গল্প:- অবৈধ~~~~~
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :-০৫ ~~~~
.

.
তনয়া এখন আট মাসের গর্ভবতী। এই আট মাসে আয়াত মোট দুইবার ফোন করেছিলো ওর মায়ের কাছে। কিন্তু আয়াতের মা আয়াতের সাথে তেমন ভালো করে কথা বলে নি।
সকাল ১০টা.......
তনয়া ঘরে একা। কারণ অনু কলেজে।
আয়াতের মা কিছু কেনা কাটা করতে গেছে আর আয়াতের বাবা ব্যবসায়ের কাজে শহরের বাইরে গেছে।
তখন তনয়ার ফোনে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো।
তনয়া: আসসালামু আলাইকুম কে??
---তনয়া আমি
কন্ঠটা শুনে তনয়া যেনো শতব্ধ হয়ে গেলো। মুখ থেকে যেনো কথা বের হচ্ছে না। তবুও খুব কষ্ট করে বলল,,,,,
তনয়া: ফোন করতে এতোটা সময় নিলে আয়াত?
আয়াত: তনয়া আমার সাথে একটু দেখা করবে প্লীজ???
তনয়া: তুমি বাড়ি এসো। আমি থাকতে কেউ তোমাকে কিছু বলবে না।
আয়াত: সেটা পারছি না তনয়া। তুমি প্লীজ এই ঠিকানায় চলে আসো।
তনয়া: ঠিক আছে।
আট মাসের প্রেগন্যান্ট একটা মেয়ের হাটতে চলতে ঠিক কতটা কষ্ট হয় তা শুধু সেই জানে।
তবুও তনয়া কাউকে কিছু না বলে আয়াতের দেয়া ঠিকানায় চলে গেলো।
তনয়া!!! বলে কেউ পিছন থেকে ডাক দিলো।
তনয়া পিছনে তাকিয়ে দেখে আয়াত দাড়িয়ে আছে। কিন্তু একি----???
------তনয়া আয়াতের দিকে তাকাতেই ওর হুদয়টা যেনো কেপে উঠে। চোখ দুটো দিয়ে নিজের অজান্তেই টপ টপ করে জল পরতে থাকে।
সেই হার্টথ্রব আয়াত। যাকে প্রথম দেখলে যেকোনো মেয়ে প্রেমে পরে যেতো। দেখতে প্রচন্ড সুন্দর সে আগের মতো সুন্দর নেই। আয়াতের ফর্সা মুখটা আগের থেকে অনেকটা কালো হয়ে গেছে। চোখ দুটো ভিতরে ডুকে গেছে। চোখের নিচে অনেক কালি জমে গেছে। দেখে মনে হয় প্রচন্ড দূর্বল।
তনয়া আয়াতের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আয়াত তনয়ার কাছে আসলো। তনয়ার দিকে তাকিয়ে বললর,,,,
আয়াত: ক্যান আই হাগ ইউ???
তনয়া কিছু বলতে পারছে না। চুপ করে শুধু কান্না করছে।
আয়াত তনয়াকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,,
আই ওলয়েজ লাভ ইউ এভার এন্ড ফেরএবার।
ধীরে ধীরে আয়াত তার শরীরের সব ভার যেনো তনয়ার উপর ছেড়ে দিচ্ছে। কিন্তু তনয়া ওকে সামলাতে পারে না। আয়াতকে কোনো মতে নিচে বসায়। আয়াতের দিকে তাকিয়ে দেখে আয়াতের মুখ নীল বর্ন ধারণ করেছে। মুখ থেকে ফেনা বের হচ্ছে মনে হচ্ছে কোনো বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছে আয়াত।
তনয়া আয়াত বলে একটা চিতকার দিলো। আশে পাশের লোকজনের সাহ্যয্যে আয়াতকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। হাসপাতালে আয়াতের ডাক্তার বন্ধু ছিলো। যার ফলে চিকিৎসা করতে বেশি সময় নে নি।
তনয়া বাড়িতে ফোন করে সবাইকে সবকিছু খুলে বলে। তারাও হাসপাতালে চলে আসলো। কিছুক্ষণপর ডাক্তাররা
অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হলো।
তনয়া: কি খবর আয়াতের???
