গল্প : অবৈধ <<<<<♥
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
পর্ব :-০২~~~~~
.
.
তনয়া ভাবছে মানুষ কি করে এতোটা ন্যাচারাল এ্যকটিং করে?? কি করে সম্ভব?? নাহ আমার আয়াত এমন করতে পারে না?? আমি ওর নিজের মুখ থেকে না শুনা পর্যন্ত বিশ্বাস করবো না।
তনয়া: মা আমি একটু বের হচ্ছে।
মা: এই অসুস্থ অবস্থায় সন্ধার সময় কোথায় যাচ্ছিস???
তনয়া: সত্যিটা জানতে
মা: কিসের সত্যি??
তনয়া ওর মাকে আয়াতের মেসেজটা দেখালো। ওর মাও যেনো হঠাত করে বড়সড় একটা ধাক্কা খেলো।
মা: এই সন্ধা বেলা একা যেতে হবে না। আমিও তোর সাথে যাবো।
তনয়া: মা তুমি???
মা: চুপ একদম চুপ। আমার মেয়ে বিপদে পরছে
আর আমি তাকে এভাবে একা ছেড়ে দিবো। চল,,,
তনয়া আর ওর মা মিলে আয়াতদের বাসায় গেলো। আয়াতের মা তাদেরকে দেখে খুব খুশি হলো সাথে সাথে অবাকও হলো।
তনয়া: আন্টি আয়াত কোথায়???
আয়াতের মা: আন্টি কিরে?? মা বলতে পারিস না?? আগে তো ভাবতাম তোদের বিয়ে ঠিক হয়েছে
কালকে আয়াত বলল,,,, তোরা নাকি অনেকদিন আগেই বিয়ে করে নিয়েছিস। প্রথমে খুব রাগ হচ্ছিলো তোদের উপর। কিন্তু যখন শুনলাম আমাদের ঘরে নতুন অতিথি আসছে তখন আর রাগ করে থাকতে পারলাম না আমি আর আয়াতের বাবা।
আয়াতের মায়ের কথা শুনে তনয়া আরো বেশি দ্বিধার মধ্যে পরে গেলো। তারপর আয়াতের মাকে ওর ফোনের মেসেজটা দেখায়। আর বলে,,,,,
তনয়া: আয়াত কোথায়???
আয়াতের মাও মেসেজটা দেখে অনেক অবাক হলো। আবার হেসে দিয়ে বলল,,,,
আয়াতের মা: বোকা মেয়ে দেখ ভয় পেয়ে নিজের কি হাল করেছে?? আয় আমার সাথে এদিকে আয়???
তনয়াকে আয়াতের মা আয়াতের রুমে নিয়ে গেলো।
তনয়া রুমের দরজা খুলে তো অবাক। দেখে রুমে বাচ্চাদের অনেক খেলনা। পুরো ঘড়টায় বাচ্চাদের খেলনা দিয়ে সুন্দর করে সাজানো।
আয়াতের মা: আয়াত কাল রাতে আর আজ সকালে এইসব জিনিস কিনেছে। আর আমাকে বলেছে মা আমার জীবনে সবচেয়ে প্রিয় মানুষটা
কিছুদিন পর আমার ঘরে আসবে আর তার সাথে আসবে ছোট্র সোনা। তাদের জন্য ঘরটাকে তো সুন্দর করে গোছাতে হবে।
আর দু সপ্তাহ পর তোমাদের বিয়ের ডেট ফেলেছি
আমরা। আয়াত সেটা জানানোর জন্যইতো তোমাতের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলো।
তনয়ার কেমন যেনো সব ঘোলাটে লাগছে।
তনয়া: তাহলে মা আয়াত এমন মেসেজ কেন দিলো।
আয়াতের মা: মনে হয় তোর সাথে মজা করছে।
তনয়া: কিন্তু ফোনটা অফ কেন???
আয়াতের মা: দেখছি???
আয়াতের মা অনুকে (আয়াতের ছোট বোন + তনয়ার বান্ধবী) বললো আয়াতকে ফোন দে তো।
অনু ফোনের পর ফোন দিতেছে। কিন্তু ফোন বন্ধ।
পরিচিত বন্ধু বান্ধবদের অফিসে ফোন করলো কিন্তু কোথাও আয়াত নেই। এবার ঘরের সবার খুব টেনশন হচ্ছে। তনয়া রাতে আয়াতদের বাড়িই থাকলো কিন্তু ওর মাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলো।
সারারাত তনয়া আয়াতের রুমে ওর আয়াতের লাগানো ছবির দিকে তাকিয়ে কান্না করতে লাগলো।
মনে হাজারো প্রশ্ন??? কিন্তু শত প্রশ্নের একটাই উওর হাসতেছে যে আয়াত আমাকে ধোকা দিতে পারে না। কিন্তু মেসেজে লেখা প্রত্যেকটা কথা মাথার মধ্যে পোকার মতো কিলবিল করছে।
নাহ তনয়া আর নিতে পারছে না। মনে হয় মাথাটা ছিড়ে যাবে। এদিকে পেটের ভিতর ছোট্র একটা ব্রুন যা হয়তো এখোনো আকৃতি ধারণ করে নি কিন্তু তার জীবন আছে। তার চলাচল তার অস্তিত্ব
তনয়া প্রতি মুহূর্তে নিজের ভিতর অনুভব করছে।
তার সাথে অনুভব করছে আয়াতের অস্তিত্বকেও
কারণ ভিতরে যে আছে সে যে আয়াতেরই অংশ।
সেদিন রাতে বাড়ির কেউই ঘুমায় নি। খুব সকালে উঠে সোজা পুলিশ স্টেশনে গেলো।
অফিসার বললেন,,,,দেখেন ছোট ছেলে তো নয়।
আর তাছাড়া ২৪ঘন্টার আগে আমরা রির্পোট নেই না। তারপর কিছু প্রশ্ন করলো তারপর তনয়াকে দেয়া মেসেজটার কথা জানার পর বলল,,,,
অফিসার: তাহলে আর কি?? আপনার ছেলে পালিয়েছে। তাই ফোন অফ রেখেছে। ছোট বাচ্চা তো আর না। দেখুন আবার কার সাথে প্রেমলীলা
শুরু করেছে,,,,,
আয়াতের বাবা: জাস্ট সেটাপ অফিসার। রির্পোট নিতে বলেছি রির্পোট নিন। বাজে কথা বলবেন না।
অফিসার: (চোখ রাঙিয়ে) রির্পোট নিয়ে নিচ্ছি কিন্তু ২৪ঘন্টা না গেলে কোন তদন্ত শুরু করবো না।
থানায় রির্পোট করিয়ে তনয়াকে বাড়ি পৌছে দিয়ে তারা বাড়ি গেলেন।
তনয়া বাড়ি গিয়ে খুব ভেঙ্গে পরলো। মনে হচ্ছে কোন গোলক ধাধায় পরে গেছে। কোনটা মিথ্যা কোনটা সত্যি তার মধ্যে কেন জানি পার্থক্য করতে পারছে না। যদি আয়াতের মেসেজটা সত্যি হয় তাহলে বাড়িতে কেন বললো?? আর বাড়িতে বললে মেসেজটা কেন পাঠালো??
খুব কান্না করছে কনয়া। চোখের সামনে যেনো আয়াতের সাথে কাটানো স্মৃতুগুলো ভাসছে।
আয়াতের সাথে প্রথম দেখা হয়েছিলো কলেজের একটা অনুষ্ঠানে। অনুর সাথে আয়াত কলেজে এসেছিলো। অনুই আয়াতের সাথে তনয়ার পরিচয় করিয়ে দেয়।
আয়াত: হাই!!
তনয়া:হ্যালো,,
আয়াত: বিউটিফুল!!
তনয়া: হোয়াট??
আয়াত: আই মিন নাইস টু মিট ইউ।
তনয়া: ধন্যবাদ।
অনু: তনয়া তুই একটু ভাইয়ার সাথে থাক আমি দশ মিনিটের মধ্যে আসছি।
তনয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই অনু চলে গেলো। কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ। নীরবতা ভেঙ্গে আয়াত বলল,,,,,,
আয়াত: তো কোন ইয়ারে পড়েন?? কোন বিষয়ে?
তনয়া: থার্ড ইয়ার ফাইনাল। হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ। আর আপনি???
আয়াত: গুড। পড়াশুনা শেষ করে কিছুদিন হলো বাবার ব্যবসা দেখা শুনা করছি।
তনয়া: গুড।
আয়াত: আইসত্রুিম খাবেন???
তনয়া: না না ঠিক আছে।
আয়াত: দেখুন মিথ্যা বলবেন না। মেয়েরা আইসত্রুিম কখনো না করে না।
তনয়া: মুচকি হেসে। ওকে।
দজন আইসত্রুিম খাচ্ছে এর মধ্যে অনু এসে পরলো। অনুষ্ঠানে থাকা কালীন পুরোটা সময় আয়াত বারবার শুধু তনয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো। তনয়ার চোখে চোখ পরলেই আবার চোখ নামিয়ে নিতো।
রাতে আয়াত অনুর রুমে গিয়ে বলল,,,,,
আয়াত: বোন আইসত্রুিম খাবি???
অনু: মাখন লাগানো লাগবে না। কি চাই বল???
আয়াত: তনয়ার কি কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে???
অনু: না। প্রচন্ড ভালো মেয়ে তনয়া। দেখতে যেমন সুন্দর মনটা তার থেকে বেশি সুন্দর। কোন ছেলেকে পাওা দেয় না। আর বাবা মায়ের একমাএ সন্তান। আর যদি ফোন নাম্বার বা ফেসবুক আইডি চাস তাহলে কালকে শপিং এ নিয়ে যেতে হবে।
এক শ্বাসে কথাগুলো বলে ফেললো অনু।
আয়াত: তুই কিভাবে বুঝলি???
অনু: আমি তোর মতো গাধা না। কলেজে থাকা কালীন সারাটা সময় তুই শুধু তনয়ার দিকেই উল্লুকের মতো তাকিয়ে ছিলি। তোর লজ্জা লাগে না।
আয়াত: কিসের জন্য???
অনু: ছোট বোনের বান্ধবী। সেও তো ছোট বোনের মতো। তার দিকে নজর দেয়া পাপ।
অায়াত: চুপ কর। ও আমার কোন জম্মের বোন রে?? আর খবরদার তনয়াকে নিষেধ করে দিবি ও যেনো আমাকে কখনো ভাইয়া বলে না ডাকে। আজ যখন ভাইয়া বলে ডাকছে মনে হয়েছে যেনো কলিজায় গিয়ে তীর মারছে।
এখন নাম্বারটা দে বোন বা ফেসবুক আইডি।
অনু: আর আমার শপিং???
আয়াত: ওকে ডান।
তারপর অনুর কাছ থেকে নাম্বারতো নেয় কিন্তু কল দেবার সাহস আয়াতের নাই।
আয়াত প্রায় তনয়াদের কলেজের সামনে যায়।
একদিন তনয়াকে প্রপোজ করলো। কিন্তু তনয়া বলল,,,,আপনি যে আমাকে সত্যিই ভালোবাসেন তার প্রমান কি???
পরেরদিন বিকালে আয়াত তার পুরো পরিবারকে নিয়ে তনয়াদের বাসায় যায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।
তনয়ার বাবা বলে কয়েকমাস পর তনয়ার ফাইনাল পরীক্ষা। বিয়েটা যদি পরীক্ষার পর হতো তাহলে ভালো হতো।
তারাও রাজি হয়ে যায়। ওদের বিয়েতো ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু তনয়া আয়াতের সাথে ঠিক মতো কথা বলে না। সবসময় এভোয়েট করে। আয়াতের এগুলোতে খুব কষ্ট লাগে কিন্তু কিছু বলে না। কিন্তু এভাবে থাকতেও পারে না। তাই অনুকে দিয়ে তনয়াকে নিজের বাসায় আনলো। সেদিন আয়াতের বাবাবা মা বাড়ি ছিলো না। আর অনুও দুজনের কথা ভেবে বাইরে চলে যায়।
আয়াত এসে তনয়ার পাশে বসে আর তনয়া আরেকটু দুরে সরে যায়।
আয়াত: তনয়া তুমি কি এই বিয়েতে খুশি না???
তনয়া: আমি কি সেটা বলেছি???
আয়াত: তাহলে তুমি আমাকে এভাবে এভোয়েট কেন করো???
তনয়া চুপ করে আছে।
আয়াত: কি হলো চুপ করে আছো যে প্লীজ কিছু বলো??
তনয়া: আমি বাড়ি যাবো??
আয়াত: ঠিক আছে তার আগে আমার প্রশ্নের উওর দেও।
তনয়া উঠে চলে যেতে চাইলে আয়াত তনয়ার হাতটা ধরে টান দিয়ে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসে।
তনয়া: কি হচ্ছে ছাড়ুন???
আয়াত: এই মেয়ে আমি কি তোমার সাথে কোন খারাপ কিছু করেছি??? নাকি তোমাকে খারাপ কোন প্রস্তাব দিয়েছি?? তোমাকে সারাজীবন ভালোবাসতে চেয়েছি এইটা কি আমার অন্যায়???
তনয়া: আয়াত ছাড়ুন আমার হাতে লাগছে,,,
আয়াত তনয়াকে ছেড়ে দিয়ে সরি বলে নিজের রুমে চলে গেলো।
তনয়াও বাড়ি যাবার জন্য নিচে নামতেই দেখলো ওর মোবাইলটা ভিতরে ফেলে এসেছে।
তাই আবার ভিতরে গেলো। হঠাৎ আয়াতের রুম থেকে কাচ ভাঙ্গার শব্দ এলো। তনয়া ধীমি পায়ে আয়াতের রুমের সামনে গিয়ে আস্তে করে দরজাটা খুলে দেখে আয়াতের হাত থেকে রক্ত ঝরছে আর নিচে কিছু কাচের গ্লাসের ভাঙ্গা টুকরা পরে আছে।
আর ওর টেবিলে রাখা তনয়ার ছবির দিকে তাকিয়ে বাচ্চাদের মতো কাদছে। তনয়া জানে খুব বেশি কষ্ট না পেলে ছেলেরা কাদে না। তনয়া আয়াতের রুমে ডুকে আয়াতের হাতটা ধরে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিলো। আয়াত শুধু তনয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
তনয়া: রাগটা কার উপর দেখালেন???
আয়াত: নিজের উপর।
তনয়া: কেন???
আয়াত: এই হাতটা তোমাকে কষ্ট দিয়েছে তাই।
তনয়া: আপনি জানেন আমি একটা ছেলেকে খুব ভালোবাসি???
কথাটা শুনে আয়াতের খুব কষ্ট হচ্ছিলো।
আয়াত: কাকে???
তনয়া: জানেন এতোদিন জানতাম সে আমাকে খুব ভালোবাসে। তাই তার ভালোবাসার সত্যতা যাচাই করতে এতোদিন তাকে খুব এভোয়েট করেছি। খুব কষ্ট দিয়েছি। কিন্তু আজকে জানলাম সে আমাকে একটুও ভালোবাসে না।
আয়াত: মানে???
তনয়া: যদি সে আমাকে ভালোবাসতো তাহলে নিজের হাত কেটে এভাবে আমাকে কষ্ট দিতে পারতো না।
আয়াত কিছু বলছে না শুধু তনয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
তনয়া আয়াতের কাটা হাতটায় আলতো করে একটা ভালোবাসার পরস একে দেয়। তারপর বলে পাগল। আমার চোখ দেখে বুঝো না তোমাকে কতটা ভালোবাসি। আয়াত নিজের বাহুডোরে তনয়াকে নিয়ে বলল খুব ভালোবাসি তোমায় তনয়া।
হঠাৎ তনয়ার ফোনটা বেজে উঠায় তনয়ার ভাবনায় ছেদ পরে।
ফোনটা হাতে নিয়ে স্ক্রিন এর দিকে তাকাতেই বুকটা কেপে উঠে তনয়ার। কারণ ফোনটা আয়াত করেছে।
তনয়া তাড়াহুড়ো করে ফোনটা তুললো।
তনয়া: হ্য হ্যা হ্য হ্যালো আয়াত???
আয়াত:----------
.
.
♥------"To be continue"-----♥

