গল্প :-
-------"""অহংকারী মেয়ে"""
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
.
★--------পর্ব :- ০৭ ~~~~

.
.
ঠোটে আরেকটা চুমু দেয় ঠিক তখন শান্তর মোবাইলে ফোন আসে,শান্ত মোবাইলটা বের করে দেখে জুই ফোন করছে, এনি জুই এর নাম্বার দেখতে পেয়ে শান্তর হাত থেকে মোবাইলটা কেড়ে নিয়ে ফোন কেটে দেয়।
-ফোন টা কাটছো কেনো?(শান্ত)
-আমার মন চাইছে তাই কাটছি বলে জুই এর নাম্বারটা ব্লক লিস্টে ফেলে।
-মোবাইল দেও
-এনি তখন শান্তর কোলে উঠে বসে
-এনি প্লিজ আমার সাথে এসব করো না
-কি করবো?
-আমাকে ছাড়ো প্লিজ
-না ছাড়লে?
-মানে
-এনি তখন শান্তর নাকে মুখে অনেকগুলো কিছ করে শান্তর বুকে মাথা রাখে
-শান্ত আর থাকতে না পেরে এনিকে ঝাড়ি দিয়ে ফেলে দেয়।
-এখন কিন্তু বাবাকে ডাক দিবো
-তোর বাবাকে ডাক দে
-সত্যি সত্যি কিন্তু ডাক দিবো
-এই ভয়টা কাজে লাগিয়ে তুই এতক্ষণ আমার সাথে এসব করছিস
-তুই তোকারি করতাছো কেনো?
-মন চাইছে তাই করতাছি।
-বেশি ভালো হবে না
-বেশি খারাপ কি হবে?
-এনি তখন অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে যে কিভাবে শান্ত এত পরিবর্তন হলো? আগে কতো মানুষের সামনে থাপ্পর মারছি তখন মুখ ফুটে কিছু বলে নাই আর এখন কথায় কথায় উত্তর দেয় আর আগের মতো ভয় ও পায় না। এসব ভাবতে গাড়ি একসময় এনির ফুপির বাড়ির সামনে এসে থামে।
সবাই গাড়ি থেকে নামার পরে শান্ত সবাইকে সালাম দিয়ে রুমে ডুকে।
সবার সাথে কথা বলে শান্ত রুমে এসে শুয়ে আছে, শান্ত যখন প্রায়ই ঘুমিয়ে গেছে তখন এনি রুমে ডুকে শান্তর উপরে শুয়ে পরে, নিজের উপর ওজন আবিষ্কার করার পরে শান্ত চোখ খুলে, শান্ত এসব কিছু দেখে এনিকে তার উপর থেকে করে সরিয়ে দাড়িয়ে যায়।
-এনি তোমার প্রবলেম টা কি? আমার সাথে কেনো এসব করো?(শান্ত)
-আমি আমার হাজবেন্ডের সাথে করতাছি
-আমি তোমাকে গ্রহন করিনি
-তুমি করো নায় কিন্তু আমি গ্রহন করছি
-বিয়ে কখনো এক পক্ষের কথা দিয়ে হয় না, বিয়ে হতে হলে দুই পক্ষের মত লাগে।
-তাহলে এ বিয়েতে মত দিলা কেনো?
-তোমার বাবার জন্য
-তাহলে আমার সাথে সুখে সংসার করো
-তোমার সাথে সংসার করবো? তা ও আবার সুখের? বলে শান্ত হাসতে থাকে
-হাসো কেনো?
-হাসির কথা বললে তো হাসি আসবেই
-এখানে হাসির কথা কি বলছি?
-এই যে সুখের সংসার করবা সেটা আর কি
-সুখের সংসার করতে পারি না?
-যে মেয়ে আমাকে সবার সামনে লজ্জা দিতে ভালো লাগতো সবার সামনেই থাপ্পর দিতো আর সে আমার সাথে সুখের সংসার করবে কিভাবে?
-সংসার কি করতে পারে না?
