..........হারানো কিছু অতীত........

কলেজে আজ প্রথম দিন ৷ কিন্তু সকালে উঠতেই দেরি হয়ে গেল ৷ কোনরকমে ফ্রেস হয়ে কলেজের উদ্দ্যেশে ছুটলাম ৷ এক বড়ভাইকে জিজ্ঞাসা করে ক্লাস রুমে গেলাম ৷ দেখি আসলেই দেরি হয়ে গেছে ৷ ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই বসে আছে, কয়েকজন শিক্ষক দাড়িয়ে আছে ৷ পরিচয় পর্ব চলছে মনেহলো ৷
- স্যার, আসতে পারি?
- নিউ ফাস্ট ইয়ার?
- জি স্যার ৷
- আসো ৷
ভেতরের ঢুকে দেখি ছেলেদের সারিতে কোন ছিট খালি নাই ৷ তাই কয়েকটা ছেলে মেয়েদের সারিতে গিয়ে বসেছে ৷ আমিও তাদের পাশে গিয়ে বসলাম ৷ ভালই হলো প্রথম দিনের কলেজ ৷ তবে তেমন কারো সাথে বন্ধুত্ব হলো না ৷ কারন আমি একটু একা থাকতে ভালবাসি, কারো সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলতে ইচ্ছা হয় না ৷ কলেজ শেষ করে রিকসার জন্য দাড়ি আছি ৷ হটাৎ একটা মেয়ে এসে,
- এই চলো ঘুরে আসি?
- কে আপনি? কথা নেই বার্তা নেই ঘুরে আসি মানে?
- আমি তোমার ক্লাস মেট ৷ তোমার সামনেই তো বসা ছিলাম, দেখোনি?
- খেয়াল করিনি, কিন্তু আমি আপনার সাথে ঘুরতে যাবো কেন?
- ওই কলম দিয়ে চোখ গেলে দেবো, আপনি করে বলছো কেন? আর এখন আমার সাথে না গেলে আমি চিৎকার করে লোক জড়ো করবো ৷
- তাতে আমার কি?
- আমি বলবো তুমি আমায় বাজে কথা বলেছ ৷ তাহলে গণধোলাইয়ের জন্য রেডি হও ৷
- আ..আমি যাবো তো, আপনার সাথে ঘুরতে যাবো, চলেন...
- আবার আপনি?
- না না, তোমার সাথে ঘুরতে যাবো, চ.. চলো..
- গুড বয়, আর এতো ভয় পওয়া লাগবে না ৷ একটা রিকসা ডাকো ৷
- Ok
নিরবে অন্যদিকে ফিরে বসে আছি রিকসায় ৷
- ওই এভাবে বসেছ কেন, সোজা হয়ে বসো ৷ আগে কখনো কোন মেয়ের সাথে রিকসায় বসোনি?
আমি সোজা হয়ে বসলাম ৷ রিকসাটা একটা বড় হোটেলের সামনে এসে থামলো ৷ মনে মনে একটু ভয় পেলাম ৷ আজ মনেহয় মানিব্যাগের বরোটা বাজবে ৷ মেয়েটা আমার হাত ধরে হোটেলের ভিতরে নিয়ে গেল ৷ বসে একটা ওয়েটারকে ডাকলো মেয়েটা
- ওয়েটার...
- জি মেডাম ৷
- মেনুটা দেখি ৷
- এই যে মেডাম ৷
- নুডলস নেই?
- জি না, মেডাম ৷
মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
- চলো, তাহলে অন্য হোটেলে যাই ৷
- যা আছে, তার মধ্যে থেকে কিছু অডার করো ৷ অন্য হোটেলে কেন?
মেয়েটা এমনভাবে চোখ বড় বড় করে তাকালো আর কিছু বলার সাহস পেলাম না ৷
যাই হোক আরো দুইটা হোটেল ঘুরে নুডলস পেলাম ৷ কিন্তু মেয়েটা একপ্লেট অডার করলো কেন বুঝলাম না ৷ কিন্তু সেদিকে আমার মন নাই, আমি চলে গেছি অতিতে...
:
মাধ্যমিক শেষ হওয়ার কিছু আগে মিমের সাথে রিলেশান হয় আমার ৷ প্রায় ক্লাস ফাকি দিয়ে ঘুরে বেড়াতাম আমরা ৷ ও নুডলস খেতে খুব ভালবাসতো, তার চেয়ে বেশি ভালবাসতো আমাকে খাইয়ে দিতে ৷ একপ্লেট নুডলস অডার দিয়ে দুইটা চামচ দিয়ে ও আমাকে আর আমি ওকে খাইয়ে দিতাম ৷ মাঝে মাঝে নদীর ধার দিয়ে হাটতাম ৷ এটা ছিল আমার প্রিয় ৷
:
- নাও হা করো
মেয়েটার কথায় বাস্তবে ফিরে এলাম ৷ একটা চামচে নুডলস নিয়ে আমার মুখের কাছে ধরে আছে ৷ এবার আমার অবাক হওয়ার পালা ৷
- কি হলো, এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? হা করো ৷
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না ৷ গলাটা ধরে আসছে ৷ আমি নিজে খেতে চাইলাম, কিন্তু মেয়েটা না করলো ৷ খাওয়া শেষে মেয়েটা বলল,
- মানিব্যাগটা দাওতো
মিমও ঠিক এরকম ভাবেই বলতো ৷ টাকা দিয়ে বাইরে আসলাম ৷ আমি অবাক দৃষ্টিতে দেখছি মেয়েটাকে ৷ ও মনেহয় একটু লজ্জা পেল,
- কি দেখো?
