গল্প :-অবৈধ~~~~~
. লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :-০৪ ~~~~
.
.
.
তনয়া: কি সর্বনাশ হয়েছে অনু???
অনু: আরে পাশের পারা প্রতিবেশিরা এসে নানা রকম কথা বলছে। বুঝতে পারছি না তারা এ খবর কোথা থেকে পেলো???
তনয়া: (রহস্যময় হাসি দিয়ে) এই তোর সর্বনাশ হয়েছে?? এখন কয়েকদিন এসব শুনতে হবে। এমন পরিস্থিতি সামলাতে হবে।
জানিস অনু ভালো কথা ভালো কাজ লোকসমাজে ছড়াতে দেরী লাগে না। কিন্তু কারো দোষ বা ত্রুটির কথা বাতাসের আগে ছড়ায়। চল দেখি এরা আবার কি বলে???
অনু আর তনয়া সামনের রুমে গিয়ে দেখে কয়েকজন মহিলা সেখানে আসছে আর তাদের মুখ থেকে খারাপ বাক্য শোনা যাচ্ছে,,,,
কথাগগুলো এরকম,,,,,
--ছিঃ ছিঃ ভাবি আপনাদের কাছ থেকে এমনটা আশা করি নি।
আরেকজন বলল,,,,,,
--ঠিক বলেছেন ভাবি বিয়ে হয় নি অথচ মা হচ্ছে আর এমন মেয়েকে আবার ছেলের বউ হিসেবে ঘরে তোলা। এমন মেয়ের মুখ দেখাও উচিত না।
আয়াতের মা: প্রথমতো ভুলটা তনয়ার না। আমার ছেলের। আর দ্বিতীয়তো ওদের বিয়ে অনেক আগেই হয়েছে তার প্রমানও আছে। আর প্রমান না থাকলে আমরা তনয়াকে মেনে নিতাম। কারণ আমরা তনয়াকে বিশ্বাস করি। আর শুনুন ভাবি আপনি কোন মুখে বলছেন এমন মেয়ের মুখ দেখাও পাপ?? আরে আপনার ছেলেতো গত বছর এর থেকেও বড় কান্ড করলো আর আপনারা মেয়েটাকে মেনে নেন নি।
--তো ছেলে মানুষ একটু আকটু দোষ করতেই পারে।
আয়াতের মা: আপনার ছেলে দোষ করলে সেটা দোষ না আর মেয়েটা কিছু না করেই সব দোষ তার ঘাড়ে। এসব নিচু মানুষিকতা বদলান। আর আপনারা শুনুন এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। আপনাদের নাক না গলালেও চলবে।
--তাহলে পরিবার সমাজের বাইরে গিয়ে বসান। আর এই মেয়েটি কোন পরিচয়ে আপনাদের বাড়ি থাকবে???
আয়াতের বাবা: কেন আয়াতের স্ত্রী হিসেবে। আর তাতে যদি আপনার সমস্যা হয় তাহলে তনয়া আমাদের মেয়ের পরিচয়ে থাকবে। আজ থেকে আমার দুই মেয়ে তনয়া আর অনু। আপনাদের আর কিছু বলার আছে???
--কিন্তু???
অায়াকের বাবা: (কিছুটা শান্ত গলায়) দেখুন তনয়ার সাথে যেটা হয়েছে সেটা যদি আপনাদের কারো মেয়ের সাথে হতো তাহলে কি আপনারা এমনটা বলতেন?? হ্যা তনয়া আর ভুল করেছে কিন্তু পাপ না। আমি আয়াতের বাবা। আর আমি যদি তনয়াকে মেনে নিতে পারি তাহলে আপনাদের সমস্যা কোথায়??
তারপর আর কেউ কিছু বললো না। সবাই চুপচাপ চলে গেলো।
প্রায় এক মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনো আয়াতের কোনো খবর নাই। ফোনও দেয় না। আয়াতের বাবা মা অার অনু সবাই তনয়ার খুব ভালো খেয়াল রাখছে। আয়াতের বাবা তনয়াকে বলে দিয়েছে পড়া লেখা যেনো ঠিক ভাবে করে।
তনয়া ভাবে এরকম একটা পরিবার পেলে যে কেউই খুব ভাগ্যবতী হবে। কিন্তু আয়াত---???