গল্প:- অবৈধ ~~~ ♥
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
.
পর্ব :- ০১~~~~♥️
.
.

আজ তনয়া জানলো যে সে মা হতে চলেছে। কথাটা একটা মেয়ের কাছে সবচেয়ে খুশির খবর। তনয়ার কাছেও এইটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখের খবর। কিন্তু সাথে সাথে সব থেকে লজ্জাজনক খবরও বটে।
কারণ তনয়া অবিবাহিত।
আর একটা অবিবাহিতা মেয়ের মা হওয়া আমাদের সমাজর লজ্জার সর্বসীমা পেড়িয়ে যায়। তনয়া বরাবরই তার মায়ের কাছে কিছু লুকায় না। মায়ের কাছে কথাটা বলা মাত্র মা সজোড়ে তনয়ার গালে একটা চড় মারে।
.
মা: তুই এরকম কাজ করবি তা আমি স্বপ্নেও কল্পনা করি নি। আরে তোর সাথে তো আয়াতের বিয়ে ঠিক হয়েই গেছে তাহলে কেন এরকম করলি বল??? নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ রাখলি না।
তনয়া: মা আমার সাথে আয়াতের বিয়ে আরো ছয় মাস আগেই হয়ে গেছে। কিন্তু তোমরা কেউ জানো না।
মা: কি???
তনয়া: হ্যা মা ছয় মাস আগে কাজি অফিসে আমাদের বিয়ে হয়। আর সাক্ষী হিসেবে আমার বান্ধবী অনু আর আয়াতের বন্ধু ইমরান ছিলো।
মা আমি অন্যায় করেছি কিন্তু আমার বাচ্চাটা অবৈধ না। আমরা ইসলামের পূর্ণ রীতি অনুসারে বিয়ে করেছি।
মা: সেটা তুই জানিস। আমি না হয় তোর কথা বিশ্বাস করলাম কিন্তু সমাজের মানুষকে কিভাবে বিশ্বাস করাবি?? আর আয়াত ও যদি অস্বিকার করে?? তুই আয়াতকে এ বিষয়ে বলেছিস??
তনয়া: না মা। আমার খুব ভয় লাগতে ছিলো তাই তোমার কাছে আগে বললাম।
মা: এসব কথা মেয়েরা সবার আগে স্বামীকে জানায় আর তুই তা না করে?? এখনি আয়াতকে সব জানা। আর আমি তোর বাবাকে বলে আয়াতের পরিবারের সবার সাথে কথা বলে বিয়ের ডেট যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাকাপাকি করছি।
এই বলে তনয়ার মা ওখান থেকে চলে গেলো।
তনয়া ফোনটা নিয়ে ভয়ে ভয়ে আয়াতকে ফোন করলো। রিং হলো কিন্তু কল টা রিসিভ করলো না।
আবার দিলো পর পর কয়েকবার দিলো কিন্তু রিং হয়েই যাচ্ছে আয়াত ফোন রিসিভ করছে না। এদিকে ভয়ে তনয়ার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
মনে হচ্ছে কলিজাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। ঢক ঢক করে এক জগ পানি খেয়ে ফেলল এদিকে আয়াত নাতো ফোন রিসিব করছে নাতো ব্যাক করছে। প্রচন্ড টেনশন হচ্ছে।
তার কিছুক্ষণপর থেকে আয়াতের ফোনটা অফ। তনয়ার মাথাটা ঘুরছে। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। দাড়িয়ে থাকার ক্ষমতা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছে। তারপর আর কিছু মনে নেই।
যখন জ্ঞান ফিরলো তখন তনয়ার চোখটা সোজা
দেয়ালে টানানো ঘড়ির দিকে গেল। প্রায় চার ঘন্টা হয়ে গেছে। হাত দিয়ে ফোন দিয়ে ফোনটা খুজছে।
হঠাৎ মনে হলো কেউ তনয়ার মাথার কাছে বসে
ওর মাথায় হাত বুলাচ্ছে।
মাথার পাশে তাকাতেই দেখে আয়াত তনয়ার দিকে তাকিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আয়াতকে দেখে তনয়া যেনো নিজের প্রাণ ফিরে পেলো। কিন্তু কিছু বলতে পারছে না। শুধু আয়াতের দিকে তাকিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে ছিলো।
আয়াত: উঠে বসো,,,,
আয়াত তনয়াকে বসিয়ে তনয়ার মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো। আর বলল,,,,,
আয়াত: এ বুকে কি কোন ছলনার শব্দ শুনতে পাও???
তনয়া আয়াতের বুকে মাথা রেখে তখনো কাদছে।
আয়াত তনয়ার চোখের জল মুছে দিয়ে গালে হাত দিয়ে বলল,,,,,
আয়াত: হেই বিউটিফুল তুমি কি ভাবছো খবরটা শুনার পর আমিও অন্য ছেলেদের মতো ওয়ান টু ফোর হবো??? বোকা মেয়ে!!!
তনয়া: তাহলে ফোন রিসিভ করলা না কেন???
আয়াত: তার জন্য এত্তোগুলা সরি। আসলে তখন জরুরি মিটিং চলছিলো। আর ফোনটা সাইলেন্টে ছিলো। ফোনে চার্জও ছিলো না তাই হয়তো রিং হতে হতে ফোনটা অফ হয়ে যায়।
মিটিং শেষে ফোন চার্জ করে যখন ফোন অন করলাম তখন তোমার অনেকগুলো মিসকল দেখে কল দিলাম। তোমার মা ই ফোনটা রিসিভ করে তিনি বলেন তুমি নাকি অসুস্থ। দেরি না করে সোজা তোমাদের বাসায় চলে আসলাম। আন্টির কাছ থেকে সব শুনলাম।
ম্যাডাম টানা দেড় ঘন্টা ধরে তোমার পাশে বসে আছি। দেখেন অফিস ড্রেসেই আছি।
তনয়া: তার জন্যই তোমার গা থেকে ঘামের গন্ধ বের হচ্ছে।
আয়াত: তনয়াকে আরো জোড়ে নিজের বুকের মাঝে চেপে ধরে বলল এখন কি গন্ধ আসছে???
তনয়া: ছাড়ো। মা এসে পরবে।
আয়াত: ও হ্যালো ম্যাডাম। আমি আপনার বিয়ে করা স্বামী আর আপনি আমার বউ। কয়েকদিন পর আবার বিয়ে করবো। দু দুবার যাকে বিয়ে করবো তাকে জড়িয়ে ধরলে কার বাপের কি??
তনয়া: হয়েছে আর ভালোবাসা দেখাতে হবে না। সব দোষ তোমার??
বিয়ের আগে তুমিই বলেছিলে যে যতোদিন পারিবারিক ভাবে বিয়ে হবে না ততোদিন আমরা একে অপরের কাছে আসবে না। কিন্তু.......
আয়াত: হ্যা কিন্তু সেদিন কি যে হয়েছিলো আমার
বুঝতেই পারতেছিলাম না। দেখো আমরা ভুল করেছি কিন্তু পাপ না। কারণ আমরা শরিয়ত মোতাবেক স্বামী স্ত্রী। হ্যা আমাদের বিয়ের কথা কয়েকজন লোক ছাড়া কেউ জানে না। কিন্তু তবুও তো আমরা স্বামী স্ত্রী।
তনয়া: হুম সবতো বুঝলাম কিন্তু এখন কি করবে?
আয়াত: তুমি একদম চিন্তা করো না। এ মাসের মধ্যেই আমরা বিয়ে করে নিবো। বাবা মাকে আমি বুঝিয়ে বলবো। আর এসময় টেনশন নেয়া মা ও বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। আর আমি আমার দুই রাজকুমারীর কারোর ক্ষতি সহ্য করবো না।
তনয়া: দুই রাজকুমারী মানে???
আয়াত: হ্যা। যে আসছে সে আমার লিটিল প্রিন্সেস আর তুমি আমার মনের প্রিন্সেস।
তনয়া: পিন্সেস না হয়ে পিন্সও তো হতে পারে??
আয়াত: তা দেখা যাবে।
তনয়া: যখন তুমি আমার ফোন রিসিভ করছিলে না তখন মনে হচ্ছিলো প্রাণ বুঝি বেরিয়ে.......
আয়াত তনয়ার মুখটা চেপে ধরলো। আর বলল,,,
আয়াত: খবরদার এমন কথা কখনো বলবে না। হেই বিউটিফুল তোমার কিছু হলে তোমার আয়াতটাকে কে সামলাবে???(আয়াত কান্না করে দিলো)
তনয়া: জানো আয়াত মাঝে মাঝে আমার মনে হয়
তোমার মতো ছিছকাদুনে ছেলেকে আমি কিভাবে
ভালোবাসলাম???
পাগল তোমাকে ছেড়ে কোথায় যাবো?? তোমাকে আমি আগামী সাত জম্মের জন্য বুকিং করে রেখেছি।
আয়াত: তার মানে সাত জম্ম পর্যন্ত আমি অন্য কোনো মেয়ের সাথে চান্স মারতে পারবো না??
তনয়া: খুন করে ফেলবো তোমাকে!!!
আয়াত: তোমার ভালোবাসায় তো এমনিতেই খুন হয়ে আছি। আবার খুন করার কি দরকার??
তনয়া: মাঝে মাঝে তোমার উপর আমার খুব সন্দেহ হয়,,,
আয়াত: কেন???
তনয়া: তুমি কি সত্যিই আমাকে এতোটা ভালোবাসো নাকি অন্যকিছু??
আয়াত: বিশ্বাস করো না আমায়??
তনয়া: নিজের থেকে বেশি।
আয়াত: আচ্ছা বাদ দাও। তার আগেে আমাকে একটা কথা বলো মেয়েদের প্রেগন্সির খবর সবার আগে তার বরকে জানায় আর তুমি আমাকে না জানিয়ে তোমার মাকে কেন জানালে????
কি ভেবেছিলে আমি তোমায় ধোকা দিবো নাকি তোমার কথায় বিশ্বাস করবো না?? বলো????
তনয়া: আসলে রেজাল্ট পজেটিভ দেখে এতোটা
ভয় পেয়েছিলাম যে মা ছাড়া আর কারো কথা মাথায় আসে নাই।
আয়াত: বোকা মেয়ে। তুমি না এই আয়াতের হৃদয়। আর কেউ কি এই হৃদয় ছাড়া বাচতে পারে???
তনয়া: সরি। আসলে তখন মাথাটা কাজ করতে ছিলো না।
আয়াত: আমি জানি। আর আমিও সরি।
তনয়া: কেন????
আয়াত: সেদিন আমি জোড় না করলে আজ তোমাকে এতোটা নাজেহাল হতে হতো না। মা তোমাকে একটা চড় মারছে তাই না??
তনয়া: তোমাকে মা বলছে???
আয়াত: নাহ। তোমার গালে চড়ের দাগগুলো বলে দিচ্ছে। খুব ব্যাথা করছে তাই না??
তারপর আয়াত তনয়ার গালে একটা ভালোবাসার পরস একে দিলো।
তনয়া: এটা কি হলো???
আয়াত: এখন ব্যাথা চলে যাবে।
তনয়া: পাগল।
আয়াত: পাগলের বউ।
দুজনেই হেসে দিলো।
আয়াত: এখন আমাকে বাড়ি যেতে হবে। বাবা মাকে বলে বিয়ের ডেট এ মাসের মধ্যে ঠিক করতে হবে। সব জোগাড় করতে হবে।
অনেক কাজ আছে।
তনয়া: আয়াত শুনো,,,,
আয়াত: হ্যা বলো।
তনয়া: পাচ মিনিট বসো আমি আসতেছি।
আয়াত: তোমার উঠার কি দরকার?? আমাকে বলো কি লাগবে???
তনয়া: চুপ করে বসো তো।
কিছুক্ষণপর তনয়া আয়াতের জন্য খাবার নিয়ে আসলো।
আয়াত: এগুলো দিয়ে কি হবে???
তনয়া: অফিস থেকে সোজা এখানে আসছো তারমানে এখোনো কিছু খাও নি। এগুলো খাবে তারপর উঠবে।
আয়াত: ঠিক আছে তবে খাইয়ে দিতে হবে।
তনয়া আর আয়াত একে অপরকে খাইয়ে দিলো।
তারপর আয়াত চলে গেলো আর যাবার আগে তনয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কপালে একটা ভালোবাসার চিহৃ একে দিয়ে গেলো। আর বলল,,,
কাল তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
পরেরদিন আয়াতের কোনো ফোন আসলো না সন্ধা বেলায় শুধু একটা মেসেজ আসলো।
তনয়া তোমার কাছ থেকে যা পাবার তা আমি পেয়ে গেছি। এখন নাতো তোমাকে চাই না তোমার বাচ্চাকে। গুড বাই তনয়া।
তারপর থেকে ফোন অফ।
মেসেজটা পড়ে তনয়া যেনো পাথর হয়ে গেলো।
আর ভাবছে..........
সব মিথ্যা??? এতোদিন থেকে কাল পর্যন্ত যা বলেছিলো প্রত্যেকটা কথা প্রত্যেকটা অনুভুতি সব মিথ্যা ছিলো?? মিথ্যা ছিলো ওর ভালোবাসাটা???
নাকি অন্য কিছু-----???
.
.
★------"To be continue"-----★