- কিছু না ৷ (চোখ সরিয়ে নিলাম)
মেয়েটা আমার হাতটা ধরে বলল,
- পাশে একটা নদী আছে, নদীর ধারে হাটবা?
এবার আরো অবাক হলাম আমি ৷ কে এই মেয়ে? কিন্তু মেয়েটা আমার উত্তরের অপেক্ষা না করে হাটতে শুরু করলো ৷ আমি আবার অতিতে চলে গেলাম ৷
:
শেষ কবে নদীর ধারে হেটেছি মনে নেই ৷ মিম চলে যাওয়ার সাথে সব বন্ধ হয়ে গেছিলো ৷ ব্রেন্টে টিউমার ছিলো ওর ৷ অপারেশন করতে গিয়েই...
আমার জীবনটাও ওলোট পালোট হয়ে যায় ৷ সেই চঞ্চল, হাসি-খুশি, সব সময় আড্ডাবাজিতে সিহাবের ও মৃত্যু হয়, হয়ে যাই শান্ত নিরব সিহাব ৷ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরেও বের হতাম না ৷ আজ এই মেয়েটার জন্য অনেকদিন পর আবার জীবনটা কিছুটা অতীতের মত চলছে ৷ কিন্তু মেয়েটা কে, আগে তো কখনো দেখিনি ৷
:
- আর হাটতে পারছি না, চলো বসি...
- চলো ৷
বসে পাল তুলে চলে যাওয়া নৌকার দিকে তাকিয়ে আছি,
- ওই রিয়াদ, কি ভাবছো?
আমি যেন শক খেলাম, কারন এই নামে আমাকে শুধু মিমই ডাকতো ৷ আর কৌতহল চাপতে না পেরে বললাম,
- কে তুমি?
মেয়েটা একটা ডায়রী বের করে আমার হাতে দিল ৷ যেটা আমি মিমকে দিয়েছিলাম ৷ আমাদের প্রতিদিনের ঘটনা এতে লিখতো মিম ৷ মেয়েটা বলতে শুরু করলো,
- আমার নাম মেঘা, মিম আমার কাজিন ৷ মিম মারা যাওয়ার আগে এটা আমায় দিয়ে কিছু বলতে চেয়েছিল, কিন্তু পারিনি ৷ ডায়রীটা পড়ে আমি তোমায় ফলো করা শুরু করি এবং ধীরে ধীরে তোমাকে কখন ভালবেসে ফেলি বুঝতে পারিনি ৷ একটা সুযোগ দেবে আমায়, মিমকে আমার মধ্যে বাচিয়ে রাখার?
বলে মাথা নিচু কাঁদতে কাঁদতে দুহাতে আমার হাতটা চেপে ধরলো মেয়েটা ৷ আমা-র চোখের কোন বেয়ে দুফোটা অশ্রু পড়লো ডায়রীটার উপর ৷ মেঘা আমার চোখের জলটা মুছে আমার বুকে মাথা রাখলো ৷ বাধা দিতে গিয়েও দিলাম না ৷
হয়তো এতটাই শেষ চাওয়া ছিল মিমের...
:
:
(ক্ষুদ্র লেখক, ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)
.......✍

__গল্পটা খুব কষ্টের,চোখে পানি আসবেই__
আমার পাসের বাসার একটা মেয়ে,নাম _মিম_
আর আমার নাম _ইমন_
_______ __________
মিম আর আমি ২.জনেই খুব ভালো বন্ধু__।
বলতে পারেন একজন আর একজনকে ছারা চলে না_।
হঠাত করে একদিন আমি, মিম,কে মজা করতে করতে বল্লাম_মিম,^___I lov u...
ও বলে,,,,
সুন ইমন আমি তোকে ভালবাসতে পারবো না।
তুই সুধু আমারর বন্ধু_।
এই কথা বলেই চলে গেল আটকাতে পারলাম না__।
এভাবেই দিন যেতে লাগল কিন্তু বালিকা ত আমাকে ভালবাসেনা _কি যে করি___।
বলতে বলতে বালিকার ফোন__<<<
---ওই, ইমন,কি করছ?
---তর কথাই ভাবতাছি,মিম,-!
---চূপ থাক খাইছছ?
---না!!! _<_ তুই খাইছশ-মিম-?
হ্যা খাইছি_!!