-এনি আমি জুইকে ভালোবাসি , আমাকে জুই পাবে আর কেউ না
-জুই এর জন্য এতো পাগল হলে কেনো?
-কেনো হবো না?
-জুই আর আমার মধ্যে কি পার্থক্য আছে?
-কি পার্থক্য নাই সেটা বলো?
-ও সুন্দর তা ঠিক আছে, আমি কি সুন্দর না?
-হ্যা
-তো আর কিসের পার্থক্য?
-ওর মন টা পাক পবিত্র আর তোমার মন টা ডাস্টবিনের চেয়েও নোংরা।
এটা শুনে এনি মন খারাপ করে সোফায় গিয়ে বসে পরে।
শান্ত রুম থেকে বের হওয়ার পরে এনি দরজা আটকিয়ে বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবে শান্ত তো মিথ্যা কোনো বলেনি,আমার মন টা আসলেই নোংরা । এই নোংরা মন নিয়ে কখনো কি ভালোবাসা যায়?
তখন এনির মা দরজায় নক করে।
-শান্ত কোথায়?(এনির মা)
-রুম থেকে বের হয়ছে ৮-১০ মিনিট হয়
-কার সাথে বের হয়ছে?
-মনে হয় রাফির সাথে বের হয়ছে(এনির ফুফাতো ভাই)
-ওহহ, ফ্রেশ হয়ে খেতে আয় বলে এনির মা চলে যায়।
শান্ত বারান্দায় গিয়ে সাথে সাথে জুইকে ফোন করে।
জুই ও শান্তর ফোনের অপেক্ষায় বসে ছিলো তাই সাথে সাথে ফোন রিসিভ করে।
-এই কেমন আছো,তুমি ঠিক আছো তো?(জুই)
-হুম ভালো
-এনি কিছু বলছে?
-ও আর কি বলবে? মেন্টাল মাইয়া
-ওর কাছ থেকে সাবধানে থাকবা
-ওকে, খাইছো?
-না খাবো,তুমি খাইছো?
-তুমি আগে খাও তারপরে আমি খাবো
-ওকে
-ওকে বায়
-এই শুনো
-কি?
-উমমম্মাহহ
-পাগল একটা
-পাগলী
শান্ত গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে বিকালের দিকে সবার রিকুয়েস্টে এনির কাজিনদের সাথে শান্ত ও বের হতে হয়।
সবাই যখন হাটছে আর হাসহাসি করতাছে তখন এনি গিয়ে শান্তর হাত ধরে হাটা শুরু করছে,শান্ত তখন এনির দিকে তাকায় তখন এনি বুঝতে পারে যে শান্তর ইচ্ছা নাই তা ও এনি শান্তর হাত ধরে হাটছে আর চারদিকের প্রকৃতি দেখতাছে।
এনির ফুফাতো ভাইয়ের বউ সহ তাদের সাথে বের হয়।
হঠাৎ শান্তকে বলে
-শান্ত ভাই এই পর্যন্ত কতোবার হয়ছে?(ভাবি)
-কি কত বার হয়ছে?
-বুঝেননা নাকি?
-স্পষ্ট করে বলেন
-আরো স্পষ্ট করে বলবো?
-না বলা লাগবে না
-আচ্ছা আজ রাতে কত বার হয়ছে?
-আরে কি কত বার হয়ছে?
-কিরে এনি কত বার হয়ছে?
-রাতে দুই বার হয়ছে,এখন চুপ করো।তখন সবাই হাসাহাসি শুরু করছে ।
এসবের মাঝে জুই এর ফোন আসে,
.শান্ত মোবাইল হাতে নেওয়ার পরে এনি উকি দিয়ে দেখে জুই ফোন করছে তখন সবার সামনে শান্তকে বলে দেখি তো মোবাইলটা, এখানে দেও বলে এনি মোবাইলটা নিয়ে এনির কাছে রাখে।
তারা সবাই ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে সবাই বাসায় ফিরে।
শান্ত আর এনি তাদের রুমে প্রবেশ করার পরে...
-মোবাইল টা দেও (শান্ত)
-না দিবো না
-মানে কি?
