পিরিয়ড নিয়ে বাসর ঘরে বসে আছি।। খুব অস্বস্তি হচ্ছে
আমার। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।। অচেনা
একটা ছেলেকে কথাটা বলি কিভাবে? সে কিই না
ভাববে? অথবা আমার ইচ্ছার কতটুকুই বা মূল্যায়ন করবে??
যদি এমন অবস্থায়ও পুরুষত্ব ফলাতে চায়??
উফ্ কিছুই ভাবতে পারছিনা।। যতই সময় গড়িয়ে যাচ্ছে
ততই আমার টেনশনের মাত্রা বাড়ছে।। কি এক
অপ্রত্যাশিত ঝামেলায় না পড়লাম!!!!!

বিয়েটা আমার পারিবারিক ভাবেই হয়েছে।।
মধ্যবিত্ত এক ছোট পরিবারের সদস্য ছিলাম আমি।।
বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে।।ছোটবেলা থেকেই খুব
পরিপাটি পরিবেশে বড় হয়েছি। এত আদরের মাঝেও
কেনো জানিনা অনার্স ১ম বর্ষে আসতেই বাবা মার
কাছে ভারী হয়ে গেলাম। বসতে হলো বিয়ের
পিড়িতে।
ছোটবেলা থেকেই একটু শান্ত স্বভাবের মেয়ে আমি।
ঝামেলা তেমন একটা পছন্দ নয় আমার।। আর এই বয়স পর্যন্ত
প্রেমের অভিজ্ঞতা একেবারে নেই বললে একটু ভুল
হবে, কলেজে থাকতে প্রেমে জড়িয়েছিলাম একবার।।
তবে ছেলেটির ভালোবাসার মাঝে চাহিদার
ব্যাপক আগ্রহটা আমাকে একেবারেই নিরাশ
করেছিলো।। তারপর এই বিষয়টা নিয়ে আর ভাবার সময়
হয়ে ওঠেনি।।অবশ্য আমার বন্ধু বান্ধবীদের অনেক
ভালো খারাপ প্রেমলীলা খুব কাছ থেকে দেখেছি।।