----তুই এখনি খেয়ে নে৷আর মাঠে তাড়াতাড়ি আয়৷
---আচ্ছা ৷
বলেই লাফাতে লাগলাম৷বালিকার মনে হয়ত আমার জন্য ভালবাসা জাগছে৷তাড়াতাড়ি খেয়ে গেলাম৷গিয়েই বললাম৷
--কিরে মিম?হঠাৎ জরুরি তলফ
---হুম৷সামনে আমাদের এক্সাম রে৷খুব টেনশনে আছি
---কোনো চিন্তা করিস না৷ফেইল করলে তরে আমি বিয়া করমু৷তারপর দুইটা ক্রীকেট খেলার টিম বানামু৷তর এক দল,আমার একদল৷বলেই হা হা হা করে হাসি দিলাম কিন্তু হাসি দেওয়ার পর কি ঘটল তা আমি কেন?আমার চোখও বিশ্বাস করতে পারল না৷এমন ভাবে আমার গালে চড় মারল যেন গাল দিয়ে ধোয়া বের হচ্ছে৷চড়টা মেরেই মিম বলা শুরু করল তকে বন্ধু করেই জীবনের বড় ভুল করছি৷আজ থেকে আমাদের বন্ধুত্ব এখানেই শেষ৷বলেই চলে গেল৷আর আমার চোখ দিয়ে বৃষ্টির মত পানি পড়ছে৷কিছুই বুঝতে পারলাম না৷খুব খারাপ লাগছে৷শেষ মেষ বন্ধুত্বটাও শেষ?কেমন জানি স্বপ্ন স্বপ্ন লাগছে৷তাও কীছুই করার নেই৷অশ্রুভরা চোখ আর বুক ভরা কষ্ট নিয়ে বাসায় আসলাম৷এসেই শুয়ে পরলাম৷বালিশটাও ভিজে গেছে৷পুরানো স্মৃতি গুলো মনে পরছে৷প্রতিদিন ওকে ফোন দিয়ে ঘুম পারানো৷ঘুম থেকে জাগাতাম৷দিনে কমপক্ষে১০০বার ফোন৷আর মেসেজ ত আছেই৷ সব স্মৃতি গুলো মনে পরছে৷আমাদের বন্ধুত্ব শেষ হলেও আমি ঠিক আগের মতোই ফোন দিতাম৷মেসেজ দিতাম৷মিম খুব বিরক্ত ফীল করত৷তারপরও কথা বলতে চাইতাম৷হঠাৎ একদিন দেখলাম মিম পার্কে এক ছেলের সাথে হেসেহেসে কথা বলছে৷যেন কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছে৷তাই বাসায় এসে পড়লাম৷বুকটা ব্যাথা করছে৷তাই ভাবলাম মিমকে একটা ফোন দেই৷অনেকবার কল হওয়ার পর রিসিভ করল
—মিম বুকে ব্যথা করতেছে।ব্যথা করা
ভালো। এখন আমাকে আর ডিস্টার্ব করবি না,
পরশু
আমার এক্সাম।
— আচ্ছা নাপা খেলে ব্যথা যাবে?
----- হ্যাঁ যাবে। এখন আর ফোন দিস না প্লিজ
কিছুই
পড়া হয়নি।
— কয়টা খাবো?
--- উফ্,,, তোর যতটা খেতে মন চায় খা। প্লিজ
ইমন
আর না।
— লাষ্ট, ভালোবাসিস??
---- ইমন এসব কথার কোন মানেই হয় না আমরা
জাস্ট
ফ্রেন্ড তর অনুরোধে কিন্তু ২য় বার ফ্রেন্ড হইছি৷তাই যা বলছ ভাল করে বুঝে বলিস
— থ্যাঙ্কস মিম রাখি।
---- ওকে রাখ। আর ভবিষ্যৎ এ যেন এমন কথা আর
না শুনি?
— ওকে।
..
ফোনটা কেটে দিলাম। একসময় মিম
মেয়েটা সারাক্ষণ আমার খবর নিত এখন আর নেয়
না।
আর জিজ্ঞেস করেনা : "কাউকে পছন্দ করিস
কিনা
ইমন?" আর আগের মতো কি করতে হবে
বলেনা। হঠাৎ বুকের ভিতরে আবার চিপ দিয়ে
উঠে বুকটা চেপে ধরে একটু বিছানায় শুয়ে
পড়লাম খুব কষ্ট হচ্ছে। আবার বিছানা থেকে উঠে আমাকে
নাপা
খেতে হবে। কয়টা খাব?? মিম তো
বলেই দিয়েছে যতটা ইচ্ছে খেতে পারে।
সবগুলো ওসুধ মুখের ভিতরে পুরে ঘুমিয়ে
পড়লাম
..
..
কাক ডাকা ভোরে উঠে পড়ে মিম।
মোবাইল চেক করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে
"যাক আজ কোন ম্যাসেজ ও নাই মিসড কল ও
নাই।"
পড়ায় মনোযোগী হয়৷মিম মন দিয়েই পড়তে
থাকে হঠাৎ মনটা যেন কেমন কেমন করছে
তবুও ভালো ইমন জালাচ্ছে না। ছেলেটার
কোন
কমন সেন্স ও নাই যখন তখন ফোন
দিয়ে বলবে মিম এইটা হয়েছে এখন কি
করবো? অইটা হয়েছে বোরিং।
কয়েক ঘন্টা কেটে গেলেও মিমের মোবাইল
এর আলো জ্বলছেনা। হঠাৎ মোবাইল এ
ম্যাসেজ টোন বেজে উঠলো। মিমের কাছে
বোরিং হ্যাপি দুইটাই লাগলো। ম্যাসেজ অন
করে
হতাশ হয় রবি সীম কোম্পানির এস এম এস।
রবি সীমকে কয়েকশো গালাগাল দেয় সে।
ঘড়ির ঘন্টার কাটা ক্রমেই বেড়ে চলেছে
কিন্ত
একটিবার এর জন্যও ইমনের মোবাইল থেকে
কল
আসেনা। হঠাৎ মিমের স্মরণ হয় গতদিনের
কথা :-
"মিম বুকে ব্যথা।"
ওর ব্রু যুগল কুঁচকে যায় মুখটা কালো হয়ে
যায়
বুকের ভিতরটা খা খা করে উঠে মন থেকে কত
রকম ভয় করছে। রাত নটা মিম একদম পড়তে
পারছেনা বারবার ইমনের কথা মনে পড়ছে।
ইমনের
ম্যাসেজ তো তার বোরিং লাগে কিন্ত সে
কেন
এখন ইমনের ম্যাসেজ খুজছে? কিছু না ভেবেই
ইমনের
নাম্বারে ফোন দেয়।
— হ্যালো ইমন
--- আমি ইমনের বড় ভাই বলছিলাম।তুমি মিম
তাই না? ইমন
তোমার কথা বলেছে এখন ও বাইরে আছে
বন্ধুদের সাথে। পরে ফোন দিও
— আপনি এরকম কেঁদে কথা বলছেন কেন?
