Back To Blogs | My Blogs | Create Blogs

মাস্কে ঢাকা ত্বকে ব্রণ? আছে সমাধান

করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে আপনি নিয়মিতই মাস্ক পড়ছেন। কিন্তু মাস্ক পড়া শুরু করার পর হতে আপনি হয়তো প্রায়ই দেখছেন, মাস্কে ঢাকা থাকা মুখের অংশে ব্রণ হচ্ছে।

বিভিন্ন কারণে নিয়মিত যে ব্রণ হয় এটি আসলে সেই ব্রণ না। মূলত মাস্ক পরার কারণেই এই ব্রণগুলো হয়ে থাকে। এসব ব্রণ হয় বলে কিন্তু মাস্ক পড়া ছেড়ে দেওয়াও সম্ভব না। নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করলে ও ত্বকের যত্ন নিলে সহজেই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা ও বড় ধরণের ক্ষতি থেকে বাঁচা সম্ভব।

তবে প্রত্যেকের ত্বক একরকম না। সবাই একইরকম ব্যবস্থা নিলে তাতে কাজ নাও হতে পারে। আর তাই ধীরে-সুস্থে আগাতে হবে। এতে আপনার ত্বকের কোনো ক্ষতি না করেই ত্বক সুস্থ রাখতে পারেন।

মাস্কে ঢাকা ত্বকে ব্রণ কেন হয়

মুখে সাধারণ ব্রণের মতোই বিভিন্ন কারণে মুখের মাস্কে ঢাকা ত্বকেও ব্রণ হতে পারে। নিয়মিত মাস্ক না ধোয়া, শক্তিশালী ডিটার্জেন্ট পাউডার দিয়ে মাস্ক ধোয়া, মাস্ক যে উপাদানে তৈরি তার কারণে কিংবা শুধুমাত্র নিয়মিত মাস্ক পড়ার কারণেও এসব ব্রণ হতে পারে।

সাধারণত মানুষ যখন কথা বলে, শ্বাস ফেলে, কাঁশি বা হাঁচি দেয় তখন নাক-মুখ থেকে লালা ও ড্রপলেট বের হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এসব করোনা ভাইরাস বহন করে অন্যদের মধ্যে ছড়াতে পারে। যার জন্যই মূলত মানুষ মাস্ক পড়ছে। কিন্তু সবসময় মুখ মাস্কে ঢাকা থাকায় এসব লালা বা ড্রপলেট মুখের ঢাকা অংশে লেগে থাকে। আর সেসব থেকে ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। নিউইয়র্কের ত্বক বিশেষজ্ঞ দায়লান মোস্তাফিজ বলেন, মাস্কের কারণে মুখের ভেতর আস্তর তৈরি হয়। যা ব্যাকটেরিয়া তৈরি করতে সক্ষম। আর সেসব ব্যাকটেরিয়ার কারণে মাস্কে ঢাকা অংশে ব্রণ হয়ে থাকে।

ব্যবহারের পর নিয়মিত মাস্ক ধুয়ে ফেললে এসব ব্যাকটেরিয়া বাঁচতে পারেনা। তবে মাস্ক ধোয়ার কারণেও অনেক সময় সমস্যা হয়। কিছু শক্তিশালী ডিজার্জেন্ট আছে যেগুলো ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এসব ডিটার্জেন্টের কারণেও ত্বকে ব্রণ হতে পারে। আর সেজন্য সাধারণ ও সুগন্ধিহীন ডিটার্জেন্ট ব্যবহার করা উচিত।

আবার অনেক সময় দুশ্চিন্তার কারণে মুখে ব্রণ হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে অনেকেই দুশ্চিন্তা করছে। ফলে অনেকের এ কারণেও ব্রণ হচ্ছে। এজন্য স্বাভাবিক ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা দরকার।

চিকিৎসা কিভাবে করবেন

আপনার যখন জনবহুল এলাকায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে তখন আপনার অবশ্যই মাস্ক পড়া উচিত। কিন্তু খুব জরুরি প্রয়োজন না পড়লে জনবহুল এলাকায় না গিয়ে আপনার ঘরে থাকা উচিত। এতে করে আপনার মাস্ক পড়তে হবেনা। আপনার ত্বক পর্যাপ্ত আলো বাতাস পাবে। ত্বক পর্যাপ্ত আলো বাতাস পেলে ব্রণ থেকে বাঁচতে পারেন।

এছাড়া, ব্যবহারের জন্য আপনি একাধিক মাস্ক কিনে নিতে পারেন। পালাক্রমে সেসব মাস্ক পরতে পারেন। তাছাড়া মাস্কগুলো নিয়মিত ধুয়ে পড়তে হবে। তবে মাস্ক কেনার সময় সুতি কাপড়ের মাস্ক কিনলে ভালো। এগুলো ধুতে সহজ হয়। এছাড়াও সুতি কাপড়ের মাস্ক পড়লে শ্বাস প্রশ্বাসেও অসুবিধা হয়না।

টেক্সাসের ত্বক বিশেষজ্ঞ কেটি লি নামের এক চিকিৎসক 'ডিসপোজাল মাস্ক' পড়তে উৎসাহিত করেছেন। কিন্তু অনেকেরই প্রতিদিন এসব মাস্ক কিনে ব্যবহারের সামর্থ নেই। এ কারণে তাঁর পরামর্শ, প্রতিদিন একই মাস্ক না পড়ে আলাদা আলদা দিনে আলাদা মাস্ক পড়ার। তিনি বলেন, মাস্ক পরিবর্তন করে পড়ার সুবিধা অনেক। এতে একইসাথে ব্যাকটেরিয়া আপনার ত্বকের ক্ষতি করতে পারবে না। আবার আপনার অতো পয়সাও খরচ হবেনা।

যেসব নারীরা নিয়মিত মেকাপ নেন তাদের এই চিকিৎসক মাস্কে ঢাকা থাকা অংশে মেকাপ না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কেটি লি বলেন, ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও আর্দ্র থাকা ভালো। অনেকেই মনে করেন, ত্বক শুষ্ক থাকলে ব্রণ থেকে বাঁচা সম্ভব। কিন্তু ত্বক শুষ্ক থাকলে বরং ব্রণ আরো বেশি হয়। ত্বক বিশেষজ্ঞ কেটি লি বলেন, ত্বকের তৈলাক্ত ভাব বিভিন্ন ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সক্ষম।

ব্রণ থেকে বাঁচতে মাস্ক পড়ার আগে ও পরে মুখ ধুতে হবে। এছাড়া ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়ে গেলে ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। যেসকল ফেসওয়াশে স্যালিসাইলিক এসিড থাকে সেগুলো ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সক্ষম। সেজন্য এমন ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত।

মুখে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্রণ হলে অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বিভিন্ন ঔষধও ব্যবহার করে থাকে। যা কখনো কখনো ত্বকের ক্ষতিও করতে পারে। আর তাই আপনার ত্বকের সুরক্ষার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী ঔষধ কী তা জানার জন্য সম্ভব হলে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।


Shakib Khan

106 Blog Postagens

Comentários