যাইহোক যে ছেলেটির জন্য অধীর আগ্রহে এই
ফরমালিটি রক্ষার জন্য সেজেগুজে বসে আছি, তাকে
বিয়ের আগে আমার দেখার বা কথা বলার সৌভাগ্য
হয়ে ওঠেনি।। শুধু একবার মনের বিপরীতে ফটোটা
দেখেছিলাম, তবুও মায়ের জোড়াজুড়িতে।। খুব রাগ
হয়েছে বাবা মার ওপর।। কেননা এখুনি বিয়ে টা
কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না আমি।।
একপ্রকার জোরের মুখেই বাধ্য হয়েছি বিয়েটা করতে।।
এখন পর্যন্ত ছেলের বাড়ির পরিচিত বলতে ছেলের
মাকে বিয়ের আগে অনেকবার দেখতে হয়েছে,, সেই
সুবাদেই একটু পরিচিত।। আর আমার বরটার নামটা জানি
শুধু।।।
খুব সুন্দর না হলেও, আমার পছন্দসই নাম ওর।। মিঃ আবির।।
আর আমি হলাম মিরা......মি.....রা।।।
এই মিঃ আবির!! একপিছ...?? সালা কথা নাই বার্তা
নাই সেজেগুজে বিয়ে করতে চলে গেলো আমাকে।। খুব
রাগ ওর ওপর।। কিন্তু এই অবস্থায় আমার কোনো বুদ্ধিই
কাজ করছে না।। যাইহোক একটু শান্ত ভাবে বসে
থাকি, দেখি বীরপুরুষ মিঃ আবিরের কখন ঘরে আসার
সময় হয়।।
হঠাৎ ই দরজায় খট করে শব্দ হলো, আমার ভেতরটা চমকে
ওঠলো। মনে হয় মিঃ আবির সাহেব চলে এসেছেন। আমি
একটু নড়েচড়ে ঠিক হয়ে বসলাম, যেনো বলি হওয়ার জন্য
প্রস্তুত হচ্ছি।।
কিন্তু দরজায় শব্দের বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেলো
অথচ কেউ ঘরে আসছে না।। ব্যাপার কি তাহলে শব্দটা
কিসের হলো?? তাহলে মিঃ আবির এখানে আসে
নি।।,,,,
উফফ অসহ্য লাগছে আমার।। খুব রাগও হচ্ছে সালা
হ্যাংলার ওপর।। ছবিতে দেখে যেটুকু বুঝেছি
হ্যাংলা, লম্বা, ফর্সা আর বড় চুলে আবৃত কপালের ঠিক
নিচ বরাবর লম্বা নাকের ওপর এক বিন্দু তিলক, যা পুরো
মুখটাকেই সুন্দরে ভরে তুলেছে। যার মায়াবি চোখে
অগাধ খাদ।।যা নিবিড় মায়াময়।। এমন দেখতে ছেলে
হলেও আমার কিচ্ছু যায় আসে না।। ব্যাটাকে আজ
জ্বালা বোঝাবো।। কিন্তু পরক্ষনে ই চুপসে গেলাম।।
ইস্স বাসর ঘর বলে কথা,, কি যে ভাবছি, না জানি
ভাবনাগুলো আমার ওপরই প্রতিফলিত হয়।।
আবারও হঠাৎ করেই ভয়টা বাড়তে লাগলো।।
এরই মধ্যে আমার ঘুমের ভাবটাও চলে এলো।। প্রায় ঘুমো
ঘুমোই হয়ে আসছিলাম।।গল্প পাগল/পাগলীরা চাইলে আমাকে এড বা ফলো করতে পারেন।অনেক গল্প দেয়া আছে আমার প্রোফাইলে।
হঠাৎ করেই স্বজরেই দরজাটা খুলে গেলো,, আমি
আতঙ্কে জেগে ওঠি।। দেখি মিঃ আবির তাড়াহুড়া
করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো। ওকে দেখে মনে হচ্ছে
যেনো যুদ্ধ জয় করে ফিরলো।। এদিকে ওকে দেখে
কাকভেজা মনে হচ্ছে আর হাতে একটা কিছু দেখা
যাচ্ছে।। তারমানে বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে আর