-মানে খুব সোজা, মোবাইল দিবো না, যখন কোনো জায়গায় ফোন দিবা তখন আমার মোবাইল নিয়ে কল দিও
-বলছি মোবাইল দিতেতে
-না দিবো না
-শান্ত যখন এনির হাত থেকে জোর করে নিতে চাচ্ছে এনি মোবাইল ফ্লোরে ফেলে দেয়। ফ্লোরে ফেলার সাথে সাথে মোবাইল এর ডিসপ্লে টা কয়েক জায়গায় দিয়ে ভেঙ্গে যায়।
শান্ত তখন মোবাইল টা নিচ থেকে উঠিয়ে দেখে ডিসপ্লে টা ভেঙ্গে গেছে।
শান্ত এনির দিকে চেয়ে, যা করো ভালোই করো বলে শান্ত এনির কাছ থেকে চলে যায়।
এনি, জুই আর শান্তর মাঝে এভাবে কয়েকদিন চলার পরে পরীক্ষা চলে আসে,শান্ত তখন পড়া লেখায় মন দেয়।
পরীক্ষা শেষে পূর্বের মতো শান্ত ভার্সিটির প্রথম হয়।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ব্যাংকের ম্যানেজার পদের একটা পরীক্ষা আসে।
শান্ত এটা তে এপ্লাই করার পরে শান্ত পরীক্ষা দিয়ে এটাতেও পাশ করে।
এই খবর শুনে সবাই খুশি হয়, জুই একদিন শান্তকে ডেকে একসাথে মিট করে।
তাদের মিট হওয়ার সাথে সাথে শান্ত জুইকে দেখতে পেয়ে চোখের পানি ছেড়ে দেয়, কারন জুই আগের মতো নেই,জুই আগে যেভাবে হাসতো এখন সেভাবে হাসে না , আগে চোখে কাজল দিয়ে নীল বোরকায় নীল হিজাব পরে আসতো কিন্তু এখন চোখে আর কাজল লাগে না, রাত জাগতে জাগতে চোখের নিচে কালো দাগ গ তুলে ফেলছে।
জুই শান্তকে দেখে চোখ দিয়ে ননস্টপ পানি ফেলতে থাকে।
-জুই এখন আর কান্না করতে হবে না, তোমার শান্ত ভালো একটা চাকরি পেয়ে গেছে।এই কয়দিনের মধ্যে তোমাকে আমি ঘরে তুলবোই
-এই অপেক্ষায় এতদিন বেচে আছি।
-চলো(শান্ত)
-কোথায়?(জুই)
-রেস্টুরেন্টে যাবো
-কেনো?
-আগে আসো তারপর বইলো কেনো
-রেস্টুরেন্ট থেকে তো এটাই ভালো
-ভালো সেটা জানি কিন্তু এখন আমার সাথো আসো বলে জুইকে শান্ত রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায়।
শান্ত রেস্টুরেন্টে ডুকে কিছু অর্ডার করে, ওয়েটার খাবার দিয়ে যাওয়ার পরে শান্ত নিজ হাতে জুইয়ের মুখে বাড়িয়ে দেয়। জুই তা দেখে কান্না করে দেয়।
-আরে কান্না করো কেনো? খেয়ে নাও বলছি
-এভাবে সারাজীবন খাওয়াতে পারবা?
-ইনশাল্লাহ পারবো
-যদি হা পারো তাহলে কিন্তু আমার মরা......
-কথা শেষ না করতে করতে শান্ত হাত দিয়ে কিছু খাবার মুখে ডুকিয়ে দেয়।
-আর এসব বলবা তাহলে খবর আছে বলে দিলাম।
এভাবে তারা আরো কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে শান্ত জুইকে নিজের সাথে করে নিয়ে বাসায় দিয়ে আসে।
শান্ত বাসায় আসার পরে এনি শান্তকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে পিঠে উঠে কানে হালকা করে কামড় মারে।
-কি করছো এসব? ছাড়ো বলছি(শান্ত)
-না ছাড়বো না
-না ছাড়লে কিন্তু খারাপ হবে
-ছাড়বো না, কি করবা করো বলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
শান্ত তখন জোর করে নিজকে ছাড়িয়ে নেয়।
-রুমে আসো তোমার সাথে কথা আছে।(শান্ত)
-আমি কি কিছু ভুল শুনতাছি?