রাফি(আয়াতের বন্ধু): ভাবি মনে হচ্ছে আল্লাহ নিজে নিচে নেমে এসে আয়াতকে বাচিয়েছে।
তনয়া: কি হয়েছিলো ওর???
রাফি: আমি পুলিশকে ফোন দিয়েছি।
তনয়া: পুলিশ কেন???
রাফি: ভাবি কেউ ওকে বিষ দিয়েছিলো। আর সব থেকে হতভম্বের বিষয় কি জানেন??? আয়াতের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে আজব ধরনের রোগ ছড়িয়েছিলো। এটা সাধারণত তখন হয় যখন একটা মানুষ দীর্ঘতিন যাবত সূর্যের রশ্নি ও বাইরের হাওয়া বাতাস থেকে দুরে থাকে।
আয়াতকে দেখে মনে হয় অনেকদিন যাবত ওকে কেউ কোনো বদ্ধ রুমে আটকে রাখেছিলো। ওর শরীরের ভিটামিন ডি এর অভাব। শরীরে
আয়রন
এবং সাথে সাথে ভিটামিন সি এরও অনেক ঘাটতি হয়েছে।
তনয়া: সাথে রাফির কথা শুনে হতবস্ব হয়ে গেলো।
তনয়া: কি বলছেন এসব???
রাফি: আমি যা দেখেছি তাই বলছি। বাট চিন্তা করবেন না কয়েকদিন রেস্ট নিলে,, খোলা পরিবেসে থাকলো,,আর ঠিকমতো খেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর বাকিটা আপনাকে না দেখালে বুঝতে পাবেন না। কিছুক্ষণের মধ্যে ওর জ্ঞান ফিরবে।
ডাক্তারের কথা শুনে বাড়ির সবাই হতোভম্ব হয়ে গেলো। সবার মনে হাজারো প্রশ্ন?? কিন্তু যে উওর দিবে সে এখনো অজ্ঞান।
কিছুক্ষণপর ডাক্তার এসে বলল,,,,ভাবি আয়াতের জ্ঞান ফিরেছে। আর শুধু তনয়ার সাথে দেখা করতে চায়।
তনয়া আয়াতের কাছে যায়,,,,
রাফি: ভাবি বললাম না আপনাকে না দেখালে বুঝাতে পারবো না। এই বলে আয়াতের শার্টটা খুলে দিলো।
আয়াতের শরীরের দিকে তাকিয়ে তনয়া ডুকরে কেদে উঠে। কারণ আয়াতের শরীরে অসংখ্য মারের দাগ। কিছু দাগ কালো হয়ে গেছে। কিছু নীল বর্ণ ধারণ করেছে।
তনয়া কাপা কাপা হাতে আয়াতের শরীরে হাত দিতে যায় তখন আয়াত তনয়ার হাতটা ধরে বলে
আমি ঠিক আছি তনয়া।
তনঢা আয়াতকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
আয়াত: এই পাগলি আমি ঠিক আছি। প্লীজ কান্না করো না। আমি বেচে আছি আর তোমার কাছেই আছি। জানো তনয়া-------
আয়াত কিছু বলতে যাবে এর মধ্যেই পুলিশ ওর জবান বন্দি নওয়ার জন্য আয়াতের কাছে এলো।
আয়াত শুধু তনয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ কাউকে দেখে আয়াতের চোখ যেনো ভয়ে নেমে এলো।
আয়াতের চোখের ভাষা তনয়া হয়তো বুঝতে পেরেছে। তাই আয়াতের পাশে গিয়ে বসে আয়াতের হাতে হাত রাখলো। তারপর চোখ দিয়ে আয়াতকে ভরশা দিলো।
পুলিশ: বলুন মি. আয়াত,, এতোদিন কোথায় ছিলেন আপনি?? আর আপনাকে বিষ দিয়েছিলো কারা???