মহাসাহেব কিছু আনতে গিয়ে কাকভেজা হয়ে
ভিজেছে।। ওদিকে ওর এমন অবস্থা আমাকে সত্যি সত্যি
আতঙ্কে ফেলে দেয়।।
আমি চুপচাপ হয়ে বসে পড়লাম।। ও আমার দিকে এগিয়ে
আসছিলো।। আমার হৃদকম্পন দ্বিগুন হতে লাগলো।।
কাছে এসে হাতের জিনিসগুলো ডেস্কে রেখে, খুব
শান্তভাবে আমার সামনাসামনি বসলো।। আমার
অস্বস্তিটা আরো বেড়ে গেলো।। কাছে এসেই কিছু না
বলেই আমার হাতদুটো খুব আলতো করে ধরলো।। আমার
মনের ভাবনাগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতে লাগলো।
আমি কিছু না ভেবেই খুব আস্তে করে হাতটা ছাড়িয়ে
নেওয়ার চেষ্টা করলাম।। আর তাতেই সে আরো শক্ত
করে হাতটা চেপে ধরলো।। এইবার আমার খুব বিরক্ত
লাগছিলো আর হাতটা ছাড়িয়ে নিতে ইচ্ছে
করছিলো, কিন্তু কিছুই করতে পারছিলাম না আমি।।
হঠাৎ ই আমার চিন্তায় ছেদ ঘটিয়ে মিঃ আবির বলে
ওঠলো --
--আমি জানি তোমার খারাপ লাগছে।। কিন্তু কি
বলোতো সেই ছোটবেলা থেকেই এই রাতটি নিয়ে
কতো চিন্তা করে আসছি আর আজ কোনো কথাই খুজে
পাচ্ছি না।।(আবির)
খুব শান্ত আর মায়াবি চাহনি নিয়ে কথাগুলো বললো
সে।। কেনো জানিনা এইবার আমার মনটা কেমন
হালকা হয়ে গেলো।। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার সে
বলতে লাগলো--পরের পর্ব মিস করতে না চাইলে জলদি আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট বা ফলো দিন প্লিজ। সবার আগে আমার প্রোফাইলে পরের পর্ব দেয়া হবে।।
-- একটা কথা বলবো রাখবে??? (আবির))
আমি মাথা নাড়ালাম।।
--তোমাকে সারাজীবন খুশি রাখার আপ্রান চেষ্টা
করবো, তুমি আমার পাশে থাকবে তো?? (আবির)
আমি একটু অবাক হলাম তার কথায়। কি বলবো ভেবে
পাচ্ছিনা।। তবুও মাথা নাড়লাম ......থাকবো।।
.
তারপর কেনো জানিনা আবির আমার হাতটা ছেড়ে
দিয়ে ওঠে দাড়ালো।। আর কিছু উপহার আমার হাতে
তুলে দিলো।। আমি স্বাভাবিক ভাবেই সেগুলো রেখে
দিলাম।। সত্যি কথা বলতে এখন পর্যন্ত ওনাকে চিনতে
পারছি না।। কেমন ছেলে ও!! হয়তো আমার ভাবনা টাই
ঠিক নয়তো না।। আর এতক্ষণে আমি একটা কথাও ওর
সাথে বলিনি।। চুপচাপ ওর গিফ্টের দিকে তাকিয়ে
আছি।। হঠাৎ ই আবির আমার সামনে একটা ন্যাপকিনের
প্যাক দিয়ে বললো, যাও ফ্রেশ হয়ে আসো .....
আমি থ হয়ে গেলাম।। বিস্ময়ে আমার চোখদুটো
ছানাবড়া হয়ে গেলো।। আমি ওর দিকে অবাক
চাহনিতে তাকিয়ে আছি।। আবারও সে প্যাকটা একটু
নেড়ে আমার দিকে এগিয়ে দিলো ...........
.
আমার প্রশ্নগুলো অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে লাগলো
..........
.(চলবে)...
.