গল্প :-
-----""অহংকারী মেয়ে""
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
★------পর্ব :- ০৮ ~~"শেষ পর্ব"
.
.
মোবাইল বেড় করে দেখে জুইয়ের নাম্বার থেকে ফোন আসছে।শান্ত মোবাইল রিসিভ করার সাথে সাথে কেউ একজন বলে ভাইয়া তারাতারি সদর হসপিটালে এসো বলে ফোন কেটে দেয়।
শান্ত বুঝতে পেরে তখন পাগলের মতো হয়ে যায়। তোর কারনে জুইয়ের এমন টা হয়ছে, যদি
আমার জুইয়ের কিছু হয় তাহলে আমি তোকে মেরে ফেলবো বলে শান্ত তারাতারি হসপিটালের উদ্দেশ্যে বের হয়।
এদিকে এনি ও নিজের সব কিছু বুঝতে পেরে নিজেই নিজের প্রতি ঘৃনা জন্মাচ্ছে।
এনি ও হসপিটালের উদ্দেশ্যে বের হয়।
শান্ত হসিপিটালে গিয়ে দেখে জুইয়ের বাবা ডক্টরের সাথে কথা বলতাছে। শান্ত ও তাদের মাঝে যায়।
-আসাদ সাহেব আপনার মেয়ের রক্তের গ্রুপ এবি+ , রক্ত তারাতারি সংগ্রহ করুন না হলে খারাপ কিছু ঘটতে পারে...
.
জুইয়ের বাবা আর শান্ত রক্ত খুজার জন্য আপপ্রাণ চেষ্টা করছে...কিন্তু কোথাও রক্ত পাচ্ছে না...
এদিকে এনি জুইয়ের কাছে যায়..গিয়ে দেখে জুইয়ের করুণ অবস্থা...এটা থেকে এনি চোখের পানি ধরে রাখতে পারে না..কান্না করতে শুরু করে দেয়..বার বার এটাই মনে করছে এগুলোর জন্য সে ই দায়ী..শুধু তার জন্যই এটা হয়েছে....
কয়েক ঘন্টা পর দেখছে রুমের বাইরে অনেকটাই শরগোল হচ্ছে...
বাইরে বের হয়ে দেখছে..শান্ত ডাক্তার সাহেবের হাত ধরে কান্না করছে...
-ডাক্তার সাহেব যে করেই হোক আমার জুইকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন...আপনার কাছে চিরজীবণ ঋনী থাকবো...plzz ডাক্তার সাহেব... (শান্ত)
-হ্যাঁ, আমরা তো সেই চেষ্টাই করছি...কিন্তু রক্ত ছাড়া পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে...এভাবে রোগিকে বেশিক্ষণ রাখা যাবে না...একটু দ্রুত রক্ত সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করেন...
.
তখন শান্ত ফ্লোরে বসে পড়ে..কারণ সে সবজায়গায় রক্ত খুজেও পাই নি...
.
এনি তখন বুঝতে পারে জুইয়ের রক্ত লাগবে...
হঠাৎ জুই বলে উঠলো..
-ডাক্তার সাহেব আপনি আমার রক্ত নিন.... (এনি)
(এনি জানে তাদের দুজনেরই রক্ত একই গ্রুপের...কলেজে থাকাকালীন তারা একদিন পরীক্ষা করেছিলো..)
-আমার রক্ত এবি+ , আমি রক্ত দিবো (এনি)
-একজন মানুষ দিয়ে রক্ত হবে না (ডাক্তার)
-মানে?
-৩ব্যাগে লাগবে
-আমার থেকে নিন, আমি দিবো
-স্যরি ম্যাম, আমরা পারবো না
-কেনো পারবেননা?
-একজন রোগির জন্য আরেকজন মারতে পারি না
-আরে নিন বলছি
-আমরা পারবো না
-তাহলে রক্ত কি এখন আপনার বাবা দিবে? আমি বলছি আমার রক্ত নেন এর থেকে একটু ও বেশি বুঝবেননা
-তাহলে এখানে একটা স্বাক্ষর করেন।
-এনি তখন স্বাক্ষর করে
-জুইয়ের মা-বাবা এনির দিকে আনমনে চেয়ে আছে আর চোখের পানি ফেলছে।
এনি সবকিছু করে রক্ত দেওয়ার জন্য রুমে ডুকে।রুমে ডুকে কেবিনে দেখতে পায় জুই লম্বা হয়ে শুয়ে আছে আর নাকে মুখে অক্সিজেন লাগিয়ে রাখছে।
জুইয়ের এমন পরিস্থিতি দেখে এনির চোখে আবার পানি চলে আসে।
এনি অস্ফুট শব্দে বলে এই জুই দেখ আমি এসে গেছি...দেখ তোর best friend হয়েই এসেছি... বলে ঠোটে বাকিয়ে কান্না করে দেয়।
এনির খুব ইচ্ছা হচ্ছে জুইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে ।
ডাক্তার সাহেব এসে এনির শরীর থেকে রক্ত নিতে থাকে।
এনির শরীর থেকে ৩ব্যাগ রক্ত নেওয়ার পরে আল্লাহর রহমতে তার শরীরের সবকিছু এখনো ঠিকঠাক আছে।
রক্ত নেওয়ার পরে এনিকে কতক্ষণ শুয়ে থাকতে বলে।
ঐদিকে জুইয়ের অপারেশনের কাজ চলছে।
এনি শুয়ে শুয়ে.....
হ্যা আল্লাহ তুমি আমার bestu কে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিও না...তার থেকে আমাকে তোমার কাছে নিয়ে নাও..তবুও আমার bestu কে বাঁচিয়ে দাও...সব দোষ আমার তুমি আমাকে শাস্তি দাও.. এসব মনে মনে বলে চোখ ভিজিয়ে ফেলে। (এনি)