মনের ভিতর হাজারো প্রশ্ন এসে ভির করছে। আয়াতের দিকে তাকিয়ে নিজের পেটে হাত দেয় তনয়া। ছোট্র একটা ব্রুন কিভাবে দিনে দিনে বড় হচ্ছে আমার মাঝে। পেটে হাত দিয়ে নিজের অজান্তেই তনয়ার মুখ থেকে বেরিয়ে গেলো মিস ইউ আয়াত। আজ বাইরে খুব ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। তনঢা জানালার সামনে দাড়িয়ে আছে। বাতাসের ঝাপটায় বৃষ্টির কনাগুলো ওর গাল ছুয়ে যাচ্ছে।
তনয়া ভাবছে এরকমই এক রাতে আয়াত আমার কাছে এসেছিলো। অনেকটা কাছে। এতোটা কাছে যে ওর শ্বাস প্রশ্বাসের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছিলাম। মিশে গিয়েছিলো আমার নিঃশ্বাসে।
ওদের বিয়ে বয়স তখন চার মাসের বেশি। সেদিন
তনয়ার বাবা মা ওর নানুকে দেখতে শহরের বাইরে যায়। কথা ছিলো সন্ধার মধ্যে পৌছে যাবে। তাই তনয়া সালেহা(ওদের বাসায় কাজ করে) তাকেও বাসায় থাকতে বললো না।
সালেহা সন্ধার আগে চলে যায়। তনয়া ভাছে ওর বাবা মা সন্ধার পরই হয়তো চলে আসবে। রাত প্রায় আটটার দিকে তনয়ার বাবা ফোন করে বলল
ঝড়ের কারণে শহরে ডুকার রাস্তা বন্ধ কালকের আগে বাড়ি যেতে পারবে না। তনয়া যেনো পাশের বাসার আন্টিকে ঘরে এনে রাখে।
কিন্তু তনয়া জানে তাতের বাসার সবাই বিকেলে কোথায় যানি গেছে। কিন্তু ওর বাবা যাতে চিন্কা না করে তাই বলল ঠিক আছে টেনশন করো না। এদিকে ঝড়ের মাএা বাড়ছে। তনয়া ঘড় অনেক ভয় পায়। কিছু না বুঝে অনুকে ফোন দিলো।
তনয়া: হ্যালো অনু তুই কোথায়??
অনু: আর বলিস না রে এক কাজিনের বাসায় আসছিলাম। যে ঝড় তাতে কালকের আগে যেতে পারবো বলে মনে হয় না।
কেন কিছু বলবি???
তনয়া: না এমনিতেই,,রাখি।
এদিকে ভয়ে তনয়ার তম বন্ধ হয়ে আসছিলো। তাই কিছু বুঝতে না পেরে আয়াতকে ফোন দিলো
তনয়া: হ্যা হ্যালো আয়াত,,তুমি কোথায়???
আয়াত: অফিস থেকে বাড়ি যাচ্ছি। কিন্তু তনয়া তুমি ঠিক আছো তো এভাবে কথা বলছো কেনো?
তনয়া: আয়াত আমি ঘরে একা আর বাইরে খুব ঝর হচ্ছে।
আয়াত: কেন আংকেল আন্টি আসে নি??
তনয়া: বন্যার কারণে রাস্তা বন্ধ। কালকের আগে রাস্কা ক্লিয়ার হবে না। আয়াত প্লীজ তুমি একটু আসবে???
আয়াত: দেখোেভয় পেয়ো না আমি আসছি।
তনয়া ফোনটা রেখে চুপচাপ বসে রইলো। ঝরের কারণে বিদ্যুৎ ও নেই। পুরো ঘর অন্ধকার সুধু একটা চার্জার লাইট জ্বালিয়ে নিজের রুমে বসে আছে। কিছুক্ষণপর কেউ তরজায় নক করলো।
ভয়ে তনয়ার বুক ধুকপুক করছে। ভয়ে ভয়ে দরজার সামনে গিয়ে বলল,,,,,
তনয়া: কে???