image

image

দূরত্ব অনেক তবুও ভালোবাসার কমতি নেই ।
প্রতিদিন দেখা হয় না তবুও ভালোবাসা কমে না ।
- একটু দেখা করতে হাজারো plan আর বিদায়ের বেলায় চোখে এক রাশি জল নিয়ে বাসায় ফিরে ।
- সপ্তাহে ৬দিন এ Brkup রাগ অভিমান এ সেই মিষ্টি Nickname টা Remove . কিন্তু দিন শেষে দুজন আবার এক হয়ে যাওয়া । আবার সব আগের থেকেও মিষ্টি হয়ে
যায় ।
- কেউ একজন বলতে থাকে»» মেসেজ দিবা না তুমি ,
কিন্তু অপর জন বেহায়ার মত দিতেই থাকে । অবশেষ যখন সে বুঝতে পারে»» সে তার কাছে অক্সিজেন , তার ছোট এক রাজ্যের রানী , ড্রিম গার্ল , পরী কন্যা , ভালো থাকার একমাত্র ওষুধ , আমাকে ছাড়া বাঁচবে না , ৭০০ কোটি মানুষের মাঝে সেই তার কাছে সেরাএকজন , সব কিছুর বিনিময়ে হলেও সে শুধু আমাকেই চায় আর কিচ্ছু দরকার নেই তার , তখন সেও তার রাগ অভিমান ভুলে , আবার আগের মতো হয়ে যায় ।
আগের থেকেও ভালোবাসা আরও একটু বেশি বেড়ে যায় ।
- দূরত্বের কারণে কখনো ভালোবাসা কমে না, বরং বেড়ে যায় ।
সত্যিকারের ভালোবাসা দূরত্বকে হার মানায় , অনুভূতিকে নয় ।