এনি কেবিন থেকে উঠে বাহিরে গিয়ে দেখে শান্ত ভিষন্ন মনে বসে আছে।
কিন্তু এনি খুব দূর্বল, ঠিক করে চলতেই পারছে না...শান্তকে দেখে শান্তর কাছে যেতেই মুখ থুবড়ে ফ্লোরে পড়ে যায়....
শান্ত এটা দেখে দৌড়ে এনির কাছে আসে...& এনিকে তুলে মাথাটা কোলের উপর নেয়..
এনি তখন একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে শান্তর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে..এনি শান্তর চোখে রাগ আর দেখতে পাচ্ছে না...এখন শান্তর চোখে মায়া দেখতে পাচ্ছে....♥
.
তারপর এনিকে শান্ত রুমে নিয়ে যায়...এবং বলে...
.
-জুই এখন কেমন আছে?(শান্ত)
-অপারেশন থিয়েটারে আছে আর বাকিটা আল্লাহ জানে।
এমন সময় ডাক্তার বের হয়।
-ডাক্তার সাহেব এখন কি অবস্থা?(জুইয়ের বাবা)
-আল্লাহ্ রহমতে কোনো সমস্যা হয় নাই। তখন সবার মুখে অদ্ভূত একটা হাসির আভা ফুটে উঠছে।
শান্ত ডাক্তারকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।থ্যাংকস ডাক্তার সাহেব।
-ওয়েলকাম
-এখন কি দেখা করা যাবে?(শান্ত)
-না ৭-৮ ঘন্টা পরে দেখা করতে পারেন
-ওকে
রাত ১১ টার দিকে জুইয়ের জ্ঞান ফিরে।
প্রথম ওর মা-বাবা দেখা করে তারপরে শান্ত যায়।
শান্ত যাওয়ার পরে জুই চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দেয়। শান্ত গিয়ে জুইয়ের মাথার কাছে বসে কপালে হাত দিয়ে....
-এখন কেমন লাগছে?(শান্ত)
-হুমম, ভালো(জুই)
-নিজের শরীরের কোনো যত্ন নেও নাই কেনো?
-যে শরীরের খেয়াল রাখার কথা সে ই তো কাছে নাই
-কে বলছে কাছে নাই? এই তো আমি বলে জুইয়ের কপালে চুমু খায়।
দুজন গল্প করতে করতে শান্ত সবকিছু বলে দেয়....
.
তখন এনি রুমে প্রবেশ করে।
এনি এসে জুইয়ের পাশে এসে বসে হাউমাউ করে কান্না করে দেয়।
-জুই বইন আমাকে মাফ করে দিস,আমি কেনো এমন হয়ে গেছিলাম আমি নিজেই জানিনা বলে কান্না করতে থাকে।(এনি)
-আরে কি করছিস কি?(জুই)
-আমি খুব খারাপ তাই না রে? যে মেয়েটার সাথে আমি ক্লাস ওয়ান থেকে পড়ালেখা করি তার সাথে কিভাবে এসব করলাম। জুই আমাকে ক্ষমা করে দে।
-আরে এসব কি করছিস? আমি না তোর বেস্টু
-এটা আমার মনে ছিলো না রে।
তোর মতো মেয়ের সাথে আমার এসব করা ঠিক হয় নাই।
-আচ্ছা এসব বন্ধ করবি নাকি না?
-শান্ত তোকে খুব ভালোবাসে,এতদিন ওর সাথে থাকছি ঠিক ই কিন্তু একদিন ও বিছানা শেয়ার করা হয় নাই। এই শান্ত শোন জুইরে কিন্তু অনেক অনেক ভালোবাসবি আর এই বছরের মধ্যে প্রেগন্যান্ট বানাবি বলে এনি দাড়িয়ে যায়,
আর এই শান্ত এখন অন্তত একটা হাসি দে,তোর হাসি মুখ অনেক দিন হয় দেখা যায় না।
-শান্ত তখন মুচকি হেসে কান্না করে দেয়।অপরদিকে জুইয়ের ও একই অবস্থা।
.
এগুলো বলেই এনি চলে গেলো...চোখে তার পানি..
এগুলো কতো যে কষ্টে বলেছে কেউ সেটা না বুঝলেও জুই ঠিকই বুঝেছে...জুই এনিকেই দেখেই বুঝতে পেরেছে এনি কতটা change হয়ে গেছে আর কতটা শান্তকে মন থেকে ভালোবাসে....!!
.
তারপর,
-শান্ত তোমার কাছে একটা জিনিস চাইবো দিবে..? (জুই)
-আরে....তুমি জান চাইলেও দিয়ে দিবো... (শান্ত)
-তুমি এনিকে মেনে নাও (জুই)
-কিহ্......তুমি এসব কি বলছো..! পাগল হয়ছো..?
পারবো না..আমি তোমাকেই চাই.. (শান্ত)
- তুমি কিন্তু দিতে চাইছো.এখন না বলছো, এটা ঠিক না...
তারপরও তোমার সাথে এনির বিয়ে হয়ে গেছে & এনি আমার best friend বোনের মতো...সে সব কিছু না বুঝে এগুলো করে ফেলেছে..
আর এখন দেখো তোমাকেই পাগলের মতো ভালোবাসে, ওর চোখে তোমার জন্য ভালোবাসা ছাড়া এক বিন্দুপরিমানও অহংকার নেই...
তাছাড়াও আমার জীবণটাও তো সেই ফিরিয়ে দিলো...এতোকিছুর পরও কিভাবে আমি তার সাথে এমনটা করবো..!
আমি কখনই পারবো না...
হ্যাঁ আমি তোমাকে পাবো না ঠিক আছে...কিন্তু তোমাকে ভালোবেসে যাবো...আর এই ভালোবাসাতে পাওয়ার আকাঙ্খা থাকবে না... (জুই)
জুই শান্তর কাছে হাত জোর করে এগুলো বলতে থাকলো
শান্তর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছিলো আর জুইও কান্না করছিলো..
এক পর্যায়ে শান্তকে মানিয়ে নিতে পারলো জুই.....
.
এদিকে,
এনি রাস্তায় বের হয়ে ল্যাম্পপোস্টের আলোতে হাটতে থাকে আর ভাবতে থাকে,আমি তো শান্তকে প্রথম ভালোবেসে বিয়ে করিনি, জুইয়ের সাথে রাগারাগি করে এসব হয়ে গেছে। কিন্তু এখন তো সত্যিই শান্তকে ভালোবাসতাম।
থাক ভালোবাসলে কি সবাইকে পেতে হবে, এমন কোনো কথা আছে নাকি? আমি না হয় আমার বেস্টু টার দিকে তাকিয়ে একটু সেক্রিফাইস করলাম।
আল্লাহ তুমি তাদের সুখে রাইখো বলে এনি ল্যাম্পপোস্টের আলোতে হাটতে থাকে।
.
#কিছুদিন পর...
.
এনি দেখছে শান্ত তার সাথে আর তেমন খারাপ ব্যবহার করছে না, তবুও এনি তার অধিকার নিয়ে কাছে যাচ্ছে না...শান্তর এমন পরিবর্তন দেখে চিন্তিত হলেও কিছু বুঝতে পারছে না...
.
একদিন এনির ফোনে কল আসে....কলটা হচ্ছে জুইয়ের....
-hmm...dost কেমন আছিছ (এনি)
-অনেকটাই ভালো আছি রে....তুই কেমন আছিছ..? (জুই)
- আছি মোটামোটি ভালো (এনি)
-তোর সাথে কিছু কথা ছিলো.. (জুই)
-hmm...বল..! (এনি)
-ফোনে না...আজ বিকেলে একটু দেখা কর...! (জুই)
-আচ্ছা ঠিক আছে... (এনি)
এনি একটু চিন্তিত হয়ে পড়লো..কি বলতে চাই জুই..! আবার কিছু সমস্যা হইলো নাকি...!
এনি আর জুই বিকেলে একটা পার্কে দেখা করলো...
-কিরে কখন আসলি..! (জুই)
-এইতো 15 মিনিট হলো.... (এনি)
-sorry re dost...late হয়ে গেলো...( জুই)
-it's ok.. (এনি)
জুই দেখলো এনি অনেকটাই বিষন্ন হয়ে আছে তবুও হাসি খুশি থাকার অভিনয় করছে...জুই সব বুঝতে পারছে...
এভাবে অনেকটা সময় কাটানোর পর বাসায় যাবে এনি বিদায় নিয়ে চলে আসবে তখনই জুই এনিকে পেছন থেকে ডাক দেয়...
- এনি শোন..!! (জুই)
-এনি পেছন ঘুরে বলে..কিছু বলবি..? (এনি)
- Hmm...আসল কথাটাই তো বলা হয় নি.. (জুই)
- Hmm...বল..! (এনি)
- Thank u... (জুই)
- কেনো..!
- আমার জন্য এতো কিছু করার জন্য....
- আরে পাগলি তুই আমার brstu না...!! এটা তো আমাকে করতেই হবে...।
(এটা বলে দুজনই একটু হাসে...)
- আরেকটা কথা. ছিলো.! (জুই)
- আবার কি কথা...! (এনি)
-কথাটা রাখতে হবে কিন্তু..! (জুই)
-hmm...অবশ্যই রাখবো...হাজার হোক তুই আমার বোনের মতো...বল..! (এনি)
- শান্তকে সারাজীবণ আগলে রাখতে পারবি না...! (জুই)
(এনি এটা শুনেই একেবারে থমকে দাড়িয়ে যায়...)
- কিহ্.....! এগুলো কি বলিস...! (এনি)
- hmm...আমি ঠিকই বলছি....শান্তকে তুই আগলে রেখিস dost... (জুই)
(এনি এটা শুনে দৌড়ে গিয়ে জুইকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়...)
-আরে পাগলি কাদিস কেনো...! দেখ ছোট বাচ্চাদের মতো কাদিস না...!
তুই কিছু না বললে আমি কিছু বুঝি না মনে বলছে...!
আমি সব বুঝি...আর আমার বোনটার জন্য এইটুকু স্যাক্রিফ্রাইজ করতে পারবো না..?
অবশ্যই পারবো....এখন থেকে শান্ত তোর...শুধুই তোর... (জুই)
(এদিকে এনি জুইকে জড়িয়ে রেখে কেদেই যাচ্ছে...কিছু বলার ভাষা নেই তার....)
((মনে রাখবেন...সম্পর্কে স্যাক্রিফ্রাইজ জিনিসটা অতি জরুরী জিনিস))
.
১৫ দিন পরে সকলের সম্মতি নিয়ে আবার ধুমধাম করে শান্ত আর এনির বিয়ে ঠিক হয়।
বিয়েটা জুই থেকেই সম্পন্ন করে.....
.
এনি তার মা-বাবাকে সালাম করে।
জুই এনির দিকে চেয়ে সামনে আসতে বলে। জুই এনিকে ধরে বাসর রুমে নিয়ে যায়।
সব ঝামেলা শেষ হওয়ার পরে রাত ১১.৩০ মিনিটের দিকে শান্ত রুমে গিয়ে দেখে এনির সাথে জুই হেসে হেসে গল্প করতাছে।
শান্ত যাওয়ার পরে জুই দাড়িয়ে যায়।
-তোদের দুজনকে বেশ মানিয়েছে।
সারাজীবন এইভাবে থাকিস।
শুভরাত্রী বলে জুই রুম থেকে বের হয়ে যায়।
জুই রুম থেকে বের হওয়ার পরে শান্ত রুম লক করে এনির কাছে আসার পরে এনি শান্তকে জড়িয়ে ধরে ঠোটের স্পর্শ দিয়ে কান্না করতে থাকে।
শান্ত এই কান্নাতে কোনো বাধা দিচ্ছে না কারন এটা কোনো কষ্টের কান্না না, এটা সুখের কান্না, এর অনুভূতি অন্যরকম।
শান্ত এনির মাথা টা উঠিয়ে কপালে চুমু দিয়ে বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
জনম জনম টিকে থাকুক এমন পবিত্র ভালোবাসার বন্ধন।
.
ভালো থাকবেন সবাই
আল্লাহ হাফেজ..
.
.
♥-----"""The End""-----♥

গল্প :-
-------"""অহংকারী মেয়ে"""
.
লেখক:- #RJ_Nayem_Ahmed
.
.
★--------পর্ব :- ০৭ ~~~~

