াত মিথ্যা বলছে,,,,
তনয়া: একদম চুপ মা। তোমাকে মা বলতেও আমার লজ্জা লাগে। মা তো সে যে নিজের সন্তানের জন্য জীবন পর্যন্ত দিয়ে দেয়। কিন্তু তুমি মা নিজজের সন্তানের জীবন নষ্ট করতে চাইছো?? কেন?? মা?? বলো???
তনয়ার বাবা এতোক্ষণ চুপ ছিলো কিন্তু এখন আর চুপ থাকতে পারলো না। এবার বললেন------?????
.
.
♥-----"To be Continue"----♥

গল্প :-অবৈধ ~~~~♥
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :-০৬ ~~~~
.
.
পুলিশ: আচ্ছা আপনি কি ওই লোকগুলোকে চিনেন??
আয়াত: একজনকে চিনি।
পুলিশ: কে???
আয়াত: তনয়াকে কিছু ছেলে বিরক্ত করতো বলে
যেসব ছেলেদের আমি পুলিশে দিয়েছিলাম তাদের লিডার।
তনয়া:কে সাদাফ???
আয়াত: হুম। কিন্তু ও নিজেও এসব করতো না। ওদেরকে কেউ ফেনে এসব করতে বলতো।
পুলিশ: আপনি কি জানেন সে কে??
আয়াত: কিছুটা চুপ থেকে না।
পুলিশ আয়াতের কাছ থেকে আরো কিছু জিজ্ঞেস করে চলে গেলো।
রাফি: দেখুন আয়াতের এখন বিশ্রাম করা দরকার। আপনারা যেকোনো একজন এখানে থাকুন। বাকি সবাই বাইরে চলে যান।
অনু: তনয়া থাকুক।
তনয়ার দিকে তাকিয়ে দুষ্টুমি একটা হাসি দিয়ে অনু চলে গেলো।
সবাই চলে যাওয়ার পর তনয়া আয়াতের পাশে থেকে উঠে যেতে চাইলে আয়াত তনয়ার হাত ধরে ফেলে।
এতোদিন পর দুইজনের দেখা হলো। মনের ভিতর জমে আছে হাজারো কথা। কিন্তু কারো মুখে কোনো কথা নেই। কথাগুলো যেনো কোথাও হারিয়ে গেছে??? এতোদিনের দুরুত্ব দুইজনের মনের মাঝে দুরুত্ব তৈরী করতে না পারলেও দুইজনের কথার মাঝে একটা জিনিস কিন্তু দাড় করিয়ে দিয়েছে। দাড় করিয়ে দিয়েছে হাজারো দ্বিধা। লজ্জা,,ভয় আর ভালোবাসার শিহরন মিলে একাকার।
আয়াত: তনয়া,,,,একটা কথা বলবো???
তনয়া: হ্যা বলো।
আয়াত: Can i touch your womb??
তনয়া মৃদু হাসি দিয়ে আয়াতের হাতটা ধরে নিজের পেটের উপর রাখলো।
আয়াত: জানো তনয়া আমি ভেবেছিলাম লোকের কথায় তুমি হয়তো ওকে পৃথিবীতে আসতে দিবে না। তখন আমি নিজেও চাইতাম যে তুমি আমাকে ভুলে সামনের দিকে আগাও। কারণ আমি যে বেচে ফিরবো তার আশা ছিলো না আমার।
আর তাছাড়া যখন একটা মেয়ে বিয়ের আগে প্রেগন্যান্ট হয় তখন আমাদের সমাজ তার কি অবস্থা করে তা ভেবেই কষ্ট হচ্ছিলো। আর আমাদের বিয়ের কথাতো কেউ জানতই না।
আই এ্যাম সরি,,,,
তনয়া :আয়াতের হাতটা ধরে,, প্লীজ আয়াত এভাবে বলো না। তুমি কি করে ভাবলা আমি আমার আয়াতের ভালোবাসাটাকে মেরে ফেলবো??? আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো তুমি কখনো আমাকে ধোকা দিতে পারো না। আজ সারা পৃথিবীর লোক ওকে অবৈধ ভাবলেও আমি জানি তুমি জানো ও আমাদের ভালোবাসার পবিএ চিহু।
সরি বলে তুমি আমাকে আর দোষী করো না। এই সাত মাস তুমি যে কষ্ট পেয়েছে তার তুলনায় আমার কষ্ট নগন্য।
আয়াত: হ্যা তুমি ঠিক বলেছো ও আমাদের ভালোবাসার পবিএ চিহৃ। কষ্ট আমরা দুজনেই সমান পেয়েছি কারণ আমাদের শরীর দুটো হলেও
আত্নাতো একটাই। তাই না বিউটিফুল??
তনয়া: (চোখ বন্ধ করে) কতোদিন পর তোমার মুখ থেকে এই ডাকটা শুনলাম।
আয়াত: জানো তনয়া খুব ইচ্ছে ছিলো আমাদের বেবি তোমার ভিতরে কিভাবে বেড়ে উঠে তা তোমার পাশে থেকে অনুভব করবো। অনুভব করবো ওর একটু একটু করে বেড়ে উঠা।
কিন্তু নিয়তির সাথে কে বা পেরে উঠে বলো??? যে সময় আমার তোমার কাছে থাকা সবচেয়ে বেশি দরকার ছিলো সেই সময়টাই........
তনয়া: যা হয়েছে তা ভুলে যাও।
আয়াত আবার তনয়ার পেটে হাত রেখে বলল,,,
কতোদিন টরে আসবে প্রিন্সেস???
তনয়া: এক মাস নেই।
আয়াত: ওয়েটিং ফর ইউ বেবি।
তনয়া: আয়াত???
আয়াত: হুম।
তনয়া: একটা কথা বলবো?? সঠিক উওর দিবা।
আয়াত: তোমার সাথে কখনো মিথ্যা বলেছি???
তনয়া: আয়াত কে তোমাকে এতোদিন আটকে রেখেছিলো?? এমন কে যে তোমাকে এতোটা ঘৃণা করে??? যে তোমাকে সাত মাস এভাবে আটকে রেখেছে??
আয়াত: (কিছুটা তুতলিয়ে) আমি তো বললাম যে জানি না।
তনয়া: আয়াত তোমার মুখ আমার থেকে কথা লুকালেও তোমার চোখদুটো তা পারবে না।
আয়াত চুপ করে আছে,,,,,
তনয়া আয়াতের হাতটা নিজের পেটের উপর চেপে ধরে বলল,,,,,
এখন বলো তুমি তাদের কে চিনো না???
আয়াত: হাতটা সরিয়ে নিয়ে,,,
তাদের উদ্দেশ্য আমাকে না তোমাকে কষ্ট দেওয়া ছিলো। আর তারা তাতে সফল হয়েছে।
তনয়া: কে?? কলেজের ছেলেগুলো???
আয়াত: নাহ বাইরের কেউ নয়। আমাদের ঘরেরও কেউ নয়। তোমার খুব কাছের সে।
তনয়া :কে সে???
আয়াত: --------?????
.
.
♥------To be Continue-----♥

গল্প:- অবৈধ~~~~~
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :-০৫ ~~~~
.

.
তনয়া এখন আট মাসের গর্ভবতী। এই আট মাসে আয়াত মোট দুইবার ফোন করেছিলো ওর মায়ের কাছে। কিন্তু আয়াতের মা আয়াতের সাথে তেমন ভালো করে কথা বলে নি।
সকাল ১০টা.......
তনয়া ঘরে একা। কারণ অনু কলেজে।
আয়াতের মা কিছু কেনা কাটা করতে গেছে আর আয়াতের বাবা ব্যবসায়ের কাজে শহরের বাইরে গেছে।
তখন তনয়ার ফোনে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো।
তনয়া: আসসালামু আলাইকুম কে??
---তনয়া আমি
কন্ঠটা শুনে তনয়া যেনো শতব্ধ হয়ে গেলো। মুখ থেকে যেনো কথা বের হচ্ছে না। তবুও খুব কষ্ট করে বলল,,,,,
তনয়া: ফোন করতে এতোটা সময় নিলে আয়াত?
আয়াত: তনয়া আমার সাথে একটু দেখা করবে প্লীজ???
তনয়া: তুমি বাড়ি এসো। আমি থাকতে কেউ তোমাকে কিছু বলবে না।
আয়াত: সেটা পারছি না তনয়া। তুমি প্লীজ এই ঠিকানায় চলে আসো।
তনয়া: ঠিক আছে।
আট মাসের প্রেগন্যান্ট একটা মেয়ের হাটতে চলতে ঠিক কতটা কষ্ট হয় তা শুধু সেই জানে।
তবুও তনয়া কাউকে কিছু না বলে আয়াতের দেয়া ঠিকানায় চলে গেলো।
তনয়া!!! বলে কেউ পিছন থেকে ডাক দিলো।
তনয়া পিছনে তাকিয়ে দেখে আয়াত দাড়িয়ে আছে। কিন্তু একি----???
------তনয়া আয়াতের দিকে তাকাতেই ওর হুদয়টা যেনো কেপে উঠে। চোখ দুটো দিয়ে নিজের অজান্তেই টপ টপ করে জল পরতে থাকে।
সেই হার্টথ্রব আয়াত। যাকে প্রথম দেখলে যেকোনো মেয়ে প্রেমে পরে যেতো। দেখতে প্রচন্ড সুন্দর সে আগের মতো সুন্দর নেই। আয়াতের ফর্সা মুখটা আগের থেকে অনেকটা কালো হয়ে গেছে। চোখ দুটো ভিতরে ডুকে গেছে। চোখের নিচে অনেক কালি জমে গেছে। দেখে মনে হয় প্রচন্ড দূর্বল।
তনয়া আয়াতের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আয়াত তনয়ার কাছে আসলো। তনয়ার দিকে তাকিয়ে বললর,,,,
আয়াত: ক্যান আই হাগ ইউ???
তনয়া কিছু বলতে পারছে না। চুপ করে শুধু কান্না করছে।
আয়াত তনয়াকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,,
আই ওলয়েজ লাভ ইউ এভার এন্ড ফেরএবার।
ধীরে ধীরে আয়াত তার শরীরের সব ভার যেনো তনয়ার উপর ছেড়ে দিচ্ছে। কিন্তু তনয়া ওকে সামলাতে পারে না। আয়াতকে কোনো মতে নিচে বসায়। আয়াতের দিকে তাকিয়ে দেখে আয়াতের মুখ নীল বর্ন ধারণ করেছে। মুখ থেকে ফেনা বের হচ্ছে মনে হচ্ছে কোনো বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছে আয়াত।
তনয়া আয়াত বলে একটা চিতকার দিলো। আশে পাশের লোকজনের সাহ্যয্যে আয়াতকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। হাসপাতালে আয়াতের ডাক্তার বন্ধু ছিলো। যার ফলে চিকিৎসা করতে বেশি সময় নে নি।
তনয়া বাড়িতে ফোন করে সবাইকে সবকিছু খুলে বলে। তারাও হাসপাতালে চলে আসলো। কিছুক্ষণপর ডাক্তাররা
অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হলো।
তনয়া: কি খবর আয়াতের???
রাফি(আয়াতের বন্ধু): ভাবি মনে হচ্ছে আল্লাহ নিজে নিচে নেমে এসে আয়াতকে বাচিয়েছে।
তনয়া: কি হয়েছিলো ওর???
রাফি: আমি পুলিশকে ফোন দিয়েছি।
তনয়া: পুলিশ কেন???
রাফি: ভাবি কেউ ওকে বিষ দিয়েছিলো। আর সব থেকে হতভম্বের বিষয় কি জানেন??? আয়াতের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে আজব ধরনের রোগ ছড়িয়েছিলো। এটা সাধারণত তখন হয় যখন একটা মানুষ দীর্ঘতিন যাবত সূর্যের রশ্নি ও বাইরের হাওয়া বাতাস থেকে দুরে থাকে।
আয়াতকে দেখে মনে হয় অনেকদিন যাবত ওকে কেউ কোনো বদ্ধ রুমে আটকে রাখেছিলো। ওর শরীরের ভিটামিন ডি এর অভাব। শরীরে
আয়রন
এবং সাথে সাথে ভিটামিন সি এরও অনেক ঘাটতি হয়েছে।
তনয়া: সাথে রাফির কথা শুনে হতবস্ব হয়ে গেলো।
তনয়া: কি বলছেন এসব???
রাফি: আমি যা দেখেছি তাই বলছি। বাট চিন্তা করবেন না কয়েকদিন রেস্ট নিলে,, খোলা পরিবেসে থাকলো,,আর ঠিকমতো খেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর বাকিটা আপনাকে না দেখালে বুঝতে পাবেন না। কিছুক্ষণের মধ্যে ওর জ্ঞান ফিরবে।
ডাক্তারের কথা শুনে বাড়ির সবাই হতোভম্ব হয়ে গেলো। সবার মনে হাজারো প্রশ্ন?? কিন্তু যে উওর দিবে সে এখনো অজ্ঞান।
কিছুক্ষণপর ডাক্তার এসে বলল,,,,ভাবি আয়াতের জ্ঞান ফিরেছে। আর শুধু তনয়ার সাথে দেখা করতে চায়।
তনয়া আয়াতের কাছে যায়,,,,
রাফি: ভাবি বললাম না আপনাকে না দেখালে বুঝাতে পারবো না। এই বলে আয়াতের শার্টটা খুলে দিলো।
আয়াতের শরীরের দিকে তাকিয়ে তনয়া ডুকরে কেদে উঠে। কারণ আয়াতের শরীরে অসংখ্য মারের দাগ। কিছু দাগ কালো হয়ে গেছে। কিছু নীল বর্ণ ধারণ করেছে।
তনয়া কাপা কাপা হাতে আয়াতের শরীরে হাত দিতে যায় তখন আয়াত তনয়ার হাতটা ধরে বলে
আমি ঠিক আছি তনয়া।
তনঢা আয়াতকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
আয়াত: এই পাগলি আমি ঠিক আছি। প্লীজ কান্না করো না। আমি বেচে আছি আর তোমার কাছেই আছি। জানো তনয়া-------
আয়াত কিছু বলতে যাবে এর মধ্যেই পুলিশ ওর জবান বন্দি নওয়ার জন্য আয়াতের কাছে এলো।
আয়াত শুধু তনয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ কাউকে দেখে আয়াতের চোখ যেনো ভয়ে নেমে এলো।
আয়াতের চোখের ভাষা তনয়া হয়তো বুঝতে পেরেছে। তাই আয়াতের পাশে গিয়ে বসে আয়াতের হাতে হাত রাখলো। তারপর চোখ দিয়ে আয়াতকে ভরশা দিলো।
পুলিশ: বলুন মি. আয়াত,, এতোদিন কোথায় ছিলেন আপনি?? আর আপনাকে বিষ দিয়েছিলো কারা???