image

অনেক তো হলো ছেলেদের শরীর দেখানো,আর কতো দেখাবি?নিজের স্বামীর জন্য কীছু জমা রাখ।
(কথাটা শুনেই চমকে পিছনে তাকালাম,তাকিয়ে দেখলাম রিয়ান ভাইয়া(আমার চাচাতো ভাই)
কী বলছো কী এই সব ভাইয়া?
কী বলছি বুজতে পারিসনি(দাঁতে দাঁত চিপে কথাটা বললো)
আসলে ভাইয়া (আর কীছুই বলতে পারলাম না,ভাইয়া পুরো ভার্সিটির সামনে আমাকে টানতে টানতে নিয়ে গাড়িতে বসালো)
চলেন আপনাদের সাথে পরিচিত হয়।
আমি রিনি এবার inter 3rt year a পড়ি।আসলে করোনাই পরিক্ষা দিতে পারছিনা তাই বললাম,আর যে আমার সাথে এই ভাবে কথা বললো সে হলো রিয়ান ভাইয়া। আমার চাচাতো ভাই।আমার মা ছোট বেলাই মারা গেছে,আর বাবা আর একটা বিয়ে করে বাহিরে চলে গেছে।ছোট থেকে কাকিমা আর কাকুর কাছেই মানুষ হয়েছি।ওরা সকলেই আমাকে খুব ভালোবাসে,শুধু এই রিয়ান ভাইয়া ছাড়া।আর রিয়ান ভাইয়া পড়াশোনা কমপ্লিট করে কাকুর ব্যবসা সামলাচ্ছে।আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে বাড়িতে চলে আসলাম,আর গাড়িতে ভাইয়া আমার সাথে একটা কথাও বলেনি।
গাড়ি থেকে নামিয়ে টানতে টানতে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলো।
বসার রুমে কাকিমা আর আরুশ বসে ছিলো,(আরুশ রিয়ান ভাইয়া ছোট ভাই, ফোর এ পড়ে)
কাকিমার সামনেই আমাকে টানতে টানতে নিজের রুমে নিয়ে গেলান।পিছন থেকে কাকিমা বললো।
কী হয়েছে রিনিকে এমন গরুর মতো টেনে আনছিস কেনো?
কাকিমার কথাই কোনো উওর দেইনি ভাইয়া।
ভাইয়া রেগে গেলে কারো সাথে কথা বলে না,চুপ চাপ থাকে।
ভাইয়ার ঘরে দাড়িয়ে আছি। আর ভাইয়া বসে বসে আমাকে দেখছে।আমার খুব বিরক্ত লাগছে।
হঠাৎ ভাইয়া উঠে আলমারি থেকে একটা ব্যাগ বের করে আমার হাতে দিয়ে বললো।
এর পড় থেকে যেখানেই যাবি এটা পড়ে যাবি, আর কোনো দিন যদি এমন টাইট ফিটিং জামা পড়ে বাইরে বের হতে দেখেছি,সেদিনি তোর বাড়ি থেকে বের হওয়ার শেষ দিন হবে। এবার যা ঘর থেকে বের হ।
আমিও আর কথা না বাড়িয়ে নিজের ঘরে চলে আসলাম।
আসলে ভাইয়া আমাকে বোরখা দিয়েছে আর কাল থেকে বোরখা পড়েই বাইরে যেতে বলেছে।
রাতে সকলে এক সাথে টেবিলে বসে খাচ্ছিলাম।হঠাৎ করে কাকু বললো আমাদের রিনি মার জন্য একটা ভালো বিয়ের পস্তাব এসেছে,ছেলে ভালো জব করে।কাল দেখতে আসবে।
কাকুর কথা শুনে মাথা নিচু করে বসে আছি, খুব কষ্ট হচ্ছে,কীছু বলতে পারছি না,খাবার গলা দিয়ে নামছে না।
হঠাৎ কাকিমা বললো রিনি তুই কী কাউ কে ভালোবাসিস।
আমি শুধু মাথা নারলাম না,তার পরেই ওখান থেকে চলে আসলাম।কারণ আর একটু থাকলেই সকলে আমার চোখের পানি দেখে নিতো। খুব কান্না পাচ্ছে, কী করে বলবো তোমাদের আমি যে তোমাদের ছাড়া থাকতে পারবো না।
কান্না করতে করতেই ঘুমিয়ে পড়েছি।
হঠাৎ মনে হলো কেউ আমাকে টেনে তুলে নিজের কোলে বসালো।
তারা তারি চোখ খুলে দেখলাম রিয়ান ভাইয়া।অনেকটা অবাক হলাম।কারণ রিয়ান ভাইয়া খুব একটা দরকার ছাড়া আমার রুমে আসে না।তাও আবার আমাকে নিজের কোলে বসিয়েছে। আমি সরে আসতে চাইলাম।তখনই ভাইয়া আমার হাত ধরে আবার বসালো আর বললো।
না খেয়ে চলে আসলি কেনো।আর এতো কান্না করার কী আছে । দেখতেই তো আসবে বিয়ে করতে তো না।এবার আমি আবার কান্না করে দিলাম। তখন রিয়ান ভাইয়া আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে জোরিয়ে ধরে চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো।
হয়েছে আর কান্না করতে হবে না।
হা কর আর সব টুকু খাবার শেষ কর।
এই প্রথম রিয়ান ভাইয়া আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিলো আর এতো ভালো ব্যবহার করলো।খুব অবাক লাগছে।যে কী না আমাকে দেখতেই পারে না,সে আজ আমার কষ্ট টুকু বুজতে পেরেছে।
এই সব ভাবছিলাম হঠাৎ রিয়ান ভাইয়া আমাকে জোরিয়েই কম্বলের নিচে ঠুাে পড়লেন।
আর আমার মাথাই হাত বুলাতে বুলাতে বললো।
আর কোনো কথা না। এবার চুপচাপ ঘুমা।
আমি বুজতে পারছিলাম না কী হচ্ছে আমার সাথে।
চলবে"""