আমার কিন্ত ভয় হচ্ছে
---- আরেহ আমাদের বাড়িতে একজন মুরুব্বি
মারা
গেছে ওনার জন্য মন খারাপ। আর কাল এক্সাম
যেন ভালো হয়।
— ওকে ভাইয়া ইমন এলে আমার কথা বলবেন।
মিম
কিছুই বুঝেনা ইমনকে কি সে ভালোবাসে?
এক্সামের কথা মনে পড়তেই পড়তে বসে যায়
মিম পড়ায় মন না বসলেও জোর করে পড়ছে
সে। হঠাৎ ঘুমের দেশে হারিয়ে যায় সে।
ঘুমের মাঝে কে যেন চিৎকার করছে মিম
ভালোবাসিস কন্ঠটি পরিচিত কিন্ত ধরতে
পারছেনা।
হঠাৎ ঘুম ভেংগে যায় আজ কাক ডাকার আগেই
উঠে
গেছে। মিমের চোখে মুখে আতঙ্ক
মোবাইল টা হাতে নেয় কোন ম্যাসেজ নেই,
নেই কোন মিসড কল। মিম চায় হঠাৎ করে ই
একটা কল আসুক আর নামটা ভাসুক "Emon" কিন্ত
নামটা
আর ভাসেনা। মিমের মনে হচ্ছে সে
ইমনকে
ভালোবাসে।ইশ যখন বলবে ইমন ভালোবাসি
কতই না খুশী হবে সে। ভাবতেই অবাক লাগছে।
এক্সামের পর সোজা ইমনদের বাড়িতে চলে
যায়
সে। ইমনদের বাড়িতে আগেও এসেছিল তাই
খুব
একটা কস্ট হয়নি। ইমনদের ঘরে এত মানুষ
কেন?
ইমনের বন্ধুরা সবাই এখানে ইমন কই? আগের
বার
এসেছিল তখন ত ইমন কত খুশি হয়েছিল।
ইমনের ভাই ই
মিমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইমনকে
দেখাবে
বলে। কিন্ত মিমর মনে খটকা এদিকে তো
গোরস্তান এখানে কেন আনতেছে। ইমনের ভাই
পকেটে হাত দেয় একটা ছেড়া পাতা দেয়
মিমের
হাতে। কাগজটি পড়তে শুরু করে হ্যাঁ এটা
ইমনের
লেখা। :- "কেমন আছিস মিম?আশা করি ভালো থাকারই কথা।
ভাইয়া
চেয়েছিল তোকে জানাতে আমার অবস্থা
ভালো না কিন্ত তোর এক্সামের এমনেই
অনেক ক্ষতি করে ফেলেছি তাই আর জানাই
নি।
এক্সাম কেমন হয়েছে? ও সরি আমিতো আর
বললেও শুনতে পাবো না। সম্ভবত তুই আমার
কবরের পাসে দাঁড়িয়ে জানিনা কোনখানে
কবর
দেওয়া হয়েছে। তবে আমি খুশি হয়েছি এই
ভেবে যে আর তোকে ডিস্টার্ব করবোনা।
আসলেই তোকে অনেক ডিস্টার্ব করেছি মাপ
করে দিস। আর হ্যা রনি অনেক ভালো
হ্যান্ডসাম
তোর সাথে মানায় সেদিন তোদের দুজনকে
পার্কে দেখেছিলাম খুব খুশি হয়েছিলাম
আবার রনি
তুই দুজনের উপরে রাগ এসেছে। আর ও সরি
তোর এমনেই অনেক টাইম নষ্ট করেছি সামনে
এক্সাম ভালো করে দিস। আর একটা কথা
নাপা কাজ
করেছে আমার সব ব্যথা দূর করে দিয়েছে।
থ্যাঙ্কস মাফ করে দিস। আর একটা কথা রাগ
করিস না
"ভালোবাসি মিম?"। আবার সরি আর
জীবনেও
বলবোনা এই কানে ধরেছি। বোরিং বোরিং
......"