.
.
ঠোটে আরেকটা চুমু দেয় ঠিক তখন শান্তর মোবাইলে ফোন আসে,শান্ত মোবাইলটা বের করে দেখে জুই ফোন করছে, এনি জুই এর নাম্বার দেখতে পেয়ে শান্তর হাত থেকে মোবাইলটা কেড়ে নিয়ে ফোন কেটে দেয়।
-ফোন টা কাটছো কেনো?(শান্ত)
-আমার মন চাইছে তাই কাটছি বলে জুই এর নাম্বারটা ব্লক লিস্টে ফেলে।
-মোবাইল দেও
-এনি তখন শান্তর কোলে উঠে বসে
-এনি প্লিজ আমার সাথে এসব করো না
-কি করবো?
-আমাকে ছাড়ো প্লিজ
-না ছাড়লে?
-মানে
-এনি তখন শান্তর নাকে মুখে অনেকগুলো কিছ করে শান্তর বুকে মাথা রাখে
-শান্ত আর থাকতে না পেরে এনিকে ঝাড়ি দিয়ে ফেলে দেয়।
-এখন কিন্তু বাবাকে ডাক দিবো
-তোর বাবাকে ডাক দে
-সত্যি সত্যি কিন্তু ডাক দিবো
-এই ভয়টা কাজে লাগিয়ে তুই এতক্ষণ আমার সাথে এসব করছিস
-তুই তোকারি করতাছো কেনো?
-মন চাইছে তাই করতাছি।
-বেশি ভালো হবে না
-বেশি খারাপ কি হবে?
-এনি তখন অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে যে কিভাবে শান্ত এত পরিবর্তন হলো? আগে কতো মানুষের সামনে থাপ্পর মারছি তখন মুখ ফুটে কিছু বলে নাই আর এখন কথায় কথায় উত্তর দেয় আর আগের মতো ভয় ও পায় না। এসব ভাবতে গাড়ি একসময় এনির ফুপির বাড়ির সামনে এসে থামে।
সবাই গাড়ি থেকে নামার পরে শান্ত সবাইকে সালাম দিয়ে রুমে ডুকে।
সবার সাথে কথা বলে শান্ত রুমে এসে শুয়ে আছে, শান্ত যখন প্রায়ই ঘুমিয়ে গেছে তখন এনি রুমে ডুকে শান্তর উপরে শুয়ে পরে, নিজের উপর ওজন আবিষ্কার করার পরে শান্ত চোখ খুলে, শান্ত এসব কিছু দেখে এনিকে তার উপর থেকে করে সরিয়ে দাড়িয়ে যায়।
-এনি তোমার প্রবলেম টা কি? আমার সাথে কেনো এসব করো?(শান্ত)
-আমি আমার হাজবেন্ডের সাথে করতাছি
-আমি তোমাকে গ্রহন করিনি
-তুমি করো নায় কিন্তু আমি গ্রহন করছি
-বিয়ে কখনো এক পক্ষের কথা দিয়ে হয় না, বিয়ে হতে হলে দুই পক্ষের মত লাগে।
-তাহলে এ বিয়েতে মত দিলা কেনো?
-তোমার বাবার জন্য
-তাহলে আমার সাথে সুখে সংসার করো
-তোমার সাথে সংসার করবো? তা ও আবার সুখের? বলে শান্ত হাসতে থাকে
-হাসো কেনো?
-হাসির কথা বললে তো হাসি আসবেই
-এখানে হাসির কথা কি বলছি?
-এই যে সুখের সংসার করবা সেটা আর কি
-সুখের সংসার করতে পারি না?
-যে মেয়ে আমাকে সবার সামনে লজ্জা দিতে ভালো লাগতো সবার সামনেই থাপ্পর দিতো আর সে আমার সাথে সুখের সংসার করবে কিভাবে?
-সংসার কি করতে পারে না?
-এনি আমি জুইকে ভালোবাসি , আমাকে জুই পাবে আর কেউ না
-জুই এর জন্য এতো পাগল হলে কেনো?
-কেনো হবো না?
-জুই আর আমার মধ্যে কি পার্থক্য আছে?
-কি পার্থক্য নাই সেটা বলো?
-ও সুন্দর তা ঠিক আছে, আমি কি সুন্দর না?
-হ্যা
-তো আর কিসের পার্থক্য?
-ওর মন টা পাক পবিত্র আর তোমার মন টা ডাস্টবিনের চেয়েও নোংরা।
এটা শুনে এনি মন খারাপ করে সোফায় গিয়ে বসে পরে।
শান্ত রুম থেকে বের হওয়ার পরে এনি দরজা আটকিয়ে বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবে শান্ত তো মিথ্যা কোনো বলেনি,আমার মন টা আসলেই নোংরা । এই নোংরা মন নিয়ে কখনো কি ভালোবাসা যায়?
তখন এনির মা দরজায় নক করে।
-শান্ত কোথায়?(এনির মা)
-রুম থেকে বের হয়ছে ৮-১০ মিনিট হয়
-কার সাথে বের হয়ছে?
-মনে হয় রাফির সাথে বের হয়ছে(এনির ফুফাতো ভাই)
-ওহহ, ফ্রেশ হয়ে খেতে আয় বলে এনির মা চলে যায়।
শান্ত বারান্দায় গিয়ে সাথে সাথে জুইকে ফোন করে।
জুই ও শান্তর ফোনের অপেক্ষায় বসে ছিলো তাই সাথে সাথে ফোন রিসিভ করে।
-এই কেমন আছো,তুমি ঠিক আছো তো?(জুই)
-হুম ভালো
-এনি কিছু বলছে?
-ও আর কি বলবে? মেন্টাল মাইয়া
-ওর কাছ থেকে সাবধানে থাকবা
-ওকে, খাইছো?
-না খাবো,তুমি খাইছো?
-তুমি আগে খাও তারপরে আমি খাবো
-ওকে
-ওকে বায়
-এই শুনো
-কি?
-উমমম্মাহহ
-পাগল একটা
-পাগলী
শান্ত গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে বিকালের দিকে সবার রিকুয়েস্টে এনির কাজিনদের সাথে শান্ত ও বের হতে হয়।
সবাই যখন হাটছে আর হাসহাসি করতাছে তখন এনি গিয়ে শান্তর হাত ধরে হাটা শুরু করছে,শান্ত তখন এনির দিকে তাকায় তখন এনি বুঝতে পারে যে শান্তর ইচ্ছা নাই তা ও এনি শান্তর হাত ধরে হাটছে আর চারদিকের প্রকৃতি দেখতাছে।
এনির ফুফাতো ভাইয়ের বউ সহ তাদের সাথে বের হয়।
হঠাৎ শান্তকে বলে
-শান্ত ভাই এই পর্যন্ত কতোবার হয়ছে?(ভাবি)
-কি কত বার হয়ছে?
-বুঝেননা নাকি?
-স্পষ্ট করে বলেন
-আরো স্পষ্ট করে বলবো?
-না বলা লাগবে না
-আচ্ছা আজ রাতে কত বার হয়ছে?
-আরে কি কত বার হয়ছে?
-কিরে এনি কত বার হয়ছে?
-রাতে দুই বার হয়ছে,এখন চুপ করো।তখন সবাই হাসাহাসি শুরু করছে ।
এসবের মাঝে জুই এর ফোন আসে,
.শান্ত মোবাইল হাতে নেওয়ার পরে এনি উকি দিয়ে দেখে জুই ফোন করছে তখন সবার সামনে শান্তকে বলে দেখি তো মোবাইলটা, এখানে দেও বলে এনি মোবাইলটা নিয়ে এনির কাছে রাখে।
তারা সবাই ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে সবাই বাসায় ফিরে।
শান্ত আর এনি তাদের রুমে প্রবেশ করার পরে...
-মোবাইল টা দেও (শান্ত)
-না দিবো না
-মানে কি?
-মানে খুব সোজা, মোবাইল দিবো না, যখন কোনো জায়গায় ফোন দিবা তখন আমার মোবাইল নিয়ে কল দিও
-বলছি মোবাইল দিতেতে
-না দিবো না
-শান্ত যখন এনির হাত থেকে জোর করে নিতে চাচ্ছে এনি মোবাইল ফ্লোরে ফেলে দেয়। ফ্লোরে ফেলার সাথে সাথে মোবাইল এর ডিসপ্লে টা কয়েক জায়গায় দিয়ে ভেঙ্গে যায়।
শান্ত তখন মোবাইল টা নিচ থেকে উঠিয়ে দেখে ডিসপ্লে টা ভেঙ্গে গেছে।
শান্ত এনির দিকে চেয়ে, যা করো ভালোই করো বলে শান্ত এনির কাছ থেকে চলে যায়।
এনি, জুই আর শান্তর মাঝে এভাবে কয়েকদিন চলার পরে পরীক্ষা চলে আসে,শান্ত তখন পড়া লেখায় মন দেয়।
পরীক্ষা শেষে পূর্বের মতো শান্ত ভার্সিটির প্রথম হয়।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ব্যাংকের ম্যানেজার পদের একটা পরীক্ষা আসে।
শান্ত এটা তে এপ্লাই করার পরে শান্ত পরীক্ষা দিয়ে এটাতেও পাশ করে।
এই খবর শুনে সবাই খুশি হয়, জুই একদিন শান্তকে ডেকে একসাথে মিট করে।
তাদের মিট হওয়ার সাথে সাথে শান্ত জুইকে দেখতে পেয়ে চোখের পানি ছেড়ে দেয়, কারন জুই আগের মতো নেই,জুই আগে যেভাবে হাসতো এখন সেভাবে হাসে না , আগে চোখে কাজল দিয়ে নীল বোরকায় নীল হিজাব পরে আসতো কিন্তু এখন চোখে আর কাজল লাগে না, রাত জাগতে জাগতে চোখের নিচে কালো দাগ গ তুলে ফেলছে।
জুই শান্তকে দেখে চোখ দিয়ে ননস্টপ পানি ফেলতে থাকে।
-জুই এখন আর কান্না করতে হবে না, তোমার শান্ত ভালো একটা চাকরি পেয়ে গেছে।এই কয়দিনের মধ্যে তোমাকে আমি ঘরে তুলবোই
-এই অপেক্ষায় এতদিন বেচে আছি।
-চলো(শান্ত)
-কোথায়?(জুই)
-রেস্টুরেন্টে যাবো
-কেনো?
-আগে আসো তারপর বইলো কেনো
-রেস্টুরেন্ট থেকে তো এটাই ভালো
-ভালো সেটা জানি কিন্তু এখন আমার সাথো আসো বলে জুইকে শান্ত রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায়।
শান্ত রেস্টুরেন্টে ডুকে কিছু অর্ডার করে, ওয়েটার খাবার দিয়ে যাওয়ার পরে শান্ত নিজ হাতে জুইয়ের মুখে বাড়িয়ে দেয়। জুই তা দেখে কান্না করে দেয়।
-আরে কান্না করো কেনো? খেয়ে নাও বলছি
-এভাবে সারাজীবন খাওয়াতে পারবা?
-ইনশাল্লাহ পারবো
-যদি হা পারো তাহলে কিন্তু আমার মরা......
-কথা শেষ না করতে করতে শান্ত হাত দিয়ে কিছু খাবার মুখে ডুকিয়ে দেয়।
-আর এসব বলবা তাহলে খবর আছে বলে দিলাম।
এভাবে তারা আরো কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে শান্ত জুইকে নিজের সাথে করে নিয়ে বাসায় দিয়ে আসে।
শান্ত বাসায় আসার পরে এনি শান্তকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে পিঠে উঠে কানে হালকা করে কামড় মারে।
-কি করছো এসব? ছাড়ো বলছি(শান্ত)
-না ছাড়বো না
-না ছাড়লে কিন্তু খারাপ হবে
-ছাড়বো না, কি করবা করো বলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
শান্ত তখন জোর করে নিজকে ছাড়িয়ে নেয়।
-রুমে আসো তোমার সাথে কথা আছে।(শান্ত)
-আমি কি কিছু ভুল শুনতাছি?
-না ভুল না
-ওহহ আমি তো মনে করছিলাম কোনো স্বপ্ন বুঝি দেখতাছি
-এসব মনে হলো কেনো?
-তুমি আমাকে রুমে ডেকে নিয়ে কথা বলবা তাই
-ওহহ,রুমে আসো বলে শান্ত রুমে চলে যায়।
কতক্ষণ পরে এনি রুমে আসে।
-কি বলবা বলো(এনি)
-এখন কিছু কথা বলবো
-কি বলবা বলো
-প্রশ্নগুলো একটু কঠিন হতে পারে
-আরে আগে করো তো
-তুমি আমাকে কি দেখে লাভ করছো?
-এখন এসব জানার কি আছে?
-যা বলছি তা বলো
-তোমাকে দেখে তোমার প্রেমে পরছি
-প্রেমে পরার কারনটা কি?
-এনি তখন চুপ হয়ে যায়।
-আমি তোমার কারনটা বলে দেয়, তুমি আমাকে নিজের মন থেকে কখনো ভালোবাসনি, ভালোবাসছে শুধু মাত্র জুই এর উপর প্রতিশোধ নিতে। ঠিক কি না?
-এনি তখন চুপ হয়ে আছে
-যা বলছি তার উত্তর দেও
-এখন তো তোমাকে সত্যি ভালোবাসি
-এটা সত্যিকারের ভালোবাসা না
-তো কি?
-তুমি ফেইক লাভার
-কিভাবে?
-কারন তুমি একজনের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমাকে ভালোবাসছ
-এসব বাদ দাও না
-কেনো বাদ দিবো? আচ্ছা জুইয়ের কি তোমাদের থেকে কোনো কিছু কম আছে?
-না
-তাহলে তুমি তার সাথে এমনটা করলে কেনো? তুমি কি ইদানিং জুইকে দেখছো?
-না
-তা দেখবা কেনো? জুই তোমার কি হয়? শত্রু
তাই না?
-চুপ হয়ে আছে
-চুপ হয়ে আছো কেনো?
জুই তো তেমাকে প্রথম ই বলছিলো যে আমাকে পছন্দ করো কি না তখন তো জুইয়ের সাথে বলছিলা কাজের ছেলেকে আমি পছন্দ করবো? বলে অনেক হাসি তামাসা করছো আর তাই ও আমাকে ভালোবাসছে।আর তাই তুমি জুইয়ের উপর প্রতিশোধ নিতে গেছো।আচ্ছা শুনো,জুই কি তোমাকে কখনো উপকার করে নি?
-হ্যা করছে
-উপকার কতবার করছে?
-অনেকবার
-আর তোমার অনিচ্ছয় কাজ করছে কয়টা?
-একটা
-হুম সেটা হলো ও তোমার কথায় অবাদ্য হয়ে আমাকে ভালোবাসছিলো,রাইট?
-হুমম
-জুই তোমাকে অনেকগুলো উপকার করছে আর তেমার কথার অমান্য করছে একবার। তুমি একবার অন্যায় করার জন্য প্রতিশোধ নিয়ে নিচ্ছো আর এতদিনের উপকারের কি প্রতিদান দিছো?
-এনি এসব কথা শুনে শান্তর দিকে অবাক চোখে তাকায়।
-জুইকে এখন দেখলেও চিনতে পারবে না বলে শান্ত এনির সামনে কান্না করে দেয়।
শান্তর মেবাইলে তখন একটা ফোন আসে।
মোবাইল বেড় করে দেখে জুইয়ের নাম্বার থেকে ফোন আসছে।
শান্ত মোবাইল রিসিভ করার সাথে সাথে কেউ একজন বলে ভাইয়া তারাতারি সদর হসপিটালে এসো বলে .............. ♥
.
.
♥----"To be Continue"---♥