আয়াত: প্রায় সাত মাস আগে আমি তনয়ার সাথে দেখা করতে তনয়াদের বাসায় যাচ্ছিলাম। পথে একটা মেয়ে আমার কাছে লিফট চায়। মেয়েটা বোরকা পরা ছিলো আর মুখ বাধা ছিলো। আমি মেয়েটিকে লিফট দিলাম। কিন্তু কিছুদুর যেতেই মেয়েটি আমার মুখে কি যেনো স্প্রে করলো। তারপর আর কিছু মনে নেই।
ডখন জ্ঞান ফিরলো তখন নিজেকে একটা রুমে চেয়ারের সাথে বাধা পেলাম। তারপর কিছু লোক আসলো।
তাদের কাছে জানতে চাইলাম আমাকে কেন কিডনাপ করা হয়েছে??? কিন্তু তারা কোনো জবাব দেই নি।
তাদের মধ্যে থেকে একজন বলল,,,,,
এখন থেকে আমরা যা বলবো তাই করবি না করলে তোর মা,,বাবা,,বোন আর তোর প্রেমিকা সবাইকে মেরে ফেলবো।
ওদের কাছে আমার ফ্যামিলির পুরো ডিটেইলস ছিলো। তাই বাধ্য হয়ে তাদের কথা মতো তনয়াকে ফোন করে যে আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। আর তাকে নিয়ে শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আরো অনেককিছু।
এরপর কয়েকবার পালানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পারি নি। ওরা আমাকে প্রায় মারতো। আর ওদের কথা মতো বাড়িতে দুবার কথা বলেছিলাম।
সাত মাস ধরে ওরা আমাকে আমাকে একটা রুমে
আটকে রেখেছিলো। এই সাতমাস ঠিক কিভাবে কেটেছে তা শুধু আমি আর আল্লাহই জানে।
তারপর গত কালকে আমি পালাতে সক্ষম হই। কিন্তু ওরা আমার পিছু নেয়। বাড়ি আসি কিন্তু বাড়ির চারপাসে ঐ লোকগুলোকে দেখলাম। তাই তনয়াকে ফোন করে দেখা করতে বললাম।
কিন্তু কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আর কি। ওরা আমাকে ধরে ফেললো। কিন্তু এবার ওরা আমাকে
একেবারে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। তাই আমার শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন দেয়।
কিছুটা সময় আমি ওদের সামনে মরার মতো পরে থাকি। তারপর ওরা আমাকে মৃত ভেবে চলে যায়।
তারপর তনয়ার সাথে দেখা হয়। আর আল্লাহর অশেস রহমতে বেচে গেলাম।
আয়াতের কথা শুনে সবাই বিষন হতভম্ব হয়ে গেলো। কারণ একটা মানুষকে সাত মাস আটকে কেউ কিভাবে রাখতে পারে????
আয়াতের বাবা,,মা,,অনু,,তনয়া,, ওর বাবা মা সবার চোখে জল। তাদের চোখের জলে তাদের মন থেকে মুছে গেলো আয়াতের উপর জমে থাকা সকল রাগ,,ঘৃণা আর অভিমান।
তনয়া : আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম না আমার আয়াত এমন করতে পারে না। ওর নিশ্চয় কোনো বিপদ হয়েছে। কিন্তু তোমরা কেউ আমার কথা শুনলে না।
আয়াতের বাবা: মাফ করে দে আয়াত। সেদিন তনয়ার কথা মেনে তোকে আমাদের খোজা উচিত ছিলো। তাহলে তোকে এতোটা কষ্ট পেতে হতো না।
আয়াত: নাহ বাবা এতে তোমাদের কোনো দোষ নেই। আমি তোমাদের যেভাবে বলেছি তাতে শুধু তোমরা কেন সবাই আমার কথা বিশ্বাস করতো।
পুলিশ: আচ্ছা আপনি ওই লোকগুলোকে চিনেন???
আয়াত: একজনকে চিনি।
পুলিশ: কে-----?????
.
.
♥-----"To be Continue"-----♥

গল্প :-অবৈধ~~~~~
. লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :-০৪ ~~~~
.
.
.
তনয়া: কি সর্বনাশ হয়েছে অনু???
অনু: আরে পাশের পারা প্রতিবেশিরা এসে নানা রকম কথা বলছে। বুঝতে পারছি না তারা এ খবর কোথা থেকে পেলো???
তনয়া: (রহস্যময় হাসি দিয়ে) এই তোর সর্বনাশ হয়েছে?? এখন কয়েকদিন এসব শুনতে হবে। এমন পরিস্থিতি সামলাতে হবে।
জানিস অনু ভালো কথা ভালো কাজ লোকসমাজে ছড়াতে দেরী লাগে না। কিন্তু কারো দোষ বা ত্রুটির কথা বাতাসের আগে ছড়ায়। চল দেখি এরা আবার কি বলে???
অনু আর তনয়া সামনের রুমে গিয়ে দেখে কয়েকজন মহিলা সেখানে আসছে আর তাদের মুখ থেকে খারাপ বাক্য শোনা যাচ্ছে,,,,
কথাগগুলো এরকম,,,,,
--ছিঃ ছিঃ ভাবি আপনাদের কাছ থেকে এমনটা আশা করি নি।
আরেকজন বলল,,,,,,
--ঠিক বলেছেন ভাবি বিয়ে হয় নি অথচ মা হচ্ছে আর এমন মেয়েকে আবার ছেলের বউ হিসেবে ঘরে তোলা। এমন মেয়ের মুখ দেখাও উচিত না।
আয়াতের মা: প্রথমতো ভুলটা তনয়ার না। আমার ছেলের। আর দ্বিতীয়তো ওদের বিয়ে অনেক আগেই হয়েছে তার প্রমানও আছে। আর প্রমান না থাকলে আমরা তনয়াকে মেনে নিতাম। কারণ আমরা তনয়াকে বিশ্বাস করি। আর শুনুন ভাবি আপনি কোন মুখে বলছেন এমন মেয়ের মুখ দেখাও পাপ?? আরে আপনার ছেলেতো গত বছর এর থেকেও বড় কান্ড করলো আর আপনারা মেয়েটাকে মেনে নেন নি।
--তো ছেলে মানুষ একটু আকটু দোষ করতেই পারে।
আয়াতের মা: আপনার ছেলে দোষ করলে সেটা দোষ না আর মেয়েটা কিছু না করেই সব দোষ তার ঘাড়ে। এসব নিচু মানুষিকতা বদলান। আর আপনারা শুনুন এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। আপনাদের নাক না গলালেও চলবে।
--তাহলে পরিবার সমাজের বাইরে গিয়ে বসান। আর এই মেয়েটি কোন পরিচয়ে আপনাদের বাড়ি থাকবে???
আয়াতের বাবা: কেন আয়াতের স্ত্রী হিসেবে। আর তাতে যদি আপনার সমস্যা হয় তাহলে তনয়া আমাদের মেয়ের পরিচয়ে থাকবে। আজ থেকে আমার দুই মেয়ে তনয়া আর অনু। আপনাদের আর কিছু বলার আছে???
--কিন্তু???
অায়াকের বাবা: (কিছুটা শান্ত গলায়) দেখুন তনয়ার সাথে যেটা হয়েছে সেটা যদি আপনাদের কারো মেয়ের সাথে হতো তাহলে কি আপনারা এমনটা বলতেন?? হ্যা তনয়া আর ভুল করেছে কিন্তু পাপ না। আমি আয়াতের বাবা। আর আমি যদি তনয়াকে মেনে নিতে পারি তাহলে আপনাদের সমস্যা কোথায়??
তারপর আর কেউ কিছু বললো না। সবাই চুপচাপ চলে গেলো।
প্রায় এক মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনো আয়াতের কোনো খবর নাই। ফোনও দেয় না। আয়াতের বাবা মা অার অনু সবাই তনয়ার খুব ভালো খেয়াল রাখছে। আয়াতের বাবা তনয়াকে বলে দিয়েছে পড়া লেখা যেনো ঠিক ভাবে করে।
তনয়া ভাবে এরকম একটা পরিবার পেলে যে কেউই খুব ভাগ্যবতী হবে। কিন্তু আয়াত---???
মনের ভিতর হাজারো প্রশ্ন এসে ভির করছে। আয়াতের দিকে তাকিয়ে নিজের পেটে হাত দেয় তনয়া। ছোট্র একটা ব্রুন কিভাবে দিনে দিনে বড় হচ্ছে আমার মাঝে। পেটে হাত দিয়ে নিজের অজান্তেই তনয়ার মুখ থেকে বেরিয়ে গেলো মিস ইউ আয়াত। আজ বাইরে খুব ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। তনঢা জানালার সামনে দাড়িয়ে আছে। বাতাসের ঝাপটায় বৃষ্টির কনাগুলো ওর গাল ছুয়ে যাচ্ছে।
তনয়া ভাবছে এরকমই এক রাতে আয়াত আমার কাছে এসেছিলো। অনেকটা কাছে। এতোটা কাছে যে ওর শ্বাস প্রশ্বাসের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছিলাম। মিশে গিয়েছিলো আমার নিঃশ্বাসে।
ওদের বিয়ে বয়স তখন চার মাসের বেশি। সেদিন
তনয়ার বাবা মা ওর নানুকে দেখতে শহরের বাইরে যায়। কথা ছিলো সন্ধার মধ্যে পৌছে যাবে। তাই তনয়া সালেহা(ওদের বাসায় কাজ করে) তাকেও বাসায় থাকতে বললো না।
সালেহা সন্ধার আগে চলে যায়। তনয়া ভাছে ওর বাবা মা সন্ধার পরই হয়তো চলে আসবে। রাত প্রায় আটটার দিকে তনয়ার বাবা ফোন করে বলল
ঝড়ের কারণে শহরে ডুকার রাস্তা বন্ধ কালকের আগে বাড়ি যেতে পারবে না। তনয়া যেনো পাশের বাসার আন্টিকে ঘরে এনে রাখে।
কিন্তু তনয়া জানে তাতের বাসার সবাই বিকেলে কোথায় যানি গেছে। কিন্তু ওর বাবা যাতে চিন্কা না করে তাই বলল ঠিক আছে টেনশন করো না। এদিকে ঝড়ের মাএা বাড়ছে। তনয়া ঘড় অনেক ভয় পায়। কিছু না বুঝে অনুকে ফোন দিলো।
তনয়া: হ্যালো অনু তুই কোথায়??
অনু: আর বলিস না রে এক কাজিনের বাসায় আসছিলাম। যে ঝড় তাতে কালকের আগে যেতে পারবো বলে মনে হয় না।
কেন কিছু বলবি???
তনয়া: না এমনিতেই,,রাখি।
এদিকে ভয়ে তনয়ার তম বন্ধ হয়ে আসছিলো। তাই কিছু বুঝতে না পেরে আয়াতকে ফোন দিলো
তনয়া: হ্যা হ্যালো আয়াত,,তুমি কোথায়???
আয়াত: অফিস থেকে বাড়ি যাচ্ছি। কিন্তু তনয়া তুমি ঠিক আছো তো এভাবে কথা বলছো কেনো?
তনয়া: আয়াত আমি ঘরে একা আর বাইরে খুব ঝর হচ্ছে।
আয়াত: কেন আংকেল আন্টি আসে নি??
তনয়া: বন্যার কারণে রাস্তা বন্ধ। কালকের আগে রাস্কা ক্লিয়ার হবে না। আয়াত প্লীজ তুমি একটু আসবে???
আয়াত: দেখোেভয় পেয়ো না আমি আসছি।
তনয়া ফোনটা রেখে চুপচাপ বসে রইলো। ঝরের কারণে বিদ্যুৎ ও নেই। পুরো ঘর অন্ধকার সুধু একটা চার্জার লাইট জ্বালিয়ে নিজের রুমে বসে আছে। কিছুক্ষণপর কেউ তরজায় নক করলো।
ভয়ে তনয়ার বুক ধুকপুক করছে। ভয়ে ভয়ে দরজার সামনে গিয়ে বলল,,,,,
তনয়া: কে???
আয়াত: তনয়া আমি,,
আয়াতেররকথা শুনে তনয়ার যেনো তেহে প্রান ফিরে এলো। তাড়াতাড়ি দরজাটা খুলে আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো কান্না করতে লাগলো।
আয়াত: এই বোকা মেয়ে কাদছো কেন?? দেখো আমি এসে গেছি। এখন আর কোনো ভয় নেই। চুপ করো। আর এখন ভিতরে আসো।
তনয়া: হুম চলো।
তনয়া ভিতরে গিয়ে দেখে আয়াত পুরো ভিজে গেছে।
তনয়া: এ কি অবস্থা তোমার দাগাও আমি টাওয়াল নিয়ে আসছি।
তনয়া আয়াতকে টাওয়াল দিয়ে বলল,,,,,
তনয়া: নাও তাড়াতাড়ি গা মুছে কাপড় পাল্টে নাও। নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে।
আয়াত: কিন্তু ম্যাডাম আমি তো জানতাম না যে আজকে আপনাদের বাসায় আসবো তাই এক্সটা কাপড় নিয়ে আসি নি।
তনয়া: দাড়াও ব্যবস্থা করছি।
তনয়া ওর বাবার একটা ড্রেস আয়াতকে দিয়ে বলল,,,,,আপাতত এটা ম্যানেজ করে নাও।
আয়াত ড্রেসটা নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
তনয়া: কি হলো দাড়িয়ে আছো যে চেন্জ করে নাও।
আয়াত: তুমি তাকিয়ে থাকলে কিভাবে করি???
নাকি দেখার ইচ্ছা আছে???
তনয়া লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে ঘুরে রান্না ঘরে চলে গেলো।
আয়াত ড্রেসটা পরে বলল,,,,,,
আয়াত: তনয়া শশুর আব্বাকে ডায়েটিং করতে বলবা???
তনয়া: কেন???
আয়াত: পান্জাবীটার মধ্যে আরো দুটো আয়াত ফিট হতে পারবে।
তনয়া রাগি চোখে আয়াতের দিকে তাকালো।
আয়াত: ওকে সরি। কিন্তু ম্যাডাম খুব খিদে পেয়েছে???
তনয়া: এইতো খাবার রেডি। চলো খাবে।
তারপর দুজন মিলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে গল্প করতে লাগলো। এদিকে বাইরে ঝড়ের মাএা আরো বেড়েছে। খুব জোড়ে জোড়ে বজ্রপাত হচ্ছে। তনয়া এরকম শব্দ ভিশন ভয় পায়। আয়াতকে সেটা বুঝতে দিচ্ছে না। কিন্তু চোখে মুখে সে ভয় স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
তনয়া: আয়াত তুমি গেস্ট রুমে সুয়ে পরো। আমি আমার রুমে আছি কিছু লাগলে বলো।
আয়াত: ওকে। কি আর করা। নিজের বিয়ে করা বউ কাছে থাকতেও বৃষ্টির মতো এতো রোমান্টিক দিনেও কাছে পাবো না। কপাল খারাপ থাকলে কি আর করা????
তনয়া: জাস্ট সেটাপ। চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পরো।
তারপর আয়াত রুমে গিয়ে শুয়ে পরলো। কিন্তু মনে পরলো যে ওর ফোনটা খাবার টেবিলে রেখে আসছে। তাই উঠে খাবার টেবিলে যাওয়ার সময়
তনয়ার রুমে চোখ যায়। দেখে এখনো চার্জার জ্বলছে। তাই রুসে গিয়ে দেখলো তনয়া বিছানায় গুটিসুটি মেরে বসে আছে। চোখ দুটু বন্ধ করে কানে হাতত দিয়ে রেখেছে। বজ্রপাতের শব্দে বাবরবার কেপে কেপে উঠছে। তনয়ার এ অবস্থা দেখে আয়াত নিজের হাসি চাপিয়ে রাখতে পারলো না।
তনয়া চোখ খুলে তুমি এখানে কেন?? আর হাসছো কেন???
আয়াত: একটা কিউট বিউটিফুলকে যেখছি। যে কথায় কথায় মানুষকে বলে ঠ্যাং ভেঙ্গে দিবে,,নাক ফাটিয়ে দিবে,,পিটাবো কিন্তু দেখো সে কেমন সামান্য ঝরকে ভয় পায়।
তনয়া: মজা নিচ্ছো???
আয়াত তনয়ার পাশে বসসে তো কি করবো??