আয়াত: প্রায় সাত মাস আগে আমি তনয়ার সাথে দেখা করতে তনয়াদের বাসায় যাচ্ছিলাম। পথে একটা মেয়ে আমার কাছে লিফট চায়। মেয়েটা বোরকা পরা ছিলো আর মুখ বাধা ছিলো। আমি মেয়েটিকে লিফট দিলাম। কিন্তু কিছুদুর যেতেই মেয়েটি আমার মুখে কি যেনো স্প্রে করলো। তারপর আর কিছু মনে নেই।
ডখন জ্ঞান ফিরলো তখন নিজেকে একটা রুমে চেয়ারের সাথে বাধা পেলাম। তারপর কিছু লোক আসলো।
তাদের কাছে জানতে চাইলাম আমাকে কেন কিডনাপ করা হয়েছে??? কিন্তু তারা কোনো জবাব দেই নি।
তাদের মধ্যে থেকে একজন বলল,,,,,
এখন থেকে আমরা যা বলবো তাই করবি না করলে তোর মা,,বাবা,,বোন আর তোর প্রেমিকা সবাইকে মেরে ফেলবো।
ওদের কাছে আমার ফ্যামিলির পুরো ডিটেইলস ছিলো। তাই বাধ্য হয়ে তাদের কথা মতো তনয়াকে ফোন করে যে আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। আর তাকে নিয়ে শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আরো অনেককিছু।
এরপর কয়েকবার পালানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পারি নি। ওরা আমাকে প্রায় মারতো। আর ওদের কথা মতো বাড়িতে দুবার কথা বলেছিলাম।
সাত মাস ধরে ওরা আমাকে আমাকে একটা রুমে
আটকে রেখেছিলো। এই সাতমাস ঠিক কিভাবে কেটেছে তা শুধু আমি আর আল্লাহই জানে।
তারপর গত কালকে আমি পালাতে সক্ষম হই। কিন্তু ওরা আমার পিছু নেয়। বাড়ি আসি কিন্তু বাড়ির চারপাসে ঐ লোকগুলোকে দেখলাম। তাই তনয়াকে ফোন করে দেখা করতে বললাম।
কিন্তু কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আর কি। ওরা আমাকে ধরে ফেললো। কিন্তু এবার ওরা আমাকে
একেবারে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। তাই আমার শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন দেয়।
কিছুটা সময় আমি ওদের সামনে মরার মতো পরে থাকি। তারপর ওরা আমাকে মৃত ভেবে চলে যায়।
তারপর তনয়ার সাথে দেখা হয়। আর আল্লাহর অশেস রহমতে বেচে গেলাম।
আয়াতের কথা শুনে সবাই বিষন হতভম্ব হয়ে গেলো। কারণ একটা মানুষকে সাত মাস আটকে কেউ কিভাবে রাখতে পারে????
আয়াতের বাবা,,মা,,অনু,,তনয়া,, ওর বাবা মা সবার চোখে জল। তাদের চোখের জলে তাদের মন থেকে মুছে গেলো আয়াতের উপর জমে থাকা সকল রাগ,,ঘৃণা আর অভিমান।
তনয়া : আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম না আমার আয়াত এমন করতে পারে না। ওর নিশ্চয় কোনো বিপদ হয়েছে। কিন্তু তোমরা কেউ আমার কথা শুনলে না।
আয়াতের বাবা: মাফ করে দে আয়াত। সেদিন তনয়ার কথা মেনে তোকে আমাদের খোজা উচিত ছিলো। তাহলে তোকে এতোটা কষ্ট পেতে হতো না।
আয়াত: নাহ বাবা এতে তোমাদের কোনো দোষ নেই। আমি তোমাদের যেভাবে বলেছি তাতে শুধু তোমরা কেন সবাই আমার কথা বিশ্বাস করতো।
পুলিশ: আচ্ছা আপনি ওই লোকগুলোকে চিনেন???
আয়াত: একজনকে চিনি।
পুলিশ: কে-----?????
.
.
♥-----"To be Continue"-----♥