গল্প :-
--------""অহংকারী মেয়ে""
.
লেখক:- #Nayem_Ahmed
.
★--------পর্ব :০৬ ~~~
.
.
শান্ত রুমে প্রবেশ করার পরে এনি দরজা লাগিয়ে শান্তর দিকে এগুচ্ছে আর শাড়ির কুচিগুলো এক এক করে খুলছে,এনি যখন শান্ত এর খুব কাছাকাছি চলে আসে শান্ত তখন এনিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়।
এনিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার পরে এনি অবাক হয়ে শান্তর দিকে তাকিয়ে....
-কি হয়ছে(এনি)
-তুমি আমার কাছে আসো কেনো?
-এখন তুমি আমার স্বামী হও, আমার যা মন চাই তা করবো
-আমি কিছু করতে পারবো না
-কেনো?
-আমার এই শরীর শুধু জুই এর জন্য
-এখন কিন্তু খুব খারাপ হবে
-কি খারাপ করবা তুমি? মারবা? মারো
-এত কথা না বলে আসো ঘুম আসছে বলে শান্তর হাত ধরে
-শান্ত হাত ঝাড়া দিয়ে, এই হাতে ধরার শুধু জুই এর অধিকার আছে তোমার না
-জোর করে আদায় করতে হবে?
-কি জোর করবা?
-বলছি ভালোই ভালোই চলো একসাথে শুয়ে ঘুমায়
-শান্ত তখন পাতলা একটা কাথা নিয়ে সোফার উপরে গিয়ে শুয়ে পরে।
এনি শান্তর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
শান্ত সোফায় শুয়ে নাকে মুখে কাথা দিয়ে জুই এর কথা ভাবতে চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।
আর এনি খাটের উপর বসে বসে শান্তর দিকে তাকিয়ে আছে।
সকাল হওয়ার পরে সবাই একসাথে নাস্তা করার পরে শান্ত বাহিরে যাবে এমন সময়...
-কোথায় যাও?(এনি)
-মন যেখানে চায় সেখানে যাবো
-এভাবে কথা বলো কেনো?
-আমি এভাবেই কথা বলি
-বললেই তো পারো জুই এর সাথে দেখা করতে যাচ্ছো
-ভালোই আন্দাজ করতে পারো
-জুই এর সাথে যাতে কখনোই না দেখি
-জুইকে বিয়ে করবো
-ঐ চুপ করবি নাকি এখন লাঠি পেটা করবো
-বড় গলা করে লাভ নাই, বায়
বলে শান্ত বাহিরে চলে যায়।
জুই এর সাথে দেখা হওয়ার পরে জুই অন্যদিকে চেয়ে আছে আর কতক্ষণ পর পর নাক টানছে তাতে শান্ত বুঝতে পারে ও কান্না করছে।
-জুই আমি এখন কি করবো বলো? আমি কিচ্ছু বুঝতাছি না
-ওর সাথে বাসর করছো, এখন হানিমুনে যাবা
-জুই এসব কি বলছো?
-মিথ্যা বলছি নাকি?
-আরে বাবা আমাকে তুমি না বুঝলে কে বুঝবে? বলছি তো আমি পরিস্থিতির স্বীকার।
-শান্ত আমি পারতাছি না বলে একটু আওয়াজ করে কান্না করে দেয়।
-শান্ত ও জুইকে বুকে নিয়ে কান্না করে দেয়
-শান্ত আমি কি তোমাকে হাড়িয়ে ফেলবো?
-শান্ত তখন দু হাতে মাথার দুপাশে রেখে চোখে চোখ রেখে,আমাকে বিশ্বাস করো?
-হ্যা
-তাহলে আবারো শুনো,এই শান্তর সবকিছু জুই এর জন্য
-জুই তখন শান্তকে জড়িয়ে ধরে ফেলে
তখন শান্তর ফোনে কল আসে।
শান্ত পকেট থেকে মোবাইল বের করে দেখে এনি ফোন করছে,ফোনটা ধরার পরে...
-কোথায় তুমি?(এনি)
-বউয়ের কাছে(শান্ত)
-কিহহ
-হ্যা
-মজা করতাছো?
-ভিডও কল দেও, তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছা করতাছে বলে ফোন টা কেটে দেয়।
-এই তোমার মাথায় কি ভূত চাপছে?
-না তো
-তাহলে যে বললা ভিডিপ কল করতা
-হুমম
-কিন্তু কেনো?
-ওয়েট বলে শান্ত এনিকে ভিডিও কল করে।
এনি হাসি মনে রিসিভ করে, এনি শান্তকে দেখতে পেয়ে খুশি হয়ে যায়।এমন সময় শান্ত জুইকে কাছে টেনে কিছ করে আর এনিকে দেখাচ্ছে
-শান্ত এসব কি করছো? খুব খারাপ হবে কিন্তু
-হি হি হি বেশি খারাপ হবে?
-হ্যা
-তাহলে আরো দেখো বলে জুইকে আরো কাছে টেনে লিপ কিছ করে।
কিছ করে চেয়ে দেখে ভিডিও কল কেটে দিছে।শান্ত তখন বুঝতে পারে হয়তো সহ্য করতে পারছে না তাই ফোন কেটে দিছে।
-এসব করার কি দরকার ছিলো?(জুই)
-মন চাইছে তাই করছি এখন এসব বাদ দাও বলে জুই এর সাথে আরো কতক্ষণ সময় কাটিয়ে বাসার দিকে রওনা দেয়।
বাসায় যাওয়ার পরে শান্ত রুমে গিয়ে শুয়ে আছে এমন সময়.....
-এসব কি?(এনি)
-কোন সব?
-জুই এর সাথে এসব কি করছো?
-বউয়ের সাতে স্বামী এসব করেই
-আমি তোমার বউ,আমার সাথে করো
-হি হি হি
-হাসো কেনো?
-নতুন বছরের সেরা জোকস টা শোনলাম তাই হাসি আসতেই পারে
-এটা কি জোকস?
-কেনো নয়? তুমি কোনো মেয়ে না, তুমি কিছু মানুষের জীবনে বড় একটা বাধা
-রাগ উঠাবানা বলে দিলাম
-রাগ উঠিয়ে দিলে কি করবা
-থাপ্পর দিবো
-থাপ্পর দিবা?
-হ্যা
.
.শান্ত তখন ঠাস ঠাস করে কয়েক টা থাপ্পর মারে।
-আমার আশে পাশে যেনো তোকে না দেখি বলে শান্ত রুম ছেড়ে চলে যায় (শান্ত)
এই প্রথম শান্ত এর মুখ থেকে তুই করে শুনে এনির একটু খারাপ লাগছে।
এনি কান্না করতে করতে একসময় ফ্রেশ হয়ে ছাদে গিয়ে বসে বসে ভাবতে থাকে শান্ত আগে এমন ছিলো না কিন্তু এখন কেনো এমম হলো?
এসব ভেবে এনি নিজে নিজেই কান্না করে দেয়।
রাতে রুমের ভিতরে ডুকে দেখে শান্ত শুয়ে আছে তখন এনি শাড়ির আচল মেলে শান্তর উপর ঝাপিয়ে পরে শান্তকে কয়েকটা কিছ করে ফেলে।
শান্ত হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে,শান্ত কখনো এসবের জন্য প্রস্তুত ছিলো না।
শান্ত রেগে....
-এসব কি করছো?(শান্ত)
-আমার স্বামী কে আমি করছি
-ওমাহহহহ
-কি?
-তুমি আবার স্বামী কে আদর ও করতে পারো?
-আমি কি তোমার স্বামী নাকি?
-হ্যা
-আমি তো জুই এর স্বামী
-অপপস শুধু জুই আর জুই
-কি হয়ছে?
-জুই এর মধ্যে এমন কি আছে যেটা আমার মধ্যে নেই?
-তোমার অনেক কিছুর অভাব আছে
-প্লিজ তুমি আমাকে ভালোবাসো , তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসবো
-স্যরি , এই শান্ত শুধু জুইকে ভালোবাসে
-আমি তোমাকে ভালোবাসি
-আমি ভালোবাসি না
-কেনো, কি কারনে?
-অনেক কারন আছে
-কারনগুলো বলো
-জুইকে অনেক বেশি ভালোবাসি
- ওহহহহ শীট আবার জুই??
-হুম শান্তর মুখে সারাক্ষণ ই জুই থাকবে।
-আমাকে কি একটা চান্স দেওয়া যায় না?
-না
-কেনো?
-কারন একটাই জুইকে ভালোবাসি
-আমি তোমাকে ভালোবাসি
-হা হা হা
-কি? হাসো কেনো?
-ভালোবাসি কথাটা শুনে হাসি পেলো আর কি
-এতে হাসি পাওয়ার কি আছে?
-আমাকে তুমি ভালোবাসো না
-ভালোবাসি
-এটা ফেইক লাভ কারন কয়দিন আগেই তুমি আমাকে সহ্য করতে না আর এখন ভালোবাসা উতলে উঠছে
-কেউ কি অল্প সময়ে লাভ করতে পারে না?
-পারে কিন্তু তুমি পারো না বলে বিছানা থেকে পাতলা কাথা নিয়ে সোফায় গিয়ে শুয়ে পরে।
সকাল সকাল শান্ত বাসা থেকে বের হওয়ার সময়...
-কোথায় যাও?(এনি)
-তোমার কাছে বলতে হব?
-হ্যা
-আমার মন যেখানে চায় সেখানে যাবো
-আমাকে নিয়ে যাও
-আমি পারবো না
-কেনো?
-এমনি
-জুই সাথে থাকবে তাই তো?
-ওমাহহ এত ভালো আন্দাজ করতে পারো?
-এনি তখন মন খারাপ করে ফেলে
-বায় বলে শান্ত বের হয়ে যায়।
জুই এর সাথে শান্তর দেখা হওয়ার পরে শান্ত জুই এর হাত ধরে জুই এর চোখে চোখ রাখে
-এই কান্না করছো কেনো?(শান্ত)
জুই তখন শান্তর চোখের দিকে চেয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে থাকে
-আরে কি হয়ছে সেটা তো বলো
-আমি আর পারতাছি না
-জুই আরেকটু ওয়েট করো প্লিজ
-শান্ত যদি ৬মাসের মধ্যে আমাকে তোমার করতে না পারো তাহলে তোমার কসম আমার মরা মুখ দেখবা বলে অন্যদিকে চেয়ে শব্দ করে কান্না করে দেয়।
-এসব দেখে শান্ত ও নিজকে কন্ট্রোল করতে না পেরে কান্না করে দেয়।
শান্ত জুইকে বাসার কাছে নামিয়ে দিয়ে মন খারাপ করে বাসায় আসে।
শান্ত বাসায় আসার পরে এনির বাবা শান্ত কে ডাক দেয়।
এনির বাবা ডাক দেওয়ার পরে শান্ত ভাবে এনি কিছু বলে দেয় নাই তো? যদি কিছু বলে দেয় তাহলে খারাপ কিছু হয়ে যাবে,এসব ভাবতে ভাবতে ভয় নিয়ে এনির বাবার সামনে যায়।
-বাবা আজকে সবাই মিলে তোমার ফুপির বাসায় যাবো, বিকালের দিকে রেডি হয়ে যাইয়ো
-জি আচ্ছা
-ফ্রেশ হয়ে আসো,একসাথে খেতে বসবো
-ওকে বলে শান্ত সে রুমে যেতে যেতে মনে মনে বলে যেটা ভাবছিলাম সেটা না।
-এতক্ষণে আসতে মন চাইছে?(এনি)
-নিজের পছন্দের মানুষের কাছে কার না থাকতে ভালো লাগে?
-ওহহ তার মানে এতক্ষণ জুই এর সাথে ছিলে
-হ্যা বলে শান্ত সবকিছু নিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে।
বিকাল হওয়ার পরে সবাই বের হবে, গাড়িতে উঠার সময় শান্ত আর এনি পিছনের সিটে আর এনির বাবা আর মা তাদের সামনের সিটে বসে।
গাড়ি তার নিজস্ব গতিতে চলছে হঠাৎ এনি শান্তকে কিছ করে।
-এসব কি?(জুই)
-আদর করছি বলে আরেকটা দেয়
-আরে এসব কি করতাছো?(শান্ত রেগে গিয়ে)
-বাবাকে ডাক দিবো?
-ব্ল্যাকমেইল করতাছো?
-সোজাসুজি রাস্তায় যখন পায় না তাই বাকা রাস্তায় তো যেতেই হবে বলে আরেকটা কিছ করে
-এনি ভালো হচ্ছে না কিন্তু
-কি করবা?
-প্লিজ এসব বন্ধ করো,আমার ভালো লাগছে না
-ঠোটে আরেকটা চুমু দেয় ঠিক তখন শান্তর মোবাইলে ফোন আসে,শান্ত মোবাইলটা বের করে দেখে জুই এর নাম্বার থেকে ফোন আসছে। এনি জুই এর নাম্বার দেখতে পেয়ে শান্তর হাত থেকে মোবাইল টা কেড়ে নিয়ে.......... ♥
.
.
.
♥----"To be Continue"---♥