আয়াত: তনয়া আমি,,
আয়াতেররকথা শুনে তনয়ার যেনো তেহে প্রান ফিরে এলো। তাড়াতাড়ি দরজাটা খুলে আয়াতকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো কান্না করতে লাগলো।
আয়াত: এই বোকা মেয়ে কাদছো কেন?? দেখো আমি এসে গেছি। এখন আর কোনো ভয় নেই। চুপ করো। আর এখন ভিতরে আসো।
তনয়া: হুম চলো।
তনয়া ভিতরে গিয়ে দেখে আয়াত পুরো ভিজে গেছে।
তনয়া: এ কি অবস্থা তোমার দাগাও আমি টাওয়াল নিয়ে আসছি।
তনয়া আয়াতকে টাওয়াল দিয়ে বলল,,,,,
তনয়া: নাও তাড়াতাড়ি গা মুছে কাপড় পাল্টে নাও। নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে।
আয়াত: কিন্তু ম্যাডাম আমি তো জানতাম না যে আজকে আপনাদের বাসায় আসবো তাই এক্সটা কাপড় নিয়ে আসি নি।
তনয়া: দাড়াও ব্যবস্থা করছি।
তনয়া ওর বাবার একটা ড্রেস আয়াতকে দিয়ে বলল,,,,,আপাতত এটা ম্যানেজ করে নাও।
আয়াত ড্রেসটা নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
তনয়া: কি হলো দাড়িয়ে আছো যে চেন্জ করে নাও।
আয়াত: তুমি তাকিয়ে থাকলে কিভাবে করি???
নাকি দেখার ইচ্ছা আছে???
তনয়া লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে ঘুরে রান্না ঘরে চলে গেলো।
আয়াত ড্রেসটা পরে বলল,,,,,,
আয়াত: তনয়া শশুর আব্বাকে ডায়েটিং করতে বলবা???
তনয়া: কেন???
আয়াত: পান্জাবীটার মধ্যে আরো দুটো আয়াত ফিট হতে পারবে।
তনয়া রাগি চোখে আয়াতের দিকে তাকালো।
আয়াত: ওকে সরি। কিন্তু ম্যাডাম খুব খিদে পেয়েছে???
তনয়া: এইতো খাবার রেডি। চলো খাবে।
তারপর দুজন মিলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে গল্প করতে লাগলো। এদিকে বাইরে ঝড়ের মাএা আরো বেড়েছে। খুব জোড়ে জোড়ে বজ্রপাত হচ্ছে। তনয়া এরকম শব্দ ভিশন ভয় পায়। আয়াতকে সেটা বুঝতে দিচ্ছে না। কিন্তু চোখে মুখে সে ভয় স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
তনয়া: আয়াত তুমি গেস্ট রুমে সুয়ে পরো। আমি আমার রুমে আছি কিছু লাগলে বলো।
আয়াত: ওকে। কি আর করা। নিজের বিয়ে করা বউ কাছে থাকতেও বৃষ্টির মতো এতো রোমান্টিক দিনেও কাছে পাবো না। কপাল খারাপ থাকলে কি আর করা????
তনয়া: জাস্ট সেটাপ। চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পরো।
তারপর আয়াত রুমে গিয়ে শুয়ে পরলো। কিন্তু মনে পরলো যে ওর ফোনটা খাবার টেবিলে রেখে আসছে। তাই উঠে খাবার টেবিলে যাওয়ার সময়
তনয়ার রুমে চোখ যায়। দেখে এখনো চার্জার জ্বলছে। তাই রুসে গিয়ে দেখলো তনয়া বিছানায় গুটিসুটি মেরে বসে আছে। চোখ দুটু বন্ধ করে কানে হাতত দিয়ে রেখেছে। বজ্রপাতের শব্দে বাবরবার কেপে কেপে উঠছে। তনয়ার এ অবস্থা দেখে আয়াত নিজের হাসি চাপিয়ে রাখতে পারলো না।
তনয়া চোখ খুলে তুমি এখানে কেন?? আর হাসছো কেন???