image

image

image

আমার বিয়ের এক বছর পর হঠাৎ করে একদিন আমার বরের ছোট বোন নিতু আমায় আড়ালে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললো,'ভাবী, তুমি কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতে চাই আমি তোমার কাছে!'
আমি খানিক সময় চুপ থেকে বললাম,'বল। কিছু মনে করবো না।'
নিতু বললো,'তুমি কিন্তু শোনে অনেক কষ্ট পাবে!'
আমি বললাম,'কষ্ট পেলে আমি পাবো।তুই বল।'
নিতু এবার বললো,'ভাবী, ভাইয়ার সাথে না তোমার বোনের খারাপ সম্পর্ক আছে!'
'মানে?'
ভীষণ রকম চমকে উঠলাম আমি।
নিতু কেঁপে কেঁপে উঠে বললো,'ভাইয়া জানলে আমায় মেরে ফেলবে কিন্তু। আমি গতকাল দেখেছি। তুমি তো মার সাথে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলে।আর আমার আর তোমার বোন পৃথুর স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পৃথু হঠাৎ বললো,তার নাকি মাথা ব্যথা।সে স্কুলে যাবে না।ভাইয়াও বললো পৃথু একা বাসায় থাকবে কী করে!তাই সেও আজ অফিস যাবে না।তারও নাকি শরীর খারাপ। অবশেষে আমি একাই পথ ধরলাম স্কুলের। কিন্তু কিছু পথ যাওয়ার পর মনে হলো অংক খাতা টেবিলের উপর রেখে এসেছি।ওই খাতায় আবার সেদিনের হোম ওয়ার্ক।তাই দৌড়ে আবার বাসায় ফিরলাম খাতাটা নিতে। কিন্তু ফিরে দেখি--!
নিতু কথা শেষ না করেই চুপ হয়ে গেল।
আমি বললাম,'বল প্লিজ!'
নিতু বললো,'ভাইয়া আর পৃথু নোংরামি করছিলো। বিশ্বাস করো ভাবী ওদের শরীরে এক রত্তি কাপড় পর্যন্ত ছিল না।'
আমি সঙ্গে সঙ্গে নিতুর মুখে আমার হাত চেপে ধরে বললাম,'প্লিজ চুপ কর তুই।আমি আর শুনতে পারছি না।'
নিতু অনেক ঘাবড়ে গেল।সে আমার হাতটা চেপে ধরে বললো,'ভাবী,আল্লাহর দোহাই লাগে ভাইয়া কিংবা মা যেন কিছু না জানে। এরপর আমি পৃথুকে সাবধান করেছিলাম। কিন্তু পৃথু আমার কথা শুনেনি।সে এখনও ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ভাইয়ার সাথে ঘুরে বেড়ায় রিক্সা করে। সেদিন তো সিনেমাও দেখেছে দুজন একসাথে।আমি সেদিন বলেছি,আমি কিন্তু ভাবীর কাছে সব বলে দিবো।
পৃথু তখন বললো,বলে দিলে তোমার ভাইয়া তখন আর তোমার রক্ষা রাখবে না।
সেই ভয়ে অতদিন আমি চুপ করে থেকেছি।
নিতুকে আমি বললাম,'প্লিজ তুই যা এখন এখান থেকে।আর চুপ থাকিস প্লিজ!আর কেউ যেন কিছু না জানে এ বিষয়ে!'
নিতু বললো,'আচ্ছা ভাবী।'
বলে সে চুপচাপ আমার কাছ থেকে চলে গেল।
কিন্তু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে নিতুর কথা সত্য নয়।কারণ নিতুর চেয়ে পৃথুর রেজাল্ট ভালো।এইটে পৃথুর গোল্ডেন এ প্লাস থাকলেও নিতুর মাত্র ফোর পয়েন্ট।পৃথু যদি এসব করেই বেড়াতো তবে তো ওর রেজাল্ট গোল্লায় নামার কথা ছিল!
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে কোন একটা জেদ মেটাতে চায় পৃথুর উপর নিতু। কিন্তু সেই জেদটা কী নিয়ে?
তাছাড়া পৃথুকে আমি খুব ভালো করেই চিনি। এমন শান্ত শিষ্ট আরেকটি মেয়ে হয় না।আর সে তো জানে বাবা মা মারা যাওয়ার পর বোনের বাড়ি ছাড়া তার আর কোন আশ্রয় নাই।নিশ্চয় সে তার এই শেষ আশ্রয়স্থল নষ্ট করতে চাইবে না!
'
পৃথুকে সে রাতে কিছু বলতে চেয়েও আমি বললাম না। ভাবলাম,একটা মিথ্যে বিষয় নিয়ে ওর মনে কষ্ট দেয়া ঠিক না। তাছাড়া মিতুল (আমার বর)শুনলেও তো খুব মন খারাপ করবে।হতে পারে এই একটা বিষয় নিয়ে আমার সংসারটাও ভেঙে খান খান হয়ে যেতে পারে।তাই আমি এই বিষয়টাকে একেবারে মাটি চাপা দিয়ে ফেললাম।
'
এর সপ্তাহ খানেক পর আমার শাশুড়ি মাকে নিয়ে আবার ডাক্তারের কাছে গেলাম আমি চেকআপ করাতে। আমার প্র্যাগনেন্সির সাত মাস পাড় হয়েছে।মিতুল আজকাল আমার উপর খুব স্বতর্ক। গতকাল রাতে সে আমার হাত ধরে বললো,'বৃষ্টি,তুমি কিন্তু একদম কাজ করবে না বুঝলে।আমি দেখেছি এখনও রান্না বান্না, কাপড় ধোয়া মুছা এইসব কিছু করো তুমি।এটা কিন্তু ঠিক না।পৃথু আছে,নিতু আছে, ওদেরকে বলবে।ওরা সবকিছু করবে। এমন শরীর নিয়ে কিছু করলে পরে যদি সমস্যা হয়!বিশ্বাস করো বৃষ্টি আমার খুব ভয় হয় তোমায় নিয়ে!'