গল্প :-
--------""অহংকারী মেয়ে""♥
.
লেখক:- #Nayem_Ahmed
.
★---------পর্ব :- ০৫~~~~
.
.
মিস শান্ত ওপপপস স্যরি মি.শান্ত আমাদের বাড়ির বিশ্বস্ত চাকর।সে ১২ বছরের উপরে হয় আমাদের বাড়িতে চাকরের মতো কাজ করে যাচ্ছে।(এনি)
-এই এই ওয়েট ওয়েট তুই আমার বয় ফ্রেন্ডকে এমন সবার সামনে ছোট করছিস কেনো?(জুই)
-ওরে ছোট করার কি আছে? ও যেমন ঠিক তেমন ই বললাম
-তোর কি যোগ্যতা আছে যে তুই শান্তর বদনাম গাচ্ছিস?
-এটা ওরে বল
-শান্ত এই ভার্সিটির সবচেয়ে ভালো স্টুডেন্ট, সবচেয়ে ভদ্র ছেলে,ওরে নিয়া অনেকে স্বপ্ন দেখে।
-হি হি হি স্বপ্ন দেখে?
-হ্যা
-কই আমি তো দেখি না
-তুই কাকে নিয়া স্বপ্ন দেখবি? তোর এসব আবেগ ভালোবাসা নাই,আমার ভাবতেও কেমন জানি লাগে যে তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।
-জুই শুধু শুধু একটা ছেলের জন্য বাজে বকিস না
-বাজে কি বলছি? তোর মনে কখনো এসব আসছে? প্রত্যেকটা মেয়ের ইচ্ছা থাকে তার স্বামি যেনো তাকে অনেক বেশি ভালোবাসে।আমার শান্ত কে আগেও ভালো লাগতো আর এখন তো বয়ফ্রেন্ড কয়দিন পরে স্বামী হবে। আমার মনে হয় তোর লাইফে এখনো টাকা ওয়ালা ছেলে আসে নাই।এমন ছেলে আসলে যেইভাবে হউক নিজের করে নিস বলে শান্তর হাত ধরে অন্য কোনো জায়গায় যায়।
-ওরে এভাবে বলা ঠিক হয় নাই(শান্ত)
-তো কিভাবে বলবো?
-ও মনে হয় অনেক রাগ করছে
-করলে করবে, কত্তো বড় সাহস আমার শান্তকে ছোট করতে আসছে বলে জুই শান্তর কাধে মাথা রেখে নিশ্বাস ফেলে।
শান্ত তখন মাথায় হাত রেখে কপালে একটা চুমু খেয়ে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে।
এনি বাসায় গিয়ে জুই এর কথাগুলো ভাবছে।
আসলেই তো আমি কখনো প্রেমে পরিনি। আমি এমন কেনো? কত ছেলেই তো প্রপোজ করছে কিন্তু কারোর প্রেমে সারা দেয় নাই।
শান্তরে দেখতে তো ভালোই লাগে কিন্তু আমি কেনো ওর সাথে এমন করি?
আর জুই আমাকে এমন ভাবলো?
ভাবলে ভাবুক, আমিও দেখবো তাদের প্রেম কতটুকু যায়।শান্ত তখন বাসায় আসে।
আজকে এনির সামনে পরার পরেও কোনো কিছু বলে নাই।এই প্রথম এনি তাকে সামনে পেয়েও কিছু না বলে ছেড়ে দিলো।শান্ত রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে জুই এর সাথে কথা বলা শুরু করে।
পরেরদিন এনি ভার্সিটিতে গিয়ে দেখে শান্ত আর জুই একসাথে বসে আছে আর হাসাহাসি করছে।জুই এনিকে দেখে শান্তকে হালকা করে কিছ করে।
-এই সবার সামনে এসব কি করছো(শান্ত)
-তো কি হয়ছে? বলে শান্তর ঠোটে আরেকটা দেয়।
এনি এসব দেখে রাগি মুখে সামনে থেকে চলে যায়।ক্লাস শেষে শান্ত আর জুই একসাথে হাত ধরে হেটে হেটে বাহিরের দিকে যাচ্ছে আর এনি তাদের দিকে চেয়ে আছে আর ভাবছে জুই কতো চেইন্জ হয়ে গেছে। এতদিনের বন্ধুত্ব শেষ করে দিয়ে ও একটা ছেলের হাত ধরে হাটছে। এসব ভাবতে এনি বাসায় যায়।
শান্ত বাসায় যাওয়ার পরে এনির বাবা তাকে খোজ করে তখন সে এনির বাবার সামনে যায়।
-আংকেল কিছু বলবেন?
-আজকে আমরা সবাই একটা অনুষ্টানে যাবো সাথে তুমিও যাবে
-আংকেল না গেলে হয় না?
-আমাদের সাথে যেতে পারলে ভালো হতো
-ওকে
সন্ধ্যার দিকে গাড়ি নিয়ে বের হয়।এনির সামনের সিটে আর এনির মা-বাবা পিছনে বসে আছে।
এনির বাবার বন্ধুর বাড়ির উদ্দেশ্যে যায়। আজ নাকি তাদের ওখানে কিসের অনুষ্টান যেনো আছে তাই এখানে সবার আসা।
গাড়ি পার্কিং করে বাসায় আসার পরে এনির বাবার বন্ধুর ছোট মেয়ে এনির কাছে আসে
-আপু কেমন আছো?(নিশি,পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ে)
-হুম ভালো, তুমি কেমন আছো?(এনি)
-হুম ভালো,আপু এই ছোলেটা কে?
-এমনি কেউ না
-বুঝছি
-কি বুঝছো?
-এটা কি তোমার বয় ফ্রেন্ড? তোমার সাথে অনেক ভালো মানাবে বলে হাসি মারে
-এই কি বলছো এসব?
-তোমার বর নাকি?
-নিশিইইই চুপ করো
-আচ্ছা বলে চলে যায়।
নিশি যাওয়ার পরে এনি শান্তর দিকে খেয়াল করে দেখে শান্ত নিচের দিকে চেয়ে চেয়ে মোবাইল টিপছে আর নিজে নিজে হাসতাছে ।এনি তখন ভাবে হয়তো জুই এর সাথে চ্যাটিং করতাছে।
এভাবে অনুষ্টান শেষ হওয়ার পরে সবাই আবার গাড়ি করে বাসায় চলে আসে।
দুইদিন পরে ভার্সিটিতে গিয়ে দেখে শান্ত আর জুই হাত ধরে ধরে কথা বলছে আর হাসাহাসি করতাছে এনি তখন তাদের চোখে ধরা না দিয়ে বাসায় চলে আসে।
এনি তার মা-বাবাকে সামনে রেখে......
-বাবা
-কি হয়ছে বল
-তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো
-কি বলবি বল
-কথাটা একটু ডিফারেন্ট
-আরে বল
-আমি শান্তকে বিয়ে করবো
-কিহহহহ(এনির বাবা অবাক হয়ে)
-হ্যা বাবা
-কিন্তু তুইতো ওরে একদম সহ্য করতে পারিস না,সারাক্ষণ ঝগড়া লেগে থাকিস, হঠাৎ এমন পরিবর্তন হলি কিভাবে?
-বাবা আমি এসব কিছু জানিনা, তারাতারি বিয়ের ব্যাবস্থা করো
-সামনে তোদের পরীক্ষা
-পরীক্ষা আরো ৫ মাস আছে
-তোর কি হয়ছে বল তো
- কিছু না, শান্ত তো তোমাদের পছন্দের ছেলেই, শান্তর সাথে বিয়ে দিতে কোনো আপত্তি আছে নাকি?
-নাহ
-তাহলে তারাতারি শান্তকে বলে বিয়ের ব্যাবস্থা করো বলে এনি রুমে চলে যায়।
এনির বাবা শান্তকে ডেকে এসব বলার পরে..........
.
.এনির বাবা শান্তকে ডেকে.....
-বাবা একটা কথা ছিলো (এনির বাবা)
-জি আংকেল বলেন
-কথা টা কিন্তু পার্সোনাল
-আগে বলুন
-আমাদের এনি তোমাকে বিয়ে করতে চায়
-কিহহহ
-হ্যা
-আংকেল আমি পারবো না
-কেনো বাবা
-কিছু সমস্যা আছে,আর আমি এখন বিয়ের জন্য প্রস্তুত নয়
-কি হয়ছে? আর কি সমস্যা?
-আংকেল আমি একটু রুমে যায় প্লিজ,বলে শান্ত রুমে আসার সাথে সাথে জুইকে ফোন দিয়ে সব কিছু বলে।
-এই শান্ত এসব কি বলছো?(জুই)
-হ্যা
-না না না এটা হতে পারে না,আমি তোমাকে সত্যিকারের ভালোবাসি
-আমিও রে জুই, আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না বলে কান্না করে দেয়।
-জুই ও কান্নায় ভেঙ্গে পরে।
-এই কান্না করছো কার সাথে(এনি)
-তুমি?
-ওহহহ ডিস্টার্ব করলাম নাকি?
-মানে?
-জুই এর সাথে আর কথা বলবানা
-আমি জুইকে ভালোবাসি
-ঐ চুপ,এই মুখে জুইয়ের নাম নিবি তাহলে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।
-এনি আমি এটা বিশ্বাস করি যে তোমাদের ফেমিলির জন্য আমি পড়ালেখা করতে পারছি,এতে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
প্লিজ এনি আমার সাথে এসব টা কইরো না, আমি জুইকে বড্ড বেশি ভালোবাসি , আমি জুইকে ছাড়া বাচতে পারবো না
-নাটক বন্ধ কর
শান্ত তখম এনির পায়ে ধরে ফেলে,
-এই এই কি করছিস?
-প্লিজ আমাকে জুইয়ের কাছ থেকে আলাদা কইরো না। জুই আমার সব
-এখন কি তোর সিনেমা বন্ধ করবি নাকি অন্যকিছু করবো?
-অন্য যা কিছু করো কিন্তু জুইয়ের কাছ থেকে আমাকে সরিয়ে নিও না
-চুপ ছোট লোকের বাচ্চা বলে এনি চলে যায়।শান্ত তখন কান্না করতে থাকে।
-এনি(এনির বাবা)
-হ্যা বাবা বলো(এনি)
-বিয়েতে মনে হয় শান্ত রাজি না
-কেনো?
-জানিনা
-বাবা আমি এসব কিছু জানিনা, আগামী দুই দিনের মধ্যে ওর সাথে বিয়ে হতে হবে
-ও তো রাজি না,তাহলে কি করবো?
-দরকার হলে জোর করো
-সবকিছু জোর করে হয় না
-আপোষে কেউ না দিলে জোর করে আদায় করে নিতে হয় আর যদি না পারো তাহলে তুমি তোমার একমাত্র মেয়েকে হারাবা
-এসব বাজে বকছিস কেনো?
-বাজে বকছি না, সত্যি সত্যি খারাপ কিছু করে ফেলবো।
-তুই রুমে যা আমি দেখতাছি।
বলে এনির বাবা শান্তর রুমে প্রবেশ করে।
-বাবা আমি একটা কথা বলি?
-জি আংকেল বলেন
-আমাকে কি তোমার বাবার মতো মনে হয় না?
-হ্যা
-যদি বাবা ভাবো তাহলে এই অনুরোধটা রাখো প্লিজ
-আরে আংকেল এসব কি করছেন,আপনি রুমে যান, যা ভালো হয় তা করেন
-এনির বাবা তখন খুশি মনে রুম ত্যাগ করে।
শান্ত তখন জুইকে ফোন করে বলে তার সাথে দেখা করতে।
দুজনে দেখা করার পরে দুজন দুজনের চোখে চোখ রেখে কান্না করে দেয়।
জুই তখন শান্তকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দেয়।
শান্ত ও নিশ্চুপ থেকে কান্না করে দেয়।
-শান্ত আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না (জুই)
-জুই আমি ও, তোমাকে ছাড়া থাকা কোনো ভাবেই সম্ভব না
-এটা কি ফিরানো যায় না?(জুই)
-যে আমাকে ১২ বছর হয় লালন পালন করতাছে তার বিপরীতে একটা কথা বলবো কি জ্ঞান নিয়ে?
-তাহলে কি আমাদের মিলন হবে না?
-আমি তোমাকে বিয়ে করবোই
-শান্ত আমি তোমাকে ছাড়া একটা মুহূর্ত ও ভাবতে পারিনা
- আর ভাবতে হবে না (পিছন থেকে এনি)
-জুই তখন দৌড়ে উঠে এনিকে জড়িয়ে ধরে বলে, এনি বইন আমার আমাদের সাথে এসব করিস না
-আমাদের বিয়েতে আসিস
-এনি সেই ক্লাস ওয়ান থেকে আমি তোর বেস্টফ্রেন্ড , তুই আমার সাথে এসব করতে পারবি?
-স্বামীর ভাগ আপন বোনকেও কেউ দেয় না আর সেই জায়গায় তো তুই বান্ধবী
-প্লিজ এনি, আমি শান্তকে ছাড়া বাচতে পারবো না।
এনি তখন শান্তর হাত ধরে টেনে গাড়িতে উঠিয়ে নেয়।
-এনি প্লিজ আমাদের সাথে এই কাজটা কইরো না (শান্ত)
-এখন কি আপনাআপনি চুপ করবি নাকি খারাপ কিছু করতে হবে?
-শান্ত তখন চুপচাপ চোখের পানি ছেড়ে দেয়।
দুইদিন পরে এনি আর শান্ত এর বিয়ে হয়ে যায়।
আজকে দুজনের বাসর রাত,শান্ত ছাদের উপরে গিয়ে জুইকে একটা মেসেজ দেয়।
জুই আমি তোমাকে ভালোবাসি,আমার সবকিছু তোমার, আমাকে এনি কখনোই মন থেকে পাবে না, আমাকে বিশ্বাস করো আগামী ৬ মাসের মধ্যে আমি তোমাকে বিয়ে করবো , প্লিজ বিলিভ মি।
এটা লিখে মেসেজ সেন্ড করে দেয়।
-এখানে কি করছো?(এনি)
-এমনি তে বসে আছি(শান্ত)
-রুমে আসো
-কেনো?
-আসো বলছি
-শান্ত তখন এনির পিছনে পিছনে রুমে যায়।
শান্ত রুমে প্রবেশ করার পরে এনি দরজা লাগিয়ে শান্তর দিকে এগুচ্ছে আর শাড়ির কুচি গুলো এক এক করে খুলছে, এনি যখন শান্তর খুব কাছে চলে আসে শান্ত তখন এনিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে.........
.
.
♥----"To be Continue"---♥