আয়াত: একটা কিউট বিউটিফুলকে যেখছি। যে কথায় কথায় মানুষকে বলে ঠ্যাং ভেঙ্গে দিবে,,নাক ফাটিয়ে দিবে,,পিটাবো কিন্তু দেখো সে কেমন সামান্য ঝরকে ভয় পায়।
তনয়া: মজা নিচ্ছো???
আয়াত তনয়ার পাশে বসসে তো কি করবো??
এর মধ্যে খুব জোড়ে একটা বাজ পরলো। তনয়া ভয়ে চিতকার দিয়ে আয়াতকে জগিয়ে ধরলো। আয়াতও যেনো আজ তনয়াকে নিজের থেকে দুর করাতে পারছে না। খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো তনয়াকে। চুম্বুকের দুই মেরু যেমন একে অপরকে আর্কষণ করে ঠিক তেমনি আজ ওরা একে অপরকে অার্কষণ করছে।
আয়াত তনয়ার কপালে একটা ভালোবাসার চিহু একে দেয়। তনয়া কিছু বলতে চেয়েও যেন বলতে পারছে না। এর মধ্যে আয়াতের গরম নিঃশ্বাস তনয়ার ঠোট দুটোকে গ্রাস করে ফেলেছে। দুজনেই বুঝতে টারছে যা হচ্ছে তা ঠিক না কিন্তু
তবুও কেউ একে অপরকেেআটকাতে পারছে না।
ভালোবাসার এক গভীরে হারিয়ে যায় দুজনে।
সকালবেলা তনয়া নিজেকে আয়াতের বুকে আব্ষিকার করলো। আয়াতের দৃষ্টিতে কতোক্ষণ বেঘোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো। কিন্তু কাল রাততের কথা মনে পড়তেই তনয়া শিউরেেউঠে।
তনয়া খুব কান্না করতে ছিলো। আয়াতের নিজেরও খুব খারাপ লাগতে ছিলো। কারণ আয়াতই তনয়াকে বলেছিলো পারিবারিকভাবে বিয়ের আগে এমন কিছু হবে না। ভরশা রাখতে পাররো। আর আজ ওই কিনা তনয়ার ভরসাটা ভেঙ্গে ফেললো।
আয়াত: প্লীজ আমাকে মাফ করে দেও তনয়া। আমি জানি না কাল রাততে কেন নিজেকে সামমলাতে পারি নি?? প্লীজ মাফ করে দাও।
তনয়া কাদদছে আর ভাবছে এতে তো আয়াতের একার দোষ নয়। আমিও তো ওকে বাধা দিতে পারতাম। কেন করলাম না আমি এইটা????
আয়াত: প্লীজ তনয়া কান্না করো না। আমারর নিজেকে খুব অপরাধি মনে হচ্ছে।
তনয়া আয়াতের হাতদুটো ধরে বলল,,,,,
তনয়া: ভুল তোমার একার না আয়াত। আমারও তোমাকে বাধা দেওয়ার উচিত ছিলো। তোমার নিজজেকে অপরাধি ভাবার কোনো কারণ নেই। কিন্তু আজ আমরা একে অপরকে কথা দেই পারিবারিকভাবে বিয়ে না হহওয়া পর্যন্ত আমরা এমন ভুল দ্বিতীয়বার আর করবো না।
আয়াত: হুম।
তারপর এ ভুল তারা আর করে নি। কিন্তু একটা কথা আছে না ভুল সবসময় ভুলই হয়। সেটা একবার হোক আর বহুবার। তার মাসুলতো গুনতেই হবে।
কিছুদিনপর তনয়া নিজেরর মাঝে পরিবর্তন দেখতে পায়। তারপরের ঘটনাতো সবাই জানেন।
এক রাততের ভালোবাসার ফল বয়ে বেড়াতে হবে সারাজীবন।
তনয়া ভাবছে সে রাতে যদি ঝড়টা না হতো তাহলে হয়তো আমার জীবনেও আজ এমন ঝড় আসতো না। এ এমন ঝড় যা বয়ে বেড়াতে হবে সারাজীবন।
বুক ভরা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়া আর কিছুই দিবে না এ ঝড়।
এরকম ভাবেই দেখতে দেখতে কেটে যায় ছয় মাস।
ছয় মাস পর-------?????
.
.
♥-----To be Continue-----♥