মিম ধপ করেই ইমনের কবরে বসে পড়ল৷আর চিৎকার করে কান্না করছে৷আর ওর মুখ থেকে বের হচ্ছে,ইমন?এই ইমন?ওঠ৷একটিবার দেখ আমি এসেছি৷তুই না আমাকে ভালবাসিস?আমিও তকে ভালবাসিরে৷ওঠ ইমন ৷ওঠ৷তুই না দুইটা ক্রিকেট টিম বানাবি৷আমি রাজি রে৷তারপরও তুই ফিরে আয় ইমন৷চিৎকার করে বলছে ফিরে আয় ইমন৷ফিরে আয় ৷তকে খুব ভালবাসিরে৷ফিরে আয়৷
কিন্তু না ইমন আর আসবে না ৷চলে গেছে অনেক দূর৷যেখানে গেলে কেউ আর ফিরে আসেনা৷
....ভালবাসার মানুষগুলোকে অবহেলা করোনা৷নয়ত এর ফল সারাজীবন ভোগ করতে হবে৷....

image

:::::::একটি কালো মেয়ের বাস্তব জিবনের গল্প::::::

((((সবাই পড়ুন ১০০% ভাল লাগবে))))

। বাঙালী মেয়েদের রূপ অন্যান্য মেয়েদের তুলনায় আলাদা। তারা সুন্দর হলেও শ্যামলা, আবার কালো হলেও শ্যামলা। আমি জানি না আমার হবু স্ত্রী এ দুটার মধ্যে কোনটার পাল্লায় আছে।

..গল্পঃ শুরু নিচে থেকে.

যাইহোক, বাসর রাতে ওকে দেখলাম। প্রতিবেশিদের যত কানাঘুষা শুনেছি মেয়েটা দেখতে তত খারাপ না। ওদের কাজই এরকম। কারো ভালো কিছু সহ্য করতে পারে না। ওদের কোন কথায় কান দিলাম না।
..
বাসরের নিভু নিভু জোনাক আলোতে ওর মুখটা অনেক সুন্দর লাগছিল। ও খেয়াল করছিল আমি ওর দিকে অনেক্ষন তাকিয়ে আছি। সে একটু ভিত গলায় আমাকে জিজ্ঞেস করলো এভাবে কি দেখছেন! আমাকে ছবিতে দেখেন নি?
আমি জানতাম না কোন ছবির কথা। কেউ আমাকে বলেনি মেয়ের বাড়ি থেকে ছবি এসেছে। আমি ওকে বললাম আমি তোমাকে না দেখে বিয়ে করেছি। তোমাকে আমার বাবা পছন্দ করেছেন।
সে বললো বাবা যদি না করতেন তাহলে করতেন না? আমি না বললাম। মেয়েটা তখন আর কিছুই বললো না। চুপ-চাপ থেকে গেল। আমিও ওর সাড়া-শব্দ না শুনে ঘুমিয়ে পড়লাম।
..
সকালে ঘুম থেকে উঠে লঙ্কা-কান্ড হয়ে গেল। জীবনেও কল্পনা করিনি আমার সকালটা এরকম হবে। সোফায় বসে ছিল সে। মেয়েটা গতকাল রাতের অপ্সরী ছিল না বরং অপ্সরী ন্যায় কোন ভূত ছিল। আমি লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠি। সে আমাকে সালাম দিল। আমি কোন জবাব না দিয়ে আম্মুর রুমে গেলাম। আম্মু আমাকে রাগান্বিত দেখে বললেন কি হয়েছে বাবা! এই সাতসকাল বেলায় এরকম মুখ বানিয়েছিস কেন?
আমি টাস করে দরজায় লাথি দিয়ে বললাম তোমরা আমার জীবনটাকে নিয়ে এভাবে খেলতে পারলে! আমি কি দোষ করেছি যে আমার এরকম মেয়ে জুটালে!! কেন!!???
..
আমার হাইস্পিড আর হাইলোডের কথায় রুমে প্রতিধ্বনি ভাসতে লাগলো। আম্মু কিছু বলছে না। আমি জোরে জোরে চেঁচাতে লাগলাম। আম্মু শুধু একটাই কথা বললেন, তোর বাবা সব জানে। এটা শুনে থমকে গেলাম। মনটা ভিষন খারাপ হয়ে গেল। মনে হচ্ছিল বাবা আমাকে ইচ্ছে করে তালাবে ফেলে দিয়েছেন।
..
বাবা তো অন্তত আমাকে মেয়েটার ছবির দেখাতে পারতেন। আর মেয়ে দেখতে যাওয়ার সময় কি টিনের চশমা লাগিয়ে গিয়েছেন যে কালো একটা মেয়েকে আমার জন্য পছন্দ করে আসছেন!
..
মেয়েটা কালো নাহ, অনেক কালো। ছোটবেলায় আমার নজর না লাগার জন্য মা কপালে যে টিপ লাগিয়ে দিত ওইটার মত দেখতে কুচকুচে কালো। একে নিয়ে কিভাবে থাকবো!
..
ভাবছি কোথাও বেরোলে পাচে কেউ জিজ্ঞেস করবে না তো এই জঙলিটাকে কোথা থেকে নিয়ে এসেছি! কেউ মজা করার জন্য বলবে না তো মেয়েটা বাড়ির বউ নাকি কাজের মেয়ে!
..
আব্বুর ভুল ডিসিশনের কথা আমি ভাবছি না, আমি ভাবছি এই কালো মেয়েটাকে নিয়ে কিভাবে সংসার করবো! ও কালো হয়েছে, কয়েকদিন দিন পর আমার সন্তানও কালো হবে। সব কালো হবে। উফফফফ!!! নাহ!! এটা আমি মেনে নিতে পারবো নাহ। যা বলার যা শুনার সব কোর্টে। আমি ডিভোর্স চাই।
..