গল্প :-
--------""অহংকারী মেয়ে""?
.
লেখক:- #Nayem_Ahmed
.
★--------পর্ব :- ০৪ ~~~ ❤️
.
.
আমাকে বউ হিসাবে কেমন লাগবে?(জুই)
-লাল শাড়িতে হেব্বি মানাবে(শান্ত)
-ওহহহ শিট
-কি?
-ভালোবাসি
-কাকে
-আমি তোমাকে ভালোবাসি
-তেমার মাথা ঠিক আছে?
-হ্যা আমি ঠিক আছি
-ঠিক থাকলে এই কথা কিভাবে বলতে পারলা?
-শান্ত(রাগি চাহনি তে)
-হ্যা বলো
-সত্যিইইই অনেক ভালোবাসি
-এসব আবোলতাবোল না বলে বাসায় গিয়ে রেস্ট নাও
-তোমার সাথে ঘুরতে বের হয়ছি, আরো রাত হউক তারপর যাবো বলে শান্তর হাত ধরে ফেলে
-শান্ত তখন জুই এর দিকে চেয়ে দেখে জুই শান্তর দিকে চেয়ে আছে আর মুচকি হাসছে
-বলো নাহহহহহ
-কি বলবো?
-বলো জুই আমিও তোমাকে ভালোবাসি
-বললে কি হবে?
-আমাদের ছেলে মেয়ে হবে
-ভালোবাসি বললে ছেলে মেয়ে হয় এটা আজ প্রথম শুনলাম
-বলো না
-ভালোবাসি
তখন জুই হাটার মাঝে একটু উকি মেরে ঠোটে একটা কিছ করে লজ্জা পাওয়ার মতো করে নিচে চেয়ে থাকে
-এই এটা কি করলা?
-কি করছি?
-কিছ করার কথা আমি আর কিছ করছো তুমি
-তোমাকে করতে না করছে কে
-থাক এখন করবো না
-কেনো?
-এমনিতে
-না না এখন করতে হবে।
এভাবে সেদিনের মতো কথা বলে তারা তাদের বাসায় যায়।
বাসায় যাওয়ার পরে.......
-আজ এতক্ষণ কোথায় ছিলি?(এনি)
-বন্ধুর বাসায়(শান্ত)
-কোন বন্ধু?
-আমার যে কোনো বন্ধুই থাকতে পারে
-এটা-ই তো, সেটা ছেলে না মেয়ে
-অবশ্যই ছেলে
-ওকে যাহ
শান্ত রুমে গিয়ে ভাবতে থাকে.... জুইকে লাল শাড়ি পরলে আসলেই মানাবে। মেয়েটা অনেক ভালো,ওর চেহারায় মায়া আছে ঠিক তখনি জুই এর ফোন আসে।
-কি করো(জুই)
-শুয়ে শুয়ে কারো কথা ভাবছি(শান্ত)
-এই এই কার কথা
-কার আবার, এখন আমার সাথে যে কথা বলছে তার কথা ভাবছি
-সত্যিইইইই
-হুমম
-এই এই কি ভাবছো বলো না
-ভাবছি তোমাকে বিয়ে করবো
-কুত্তা না করলে তোর খবর আছে।
এভাবে আরো অনেক্ষন কথা বলে।
পরেরদিন শান্ত নীল পান্জাবি পরে ভার্সিটিতে যায়।
জুই ক্যাম্পাসে অনেকক্ষন হয় অপেক্ষা করছে।
শান্ত যাওয়ার সাথে হাসি দিয়ে চোখ টিপ মারে।
শান্ত তখন জুই এর দিকে চেয়ে শান্ত ও চোখ টিপ মারে
-ক্লাস শেষে আজকে একজায়গায় যাবো(জুই)
-কোথায়?
-ঐ পাশের এলাকায় একটা লেক আছে অনেক সুন্দর
-ওকে
ক্লাস শেষে দুজনে ওখানে গিয়ে বসে।
শান্ত বসার পর জুই শান্তর কাধে মাথা রেখে বসে পরে।
-তোমার সাথে কিছু কথা আছে(শান্ত)
-এখানে তো কথা বলার জন্যই আসছি, বলো(জুই)
-আমাকে কি তুমি সত্যি ভালোবাসো নাকি আমার সাথে খেলা করছো?
-শান্ত তুমি আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা,আমি তোমাকেই ভালোবাসি
-আমার জীবন সমন্ধে তুমি মনে হয় সব কিছুই জানো
-হ্যা না জেনে কি ভালোবাসছি নাকি?
-সব জেনে শুনেও ভালোবাসবা?
-হ্যা, সারাজীবন ভালোবাসতে চাই বলে জুই শান্তকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রাখে
-কেউ দেখবে তো
-দেখলে আরো ভালো হবে
-কেউ দেখলে ইচ্ছামতো মারবে
-মারলেও ভালো, মারার পরে দুজনের বিয়ে দিয়ে দিবে
-ওমাহহহ, এত বুদ্ধি?
-তখন জুই হেসে দেয়
-এই একটা ই দাও(জুই)
-কি?
-কিছ করো
-এই জায়গায়?
-হ্যা,ভয় পাও নাকি?
-কেউ দেখবে তো
-দেখবেনা
-দেখলে প্রবলেম হবে।
জুই তখন শান্তর মুখটা কাছে এনে কয়েক সেকেন্ডে কয়েকটা কিছ করে দেয়।
শান্ত আর জুই এভাবে কতক্ষণ থাকার পর বাসার উদ্দেশ্যে যায়।
শান্ত বাসায় যাওয়ার পরে......
-ক্লাস কখন শেষ হয়ছে?(এনি)
-সেটা তো তুমি ও জানো
-ক্লাস শেষ হয়ছে ৩ঘন্টা আগে, এতক্ষণ কোথায় ছিলি?
-যেখানেই যায় সেটা তোমার জানতে হবে না
-এই বাড়িতে তুই কি হিসাবে থাকিস?
-আংকেল আন্টির ছেলের মতো হয়ে
-হি হি হি
-হাসার কি আছে?
-এটা না বলে বল বিশ্বস্ত চাকর
-তুমি যেটা মনে করো সেটাই বলে শান্ত তার রুমে চলে যায়।
তার ১০-১৫ মিনিট পরে এনি শান্তর রুমে যায় কিছু বাজার আনানোর জন্য।
এনি রুমে যাওয়ার পরে শান্তর মোবাইল থেকে একসাথে দুইটা মেসেন্জারের নটিফিকেশনের সাউন্ড আসে।
এনি তখন শান্তর মোবাইল টা হাতে নিয়ে যা দেখলো তা দেখে তার মাথা নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো।
.এনি দেখে জুই এর আইডি থেকে কয়েকটা মেসেজ আসছে এরকরম,বাবু বাসায় গেছো? খেয়ে নিও কেমন।
আর হ্যা শুনো কালকে আমার ফেবারিট জায়গায় যাবো তোমাকে সাথে করে নিয়ে।
এসব দেখে এনির মাথায় রক্ত উঠে যায়।
তখন শান্ত ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে আসে।
-আজকে কোথায় গেছিলি?
-ফ্রেন্ডের বাসায়
-জুই তোর ফ্রেন্ড?
-মানে?
-কিছু বুঝিস না?
-কি বলছো?
-জুই এর সাথে কোথায় গেছিলি?
-কেনো?
-এই কুত্তার বাচ্চা তোরে না বলছি আমাকে প্রশ্ন করবি না
তা ও প্রশ্ন করিস কেন এই বলে শান্তর গলায় খামচি মারে।
শান্ত তখন ব্যাথায় কান্না করে দেয়।
-এই তোর নাটক কান্না বন্ধ কর,বল কোথায় গেছিলি?
-পার্কে
-কেনো?
-জুই নিয়ে গেছে
-নিয়ে কি বলছে?
-অনেক কিছু
-বল কি বলছে?
-শান্ত তখন চুপ হয়ে থাকে
-প্রেম হয়ে গেছে তাই না?
ভালোই ধান্দা বাইর করছিস।
-কি সব যা তা বলছো? আমি কেনো ধান্ধা করবো?
-বড় লোকের মেয়ের সাথে প্রেম করছিস, তারপর বিয়ে করতে পারলে লাইফ সেটেল তাই না?
-হ্যা বলে শান্ত বারান্দার দিকে চলে যায়।
হ্যা বলছে কারন শান্ত জানে ওর কাছে যতক্ষন না মাথা নত না করবে ততক্ষণ সে খোচাবে।
পরেরদিন শান্ত বের হয়ে
জুই যেখানে বলছে শান্ত সেখানে যায়।
জুই এর সাথে দেখা হওয়ার সাথে সাথে জুই শান্তর হাত ধরে...
-এই এত দেরি হলো কেনো?
-ঠিক সময় ই তো আসছি
-আমি অনেক্ষন হয় এসে বসে আছি বলে শান্তর হাতে জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা রাখে।
কাধে মাথা রাখার পরে গলার দিকে নজর যায়।
-এইটা কিসের দাগ(জুই)
-কোথায়?
-গলায়
-এমনিতে ওগুলো কিছু না
-কিভাবে হয়ছে বলো
-আরে কিছু না
-মিথ্যা ও বলতে পারো
-আরে তা না
-কিভাবে হয়ছে বলো
-বাদ দাও না
-এটা খামচির দাগ,এনি তোমাকে খামচি দিছে
-হুম
-কেনো?
-কালকে যে তুমি টেক্সট করছো ওগুলো ও দেখে ফেলছে
-কিভাবে দেখছে?
-আমি মোবাইল চার্জে লাগিয়ে ওয়াশ রুমে গেছিলাম ঠিক তখন ই তোমার মেসেজ আসছিলো
-তুমি কি প্রতিবাদ করতে পারো না?
-সবাই প্রতিবাদ করতে পারে না
-কেনো পারবেনা?
-তোমাকে আগেই বলছিলাম যে যেই পজিশনে থাকে সে বুঝে তার জায়গাটা কেমন
-আমি ওকে দেখে নিবো
-এসব বলতে হবে না
-কেনো?
-আমাকে এমনিতেই সহ্য করতে পারে না এর মধ্যে এমন হলে তো আরো সহ্য করতে পারবে না।
শান্ত আর জুই আরো কতক্ষণ সময় কাটিয়ে ক্লাসের সময়ে ভার্সিটিতে গিয়ে উপস্থিত হয়।
শান্ত ভার্সিটিতে গিয়ে ফ্রেন্ডদের সাথে চলে যায়।
জুই ও তাদের বন্দুর সাথে মিশে যায়।
-কোথায় গেছিলি?(এনি)
-বয় ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে(জুই)
-বয় ফ্রেন্ড বানিয়ে নিছিস? কে রে সে (অন্যান্য বন্দু)
-আছে, আমাদের ক্লাসমেট ই
-নাম কি বল না রে(বন্দু)
-দোস্ত ট্রিট দে(আরেকজন)
-তোর মোবাইল টা দে একটু(এনি)
-দিচ্ছি বলে শান্ত আর জুইয়ের লিপ কিছের একটা ছবি ওয়াল পেপার দেয়।
-নে বলে জুই মোবাইল টা হাত বাড়িয়ে দেয়।
-এনি মোবাইলের ওয়ালপেপারে এসব ছবি দেখে রাগে নাক মুখ লাল হয়ে যায়। এনি সাথে ওয়ালপেপার টা দেখার সাথে সাথে মোবাইল টা আবার জুইকে ফিরিয়ে দেয়।
-কি রে নাম বলবিনা?(রাফি নামে একটা ছেলে)
-জুই তখন সবার সামনেই শান্তকে ফোন দিয়ে আসতে বলে।
শান্ত তাদের কাছাকাছি এসে দেখে এনি ও সেখানে উপস্থিত।
শান্ত এনিকে দেখে একটু একটু ভয় ও পাচ্ছে।
শান্ত আসার পরে জুই সবার সামনে হাত ধরে বলে...
-এই ভার্সিটির টপ স্টুডেন্ট আমার অনেক দিনের ক্রাশ। সেমিস্টার শেষের দিকে তাই আর দেরি না করে ওকে সব কথা বলে দিলাম। শান্ত ই আমার স্বপ্ন বলে সবার সামনেই তার কাধে মাথা ফেলে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
তাদের মধ্যে সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছে শুধু এনি ছাড়া।
-কি এনি কথা বলছিস না যে?(জুই)
-এনি মনে হয় তোর জামাইরে পছন্দ করতো বলে সবাই হেসে দেয়।
-মালিক কখনো চাকরেরর কাছে বিয়ে বসে?
-মানে?(সবাই অবাক হয়ে)
-মিস শান্ত ওপপপস স্যরি মি.শান্ত আমাদের বাড়ির বিশ্বস্ত চাকর। সে ১২ বছরের উপরে হয় আমাদের বাড়ির চাকরের মতো করে কাজ করে যাচ্ছে।
জুই তখন.......... ♥
.
.
♥----"To be Continue"---♥

image

#RU_University_Job
#Jobs_in_Rajshahi
স্নাত্বক পাশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ।
আবেদন করতে বিস্তারিত দেখে নিন- https://bit.ly/2GJUjnJ
আবেদন করার শেষ তারিখ: ১০ মার্চ ২০১৯ইং ।

স্নাত্বক পাশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ।
bit.ly

স্নাত্বক পাশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ।

আবেদন করার শেষ তারিখ: ১০ মার্চ ২০১৯ইং ।
Circular created a new article
6 yrs

স্নাত্বক পাশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি । | #Rajshahi University job Circular 2019 – www.ru.ac.bd

স্নাত্বক পাশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ।

স্নাত্বক পাশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ।

আবেদন করার শেষ তারিখ: ১০ মার্চ ২০১৯ইং ।