এর মধ্যে খুব জোড়ে একটা বাজ পরলো। তনয়া ভয়ে চিতকার দিয়ে আয়াতকে জগিয়ে ধরলো। আয়াতও যেনো আজ তনয়াকে নিজের থেকে দুর করাতে পারছে না। খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো তনয়াকে। চুম্বুকের দুই মেরু যেমন একে অপরকে আর্কষণ করে ঠিক তেমনি আজ ওরা একে অপরকে অার্কষণ করছে।
আয়াত তনয়ার কপালে একটা ভালোবাসার চিহু একে দেয়। তনয়া কিছু বলতে চেয়েও যেন বলতে পারছে না। এর মধ্যে আয়াতের গরম নিঃশ্বাস তনয়ার ঠোট দুটোকে গ্রাস করে ফেলেছে। দুজনেই বুঝতে টারছে যা হচ্ছে তা ঠিক না কিন্তু
তবুও কেউ একে অপরকেেআটকাতে পারছে না।
ভালোবাসার এক গভীরে হারিয়ে যায় দুজনে।
সকালবেলা তনয়া নিজেকে আয়াতের বুকে আব্ষিকার করলো। আয়াতের দৃষ্টিতে কতোক্ষণ বেঘোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো। কিন্তু কাল রাততের কথা মনে পড়তেই তনয়া শিউরেেউঠে।
তনয়া খুব কান্না করতে ছিলো। আয়াতের নিজেরও খুব খারাপ লাগতে ছিলো। কারণ আয়াতই তনয়াকে বলেছিলো পারিবারিকভাবে বিয়ের আগে এমন কিছু হবে না। ভরশা রাখতে পাররো। আর আজ ওই কিনা তনয়ার ভরসাটা ভেঙ্গে ফেললো।
আয়াত: প্লীজ আমাকে মাফ করে দেও তনয়া। আমি জানি না কাল রাততে কেন নিজেকে সামমলাতে পারি নি?? প্লীজ মাফ করে দাও।
তনয়া কাদদছে আর ভাবছে এতে তো আয়াতের একার দোষ নয়। আমিও তো ওকে বাধা দিতে পারতাম। কেন করলাম না আমি এইটা????
আয়াত: প্লীজ তনয়া কান্না করো না। আমারর নিজেকে খুব অপরাধি মনে হচ্ছে।
তনয়া আয়াতের হাতদুটো ধরে বলল,,,,,
তনয়া: ভুল তোমার একার না আয়াত। আমারও তোমাকে বাধা দেওয়ার উচিত ছিলো। তোমার নিজজেকে অপরাধি ভাবার কোনো কারণ নেই। কিন্তু আজ আমরা একে অপরকে কথা দেই পারিবারিকভাবে বিয়ে না হহওয়া পর্যন্ত আমরা এমন ভুল দ্বিতীয়বার আর করবো না।
আয়াত: হুম।
তারপর এ ভুল তারা আর করে নি। কিন্তু একটা কথা আছে না ভুল সবসময় ভুলই হয়। সেটা একবার হোক আর বহুবার। তার মাসুলতো গুনতেই হবে।
কিছুদিনপর তনয়া নিজেরর মাঝে পরিবর্তন দেখতে পায়। তারপরের ঘটনাতো সবাই জানেন।
এক রাততের ভালোবাসার ফল বয়ে বেড়াতে হবে সারাজীবন।
তনয়া ভাবছে সে রাতে যদি ঝড়টা না হতো তাহলে হয়তো আমার জীবনেও আজ এমন ঝড় আসতো না। এ এমন ঝড় যা বয়ে বেড়াতে হবে সারাজীবন।
বুক ভরা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়া আর কিছুই দিবে না এ ঝড়।
এরকম ভাবেই দেখতে দেখতে কেটে যায় ছয় মাস।
ছয় মাস পর-------?????
.
.
♥-----To be Continue-----♥

গল্প :-অবৈধ ~~~ ♥
. লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :- ০৩~~~~
.
.
তনয়া:--হ্যালো আয়াত!
আয়াত: হ্যা বলো তনয়া,,
তনয়া: তুমি কোথায় আয়াত?? বাড়ির সবাই তোমাকে নিয়ে কতটা টেনশনে আছে। প্লীজ আয়াত চলে আসো???
আয়াত: তুমি কি কিছু বুঝো না নাকি?? আমি তোমার জন্য বাড়ি আসছি না। আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি আর তাকে নিয়েই থাকতে চাই।
তনয়া: আয়াত একদম মিথ্যা বলবা না।
আয়াত: তোমার সাথে আমি মিথ্যা কোন বলবো?? আজব!!
তনয়া: কারণ আমি আমার আয়াতকে চিনি।
আয়াত: তাহলে তুমি ভুল চিনেছো। আমি বাবা মাকে বলে দিয়েছি যে তোমাকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না। আর আমি শহড় ছেড়ে চলে যাচ্ছি। কবে ফিরবো তা জানি না। রাখছি,,,,,
তনয়া: আয়াত শোনো,,,
আয়াত: শোনো তনয়া,,,,নিজের খেয়াল রেখো,,ভালো থেকো।
এই বলে আয়াত ফোনটা কেটে দিলো।
অপলক দৃষ্টিতে তনয়া ফোনটার দিকে তাকিয়ে আছে। আর ওর কানে শুধু একটা কথাই বাজছে ভালো থেকো। নিজের কষ্টটা আটকাতে না পেরে
জোড়ে একটা চিৎকার দিলো। তনয়ার চিৎকার শুনে ওর বাবা মা তাড়াতাড়ি ওর কাছে এলো।
মা: কি হয়েছে মা?? কাদছিস কেন?? বল মা
তনয়া: মা সব শেষ হয়ে গেছে। ও আমায় ভালো থাকতে বলেছে। কিভাবে ভালো থাকবো মা আমি?? কিভাবে?? আর কোন কথা বলছে না তনয়া। শুধু মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে। ওর বাবা মাও কান্না করছে। পৃথিবীর কোনো বাবা মাই
নিজের সন্তানের এমন অবস্থা দেখতে পারবে না।
সারাটা দিন সারাটা রাত তনয়া নিজের রুমে বসে কান্না করলো। শত চেষ্টা করেও নিজেকে সামলাতে পারছে না। মনের মাঝে কষ্টটা এমনভাবে আটকে গেছে যে কিছু ভাবার মতো ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে।
পরেরদিন সকালবেলা আয়াতের বাবা মা এলো।
তনয়ার মা তাদের অনেক কথা শুনালেন।
তনয়ার বাবা তনয়ার মাকে চুপ করতে বললেন।আর বললেন,,,,
তনয়ার বাবা: এতে তাদের কোনো দোষ নেই। তারা তো আয়াতকে এসব করতে বলে নি।
তনয়ার মা: সেটা আমি বুঝি। কিন্তু আমার মেয়ের জীবনটাতো নষ্ট হয়ে গেলো। আমার মেয়ের এখন কি হবে???
আয়াতের বাবা: দেখুন সে বিষয়েই আমরা কথা বলতে এসেছি। অনু তুই তনয়াকে ডেকে আনতো।
অনু তনয়ার রুমে গিয়ে দেখে তনয়া নিচে বসে বসে কান্না করছে। সারা ঘর আয়াতের ছবি ছড়ানো।
অনু: আমাকে মাফ করে দে তনয়া।
তনয়া: কেন?? তুই কি করেছিস??
অনু: না আমি ভাইয়াকে কলেজে নিয়ে যেতাম না তোদের কাহিনী এতো দুর গড়াতো। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে,,,,আয়াত ভাইয়া আমার আয়াত ভাইয়া কোনো মেয়ের সাথে এমন করেছে। যে ভাইয়া সবসময় মেয়েদের সম্মান করতো সে এমনটা করবে তা যেনো ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।
তনয়া: নারে তোরা ভুল বুঝছিস আয়াতকে?? আমার মন এখনো এটা মানতে নারাজ যে আয়াত আমাকে ধোকা দিয়েছে।
অনু: বিশ্বাস ভালো কিন্তু অন্ধ বিশ্বাস ভালো না তনয়া!!!
তনয়া: এ বিশ্বাসেই তো সংসার চলে।
অনু: ভাইয়াকে বাবা বলেছে ও যেনো বাড়ির চারপাশেও না আশে। ওরকম ছেলে তার লাগবে না।
তনয়া: আমি জানি আমার আয়াত আসবে।
অনু: পাগলামি করিস না তনয়া?? একটু স্বাভাবিক
হবার চেষ্টা কর।
তনয়া: পাগলি না অনু বিশ্বাস আর ভরসা। জানিস তোর ভাইয়া কার আমাকে শেষ কি কথা বলেছে?
অনু: কি???
তনয়া: নিজের খেয়াল রেখো। ভালো থেকো।
অনু: সেটা হয়তো এমনি তেই বলেছে।
তনয়া: জানিস আমাদের বিয়ের বয়স ছয় মাস কিন্তু রিরেশনের বয়স সাত আট মাস। এই সাত আট মাসে যখনই আমরা কথা বলতাম দেখা করতাম তখনই আয়াত আমাকে বলতো নিজের খেয়াল রেখো। আই লাভ ইউ। কিন্তু ভালো থেকো কথাটি কখনো বলে নি।
অনু: তাতে কি বুঝায়??
তনয়া: জানিস তোর ভাইয়াকে আমি একবার বলেছিলাম ভালো থেকো। তখন ও আমার উপর রাগ করেছিলো। যখন আমি রাগের কারণ জানতে চাইলাম তখন বললো যখন কেউ কারো থেকে অনেক দুরে চলে যায় কিন্তু সে সবসময় তার মনের মধ্যে গেথে থাকে তখন বলে ভালো থেকো।
আর আমি তোমার কাছ থেকে কখনো দুরে যাবো না। আর যদি কোনো কারণে যাওয়া লাগে তখন তোমায় বলবো ভালো থেকো। কারণ তখন তুমি আমার থেকে দুরে থাকবে কিন্তু মন থেকে দুরে কখনো থাকবে না। হয়তো আমার শরীর দুরে যাবে
কিন্তু আমার মনটা তখন তোমার কাছেই থাকবে।
তার মানে আয়াতের কোনো বিপদ নয়তো কোনো বিশেষ কারণে ও আমাদের কাছে আসতে পারছে না।
অনু: সবটা তোর মনের ভুল ধারনা। ভাইয়ার জন্য তুই পাগল হয়ে গেছিস।
তনয়া: সে তো কবে থেকেই। তুই কি আজকে জানলি নাকি???
অনু: বাদ দে তো ওসব কথা। বাইরে সবাই তোকে ডাকছে। চল।
তনয়া: হুম।
তনয়া ঠিক ভাবে দাড়াতে পারছে না। দাড়াতে গিয়ে আবার দপ করে বসে পরলো। কি করে দাড়াবে??
কাল থেকে ওকে যে কেউ কিছু খাওয়াতে পারে নি। তনয়া এ অবস্থা দেখে অনু কান্না করে দিলো। অনু তাড়াতাড়ি রান্নাঘর থেকে তনয়ার জন্য
কিছু খাবার আর জুস নিয়ে আসলো।
অনু: এগুলো আগে খেয়ে নিবি তারপর উঠবি।
তনয়া: নারে ইচ্ছা করছে না।
অনু: চুপ একদম চুপ। তনয়া তুই ভুলে যাচ্ছিস যে তুই একা না। নিজের না রাখলেও তোর ভিতরে ছোট্র একটা প্রাণটা বেড়ে উঠছে তার খেয়াল তোকে রাখতে হবে। আর তুই না বললি আয়াত ভাইয়া ফিরে আসবে। সে যদি এসে তোর এ অবস্থা দেখে আর তোকে জিজ্ঞেস করে তোর এ অবস্থা কেন??? তাহলে তাকে তুই কি বলবি???
অনুর কথা শুনে তনয়া সামান্য কিছু খেলো। তারপর অনুর সাথে সামনের রুমে গেলো। সেখানে ওর আর আয়াতের বাবা মা গম্ভীর ভাবে বসে আছে।
তনয়াকে দেখে আয়াতের মা তার নিজের পাশে বসালো। তারপর বলল,,,,,
আয়াতের মা: দেখো মা তোমার সাথে যে অন্যায় হয়েছে কিন্তু আমরা চাইলেও তার সমাধান খুজে বের করতে পারবো না। এখন তুমি কি চাও বলো????
আয়াতের বাবা: হ্যা মা। আয়াত যাই বলুক তুমিই আমাদের ঘরের লক্ষি। আমাদের পুএবধু। তুমি চাইলে এখন থেকে আমাদের বাসায় থাকতো পারো।
তনয়ার মা: তার তরকার নেই। তনয়া মাএ এক মাসের প্রগনেন্ট। আমি ওর এবোশন করাবো।
এবোশন কথাটা শুনেই তনয়া চমকে উঠলো। মনে হলো ওর কলিজাটা ধরে কেউ টান দিছে।
তনয়া: নাহ!!! আমি আমার বাচ্চাকে মারতে পারবো না।
তনয়ার মা: কিন্তু তনয়া এ বাচ্চার কোনো ভবিষৎ নেই। কিন্তু তোর আছে। যে এখনো পৃথিবীতে আসে নি তার জন্য নিজের উজ্জ্বল ভবিষৎটাকে
এমনভাবে নষ্ট করে দিবি???
তনয়া: মা এটা সত্যি যে ও এখনো পৃথিবীতে আসে নাই। কিন্তু ওর প্রান আছে। ওর অস্তিত্ব আমি অনুভব করতে পারি। ওর অস্তিত্বের রন্ধ্রে রন্দ্রে আমার আয়াতকে খুজে পাই। খুজে পাই আয়াতের ভালোবাসাকে।
তনয়ার মা: কিন্তু মানুষে তোর বাচ্চাকে অবৈধ বলবে। জারত বলবে। তখন তুই তাদের কি বলবি???
তনয়া: থাক মা। সমাজের মানুষের কথা এখন না হয় থাক। সমাজ যাই বলুক আমার বাচ্চা যে অবৈধ নয় তা আমি জানি। আর তোমাদের এখানে থাকলে তোমাদের যদি সমস্যা হয় তাহলে বলো
আমি আয়াতের বাবার সাথে চলে যাবো। তারাও যদি না নেন তাহলে আমি নিজের আর আমার বাচচ্চার খেয়াল রাখতে পারবো। আমার কারো দরকার নাই।
তনয়ার বাবা: কি বলছো এসব মা?? তোমার কোথাও যেতে হবে না। আমি জানি আমার মেয়ে কোনো অন্যায় করে নি। তোমার সিদ্ধান্তে আমি কখনো বাধা দিবো না।
আয়াতের বাবা: এখানে থাকলে সবাই আরো বেশি বাজে কথা বলবে তার থেকে বরং আমি ওকে আমাদের বাড়ি নিয়ে যাই। সবাইকে বলবো যে আয়াতের স্ত্রী। আর আয়াত কয়েক বছরের জন্য বিদেশ গেছে।
তনয়ার বাবা: তনয়ার যা ইচ্ছা। আমি সবসময় আমার মেয়ের ইচ্ছাকে সম্মান করি।
------আজ তনয়ার বিদায়। হুম এমন মেয়ে বিদায় হয়তো কেউ জীবনে দেখে নি। কারণ মেয়ে বিদায়ে বর নেই। কনে বধু সাজে নাই। সবার চোখে শুধু কান্না হতাসা আর সামনের দিকে কি হবে তা নিয়েয়ে ভয়।
তনয়া আয়াতদের বাড়ি চলে আসলো। আয়াতের রুমে গিয়ে চারিদিকটায় তাকিয়ে শুধু একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাগলো।
কি সুন্দর করে সাজিয়েছে আয়াত রুমটাকে। বাচ্চাদের খেলনায় ভর্তি রুমটায়। খেলনা গুলো হাত বুলিয়ে দেখছে তনয়া। আয়াতের রুমের টেবিলের উপর রাখা আয়াত আর তনয়ার ছবি।
তনয়া ছবিটা হাতে নিয়ে দেখলো।
ছবিটা ওদের বিয়ের। মনে পরে যাচ্ছে তনয়ার নিজের বিয়ের কথাগুলো। কোনো সাজগোজ নেই। তনয়ার পরনে বেগুনি রং এর একটা থ্রি পিচ
আর আয়াত ছিলো অফিসের ড্রেসে। একটা ঘোরের মধ্যে হয়েছিল বিয়েটা। কত সুন্দর ছিলো দিনগুলো। স্মৃতিগুলো যেনো চোখের সামনে ভাসছে।
ওদের সম্পর্ক তখন দু মাসের মতো। কলেজের কিছু বাজে ছেলে তনয়াকে খুব বিরক্ত করতো। আয়াতকে বলা মাএ আয়াত তনয়ার সাথে কলেজে গিয়ে ছেলেদের বলল,,,,,,
আয়াত: কি ছোট ভাই ওকে বিরক্ত কেন করছেন???
---তাতে তোর কি?? তোর কি বোন লাগে???