মেয়েটা ততক্ষনে সব জেনে গেছে আমার রেগে যাওয়ার কারনটা কি। সে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে রুমে চলে গেল। ওর চেহারাটা দূর আওয়াজটাও আমার কানে বিচ্ছিরি শুনাচ্ছিল।
..
আব্বু ঘরে হৈ চৈ শুনে ভিতরে এলেন। মনে হচ্ছিল বাইরে কোথাও ছিলেন। আমাকে বললেন কি হয়েছে এত আওয়াজ কিসের! আমার মুখ থেকে কোন কথা বের হচ্ছিল না। সারা দুনিয়ার সামনে আমি যা-তা করতে পারি কিন্তু বাবার সামনে কিছুই করতে পারিনা। মুখ ফুটে বলতেও পারছি না কথাটা। হাত মুষ্টিবদ্ধ ছিল। ওইগুলো খুলে একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বেরিয়ে গেলাম।
..
আমি ছাদে বসে ভাবছিলাম কেন আমার সাথে এরকমটা হল! আমি কি দেখতে খারাপ যে আমার বউও খারাপ হবে! নাকি আমার টাকা পয়সা কম! আমার তো সবই আছে তাহলে কেন এরকম মেয়ে আমার কপালে জুটলো! মাথা ফেটে বেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু কোন উত্তর পাচ্ছি না। ছাদের রেলিং এর রডে শক্ত করে ধরে আছি। হয়ত রাগ চেপে রাখছি। ইচ্ছে করছিল রডটা চ্যাপ্টা করে দিই। তখন হঠাৎ পিছন থেকে আব্বুর আওয়াজ শুনতে পেলাম। আব্বু ডাকছেন। হাত নরম হয়ে গেল। রড ছেড়ে দিলাম। তাকিয়ে দেখি রড যেভাবে ছিল সেভাবেই আছে। শুধু আমার হাত লাল হয়ে গেছে। আর প্রচন্ড রেগে যাওয়াতে মুখটা গরম লাগছিল।
..
আব্বুর আদেশ মেনে আব্বুর পিছন পিছন উনার রুমে গেলাম। আম্মুর চেহারা দেখে বুঝে গেলাম উনি সব আব্বুকে বলে দিয়েছেন। তারমানে এখন আর নাটক করা যাবে না। যা বলার ক্লিয়ারকাট বলবো। আব্বু নরম স্বরে বললেন,
..
-সকাল বেলা তোমার আচরনের কারনটা জানতে পেরেছি। কেন আমি ওই মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছি এটাই জানতে চাচ্চো তো!
..
আমি মাথা নিচু করে হ্যাসূচক জবার দিলাম। আব্বু বললেন,
..
-তার আগে আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দাও। কেন প্রিমাকে এক্সেপ্ট করতে পারছো না! সে কি বিবাহিতা! নাকি সে কি ধর্ষিতা! নাকি দেখতে কালো!!
..
আব্বুর প্রশ্ন শুনে চমকে গেলাম। এমনিতেই সহজ কিছুর উত্তর দিতে পারিনা আর এটা তো...........। আমি বরাবরের মত চুপ থেকে গেলাম। কিছুই বলতে পারলাম নাহ। উনি বললেন, "মেয়েটার গায়ের রঙ না দেখে মনটা দেখতে, মন কে ভালোবাসতে। গায়ের রঙ তো একদিন খসে পড়ে যাবে কিন্তু মন নাহ। তাই, আমি যা বলছি তাই করো। মেয়েটাকে নিয়ে সুখে থাকো। আর আমি তোমার বাবা। কোন বাবা তার ছেলের খারাপ চায় না। যেদিন বাবা হবে সেদিন টের পাবে"।
..
আব্বুর কথা শুনা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল নাহ। সব বুঝেছি ভান করে রুমে চলে গেলাম। এসে দেখি সে কাঁদছে। আমার মনে ওর জন্য কোন দয়া জন্মালো নাহ। আর হবেই বা কেন! সে কে! কি হয় আমার! ধোকা খাইয়ে বিয়ে দেয়া হয়েছে!
..
এখন আর এসব বলে লাভ নেই। কয়েকটা দিনের তো ব্যাপার। একটু এডজাস্ট করে চলতে হবে। আমি তাকে বললাম,
..
-তুমি এই বিয়েতে খুশি?
-আপনার কেমন লাগছে?
-বুঝতে পারছো না কেমন লাগছে!
-বুঝি। তবে আপনি যা চাইবেন তা-ই হবে।
-তা তো হবেই। শুধু কয়েকটা দিনের ব্যাপার। এই কয়েকদিন স্বামী-স্ত্রীর মত থেকে যাই, পরে আলাদা হয়ে যাবো।
-আলাদা বলতে?
-ডিভোর্স!
..
কথাটা যেন ওর কানে তীরের মত বিধলো। এক কান দিয়ে ঢুকে অন্য কানে বের হল। যতক্ষন কথা বললাম এই এতটুকু সময় ছিলল যে তার চোখে জল ছিল না। এখন আমার কথা শুনে আবার! আমি ওসব সহ্য করতে পারিনা। প্রচন্ড রেগে যাই। মারা-মারিও তো করা সম্ভব নাহ। কোনরকম রাগ চেপে ধরলাম।
..