-না ভুল না
-ওহহ আমি তো মনে করছিলাম কোনো স্বপ্ন বুঝি দেখতাছি
-এসব মনে হলো কেনো?
-তুমি আমাকে রুমে ডেকে নিয়ে কথা বলবা তাই
-ওহহ,রুমে আসো বলে শান্ত রুমে চলে যায়।
কতক্ষণ পরে এনি রুমে আসে।
-কি বলবা বলো(এনি)
-এখন কিছু কথা বলবো
-কি বলবা বলো
-প্রশ্নগুলো একটু কঠিন হতে পারে
-আরে আগে করো তো
-তুমি আমাকে কি দেখে লাভ করছো?
-এখন এসব জানার কি আছে?
-যা বলছি তা বলো
-তোমাকে দেখে তোমার প্রেমে পরছি
-প্রেমে পরার কারনটা কি?
-এনি তখন চুপ হয়ে যায়।
-আমি তোমার কারনটা বলে দেয়, তুমি আমাকে নিজের মন থেকে কখনো ভালোবাসনি, ভালোবাসছে শুধু মাত্র জুই এর উপর প্রতিশোধ নিতে। ঠিক কি না?
-এনি তখন চুপ হয়ে আছে
-যা বলছি তার উত্তর দেও
-এখন তো তোমাকে সত্যি ভালোবাসি
-এটা সত্যিকারের ভালোবাসা না
-তো কি?
-তুমি ফেইক লাভার
-কিভাবে?
-কারন তুমি একজনের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমাকে ভালোবাসছ
-এসব বাদ দাও না
-কেনো বাদ দিবো? আচ্ছা জুইয়ের কি তোমাদের থেকে কোনো কিছু কম আছে?
-না
-তাহলে তুমি তার সাথে এমনটা করলে কেনো? তুমি কি ইদানিং জুইকে দেখছো?
-না
-তা দেখবা কেনো? জুই তোমার কি হয়? শত্রু
তাই না?
-চুপ হয়ে আছে
-চুপ হয়ে আছো কেনো?
জুই তো তেমাকে প্রথম ই বলছিলো যে আমাকে পছন্দ করো কি না তখন তো জুইয়ের সাথে বলছিলা কাজের ছেলেকে আমি পছন্দ করবো? বলে অনেক হাসি তামাসা করছো আর তাই ও আমাকে ভালোবাসছে।আর তাই তুমি জুইয়ের উপর প্রতিশোধ নিতে গেছো।আচ্ছা শুনো,জুই কি তোমাকে কখনো উপকার করে নি?
-হ্যা করছে
-উপকার কতবার করছে?
-অনেকবার
-আর তোমার অনিচ্ছয় কাজ করছে কয়টা?
-একটা
-হুম সেটা হলো ও তোমার কথায় অবাদ্য হয়ে আমাকে ভালোবাসছিলো,রাইট?
-হুমম
-জুই তোমাকে অনেকগুলো উপকার করছে আর তেমার কথার অমান্য করছে একবার। তুমি একবার অন্যায় করার জন্য প্রতিশোধ নিয়ে নিচ্ছো আর এতদিনের উপকারের কি প্রতিদান দিছো?
-এনি এসব কথা শুনে শান্তর দিকে অবাক চোখে তাকায়।
-জুইকে এখন দেখলেও চিনতে পারবে না বলে শান্ত এনির সামনে কান্না করে দেয়।
শান্তর মেবাইলে তখন একটা ফোন আসে।
মোবাইল বেড় করে দেখে জুইয়ের নাম্বার থেকে ফোন আসছে।
শান্ত মোবাইল রিসিভ করার সাথে সাথে কেউ একজন বলে ভাইয়া তারাতারি সদর হসপিটালে এসো বলে .............. ♥
.
.
♥----"To be Continue"---♥