আয়াত: না বউ লাগে। কিছুদিন পর বউ হবে।
---তাহলে কিছুদিন পরেই এখানে আসিস। যখন তোর বই হবে তখনই অধিকার খাটাতে আসিস। তার আগে মালটা আমাদের। এরকম আরো অনেক বাজজে কথা বলল।
কখাটা শুনে আয়াতের মাথায় রক্ত উঠে গেলো।
আয়াত: আধঘন্টা পর অাসছি।
আয়াত তনয়ার হাত ধরে বলল চলো।
তনয়া: কোথায় যাচ্ছি আমরা??
আয়াত: চলো তো তারপর বলছি।
পথে অনু আর আয়াতের বন্ধুকে কাজি অফিসে আসতে বলল।
কিছুক্ষণের মধ্যে বিয়ে হয়ে গেলো। তনয়া যেনো এখনো ঘোরের মধ্য আছে। মনে হচ্ছে কোনো স্বপ্ন দেখছে।
তারপর আয়াত তনয়াকে নিয়ে আবার কলেজে গেলো। সেখানে গিয়ে বলল,,,,,
ছোট ভাই কাজি অফিস থেকে বিয়ে করে সোজা এখানে আসলাম। এখন বলেন কেউ যদি আপনার বউকে বাজে কথা বলে তখন তাকে কি করবেন????
আমিও ঠিক তাই করবো।
আয়াত সাথে নিজের কয়েকটা বন্ধু নিয়ে এসেছিলো। সবগুলোকে ইচ্ছে মতো দুলাই দিয়ে সোজা পুলিশে দিলো। কারণ ছেলেগুলো অনেক বাজে ছিলো। আর বলল,,,,,
আয়াত: বস দেখতে চকলেট বয় হলেও একশনের রিএকশন কিভাবে দিতে হয় সেটা খুব ভালো করে জানি।
তনয়ার ঘোর যেনো এখনো কাটে নি।
আয়াত: চলো তোমাকে বাড়ি পৌছে দি??
গাড়িতে যাবার সময় তনয়া বলল,,,,,,
তনয়া :সামান্য বিষয়টার জন্য আমাকে বিয়ে করার কি দরকার ছিলো???
আয়াত: এটা সামান্য বিষয়?? আজকের পর থেকে কেউ তোমার দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারবে না। আর দোষটা ওদের না তোমার।
তনয়া: মানে???
আয়াত: তুমি দেখতে এতো সুন্দর যে কেউই তোমার জন্য পাগল হবে। যেমন আমি হয়েছি।
আর এখন থেকে তোমাকে হারানোর ভয়টা আমার আর থাকবে না।
তনয়া: পাজি ছেলে। আচ্ছা আয়াত একটা কথা বলবো??
আয়াত: হুম বলো।
তনয়া: আমাদের তো বিয়ে হয়ে গেছে। তারমানে আমরা এখন হাজবেন্ড ওয়াইফ।
আয়াত: হুম তো???
তনয়া: তুমি আবার আমার সাথে সেরকম কিছু করবে না তো??
আয়াতদুষ্টুমি করে) কেন ইচ্ছা আছে নাকি???
তনয়া রাগ করে আয়াতের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,
তনয়া: ঠেং ভেঙ্গে দিবো।
আয়াতজোরে হেসে বলল) ম্যাডাম আপনাকে আমি সারাজীবন নিজের করে রাখতে চাই। তাই যত দিন না পর্যন্ত পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয় ততদিন পর্যন্ত আমরা এরকম ওরকম সেরকম কিছুই করবো না। ভরসা রাখতে পারেন।
তার দুমাস পর তনয়ার পরীক্ষা শেষ হলো। কিন্তু হঠাৎ আয়াতের দাদি মারা যায়। যার কারণে বিয়েটাকে আরো কয়েকমাস পিছিয়ে দেওয়া হয়।
আর-------
তনয়া তনয়া,,,,,
কেউ তনয়াকে ধাক্কা দিলো। ঘোর কাটলো তনয়ার
তনয়া: কে কে????
অনু: কতোক্ষণ ধরে ডাকছি কিরে কি ভাবছিস???
অনুর চোখ যায় তনয়ার হাতের ছবিটার দিকে। অনু বুঝে গেলো তনয়া ঠিক কি ভাবতে ছিলো।
তনয়া সর্বনাশ হয়ে গেছে। বাইরে চল তাড়াতাড়ি...... ♥

গল্প : অবৈধ <<<<<♥
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :-০২~~~~~
.
.
তনয়া ভাবছে মানুষ কি করে এতোটা ন্যাচারাল এ্যকটিং করে?? কি করে সম্ভব?? নাহ আমার আয়াত এমন করতে পারে না?? আমি ওর নিজের মুখ থেকে না শুনা পর্যন্ত বিশ্বাস করবো না।
তনয়া: মা আমি একটু বের হচ্ছে।
মা: এই অসুস্থ অবস্থায় সন্ধার সময় কোথায় যাচ্ছিস???
তনয়া: সত্যিটা জানতে
মা: কিসের সত্যি??
তনয়া ওর মাকে আয়াতের মেসেজটা দেখালো। ওর মাও যেনো হঠাত করে বড়সড় একটা ধাক্কা খেলো।
মা: এই সন্ধা বেলা একা যেতে হবে না। আমিও তোর সাথে যাবো।
তনয়া: মা তুমি???
মা: চুপ একদম চুপ। আমার মেয়ে বিপদে পরছে
আর আমি তাকে এভাবে একা ছেড়ে দিবো। চল,,,
তনয়া আর ওর মা মিলে আয়াতদের বাসায় গেলো। আয়াতের মা তাদেরকে দেখে খুব খুশি হলো সাথে সাথে অবাকও হলো।
তনয়া: আন্টি আয়াত কোথায়???
আয়াতের মা: আন্টি কিরে?? মা বলতে পারিস না?? আগে তো ভাবতাম তোদের বিয়ে ঠিক হয়েছে
কালকে আয়াত বলল,,,, তোরা নাকি অনেকদিন আগেই বিয়ে করে নিয়েছিস। প্রথমে খুব রাগ হচ্ছিলো তোদের উপর। কিন্তু যখন শুনলাম আমাদের ঘরে নতুন অতিথি আসছে তখন আর রাগ করে থাকতে পারলাম না আমি আর আয়াতের বাবা।
আয়াতের মায়ের কথা শুনে তনয়া আরো বেশি দ্বিধার মধ্যে পরে গেলো। তারপর আয়াতের মাকে ওর ফোনের মেসেজটা দেখায়। আর বলে,,,,,
তনয়া: আয়াত কোথায়???
আয়াতের মাও মেসেজটা দেখে অনেক অবাক হলো। আবার হেসে দিয়ে বলল,,,,
আয়াতের মা: বোকা মেয়ে দেখ ভয় পেয়ে নিজের কি হাল করেছে?? আয় আমার সাথে এদিকে আয়???
তনয়াকে আয়াতের মা আয়াতের রুমে নিয়ে গেলো।
তনয়া রুমের দরজা খুলে তো অবাক। দেখে রুমে বাচ্চাদের অনেক খেলনা। পুরো ঘড়টায় বাচ্চাদের খেলনা দিয়ে সুন্দর করে সাজানো।
আয়াতের মা: আয়াত কাল রাতে আর আজ সকালে এইসব জিনিস কিনেছে। আর আমাকে বলেছে মা আমার জীবনে সবচেয়ে প্রিয় মানুষটা
কিছুদিন পর আমার ঘরে আসবে আর তার সাথে আসবে ছোট্র সোনা। তাদের জন্য ঘরটাকে তো সুন্দর করে গোছাতে হবে।
আর দু সপ্তাহ পর তোমাদের বিয়ের ডেট ফেলেছি
আমরা। আয়াত সেটা জানানোর জন্যইতো তোমাতের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলো।
তনয়ার কেমন যেনো সব ঘোলাটে লাগছে।
তনয়া: তাহলে মা আয়াত এমন মেসেজ কেন দিলো।
আয়াতের মা: মনে হয় তোর সাথে মজা করছে।
তনয়া: কিন্তু ফোনটা অফ কেন???
আয়াতের মা: দেখছি???
আয়াতের মা অনুকে (আয়াতের ছোট বোন + তনয়ার বান্ধবী) বললো আয়াতকে ফোন দে তো।
অনু ফোনের পর ফোন দিতেছে। কিন্তু ফোন বন্ধ।
পরিচিত বন্ধু বান্ধবদের অফিসে ফোন করলো কিন্তু কোথাও আয়াত নেই। এবার ঘরের সবার খুব টেনশন হচ্ছে। তনয়া রাতে আয়াতদের বাড়িই থাকলো কিন্তু ওর মাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলো।
সারারাত তনয়া আয়াতের রুমে ওর আয়াতের লাগানো ছবির দিকে তাকিয়ে কান্না করতে লাগলো।
মনে হাজারো প্রশ্ন??? কিন্তু শত প্রশ্নের একটাই উওর হাসতেছে যে আয়াত আমাকে ধোকা দিতে পারে না। কিন্তু মেসেজে লেখা প্রত্যেকটা কথা মাথার মধ্যে পোকার মতো কিলবিল করছে।
নাহ তনয়া আর নিতে পারছে না। মনে হয় মাথাটা ছিড়ে যাবে। এদিকে পেটের ভিতর ছোট্র একটা ব্রুন যা হয়তো এখোনো আকৃতি ধারণ করে নি কিন্তু তার জীবন আছে। তার চলাচল তার অস্তিত্ব
তনয়া প্রতি মুহূর্তে নিজের ভিতর অনুভব করছে।
তার সাথে অনুভব করছে আয়াতের অস্তিত্বকেও
কারণ ভিতরে যে আছে সে যে আয়াতেরই অংশ।
সেদিন রাতে বাড়ির কেউই ঘুমায় নি। খুব সকালে উঠে সোজা পুলিশ স্টেশনে গেলো।
অফিসার বললেন,,,,দেখেন ছোট ছেলে তো নয়।
আর তাছাড়া ২৪ঘন্টার আগে আমরা রির্পোট নেই না। তারপর কিছু প্রশ্ন করলো তারপর তনয়াকে দেয়া মেসেজটার কথা জানার পর বলল,,,,
অফিসার: তাহলে আর কি?? আপনার ছেলে পালিয়েছে। তাই ফোন অফ রেখেছে। ছোট বাচ্চা তো আর না। দেখুন আবার কার সাথে প্রেমলীলা
শুরু করেছে,,,,,
আয়াতের বাবা: জাস্ট সেটাপ অফিসার। রির্পোট নিতে বলেছি রির্পোট নিন। বাজে কথা বলবেন না।
অফিসার: (চোখ রাঙিয়ে) রির্পোট নিয়ে নিচ্ছি কিন্তু ২৪ঘন্টা না গেলে কোন তদন্ত শুরু করবো না।
থানায় রির্পোট করিয়ে তনয়াকে বাড়ি পৌছে দিয়ে তারা বাড়ি গেলেন।
তনয়া বাড়ি গিয়ে খুব ভেঙ্গে পরলো। মনে হচ্ছে কোন গোলক ধাধায় পরে গেছে। কোনটা মিথ্যা কোনটা সত্যি তার মধ্যে কেন জানি পার্থক্য করতে পারছে না। যদি আয়াতের মেসেজটা সত্যি হয় তাহলে বাড়িতে কেন বললো?? আর বাড়িতে বললে মেসেজটা কেন পাঠালো??
খুব কান্না করছে কনয়া। চোখের সামনে যেনো আয়াতের সাথে কাটানো স্মৃতুগুলো ভাসছে।
আয়াতের সাথে প্রথম দেখা হয়েছিলো কলেজের একটা অনুষ্ঠানে। অনুর সাথে আয়াত কলেজে এসেছিলো। অনুই আয়াতের সাথে তনয়ার পরিচয় করিয়ে দেয়।
আয়াত: হাই!!
তনয়া:হ্যালো,,
আয়াত: বিউটিফুল!!
তনয়া: হোয়াট??
আয়াত: আই মিন নাইস টু মিট ইউ।
তনয়া: ধন্যবাদ।
অনু: তনয়া তুই একটু ভাইয়ার সাথে থাক আমি দশ মিনিটের মধ্যে আসছি।
তনয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই অনু চলে গেলো। কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ। নীরবতা ভেঙ্গে আয়াত বলল,,,,,,
আয়াত: তো কোন ইয়ারে পড়েন?? কোন বিষয়ে?
তনয়া: থার্ড ইয়ার ফাইনাল। হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ। আর আপনি???
আয়াত: গুড। পড়াশুনা শেষ করে কিছুদিন হলো বাবার ব্যবসা দেখা শুনা করছি।
তনয়া: গুড।
আয়াত: আইসত্রুিম খাবেন???
তনয়া: না না ঠিক আছে।
আয়াত: দেখুন মিথ্যা বলবেন না। মেয়েরা আইসত্রুিম কখনো না করে না।
তনয়া: মুচকি হেসে। ওকে।
দজন আইসত্রুিম খাচ্ছে এর মধ্যে অনু এসে পরলো। অনুষ্ঠানে থাকা কালীন পুরোটা সময় আয়াত বারবার শুধু তনয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো। তনয়ার চোখে চোখ পরলেই আবার চোখ নামিয়ে নিতো।
রাতে আয়াত অনুর রুমে গিয়ে বলল,,,,,
আয়াত: বোন আইসত্রুিম খাবি???
অনু: মাখন লাগানো লাগবে না। কি চাই বল???
আয়াত: তনয়ার কি কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে???
অনু: না। প্রচন্ড ভালো মেয়ে তনয়া। দেখতে যেমন সুন্দর মনটা তার থেকে বেশি সুন্দর। কোন ছেলেকে পাওা দেয় না। আর বাবা মায়ের একমাএ সন্তান। আর যদি ফোন নাম্বার বা ফেসবুক আইডি চাস তাহলে কালকে শপিং এ নিয়ে যেতে হবে।
এক শ্বাসে কথাগুলো বলে ফেললো অনু।
আয়াত: তুই কিভাবে বুঝলি???
অনু: আমি তোর মতো গাধা না। কলেজে থাকা কালীন সারাটা সময় তুই শুধু তনয়ার দিকেই উল্লুকের মতো তাকিয়ে ছিলি। তোর লজ্জা লাগে না।
আয়াত: কিসের জন্য???
অনু: ছোট বোনের বান্ধবী। সেও তো ছোট বোনের মতো। তার দিকে নজর দেয়া পাপ।
অায়াত: চুপ কর। ও আমার কোন জম্মের বোন রে?? আর খবরদার তনয়াকে নিষেধ করে দিবি ও যেনো আমাকে কখনো ভাইয়া বলে না ডাকে। আজ যখন ভাইয়া বলে ডাকছে মনে হয়েছে যেনো কলিজায় গিয়ে তীর মারছে।
এখন নাম্বারটা দে বোন বা ফেসবুক আইডি।
অনু: আর আমার শপিং???
আয়াত: ওকে ডান।
তারপর অনুর কাছ থেকে নাম্বারতো নেয় কিন্তু কল দেবার সাহস আয়াতের নাই।
আয়াত প্রায় তনয়াদের কলেজের সামনে যায়।
একদিন তনয়াকে প্রপোজ করলো। কিন্তু তনয়া বলল,,,,আপনি যে আমাকে সত্যিই ভালোবাসেন তার প্রমান কি???
পরেরদিন বিকালে আয়াত তার পুরো পরিবারকে নিয়ে তনয়াদের বাসায় যায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।
তনয়ার বাবা বলে কয়েকমাস পর তনয়ার ফাইনাল পরীক্ষা। বিয়েটা যদি পরীক্ষার পর হতো তাহলে ভালো হতো।
তারাও রাজি হয়ে যায়। ওদের বিয়েতো ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু তনয়া আয়াতের সাথে ঠিক মতো কথা বলে না। সবসময় এভোয়েট করে। আয়াতের এগুলোতে খুব কষ্ট লাগে কিন্তু কিছু বলে না। কিন্তু এভাবে থাকতেও পারে না। তাই অনুকে দিয়ে তনয়াকে নিজের বাসায় আনলো। সেদিন আয়াতের বাবাবা মা বাড়ি ছিলো না। আর অনুও দুজনের কথা ভেবে বাইরে চলে যায়।
আয়াত এসে তনয়ার পাশে বসে আর তনয়া আরেকটু দুরে সরে যায়।
আয়াত: তনয়া তুমি কি এই বিয়েতে খুশি না???