বিয়ের দু-মাস চলে গেল। আমি সোফায় ঘুমাই আর সে বিছানায়। সকালে ওর ঘুম ভাঙার পর আমি আবার বিছানায় চলে যাই। আব্বুর সামনে ওর সাথে ভালো ব্যবহার করছি। অনেক যত্ন নিচ্ছি। আমার রুমে আসলেই সব উল্টো হয়ে যায় যেন বাবার কাছে ধরা না খাই।
..
কোন দরকার ছাড়া ওর সাথে কথা বলিনা। রুমে যতক্ষন থাকে সবসময় বই একটা পড়ে। আর কাজ হাতে থাকলে কাজ। আমি অফিস শেষ করে বাসায় যখন ফিরি তখন অনেকের খাওয়া শেষ হয়ে যায়। রাত্র ১২টা পর্যন্ত আমার জন্য কে ওয়েট করবে! ঠিক তখন সে আমার সামনে হাজির। টেবিলে সবকিছু রেখে রুমে চলে যায়। আমার খাওয়া শেষ হলে আমি রুমে আসলে সে বেরিয়ে যায়। আড়চোখে তাকিয়ে দেখি সে খাচ্ছে। একটা মানুষ পেলাম যে আমার কথা ভাবে কিন্তু মানুষটা ভুল। ওর ভাবা না ভাবা নিয়ে আমার কিছু যায় আসে নাহ। কোর্টের আলোকে আমাদের কমপক্ষে ছয়-মাস একত্রে থাকতে হবে। একত্রে থাকা মানে এক ছাদের নিচে আলাদা হয়ে থাকা। তাই আমি ওকে নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছি না।
..
একদিন রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়। চোখে অল্প জল জমে আছে। হয়ত কোন খারাপ স্বপ্ন দেখেছি। পানি এক গ্লাস খেয়ে ঘুমোতেই যাবো তখন দেখি বিছানায় প্রিমা নেই। ওয়াশরুমের লাইটও তো বন্ধ। বেলকোনির দরজাও ভিতর থেকে লাগানো। তাহলে সে গেল কোথায়! কেবল মাত্র সোফা থেকে নামলাম তখন দেখি বিছানার ওপাশে সে নামাজ পড়ছে। আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। সেকেন্ডের জন্য মাথায় আসছিল ও পালিয়ে গেল না তো! যাক! এখন একটু শান্তি পেলাম। চোখ বুজে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। তখন প্রিমা কি জানি বলছিল। স্পষ্ট শুনা যাচ্ছিল না। আমি আবার উঠলাম। আস্তে আস্তে ওর পিছনে গিয়ে দাড়ালাম যেন সে টের না পায় আমি জেগে আছি। তাহাজ্জুদের নামাজ শেষে সে মোনাজাত করছিল...
..
"হে আল্লাহ, তুমি কেন আমাকে কালো করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছো! জন্মের পর মা-বাবার আদর পাইনি। পাড়া-প্রতিবেশির
খে বিয়ে করেছি। কারন বাবার পছন্দ করা ছিল। আর যাই অমান্য করিনা কেন বাবার কোন কথা ফেলতে পারিনা।
লোকেরা আমায় নিয়ে মা-বাবাকে কটাক্ষ করতে দ্বিধা করেনি।। ভাইবোনদের কে জিজ্ঞেস করত এই কালো প্যাচা কি তোর বোন! ওরা লজ্জায় মাথা নামিয়ে নিত। তাদের কাছে কোন উত্তর ছিল বলার।
..
স্কুলে সামনের ব্রেঞ্চে বসা আমার নিষেধ ছিল। একা পিছনের ব্রেঞ্চে বসতে হয় যেন আমার গায়ের রং অন্য কারোর গায়ে না লাগে। আচ্ছা, এটা কি কোন ছোঁয়াচে রোগ! না তো! তাহলে কেউ আমার সাথে মিশে না কেন! কথা বলতে চায় না কেন? এটা কি আমার দোষ ছিল যে আমি কালো! টিভিতে দেখায় ক্রিম মাখলেই মানুষ সাদা হয়ে যায়। তাহলে আমি কেন সাদা হই না! আমি কি এতটাই কালো!!!
..
বয়সের চেয়েও দ্বিগুন বার পাত্রপক্ষ দেখতে এসে একি কথা বলে যায় "কালা কাউয়াকে লাইটের নিচে বসালেও দেখা যাবে না আর বিয়ে করতে বসছে"! কালো বলে কেউ আমাকে নিতেও চাচ্ছে না আবার নিজের কেউ রাখতেও চাচ্ছে না। আমি কালো বলে কি আমার বেঁচে থাকাও দায় পড়বে!
..
শেষে কিভাবে জানি আমার বিয়েও ঠিক হয়ে গেল। বড় ঘরের ছেলে, শিক্ষিত সুন্দর ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক হল। মনে করেছিলাম হয়ত এখান থেকেই আমার নতুন জীবন শুরু হবে। কিন্তু তা আর হল না। ঘুটঘুটে কালো থাকার জন্যে বিয়ের পরের দিন-ই আমার স্বামী ডিভোর্স চায়। আমার সাথে নাকি উনাকে মানায় নাহ। উনার মত আমারো দুই-হাত, দুই-পা, দুই-কান, দুই-চোখ, এক মাথা আছে। সবই এক তবুও নাকি মানায় না। শুধু পার্থক্য হল উনি সুন্দর আর আমি কুৎসিত!