আমি তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছিলাম।মিতুলের একটা হাত তখন আমার বুকের উপর টেনে এনে মনে মনে ভাবলাম, ছিঃ! এমন ফেরেশতার মতো একটা মানুষকে নিয়ে কী মন্দ কথাটা আমার কাছে বললো নিতু!তাও আবার আপন ভাইকে নিয়ে! ছিঃ!
চেকআপ করাতে বের হয়ে অর্ধেক রাস্তা গিয়ে মনে হলো একটা মস্ত ভুল হয়ে গেছে। গতবারের সব কাগজপত্র রেখে এসেছি সোকেশের ড্রয়ারে।
তাই আবার ফিরতে হলো গাড়ি ঘুরিয়ে। গেটের কাছে এসে শাশুড়ি মাকে বললাম,'আপনি বসে থাকুন গাড়িতে মা।আমি গিয়ে কাগজপত্র নিয়ে আসছি।'
মা বললেন,'ঠিক আছে।'
আমি গাড়ি থেকে নেমে গেট পেরিয়ে ঘরে গিয়েই হতভম্ব হয়ে গেলাম।এ কী দেখছি আমি! ছিঃ!
অবশেষে নিতুর কথাই সত্যি হলো।
ঘরে ঢুকতেই দেখি পৃথুর সাথে এক বিছানায় মিতুল। ওদের শরীরে এক টুকরো কাপড় পর্যন্ত নাই। ছিঃ ছিঃ ছিঃ!
আমাকে দেখেই দুজন দুদিকে সড়ে গেল।
মিতুল বিছানা থেকে উঠে কাপড় ঠিক করতে করতে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেল।আর পৃথু বিছানায় থাকা কাঁথাটা নিজের গায়ের উপর ভালো করে ছড়িয়ে দিয়ে মুখটা বালিশের বুকে গুঁজে দিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়লো।
আমি আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না।মাথা ঘুরছে। সবকিছু কেমন দুঃস্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। তবুও তো কাগজ পত্র নিয়ে গাড়িতে গিয়ে উঠতে হবে।মার সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। মুখে মেকি হাসি ধরে রাখতে হবে। নয়তো যে মা প্রশ্ন করবেন কী হয়েছে তখন আমি কী উত্তর দিবো?
তিনি যদি শুধু একবার জানতে পারেন পৃথু এমন একটা নোংরা কাজে জড়িত তবে তাকে আজকেই তিনি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এ বাড়ি থেকে বের করে দিবেন। তখন পৃথু কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিবে?
তাছাড়া আমাকেও যে তিনি পৃথুর সাথে এ বাড়ি থেকে বের করে দিবেন না তা কে বলতে পারবে?
একটা দুশ্চিন্তা আর চাপা ঘৃণায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে আমার। তবুও নিজের শরীরটাকে অতি কষ্টে টেনে নিয়ে সোকেশের ড্রয়ার খুলে কাগজপত্র বের করে নিয়ে গেলাম গাড়ির কাছে।গাড়িতে উঠে এবার ডাক্তারের কাছে গেলাম।ডাক্তার চেকআপ করে হাসিমুখে জানালো,'আপনি মেয়ে সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন।'
শুনে খুশিতে আমার শাশুড়ি আত্মহারা হয়ে উঠলেন।তার গলায় পরা স্বর্ণের যে চেইন‌ ছিল ডাক্তারের সামনেই তিনি গলা থেকে সেই চেইন খুলে আমার হাতে তুলে দিয়ে বললেন,'এই চেইন দিয়ে আমার নাতনীর জন্য তুমি কানের ঝুমকা, নাকফুল,হাতের চুড়ি বানাইবা।'
আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে জল নেমে এলো তখন। না এটা আনন্দের কোন জল নয়।একটা চাপা দুশ্চিন্তার। এই যে অনাগত কন্যা আমার পেটে।সে যখন ভূমিষ্ঠ হয়ে জানবে তার পিতা একটা পাপিষ্ঠ তখন কেমন হবে?
'একটু মন দিয়ে পড়ুন--
এরকম আরো গল্প ওই গ্রুপে দেয়া আছে, পুরো গল্প গুলো পড়তে নিচে গ্রীন (See More) ক্লিক বা টাচ করুন,তারপর গ্রুপে জয়েন করে পড়েনিন।
ধন্যবাদ।
......See More
� নীল ক্যাফের ভালোবাসা �
এই গ্রুপে দেয়া আছে, জয়েন করে পড়েনিন।
আমার শাশুড়ি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন,'কী গো মা কন্যা সন্তান হবে শুনে তুমি কী খুশি হও নাই?'
আমি কান্নামাখা গলায় বললাম,'খুশি হয়েছি মা। অনেক খুশি হয়েছি।'
'তাহলে কাঁদছো কেন এভাবে?'
'খুশিতে মা।খুশিতে কাঁদছি!'
আমার শাশুড়ি তখন আমায় জাপটে ধরে ফেললেন।আর আমার চোখের দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে বললেন,'না গো মা না। তুমি একটা কিছু লুকাচ্ছো আমার কাছে। তুমি কাঁদছো খুশিতে না অন্য কোন কারণে! খুশির কান্না এমন হয় না!কেন কাঁদতেছো সত্যটা কও মা আমার কাছে!সত্যটা আমার কাছে বলতেই হবে!
'
#চলবে

image

image

--বর্তমানে বিশ্বের প্রথম হিজাবী পাইলট হলেন পাকিস্তানের ক্যাপ্টেন শাহনাজ লাগহাড়ি।??
--হিজাব পরে বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা
করেন মাশাল্লাহ?❣️

image

image