তনয়া: আমি কি সেটা বলেছি???
আয়াত: তাহলে তুমি আমাকে এভাবে এভোয়েট কেন করো???
তনয়া চুপ করে আছে।
আয়াত: কি হলো চুপ করে আছো যে প্লীজ কিছু বলো??
তনয়া: আমি বাড়ি যাবো??
আয়াত: ঠিক আছে তার আগে আমার প্রশ্নের উওর দেও।
তনয়া উঠে চলে যেতে চাইলে আয়াত তনয়ার হাতটা ধরে টান দিয়ে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসে।
তনয়া: কি হচ্ছে ছাড়ুন???
আয়াত: এই মেয়ে আমি কি তোমার সাথে কোন খারাপ কিছু করেছি??? নাকি তোমাকে খারাপ কোন প্রস্তাব দিয়েছি?? তোমাকে সারাজীবন ভালোবাসতে চেয়েছি এইটা কি আমার অন্যায়???
তনয়া: আয়াত ছাড়ুন আমার হাতে লাগছে,,,
আয়াত তনয়াকে ছেড়ে দিয়ে সরি বলে নিজের রুমে চলে গেলো।
তনয়াও বাড়ি যাবার জন্য নিচে নামতেই দেখলো ওর মোবাইলটা ভিতরে ফেলে এসেছে।
তাই আবার ভিতরে গেলো। হঠাৎ আয়াতের রুম থেকে কাচ ভাঙ্গার শব্দ এলো। তনয়া ধীমি পায়ে আয়াতের রুমের সামনে গিয়ে আস্তে করে দরজাটা খুলে দেখে আয়াতের হাত থেকে রক্ত ঝরছে আর নিচে কিছু কাচের গ্লাসের ভাঙ্গা টুকরা পরে আছে।
আর ওর টেবিলে রাখা তনয়ার ছবির দিকে তাকিয়ে বাচ্চাদের মতো কাদছে। তনয়া জানে খুব বেশি কষ্ট না পেলে ছেলেরা কাদে না। তনয়া আয়াতের রুমে ডুকে আয়াতের হাতটা ধরে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিলো। আয়াত শুধু তনয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
তনয়া: রাগটা কার উপর দেখালেন???
আয়াত: নিজের উপর।
তনয়া: কেন???
আয়াত: এই হাতটা তোমাকে কষ্ট দিয়েছে তাই।
তনয়া: আপনি জানেন আমি একটা ছেলেকে খুব ভালোবাসি???
কথাটা শুনে আয়াতের খুব কষ্ট হচ্ছিলো।
আয়াত: কাকে???
তনয়া: জানেন এতোদিন জানতাম সে আমাকে খুব ভালোবাসে। তাই তার ভালোবাসার সত্যতা যাচাই করতে এতোদিন তাকে খুব এভোয়েট করেছি। খুব কষ্ট দিয়েছি। কিন্তু আজকে জানলাম সে আমাকে একটুও ভালোবাসে না।
আয়াত: মানে???
তনয়া: যদি সে আমাকে ভালোবাসতো তাহলে নিজের হাত কেটে এভাবে আমাকে কষ্ট দিতে পারতো না।
আয়াত কিছু বলছে না শুধু তনয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
তনয়া আয়াতের কাটা হাতটায় আলতো করে একটা ভালোবাসার পরস একে দেয়। তারপর বলে পাগল। আমার চোখ দেখে বুঝো না তোমাকে কতটা ভালোবাসি। আয়াত নিজের বাহুডোরে তনয়াকে নিয়ে বলল খুব ভালোবাসি তোমায় তনয়া।
হঠাৎ তনয়ার ফোনটা বেজে উঠায় তনয়ার ভাবনায় ছেদ পরে।
ফোনটা হাতে নিয়ে স্ক্রিন এর দিকে তাকাতেই বুকটা কেপে উঠে তনয়ার। কারণ ফোনটা আয়াত করেছে।
তনয়া তাড়াহুড়ো করে ফোনটা তুললো।
তনয়া: হ্য হ্যা হ্য হ্যালো আয়াত???
আয়াত:----------
.
.
♥------"To be continue"-----♥

গল্প:- অবৈধ ~~~ ♥
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
.
পর্ব :- ০১~~~~♥️
.
.

আজ তনয়া জানলো যে সে মা হতে চলেছে। কথাটা একটা মেয়ের কাছে সবচেয়ে খুশির খবর। তনয়ার কাছেও এইটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখের খবর। কিন্তু সাথে সাথে সব থেকে লজ্জাজনক খবরও বটে।
কারণ তনয়া অবিবাহিত।
আর একটা অবিবাহিতা মেয়ের মা হওয়া আমাদের সমাজর লজ্জার সর্বসীমা পেড়িয়ে যায়। তনয়া বরাবরই তার মায়ের কাছে কিছু লুকায় না। মায়ের কাছে কথাটা বলা মাত্র মা সজোড়ে তনয়ার গালে একটা চড় মারে।
.
মা: তুই এরকম কাজ করবি তা আমি স্বপ্নেও কল্পনা করি নি। আরে তোর সাথে তো আয়াতের বিয়ে ঠিক হয়েই গেছে তাহলে কেন এরকম করলি বল??? নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ রাখলি না।
তনয়া: মা আমার সাথে আয়াতের বিয়ে আরো ছয় মাস আগেই হয়ে গেছে। কিন্তু তোমরা কেউ জানো না।
মা: কি???
তনয়া: হ্যা মা ছয় মাস আগে কাজি অফিসে আমাদের বিয়ে হয়। আর সাক্ষী হিসেবে আমার বান্ধবী অনু আর আয়াতের বন্ধু ইমরান ছিলো।
মা আমি অন্যায় করেছি কিন্তু আমার বাচ্চাটা অবৈধ না। আমরা ইসলামের পূর্ণ রীতি অনুসারে বিয়ে করেছি।
মা: সেটা তুই জানিস। আমি না হয় তোর কথা বিশ্বাস করলাম কিন্তু সমাজের মানুষকে কিভাবে বিশ্বাস করাবি?? আর আয়াত ও যদি অস্বিকার করে?? তুই আয়াতকে এ বিষয়ে বলেছিস??
তনয়া: না মা। আমার খুব ভয় লাগতে ছিলো তাই তোমার কাছে আগে বললাম।
মা: এসব কথা মেয়েরা সবার আগে স্বামীকে জানায় আর তুই তা না করে?? এখনি আয়াতকে সব জানা। আর আমি তোর বাবাকে বলে আয়াতের পরিবারের সবার সাথে কথা বলে বিয়ের ডেট যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাকাপাকি করছি।
এই বলে তনয়ার মা ওখান থেকে চলে গেলো।
তনয়া ফোনটা নিয়ে ভয়ে ভয়ে আয়াতকে ফোন করলো। রিং হলো কিন্তু কল টা রিসিভ করলো না।
আবার দিলো পর পর কয়েকবার দিলো কিন্তু রিং হয়েই যাচ্ছে আয়াত ফোন রিসিভ করছে না। এদিকে ভয়ে তনয়ার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
মনে হচ্ছে কলিজাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। ঢক ঢক করে এক জগ পানি খেয়ে ফেলল এদিকে আয়াত নাতো ফোন রিসিব করছে নাতো ব্যাক করছে। প্রচন্ড টেনশন হচ্ছে।
তার কিছুক্ষণপর থেকে আয়াতের ফোনটা অফ। তনয়ার মাথাটা ঘুরছে। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। দাড়িয়ে থাকার ক্ষমতা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছে। তারপর আর কিছু মনে নেই।
যখন জ্ঞান ফিরলো তখন তনয়ার চোখটা সোজা
দেয়ালে টানানো ঘড়ির দিকে গেল। প্রায় চার ঘন্টা হয়ে গেছে। হাত দিয়ে ফোন দিয়ে ফোনটা খুজছে।
হঠাৎ মনে হলো কেউ তনয়ার মাথার কাছে বসে
ওর মাথায় হাত বুলাচ্ছে।
মাথার পাশে তাকাতেই দেখে আয়াত তনয়ার দিকে তাকিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আয়াতকে দেখে তনয়া যেনো নিজের প্রাণ ফিরে পেলো। কিন্তু কিছু বলতে পারছে না। শুধু আয়াতের দিকে তাকিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে ছিলো।
আয়াত: উঠে বসো,,,,
আয়াত তনয়াকে বসিয়ে তনয়ার মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো। আর বলল,,,,,
আয়াত: এ বুকে কি কোন ছলনার শব্দ শুনতে পাও???
তনয়া আয়াতের বুকে মাথা রেখে তখনো কাদছে।
আয়াত তনয়ার চোখের জল মুছে দিয়ে গালে হাত দিয়ে বলল,,,,,
আয়াত: হেই বিউটিফুল তুমি কি ভাবছো খবরটা শুনার পর আমিও অন্য ছেলেদের মতো ওয়ান টু ফোর হবো??? বোকা মেয়ে!!!
তনয়া: তাহলে ফোন রিসিভ করলা না কেন???
আয়াত: তার জন্য এত্তোগুলা সরি। আসলে তখন জরুরি মিটিং চলছিলো। আর ফোনটা সাইলেন্টে ছিলো। ফোনে চার্জও ছিলো না তাই হয়তো রিং হতে হতে ফোনটা অফ হয়ে যায়।
মিটিং শেষে ফোন চার্জ করে যখন ফোন অন করলাম তখন তোমার অনেকগুলো মিসকল দেখে কল দিলাম। তোমার মা ই ফোনটা রিসিভ করে তিনি বলেন তুমি নাকি অসুস্থ। দেরি না করে সোজা তোমাদের বাসায় চলে আসলাম। আন্টির কাছ থেকে সব শুনলাম।
ম্যাডাম টানা দেড় ঘন্টা ধরে তোমার পাশে বসে আছি। দেখেন অফিস ড্রেসেই আছি।
তনয়া: তার জন্যই তোমার গা থেকে ঘামের গন্ধ বের হচ্ছে।
আয়াত: তনয়াকে আরো জোড়ে নিজের বুকের মাঝে চেপে ধরে বলল এখন কি গন্ধ আসছে???
তনয়া: ছাড়ো। মা এসে পরবে।
আয়াত: ও হ্যালো ম্যাডাম। আমি আপনার বিয়ে করা স্বামী আর আপনি আমার বউ। কয়েকদিন পর আবার বিয়ে করবো। দু দুবার যাকে বিয়ে করবো তাকে জড়িয়ে ধরলে কার বাপের কি??
তনয়া: হয়েছে আর ভালোবাসা দেখাতে হবে না। সব দোষ তোমার??
বিয়ের আগে তুমিই বলেছিলে যে যতোদিন পারিবারিক ভাবে বিয়ে হবে না ততোদিন আমরা একে অপরের কাছে আসবে না। কিন্তু.......
আয়াত: হ্যা কিন্তু সেদিন কি যে হয়েছিলো আমার
বুঝতেই পারতেছিলাম না। দেখো আমরা ভুল করেছি কিন্তু পাপ না। কারণ আমরা শরিয়ত মোতাবেক স্বামী স্ত্রী। হ্যা আমাদের বিয়ের কথা কয়েকজন লোক ছাড়া কেউ জানে না। কিন্তু তবুও তো আমরা স্বামী স্ত্রী।
তনয়া: হুম সবতো বুঝলাম কিন্তু এখন কি করবে?
আয়াত: তুমি একদম চিন্তা করো না। এ মাসের মধ্যেই আমরা বিয়ে করে নিবো। বাবা মাকে আমি বুঝিয়ে বলবো। আর এসময় টেনশন নেয়া মা ও বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। আর আমি আমার দুই রাজকুমারীর কারোর ক্ষতি সহ্য করবো না।
তনয়া: দুই রাজকুমারী মানে???
আয়াত: হ্যা। যে আসছে সে আমার লিটিল প্রিন্সেস আর তুমি আমার মনের প্রিন্সেস।
তনয়া: পিন্সেস না হয়ে পিন্সও তো হতে পারে??
আয়াত: তা দেখা যাবে।
তনয়া: যখন তুমি আমার ফোন রিসিভ করছিলে না তখন মনে হচ্ছিলো প্রাণ বুঝি বেরিয়ে.......
আয়াত তনয়ার মুখটা চেপে ধরলো। আর বলল,,,
আয়াত: খবরদার এমন কথা কখনো বলবে না। হেই বিউটিফুল তোমার কিছু হলে তোমার আয়াতটাকে কে সামলাবে???(আয়াত কান্না করে দিলো)
তনয়া: জানো আয়াত মাঝে মাঝে আমার মনে হয়
তোমার মতো ছিছকাদুনে ছেলেকে আমি কিভাবে
ভালোবাসলাম???
পাগল তোমাকে ছেড়ে কোথায় যাবো?? তোমাকে আমি আগামী সাত জম্মের জন্য বুকিং করে রেখেছি।
আয়াত: তার মানে সাত জম্ম পর্যন্ত আমি অন্য কোনো মেয়ের সাথে চান্স মারতে পারবো না??
তনয়া: খুন করে ফেলবো তোমাকে!!!
আয়াত: তোমার ভালোবাসায় তো এমনিতেই খুন হয়ে আছি। আবার খুন করার কি দরকার??
তনয়া: মাঝে মাঝে তোমার উপর আমার খুব সন্দেহ হয়,,,
আয়াত: কেন???
তনয়া: তুমি কি সত্যিই আমাকে এতোটা ভালোবাসো নাকি অন্যকিছু??
আয়াত: বিশ্বাস করো না আমায়??
তনয়া: নিজের থেকে বেশি।
আয়াত: আচ্ছা বাদ দাও। তার আগেে আমাকে একটা কথা বলো মেয়েদের প্রেগন্সির খবর সবার আগে তার বরকে জানায় আর তুমি আমাকে না জানিয়ে তোমার মাকে কেন জানালে????
কি ভেবেছিলে আমি তোমায় ধোকা দিবো নাকি তোমার কথায় বিশ্বাস করবো না?? বলো????
তনয়া: আসলে রেজাল্ট পজেটিভ দেখে এতোটা
ভয় পেয়েছিলাম যে মা ছাড়া আর কারো কথা মাথায় আসে নাই।
আয়াত: বোকা মেয়ে। তুমি না এই আয়াতের হৃদয়। আর কেউ কি এই হৃদয় ছাড়া বাচতে পারে???
তনয়া: সরি। আসলে তখন মাথাটা কাজ করতে ছিলো না।
আয়াত: আমি জানি। আর আমিও সরি।
তনয়া: কেন????
আয়াত: সেদিন আমি জোড় না করলে আজ তোমাকে এতোটা নাজেহাল হতে হতো না। মা তোমাকে একটা চড় মারছে তাই না??
তনয়া: তোমাকে মা বলছে???
আয়াত: নাহ। তোমার গালে চড়ের দাগগুলো বলে দিচ্ছে। খুব ব্যাথা করছে তাই না??
তারপর আয়াত তনয়ার গালে একটা ভালোবাসার পরস একে দিলো।
তনয়া: এটা কি হলো???
আয়াত: এখন ব্যাথা চলে যাবে।
তনয়া: পাগল।
আয়াত: পাগলের বউ।
দুজনেই হেসে দিলো।
আয়াত: এখন আমাকে বাড়ি যেতে হবে। বাবা মাকে বলে বিয়ের ডেট এ মাসের মধ্যে ঠিক করতে হবে। সব জোগাড় করতে হবে।
অনেক কাজ আছে।
তনয়া: আয়াত শুনো,,,,
আয়াত: হ্যা বলো।
তনয়া: পাচ মিনিট বসো আমি আসতেছি।
আয়াত: তোমার উঠার কি দরকার?? আমাকে বলো কি লাগবে???
তনয়া: চুপ করে বসো তো।
কিছুক্ষণপর তনয়া আয়াতের জন্য খাবার নিয়ে আসলো।
আয়াত: এগুলো দিয়ে কি হবে???
তনয়া: অফিস থেকে সোজা এখানে আসছো তারমানে এখোনো কিছু খাও নি। এগুলো খাবে তারপর উঠবে।
আয়াত: ঠিক আছে তবে খাইয়ে দিতে হবে।
তনয়া আর আয়াত একে অপরকে খাইয়ে দিলো।
তারপর আয়াত চলে গেলো আর যাবার আগে তনয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কপালে একটা ভালোবাসার চিহৃ একে দিয়ে গেলো। আর বলল,,,
কাল তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
পরেরদিন আয়াতের কোনো ফোন আসলো না সন্ধা বেলায় শুধু একটা মেসেজ আসলো।
তনয়া তোমার কাছ থেকে যা পাবার তা আমি পেয়ে গেছি। এখন নাতো তোমাকে চাই না তোমার বাচ্চাকে। গুড বাই তনয়া।
তারপর থেকে ফোন অফ।
মেসেজটা পড়ে তনয়া যেনো পাথর হয়ে গেলো।
আর ভাবছে..........
সব মিথ্যা??? এতোদিন থেকে কাল পর্যন্ত যা বলেছিলো প্রত্যেকটা কথা প্রত্যেকটা অনুভুতি সব মিথ্যা ছিলো?? মিথ্যা ছিলো ওর ভালোবাসাটা???
নাকি অন্য কিছু-----???
.
.
★------"To be continue"-----★

গল্প :-
-----""অহংকারী মেয়ে""
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
★------পর্ব :- ০৮ ~~"শেষ পর্ব"
.
.
মোবাইল বেড় করে দেখে জুইয়ের নাম্বার থেকে ফোন আসছে।শান্ত মোবাইল রিসিভ করার সাথে সাথে কেউ একজন বলে ভাইয়া তারাতারি সদর হসপিটালে এসো বলে ফোন কেটে দেয়।
শান্ত বুঝতে পেরে তখন পাগলের মতো হয়ে যায়। তোর কারনে জুইয়ের এমন টা হয়ছে, যদি
আমার জুইয়ের কিছু হয় তাহলে আমি তোকে মেরে ফেলবো বলে শান্ত তারাতারি হসপিটালের উদ্দেশ্যে বের হয়।
এদিকে এনি ও নিজের সব কিছু বুঝতে পেরে নিজেই নিজের প্রতি ঘৃনা জন্মাচ্ছে।
এনি ও হসপিটালের উদ্দেশ্যে বের হয়।
শান্ত হসিপিটালে গিয়ে দেখে জুইয়ের বাবা ডক্টরের সাথে কথা বলতাছে। শান্ত ও তাদের মাঝে যায়।
-আসাদ সাহেব আপনার মেয়ের রক্তের গ্রুপ এবি+ , রক্ত তারাতারি সংগ্রহ করুন না হলে খারাপ কিছু ঘটতে পারে...
.
জুইয়ের বাবা আর শান্ত রক্ত খুজার জন্য আপপ্রাণ চেষ্টা করছে...কিন্তু কোথাও রক্ত পাচ্ছে না...
এদিকে এনি জুইয়ের কাছে যায়..গিয়ে দেখে জুইয়ের করুণ অবস্থা...এটা থেকে এনি চোখের পানি ধরে রাখতে পারে না..কান্না করতে শুরু করে দেয়..বার বার এটাই মনে করছে এগুলোর জন্য সে ই দায়ী..শুধু তার জন্যই এটা হয়েছে....
কয়েক ঘন্টা পর দেখছে রুমের বাইরে অনেকটাই শরগোল হচ্ছে...
বাইরে বের হয়ে দেখছে..শান্ত ডাক্তার সাহেবের হাত ধরে কান্না করছে...
-ডাক্তার সাহেব যে করেই হোক আমার জুইকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন...আপনার কাছে চিরজীবণ ঋনী থাকবো...plzz ডাক্তার সাহেব... (শান্ত)
-হ্যাঁ, আমরা তো সেই চেষ্টাই করছি...কিন্তু রক্ত ছাড়া পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে...এভাবে রোগিকে বেশিক্ষণ রাখা যাবে না...একটু দ্রুত রক্ত সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করেন...
.
তখন শান্ত ফ্লোরে বসে পড়ে..কারণ সে সবজায়গায় রক্ত খুজেও পাই নি...
.
এনি তখন বুঝতে পারে জুইয়ের রক্ত লাগবে...
হঠাৎ জুই বলে উঠলো..
-ডাক্তার সাহেব আপনি আমার রক্ত নিন.... (এনি)
(এনি জানে তাদের দুজনেরই রক্ত একই গ্রুপের...কলেজে থাকাকালীন তারা একদিন পরীক্ষা করেছিলো..)
-আমার রক্ত এবি+ , আমি রক্ত দিবো (এনি)
-একজন মানুষ দিয়ে রক্ত হবে না (ডাক্তার)
-মানে?
-৩ব্যাগে লাগবে
-আমার থেকে নিন, আমি দিবো
-স্যরি ম্যাম, আমরা পারবো না
-কেনো পারবেননা?
-একজন রোগির জন্য আরেকজন মারতে পারি না
-আরে নিন বলছি
-আমরা পারবো না
-তাহলে রক্ত কি এখন আপনার বাবা দিবে? আমি বলছি আমার রক্ত নেন এর থেকে একটু ও বেশি বুঝবেননা
-তাহলে এখানে একটা স্বাক্ষর করেন।
-এনি তখন স্বাক্ষর করে
-জুইয়ের মা-বাবা এনির দিকে আনমনে চেয়ে আছে আর চোখের পানি ফেলছে।
এনি সবকিছু করে রক্ত দেওয়ার জন্য রুমে ডুকে।রুমে ডুকে কেবিনে দেখতে পায় জুই লম্বা হয়ে শুয়ে আছে আর নাকে মুখে অক্সিজেন লাগিয়ে রাখছে।
জুইয়ের এমন পরিস্থিতি দেখে এনির চোখে আবার পানি চলে আসে।
এনি অস্ফুট শব্দে বলে এই জুই দেখ আমি এসে গেছি...দেখ তোর best friend হয়েই এসেছি... বলে ঠোটে বাকিয়ে কান্না করে দেয়।
এনির খুব ইচ্ছা হচ্ছে জুইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে ।
ডাক্তার সাহেব এসে এনির শরীর থেকে রক্ত নিতে থাকে।
এনির শরীর থেকে ৩ব্যাগ রক্ত নেওয়ার পরে আল্লাহর রহমতে তার শরীরের সবকিছু এখনো ঠিকঠাক আছে।
রক্ত নেওয়ার পরে এনিকে কতক্ষণ শুয়ে থাকতে বলে।
ঐদিকে জুইয়ের অপারেশনের কাজ চলছে।
এনি শুয়ে শুয়ে.....
হ্যা আল্লাহ তুমি আমার bestu কে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিও না...তার থেকে আমাকে তোমার কাছে নিয়ে নাও..তবুও আমার bestu কে বাঁচিয়ে দাও...সব দোষ আমার তুমি আমাকে শাস্তি দাও.. এসব মনে মনে বলে চোখ ভিজিয়ে ফেলে। (এনি)

এনি কেবিন থেকে উঠে বাহিরে গিয়ে দেখে শান্ত ভিষন্ন মনে বসে আছে।
কিন্তু এনি খুব দূর্বল, ঠিক করে চলতেই পারছে না...শান্তকে দেখে শান্তর কাছে যেতেই মুখ থুবড়ে ফ্লোরে পড়ে যায়....
শান্ত এটা দেখে দৌড়ে এনির কাছে আসে...& এনিকে তুলে মাথাটা কোলের উপর নেয়..
এনি তখন একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে শান্তর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে..এনি শান্তর চোখে রাগ আর দেখতে পাচ্ছে না...এখন শান্তর চোখে মায়া দেখতে পাচ্ছে....♥
.
তারপর এনিকে শান্ত রুমে নিয়ে যায়...এবং বলে...
.
-জুই এখন কেমন আছে?(শান্ত)
-অপারেশন থিয়েটারে আছে আর বাকিটা আল্লাহ জানে।
এমন সময় ডাক্তার বের হয়।
-ডাক্তার সাহেব এখন কি অবস্থা?(জুইয়ের বাবা)
-আল্লাহ্ রহমতে কোনো সমস্যা হয় নাই। তখন সবার মুখে অদ্ভূত একটা হাসির আভা ফুটে উঠছে।
শান্ত ডাক্তারকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।থ্যাংকস ডাক্তার সাহেব।
-ওয়েলকাম
-এখন কি দেখা করা যাবে?(শান্ত)
-না ৭-৮ ঘন্টা পরে দেখা করতে পারেন
-ওকে
রাত ১১ টার দিকে জুইয়ের জ্ঞান ফিরে।
প্রথম ওর মা-বাবা দেখা করে তারপরে শান্ত যায়।
শান্ত যাওয়ার পরে জুই চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দেয়। শান্ত গিয়ে জুইয়ের মাথার কাছে বসে কপালে হাত দিয়ে....
-এখন কেমন লাগছে?(শান্ত)
-হুমম, ভালো(জুই)
-নিজের শরীরের কোনো যত্ন নেও নাই কেনো?
-যে শরীরের খেয়াল রাখার কথা সে ই তো কাছে নাই
-কে বলছে কাছে নাই? এই তো আমি বলে জুইয়ের কপালে চুমু খায়।
দুজন গল্প করতে করতে শান্ত সবকিছু বলে দেয়....
.
তখন এনি রুমে প্রবেশ করে।
এনি এসে জুইয়ের পাশে এসে বসে হাউমাউ করে কান্না করে দেয়।
-জুই বইন আমাকে মাফ করে দিস,আমি কেনো এমন হয়ে গেছিলাম আমি নিজেই জানিনা বলে কান্না করতে থাকে।(এনি)
-আরে কি করছিস কি?(জুই)
-আমি খুব খারাপ তাই না রে? যে মেয়েটার সাথে আমি ক্লাস ওয়ান থেকে পড়ালেখা করি তার সাথে কিভাবে এসব করলাম। জুই আমাকে ক্ষমা করে দে।
-আরে এসব কি করছিস? আমি না তোর বেস্টু
-এটা আমার মনে ছিলো না রে।
তোর মতো মেয়ের সাথে আমার এসব করা ঠিক হয় নাই।
-আচ্ছা এসব বন্ধ করবি নাকি না?
-শান্ত তোকে খুব ভালোবাসে,এতদিন ওর সাথে থাকছি ঠিক ই কিন্তু একদিন ও বিছানা শেয়ার করা হয় নাই। এই শান্ত শোন জুইরে কিন্তু অনেক অনেক ভালোবাসবি আর এই বছরের মধ্যে প্রেগন্যান্ট বানাবি বলে এনি দাড়িয়ে যায়,
আর এই শান্ত এখন অন্তত একটা হাসি দে,তোর হাসি মুখ অনেক দিন হয় দেখা যায় না।
-শান্ত তখন মুচকি হেসে কান্না করে দেয়।অপরদিকে জুইয়ের ও একই অবস্থা।
.
এগুলো বলেই এনি চলে গেলো...চোখে তার পানি..
এগুলো কতো যে কষ্টে বলেছে কেউ সেটা না বুঝলেও জুই ঠিকই বুঝেছে...জুই এনিকেই দেখেই বুঝতে পেরেছে এনি কতটা change হয়ে গেছে আর কতটা শান্তকে মন থেকে ভালোবাসে....!!
.
তারপর,
-শান্ত তোমার কাছে একটা জিনিস চাইবো দিবে..? (জুই)
-আরে....তুমি জান চাইলেও দিয়ে দিবো... (শান্ত)
-তুমি এনিকে মেনে নাও (জুই)
-কিহ্......তুমি এসব কি বলছো..! পাগল হয়ছো..?
পারবো না..আমি তোমাকেই চাই.. (শান্ত)
- তুমি কিন্তু দিতে চাইছো.এখন না বলছো, এটা ঠিক না...
তারপরও তোমার সাথে এনির বিয়ে হয়ে গেছে & এনি আমার best friend বোনের মতো...সে সব কিছু না বুঝে এগুলো করে ফেলেছে..
আর এখন দেখো তোমাকেই পাগলের মতো ভালোবাসে, ওর চোখে তোমার জন্য ভালোবাসা ছাড়া এক বিন্দুপরিমানও অহংকার নেই...
তাছাড়াও আমার জীবণটাও তো সেই ফিরিয়ে দিলো...এতোকিছুর পরও কিভাবে আমি তার সাথে এমনটা করবো..!
আমি কখনই পারবো না...
হ্যাঁ আমি তোমাকে পাবো না ঠিক আছে...কিন্তু তোমাকে ভালোবেসে যাবো...আর এই ভালোবাসাতে পাওয়ার আকাঙ্খা থাকবে না... (জুই)
জুই শান্তর কাছে হাত জোর করে এগুলো বলতে থাকলো
শান্তর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছিলো আর জুইও কান্না করছিলো..
এক পর্যায়ে শান্তকে মানিয়ে নিতে পারলো জুই.....
.
এদিকে,
এনি রাস্তায় বের হয়ে ল্যাম্পপোস্টের আলোতে হাটতে থাকে আর ভাবতে থাকে,আমি তো শান্তকে প্রথম ভালোবেসে বিয়ে করিনি, জুইয়ের সাথে রাগারাগি করে এসব হয়ে গেছে। কিন্তু এখন তো সত্যিই শান্তকে ভালোবাসতাম।
থাক ভালোবাসলে কি সবাইকে পেতে হবে, এমন কোনো কথা আছে নাকি? আমি না হয় আমার বেস্টু টার দিকে তাকিয়ে একটু সেক্রিফাইস করলাম।
আল্লাহ তুমি তাদের সুখে রাইখো বলে এনি ল্যাম্পপোস্টের আলোতে হাটতে থাকে।
.
#কিছুদিন পর...
.
এনি দেখছে শান্ত তার সাথে আর তেমন খারাপ ব্যবহার করছে না, তবুও এনি তার অধিকার নিয়ে কাছে যাচ্ছে না...শান্তর এমন পরিবর্তন দেখে চিন্তিত হলেও কিছু বুঝতে পারছে না...
.
একদিন এনির ফোনে কল আসে....কলটা হচ্ছে জুইয়ের....
-hmm...dost কেমন আছিছ (এনি)
-অনেকটাই ভালো আছি রে....তুই কেমন আছিছ..? (জুই)
- আছি মোটামোটি ভালো (এনি)
-তোর সাথে কিছু কথা ছিলো.. (জুই)
-hmm...বল..! (এনি)
-ফোনে না...আজ বিকেলে একটু দেখা কর...! (জুই)
-আচ্ছা ঠিক আছে... (এনি)
এনি একটু চিন্তিত হয়ে পড়লো..কি বলতে চাই জুই..! আবার কিছু সমস্যা হইলো নাকি...!
এনি আর জুই বিকেলে একটা পার্কে দেখা করলো...
-কিরে কখন আসলি..! (জুই)
-এইতো 15 মিনিট হলো.... (এনি)
-sorry re dost...late হয়ে গেলো...( জুই)
-it's ok.. (এনি)
জুই দেখলো এনি অনেকটাই বিষন্ন হয়ে আছে তবুও হাসি খুশি থাকার অভিনয় করছে...জুই সব বুঝতে পারছে...
এভাবে অনেকটা সময় কাটানোর পর বাসায় যাবে এনি বিদায় নিয়ে চলে আসবে তখনই জুই এনিকে পেছন থেকে ডাক দেয়...
- এনি শোন..!! (জুই)
-এনি পেছন ঘুরে বলে..কিছু বলবি..? (এনি)
- Hmm...আসল কথাটাই তো বলা হয় নি.. (জুই)
- Hmm...বল..! (এনি)
- Thank u... (জুই)
- কেনো..!
- আমার জন্য এতো কিছু করার জন্য....
- আরে পাগলি তুই আমার brstu না...!! এটা তো আমাকে করতেই হবে...।
(এটা বলে দুজনই একটু হাসে...)
- আরেকটা কথা. ছিলো.! (জুই)
- আবার কি কথা...! (এনি)
-কথাটা রাখতে হবে কিন্তু..! (জুই)
-hmm...অবশ্যই রাখবো...হাজার হোক তুই আমার বোনের মতো...বল..! (এনি)
- শান্তকে সারাজীবণ আগলে রাখতে পারবি না...! (জুই)
(এনি এটা শুনেই একেবারে থমকে দাড়িয়ে যায়...)
- কিহ্.....! এগুলো কি বলিস...! (এনি)
- hmm...আমি ঠিকই বলছি....শান্তকে তুই আগলে রেখিস dost... (জুই)
(এনি এটা শুনে দৌড়ে গিয়ে জুইকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়...)
-আরে পাগলি কাদিস কেনো...! দেখ ছোট বাচ্চাদের মতো কাদিস না...!
তুই কিছু না বললে আমি কিছু বুঝি না মনে বলছে...!
আমি সব বুঝি...আর আমার বোনটার জন্য এইটুকু স্যাক্রিফ্রাইজ করতে পারবো না..?
অবশ্যই পারবো....এখন থেকে শান্ত তোর...শুধুই তোর... (জুই)
(এদিকে এনি জুইকে জড়িয়ে রেখে কেদেই যাচ্ছে...কিছু বলার ভাষা নেই তার....)
((মনে রাখবেন...সম্পর্কে স্যাক্রিফ্রাইজ জিনিসটা অতি জরুরী জিনিস))
.
১৫ দিন পরে সকলের সম্মতি নিয়ে আবার ধুমধাম করে শান্ত আর এনির বিয়ে ঠিক হয়।
বিয়েটা জুই থেকেই সম্পন্ন করে.....
.
এনি তার মা-বাবাকে সালাম করে।
জুই এনির দিকে চেয়ে সামনে আসতে বলে। জুই এনিকে ধরে বাসর রুমে নিয়ে যায়।
সব ঝামেলা শেষ হওয়ার পরে রাত ১১.৩০ মিনিটের দিকে শান্ত রুমে গিয়ে দেখে এনির সাথে জুই হেসে হেসে গল্প করতাছে।
শান্ত যাওয়ার পরে জুই দাড়িয়ে যায়।
-তোদের দুজনকে বেশ মানিয়েছে।
সারাজীবন এইভাবে থাকিস।
শুভরাত্রী বলে জুই রুম থেকে বের হয়ে যায়।
জুই রুম থেকে বের হওয়ার পরে শান্ত রুম লক করে এনির কাছে আসার পরে এনি শান্তকে জড়িয়ে ধরে ঠোটের স্পর্শ দিয়ে কান্না করতে থাকে।
শান্ত এই কান্নাতে কোনো বাধা দিচ্ছে না কারন এটা কোনো কষ্টের কান্না না, এটা সুখের কান্না, এর অনুভূতি অন্যরকম।
শান্ত এনির মাথা টা উঠিয়ে কপালে চুমু দিয়ে বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
জনম জনম টিকে থাকুক এমন পবিত্র ভালোবাসার বন্ধন।
.
ভালো থাকবেন সবাই
আল্লাহ হাফেজ..
.
.
♥-----"""The End""-----♥

গল্প :-
-------"""অহংকারী মেয়ে"""
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
.
★--------পর্ব :- ০৭ ~~~~

.
.
ঠোটে আরেকটা চুমু দেয় ঠিক তখন শান্তর মোবাইলে ফোন আসে,শান্ত মোবাইলটা বের করে দেখে জুই ফোন করছে, এনি জুই এর নাম্বার দেখতে পেয়ে শান্তর হাত থেকে মোবাইলটা কেড়ে নিয়ে ফোন কেটে দেয়।
-ফোন টা কাটছো কেনো?(শান্ত)
-আমার মন চাইছে তাই কাটছি বলে জুই এর নাম্বারটা ব্লক লিস্টে ফেলে।
-মোবাইল দেও
-এনি তখন শান্তর কোলে উঠে বসে
-এনি প্লিজ আমার সাথে এসব করো না
-কি করবো?
-আমাকে ছাড়ো প্লিজ
-না ছাড়লে?
-মানে
-এনি তখন শান্তর নাকে মুখে অনেকগুলো কিছ করে শান্তর বুকে মাথা রাখে
-শান্ত আর থাকতে না পেরে এনিকে ঝাড়ি দিয়ে ফেলে দেয়।
-এখন কিন্তু বাবাকে ডাক দিবো
-তোর বাবাকে ডাক দে
-সত্যি সত্যি কিন্তু ডাক দিবো
-এই ভয়টা কাজে লাগিয়ে তুই এতক্ষণ আমার সাথে এসব করছিস
-তুই তোকারি করতাছো কেনো?
-মন চাইছে তাই করতাছি।
-বেশি ভালো হবে না
-বেশি খারাপ কি হবে?
-এনি তখন অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে যে কিভাবে শান্ত এত পরিবর্তন হলো? আগে কতো মানুষের সামনে থাপ্পর মারছি তখন মুখ ফুটে কিছু বলে নাই আর এখন কথায় কথায় উত্তর দেয় আর আগের মতো ভয় ও পায় না। এসব ভাবতে গাড়ি একসময় এনির ফুপির বাড়ির সামনে এসে থামে।
সবাই গাড়ি থেকে নামার পরে শান্ত সবাইকে সালাম দিয়ে রুমে ডুকে।
সবার সাথে কথা বলে শান্ত রুমে এসে শুয়ে আছে, শান্ত যখন প্রায়ই ঘুমিয়ে গেছে তখন এনি রুমে ডুকে শান্তর উপরে শুয়ে পরে, নিজের উপর ওজন আবিষ্কার করার পরে শান্ত চোখ খুলে, শান্ত এসব কিছু দেখে এনিকে তার উপর থেকে করে সরিয়ে দাড়িয়ে যায়।
-এনি তোমার প্রবলেম টা কি? আমার সাথে কেনো এসব করো?(শান্ত)
-আমি আমার হাজবেন্ডের সাথে করতাছি
-আমি তোমাকে গ্রহন করিনি
-তুমি করো নায় কিন্তু আমি গ্রহন করছি
-বিয়ে কখনো এক পক্ষের কথা দিয়ে হয় না, বিয়ে হতে হলে দুই পক্ষের মত লাগে।
-তাহলে এ বিয়েতে মত দিলা কেনো?
-তোমার বাবার জন্য
-তাহলে আমার সাথে সুখে সংসার করো
-তোমার সাথে সংসার করবো? তা ও আবার সুখের? বলে শান্ত হাসতে থাকে
-হাসো কেনো?
-হাসির কথা বললে তো হাসি আসবেই
-এখানে হাসির কথা কি বলছি?
-এই যে সুখের সংসার করবা সেটা আর কি
-সুখের সংসার করতে পারি না?
-যে মেয়ে আমাকে সবার সামনে লজ্জা দিতে ভালো লাগতো সবার সামনেই থাপ্পর দিতো আর সে আমার সাথে সুখের সংসার করবে কিভাবে?
-সংসার কি করতে পারে না?
-এনি আমি জুইকে ভালোবাসি , আমাকে জুই পাবে আর কেউ না
-জুই এর জন্য এতো পাগল হলে কেনো?
-কেনো হবো না?
-জুই আর আমার মধ্যে কি পার্থক্য আছে?
-কি পার্থক্য নাই সেটা বলো?
-ও সুন্দর তা ঠিক আছে, আমি কি সুন্দর না?
-হ্যা
-তো আর কিসের পার্থক্য?
-ওর মন টা পাক পবিত্র আর তোমার মন টা ডাস্টবিনের চেয়েও নোংরা।
এটা শুনে এনি মন খারাপ করে সোফায় গিয়ে বসে পরে।
শান্ত রুম থেকে বের হওয়ার পরে এনি দরজা আটকিয়ে বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবে শান্ত তো মিথ্যা কোনো বলেনি,আমার মন টা আসলেই নোংরা । এই নোংরা মন নিয়ে কখনো কি ভালোবাসা যায়?
তখন এনির মা দরজায় নক করে।
-শান্ত কোথায়?(এনির মা)
-রুম থেকে বের হয়ছে ৮-১০ মিনিট হয়
-কার সাথে বের হয়ছে?
-মনে হয় রাফির সাথে বের হয়ছে(এনির ফুফাতো ভাই)
-ওহহ, ফ্রেশ হয়ে খেতে আয় বলে এনির মা চলে যায়।
শান্ত বারান্দায় গিয়ে সাথে সাথে জুইকে ফোন করে।
জুই ও শান্তর ফোনের অপেক্ষায় বসে ছিলো তাই সাথে সাথে ফোন রিসিভ করে।
-এই কেমন আছো,তুমি ঠিক আছো তো?(জুই)
-হুম ভালো
-এনি কিছু বলছে?
-ও আর কি বলবে? মেন্টাল মাইয়া
-ওর কাছ থেকে সাবধানে থাকবা
-ওকে, খাইছো?
-না খাবো,তুমি খাইছো?
-তুমি আগে খাও তারপরে আমি খাবো
-ওকে
-ওকে বায়
-এই শুনো
-কি?
-উমমম্মাহহ
-পাগল একটা
-পাগলী
শান্ত গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে বিকালের দিকে সবার রিকুয়েস্টে এনির কাজিনদের সাথে শান্ত ও বের হতে হয়।
সবাই যখন হাটছে আর হাসহাসি করতাছে তখন এনি গিয়ে শান্তর হাত ধরে হাটা শুরু করছে,শান্ত তখন এনির দিকে তাকায় তখন এনি বুঝতে পারে যে শান্তর ইচ্ছা নাই তা ও এনি শান্তর হাত ধরে হাটছে আর চারদিকের প্রকৃতি দেখতাছে।
এনির ফুফাতো ভাইয়ের বউ সহ তাদের সাথে বের হয়।
হঠাৎ শান্তকে বলে
-শান্ত ভাই এই পর্যন্ত কতোবার হয়ছে?(ভাবি)
-কি কত বার হয়ছে?
-বুঝেননা নাকি?
-স্পষ্ট করে বলেন
-আরো স্পষ্ট করে বলবো?
-না বলা লাগবে না
-আচ্ছা আজ রাতে কত বার হয়ছে?
-আরে কি কত বার হয়ছে?
-কিরে এনি কত বার হয়ছে?
-রাতে দুই বার হয়ছে,এখন চুপ করো।তখন সবাই হাসাহাসি শুরু করছে ।
এসবের মাঝে জুই এর ফোন আসে,
.শান্ত মোবাইল হাতে নেওয়ার পরে এনি উকি দিয়ে দেখে জুই ফোন করছে তখন সবার সামনে শান্তকে বলে দেখি তো মোবাইলটা, এখানে দেও বলে এনি মোবাইলটা নিয়ে এনির কাছে রাখে।
তারা সবাই ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে সবাই বাসায় ফিরে।
শান্ত আর এনি তাদের রুমে প্রবেশ করার পরে...
-মোবাইল টা দেও (শান্ত)
-না দিবো না
-মানে কি?
-মানে খুব সোজা, মোবাইল দিবো না, যখন কোনো জায়গায় ফোন দিবা তখন আমার মোবাইল নিয়ে কল দিও
-বলছি মোবাইল দিতেতে
-না দিবো না
-শান্ত যখন এনির হাত থেকে জোর করে নিতে চাচ্ছে এনি মোবাইল ফ্লোরে ফেলে দেয়। ফ্লোরে ফেলার সাথে সাথে মোবাইল এর ডিসপ্লে টা কয়েক জায়গায় দিয়ে ভেঙ্গে যায়।
শান্ত তখন মোবাইল টা নিচ থেকে উঠিয়ে দেখে ডিসপ্লে টা ভেঙ্গে গেছে।
শান্ত এনির দিকে চেয়ে, যা করো ভালোই করো বলে শান্ত এনির কাছ থেকে চলে যায়।
এনি, জুই আর শান্তর মাঝে এভাবে কয়েকদিন চলার পরে পরীক্ষা চলে আসে,শান্ত তখন পড়া লেখায় মন দেয়।
পরীক্ষা শেষে পূর্বের মতো শান্ত ভার্সিটির প্রথম হয়।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ব্যাংকের ম্যানেজার পদের একটা পরীক্ষা আসে।
শান্ত এটা তে এপ্লাই করার পরে শান্ত পরীক্ষা দিয়ে এটাতেও পাশ করে।
এই খবর শুনে সবাই খুশি হয়, জুই একদিন শান্তকে ডেকে একসাথে মিট করে।
তাদের মিট হওয়ার সাথে সাথে শান্ত জুইকে দেখতে পেয়ে চোখের পানি ছেড়ে দেয়, কারন জুই আগের মতো নেই,জুই আগে যেভাবে হাসতো এখন সেভাবে হাসে না , আগে চোখে কাজল দিয়ে নীল বোরকায় নীল হিজাব পরে আসতো কিন্তু এখন চোখে আর কাজল লাগে না, রাত জাগতে জাগতে চোখের নিচে কালো দাগ গ তুলে ফেলছে।
জুই শান্তকে দেখে চোখ দিয়ে ননস্টপ পানি ফেলতে থাকে।
-জুই এখন আর কান্না করতে হবে না, তোমার শান্ত ভালো একটা চাকরি পেয়ে গেছে।এই কয়দিনের মধ্যে তোমাকে আমি ঘরে তুলবোই
-এই অপেক্ষায় এতদিন বেচে আছি।
-চলো(শান্ত)
-কোথায়?(জুই)
-রেস্টুরেন্টে যাবো
-কেনো?
-আগে আসো তারপর বইলো কেনো
-রেস্টুরেন্ট থেকে তো এটাই ভালো
-ভালো সেটা জানি কিন্তু এখন আমার সাথো আসো বলে জুইকে শান্ত রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায়।
শান্ত রেস্টুরেন্টে ডুকে কিছু অর্ডার করে, ওয়েটার খাবার দিয়ে যাওয়ার পরে শান্ত নিজ হাতে জুইয়ের মুখে বাড়িয়ে দেয়। জুই তা দেখে কান্না করে দেয়।
-আরে কান্না করো কেনো? খেয়ে নাও বলছি
-এভাবে সারাজীবন খাওয়াতে পারবা?
-ইনশাল্লাহ পারবো
-যদি হা পারো তাহলে কিন্তু আমার মরা......
-কথা শেষ না করতে করতে শান্ত হাত দিয়ে কিছু খাবার মুখে ডুকিয়ে দেয়।
-আর এসব বলবা তাহলে খবর আছে বলে দিলাম।
এভাবে তারা আরো কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে শান্ত জুইকে নিজের সাথে করে নিয়ে বাসায় দিয়ে আসে।
শান্ত বাসায় আসার পরে এনি শান্তকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে পিঠে উঠে কানে হালকা করে কামড় মারে।
-কি করছো এসব? ছাড়ো বলছি(শান্ত)
-না ছাড়বো না
-না ছাড়লে কিন্তু খারাপ হবে
-ছাড়বো না, কি করবা করো বলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
শান্ত তখন জোর করে নিজকে ছাড়িয়ে নেয়।
-রুমে আসো তোমার সাথে কথা আছে।(শান্ত)
-আমি কি কিছু ভুল শুনতাছি?
-না ভুল না
-ওহহ আমি তো মনে করছিলাম কোনো স্বপ্ন বুঝি দেখতাছি
-এসব মনে হলো কেনো?
-তুমি আমাকে রুমে ডেকে নিয়ে কথা বলবা তাই
-ওহহ,রুমে আসো বলে শান্ত রুমে চলে যায়।
কতক্ষণ পরে এনি রুমে আসে।
-কি বলবা বলো(এনি)
-এখন কিছু কথা বলবো
-কি বলবা বলো
-প্রশ্নগুলো একটু কঠিন হতে পারে
-আরে আগে করো তো
-তুমি আমাকে কি দেখে লাভ করছো?
-এখন এসব জানার কি আছে?
-যা বলছি তা বলো
-তোমাকে দেখে তোমার প্রেমে পরছি
-প্রেমে পরার কারনটা কি?
-এনি তখন চুপ হয়ে যায়।
-আমি তোমার কারনটা বলে দেয়, তুমি আমাকে নিজের মন থেকে কখনো ভালোবাসনি, ভালোবাসছে শুধু মাত্র জুই এর উপর প্রতিশোধ নিতে। ঠিক কি না?
-এনি তখন চুপ হয়ে আছে
-যা বলছি তার উত্তর দেও
-এখন তো তোমাকে সত্যি ভালোবাসি
-এটা সত্যিকারের ভালোবাসা না
-তো কি?
-তুমি ফেইক লাভার
-কিভাবে?
-কারন তুমি একজনের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমাকে ভালোবাসছ
-এসব বাদ দাও না
-কেনো বাদ দিবো? আচ্ছা জুইয়ের কি তোমাদের থেকে কোনো কিছু কম আছে?
-না
-তাহলে তুমি তার সাথে এমনটা করলে কেনো? তুমি কি ইদানিং জুইকে দেখছো?
-না
-তা দেখবা কেনো? জুই তোমার কি হয়? শত্রু
তাই না?
-চুপ হয়ে আছে
-চুপ হয়ে আছো কেনো?
জুই তো তেমাকে প্রথম ই বলছিলো যে আমাকে পছন্দ করো কি না তখন তো জুইয়ের সাথে বলছিলা কাজের ছেলেকে আমি পছন্দ করবো? বলে অনেক হাসি তামাসা করছো আর তাই ও আমাকে ভালোবাসছে।আর তাই তুমি জুইয়ের উপর প্রতিশোধ নিতে গেছো।আচ্ছা শুনো,জুই কি তোমাকে কখনো উপকার করে নি?
-হ্যা করছে
-উপকার কতবার করছে?
-অনেকবার
-আর তোমার অনিচ্ছয় কাজ করছে কয়টা?
-একটা
-হুম সেটা হলো ও তোমার কথায় অবাদ্য হয়ে আমাকে ভালোবাসছিলো,রাইট?
-হুমম
-জুই তোমাকে অনেকগুলো উপকার করছে আর তেমার কথার অমান্য করছে একবার। তুমি একবার অন্যায় করার জন্য প্রতিশোধ নিয়ে নিচ্ছো আর এতদিনের উপকারের কি প্রতিদান দিছো?
-এনি এসব কথা শুনে শান্তর দিকে অবাক চোখে তাকায়।
-জুইকে এখন দেখলেও চিনতে পারবে না বলে শান্ত এনির সামনে কান্না করে দেয়।
শান্তর মেবাইলে তখন একটা ফোন আসে।
মোবাইল বেড় করে দেখে জুইয়ের নাম্বার থেকে ফোন আসছে।
শান্ত মোবাইল রিসিভ করার সাথে সাথে কেউ একজন বলে ভাইয়া তারাতারি সদর হসপিটালে এসো বলে .............. ♥
.
.
♥----"To be Continue"---♥

গল্প :-
--------""অহংকারী মেয়ে""
.
লেখক:- #Nayem_Ahmed
.
★--------পর্ব :০৬ ~~~
.
.
শান্ত রুমে প্রবেশ করার পরে এনি দরজা লাগিয়ে শান্তর দিকে এগুচ্ছে আর শাড়ির কুচিগুলো এক এক করে খুলছে,এনি যখন শান্ত এর খুব কাছাকাছি চলে আসে শান্ত তখন এনিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়।
এনিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার পরে এনি অবাক হয়ে শান্তর দিকে তাকিয়ে....
-কি হয়ছে(এনি)
-তুমি আমার কাছে আসো কেনো?
-এখন তুমি আমার স্বামী হও, আমার যা মন চাই তা করবো
-আমি কিছু করতে পারবো না
-কেনো?
-আমার এই শরীর শুধু জুই এর জন্য
-এখন কিন্তু খুব খারাপ হবে
-কি খারাপ করবা তুমি? মারবা? মারো
-এত কথা না বলে আসো ঘুম আসছে বলে শান্তর হাত ধরে
-শান্ত হাত ঝাড়া দিয়ে, এই হাতে ধরার শুধু জুই এর অধিকার আছে তোমার না
-জোর করে আদায় করতে হবে?
-কি জোর করবা?
-বলছি ভালোই ভালোই চলো একসাথে শুয়ে ঘুমায়
-শান্ত তখন পাতলা একটা কাথা নিয়ে সোফার উপরে গিয়ে শুয়ে পরে।
এনি শান্তর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
শান্ত সোফায় শুয়ে নাকে মুখে কাথা দিয়ে জুই এর কথা ভাবতে চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।
আর এনি খাটের উপর বসে বসে শান্তর দিকে তাকিয়ে আছে।
সকাল হওয়ার পরে সবাই একসাথে নাস্তা করার পরে শান্ত বাহিরে যাবে এমন সময়...
-কোথায় যাও?(এনি)
-মন যেখানে চায় সেখানে যাবো
-এভাবে কথা বলো কেনো?
-আমি এভাবেই কথা বলি
-বললেই তো পারো জুই এর সাথে দেখা করতে যাচ্ছো
-ভালোই আন্দাজ করতে পারো
-জুই এর সাথে যাতে কখনোই না দেখি
-জুইকে বিয়ে করবো
-ঐ চুপ করবি নাকি এখন লাঠি পেটা করবো
-বড় গলা করে লাভ নাই, বায়
বলে শান্ত বাহিরে চলে যায়।
জুই এর সাথে দেখা হওয়ার পরে জুই অন্যদিকে চেয়ে আছে আর কতক্ষণ পর পর নাক টানছে তাতে শান্ত বুঝতে পারে ও কান্না করছে।
-জুই আমি এখন কি করবো বলো? আমি কিচ্ছু বুঝতাছি না
-ওর সাথে বাসর করছো, এখন হানিমুনে যাবা
-জুই এসব কি বলছো?
-মিথ্যা বলছি নাকি?
-আরে বাবা আমাকে তুমি না বুঝলে কে বুঝবে? বলছি তো আমি পরিস্থিতির স্বীকার।
-শান্ত আমি পারতাছি না বলে একটু আওয়াজ করে কান্না করে দেয়।
-শান্ত ও জুইকে বুকে নিয়ে কান্না করে দেয়
-শান্ত আমি কি তোমাকে হাড়িয়ে ফেলবো?
-শান্ত তখন দু হাতে মাথার দুপাশে রেখে চোখে চোখ রেখে,আমাকে বিশ্বাস করো?
-হ্যা
-তাহলে আবারো শুনো,এই শান্তর সবকিছু জুই এর জন্য
-জুই তখন শান্তকে জড়িয়ে ধরে ফেলে
তখন শান্তর ফোনে কল আসে।
শান্ত পকেট থেকে মোবাইল বের করে দেখে এনি ফোন করছে,ফোনটা ধরার পরে...
-কোথায় তুমি?(এনি)
-বউয়ের কাছে(শান্ত)
-কিহহ
-হ্যা
-মজা করতাছো?
-ভিডও কল দেও, তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছা করতাছে বলে ফোন টা কেটে দেয়।
-এই তোমার মাথায় কি ভূত চাপছে?
-না তো
-তাহলে যে বললা ভিডিপ কল করতা
-হুমম
-কিন্তু কেনো?
-ওয়েট বলে শান্ত এনিকে ভিডিও কল করে।
এনি হাসি মনে রিসিভ করে, এনি শান্তকে দেখতে পেয়ে খুশি হয়ে যায়।এমন সময় শান্ত জুইকে কাছে টেনে কিছ করে আর এনিকে দেখাচ্ছে
-শান্ত এসব কি করছো? খুব খারাপ হবে কিন্তু
-হি হি হি বেশি খারাপ হবে?
-হ্যা
-তাহলে আরো দেখো বলে জুইকে আরো কাছে টেনে লিপ কিছ করে।
কিছ করে চেয়ে দেখে ভিডিও কল কেটে দিছে।শান্ত তখন বুঝতে পারে হয়তো সহ্য করতে পারছে না তাই ফোন কেটে দিছে।
-এসব করার কি দরকার ছিলো?(জুই)
-মন চাইছে তাই করছি এখন এসব বাদ দাও বলে জুই এর সাথে আরো কতক্ষণ সময় কাটিয়ে বাসার দিকে রওনা দেয়।
বাসায় যাওয়ার পরে শান্ত রুমে গিয়ে শুয়ে আছে এমন সময়.....
-এসব কি?(এনি)
-কোন সব?
-জুই এর সাথে এসব কি করছো?
-বউয়ের সাতে স্বামী এসব করেই
-আমি তোমার বউ,আমার সাথে করো
-হি হি হি
-হাসো কেনো?
-নতুন বছরের সেরা জোকস টা শোনলাম তাই হাসি আসতেই পারে
-এটা কি জোকস?
-কেনো নয়? তুমি কোনো মেয়ে না, তুমি কিছু মানুষের জীবনে বড় একটা বাধা
-রাগ উঠাবানা বলে দিলাম
-রাগ উঠিয়ে দিলে কি করবা
-থাপ্পর দিবো
-থাপ্পর দিবা?
-হ্যা
.
.শান্ত তখন ঠাস ঠাস করে কয়েক টা থাপ্পর মারে।
-আমার আশে পাশে যেনো তোকে না দেখি বলে শান্ত রুম ছেড়ে চলে যায় (শান্ত)
এই প্রথম শান্ত এর মুখ থেকে তুই করে শুনে এনির একটু খারাপ লাগছে।
এনি কান্না করতে করতে একসময় ফ্রেশ হয়ে ছাদে গিয়ে বসে বসে ভাবতে থাকে শান্ত আগে এমন ছিলো না কিন্তু এখন কেনো এমম হলো?
এসব ভেবে এনি নিজে নিজেই কান্না করে দেয়।
রাতে রুমের ভিতরে ডুকে দেখে শান্ত শুয়ে আছে তখন এনি শাড়ির আচল মেলে শান্তর উপর ঝাপিয়ে পরে শান্তকে কয়েকটা কিছ করে ফেলে।
শান্ত হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে,শান্ত কখনো এসবের জন্য প্রস্তুত ছিলো না।
শান্ত রেগে....
-এসব কি করছো?(শান্ত)
-আমার স্বামী কে আমি করছি
-ওমাহহহহ
-কি?
-তুমি আবার স্বামী কে আদর ও করতে পারো?
-আমি কি তোমার স্বামী নাকি?
-হ্যা
-আমি তো জুই এর স্বামী
-অপপস শুধু জুই আর জুই
-কি হয়ছে?
-জুই এর মধ্যে এমন কি আছে যেটা আমার মধ্যে নেই?
-তোমার অনেক কিছুর অভাব আছে
-প্লিজ তুমি আমাকে ভালোবাসো , তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসবো
-স্যরি , এই শান্ত শুধু জুইকে ভালোবাসে
-আমি তোমাকে ভালোবাসি
-আমি ভালোবাসি না
-কেনো, কি কারনে?
-অনেক কারন আছে
-কারনগুলো বলো
-জুইকে অনেক বেশি ভালোবাসি
- ওহহহহ শীট আবার জুই??
-হুম শান্তর মুখে সারাক্ষণ ই জুই থাকবে।
-আমাকে কি একটা চান্স দেওয়া যায় না?
-না
-কেনো?
-কারন একটাই জুইকে ভালোবাসি
-আমি তোমাকে ভালোবাসি
-হা হা হা
-কি? হাসো কেনো?
-ভালোবাসি কথাটা শুনে হাসি পেলো আর কি
-এতে হাসি পাওয়ার কি আছে?
-আমাকে তুমি ভালোবাসো না
-ভালোবাসি
-এটা ফেইক লাভ কারন কয়দিন আগেই তুমি আমাকে সহ্য করতে না আর এখন ভালোবাসা উতলে উঠছে
-কেউ কি অল্প সময়ে লাভ করতে পারে না?
-পারে কিন্তু তুমি পারো না বলে বিছানা থেকে পাতলা কাথা নিয়ে সোফায় গিয়ে শুয়ে পরে।
সকাল সকাল শান্ত বাসা থেকে বের হওয়ার সময়...
-কোথায় যাও?(এনি)
-তোমার কাছে বলতে হব?
-হ্যা
-আমার মন যেখানে চায় সেখানে যাবো
-আমাকে নিয়ে যাও
-আমি পারবো না
-কেনো?
-এমনি
-জুই সাথে থাকবে তাই তো?
-ওমাহহ এত ভালো আন্দাজ করতে পারো?
-এনি তখন মন খারাপ করে ফেলে
-বায় বলে শান্ত বের হয়ে যায়।
জুই এর সাথে শান্তর দেখা হওয়ার পরে শান্ত জুই এর হাত ধরে জুই এর চোখে চোখ রাখে
-এই কান্না করছো কেনো?(শান্ত)
জুই তখন শান্তর চোখের দিকে চেয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে থাকে
-আরে কি হয়ছে সেটা তো বলো
-আমি আর পারতাছি না
-জুই আরেকটু ওয়েট করো প্লিজ
-শান্ত যদি ৬মাসের মধ্যে আমাকে তোমার করতে না পারো তাহলে তোমার কসম আমার মরা মুখ দেখবা বলে অন্যদিকে চেয়ে শব্দ করে কান্না করে দেয়।
-এসব দেখে শান্ত ও নিজকে কন্ট্রোল করতে না পেরে কান্না করে দেয়।
শান্ত জুইকে বাসার কাছে নামিয়ে দিয়ে মন খারাপ করে বাসায় আসে।
শান্ত বাসায় আসার পরে এনির বাবা শান্ত কে ডাক দেয়।
এনির বাবা ডাক দেওয়ার পরে শান্ত ভাবে এনি কিছু বলে দেয় নাই তো? যদি কিছু বলে দেয় তাহলে খারাপ কিছু হয়ে যাবে,এসব ভাবতে ভাবতে ভয় নিয়ে এনির বাবার সামনে যায়।
-বাবা আজকে সবাই মিলে তোমার ফুপির বাসায় যাবো, বিকালের দিকে রেডি হয়ে যাইয়ো
-জি আচ্ছা
-ফ্রেশ হয়ে আসো,একসাথে খেতে বসবো
-ওকে বলে শান্ত সে রুমে যেতে যেতে মনে মনে বলে যেটা ভাবছিলাম সেটা না।
-এতক্ষণে আসতে মন চাইছে?(এনি)
-নিজের পছন্দের মানুষের কাছে কার না থাকতে ভালো লাগে?
-ওহহ তার মানে এতক্ষণ জুই এর সাথে ছিলে
-হ্যা বলে শান্ত সবকিছু নিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে।
বিকাল হওয়ার পরে সবাই বের হবে, গাড়িতে উঠার সময় শান্ত আর এনি পিছনের সিটে আর এনির বাবা আর মা তাদের সামনের সিটে বসে।
গাড়ি তার নিজস্ব গতিতে চলছে হঠাৎ এনি শান্তকে কিছ করে।
-এসব কি?(জুই)
-আদর করছি বলে আরেকটা দেয়
-আরে এসব কি করতাছো?(শান্ত রেগে গিয়ে)
-বাবাকে ডাক দিবো?
-ব্ল্যাকমেইল করতাছো?
-সোজাসুজি রাস্তায় যখন পায় না তাই বাকা রাস্তায় তো যেতেই হবে বলে আরেকটা কিছ করে
-এনি ভালো হচ্ছে না কিন্তু
-কি করবা?
-প্লিজ এসব বন্ধ করো,আমার ভালো লাগছে না
-ঠোটে আরেকটা চুমু দেয় ঠিক তখন শান্তর মোবাইলে ফোন আসে,শান্ত মোবাইলটা বের করে দেখে জুই এর নাম্বার থেকে ফোন আসছে। এনি জুই এর নাম্বার দেখতে পেয়ে শান্তর হাত থেকে মোবাইল টা কেড়ে নিয়ে.......... ♥
.
.
.
♥----"To be Continue"---♥