..
কেন তুমি আমাকে কালো রং দিয়ে বানিয়েছো! অন্য কোন রং দিলেই তো পারতে!
..
হয় তুমি আমাকে বদলিয়ে দাও নয় মৃত্যু দাও। এভাবে আমি আর বাঁচতে পারবো না। তোমার দরবারে কতবার হাত পেতেছি কিন্তু আমায় কিছইু দাওনি। শেষ বারের মত একটা জিনিস-ই চাইবো, আমার স্বামী যেন সুখে থাকেন। আমার কালো ছায়া যেন উনার ওপর না পড়ে"
আমিন।
..
আমি ওর মোনাজাত শুনে দু-পায়ে দাড়ানোর শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। হাঁটু গেড়ে ঠাস করে নিচে পড়লাম। সে তার পিছনের আচমকা শব্দ শুনে আঁতকে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পিছনে তাকায়। আমি ওর পিছনে এভাবে পড়ে থাকবো সেটা সে কল্পনা করে নি। ওসব কিছু না ভেবে সে আমাকে তুলে বিছানায় শুয়ালো। আমার সারা শরীর কাঁপছে। আমি স্থির হয়ে শুতে পারছিলাম না। আবার বসতেও পারছিলাম না। গায়ের লোম সব দাড়িয়ে গিয়েছে।
..
এত সবের পরেও আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। সে ছুটা-ছুটি করছে এদিক থেকে ওদিক। পাগলের মত ওষুধ খুজছে। মনে হচ্ছে কয়েক সেকেন্ডের ভেতর আমাকে ওষুধ না দিলে আমি মারা যাবো আর তার আপ্রান চেষ্টা চলছে আমাকে বাঁচানোর। আমি ওকে বললাম আমাকে পানি দাও ভিষন তৃষ্ণা পেয়েছে। সে দৌড়ে এসে আমাকে পানি দিল। আমি কিছুক্ষন জোরে জোরে নিশ্বাস নিলাম। তারপর উঠে সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
..
সে আমাকে জিজ্ঞেস করছে বারবার আমি ওখানে গেলাম কি করে! আমি নিশ্চুপ রইলাম আর ঘুমিয়ে যাওয়ার ভান ধরলাম। সে মনে করেছে আমার শরীর খারাপ আমাকে আর বিরক্ত করা ঠিক হবে না তাই আর ডাকে নি।
..
কিন্তু আমি ঘুমাতে পারিনি। চোখের দু-পাতা এক করতে পারিনি। ওর প্রতিটা কথাগুলো কানে বাজছে। নিজেকে অনেক বড় অপরাধী মনে হচ্ছে। আমি কিভাবে মেয়েটাকে এত কষ্ট দিতে পারলাম! ও তো আমার স্ত্রী! আমি কিভাবে ওর মনের কথা বুঝতে পারলাম না! এতদিন যে আমায় ভালোবেসে এসেছে আমি কেন তার ভালোবাসা বুঝতে পারিনি! আমি কি সাদা-কালোর মধ্যে এতটাই অন্ধ হয়ে গিয়েছি যে একটা মানুষকে চিনতে পারলাম না!!
..
নিজেকে অনেক ভাবে স্বান্ত্বনা দিচ্ছি কিন্তু চোখের জল আটকাতে পারছিলাম না। হয়ত আজ এখনই সব জল শুকিয়ে যাবে। হয়ে যাক সব মরুভুমি তবুও ওকে আর দূরে রাখা যাবে না। যাকে দু-মাস আগে বিয়ে করেছি , তাকে যে স্ত্রীর মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করেছি কাল সব ফিরিয়ে দিব। হ্যা কাল-ই। কাল তাকে নতুন জীবন দিব। কালো বলে আর অবহেলা করবো না। এতদিন যা ছিল সব ভুলে-ভরা ছিল। এখন সবকিছু শুদ্ধ করে নতুন সকালের সূচনা করবো। এখন শুধু সকালের অপেক্ষায়।
..
চোখটা বন্ধ করে শুয়েছিলাম যেন হাল্কা বিশ্রাম নিয়ে উঠে যাই। কিন্তু কখন যে ঘুম লাগল টের-ই পেলাম না। চোখ খুলে দেখি ১১টা বাজে। উঠে দেখি সে বিছানায় নেই। আমি ওকে খুজতে রুম থেকে বের হলাম। আম্মুকে জিজ্ঞেস করতেই যাচ্ছিলাম ও কোথায় তখন ওকে দেখতে পাই। কাপড়ের বালতি নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকেছে। ইচ্ছে করছিল এখনই ওর কাছে যেতে কিন্তু না, এভাবে যাবো না। আজকে অন্যরকম হয়ে যাবো। তাক লাগিয়ে দেয়ার মত যাবো।
..
ঝটপট ফ্রেশ হয়ে বাইরে থেকে এক গুচ্ছ গোলাপফুল কিনে আনলাম। কাপড় মেলতে এখন সে ছাদেই থাকবে। তাই আর রুমে না গিয়ে ছাদে যেতে লাগলাম। ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে ভাবছি কিভাবে শুরু করবো। ওর সামনে হঠাৎ করে এভাবে দাড়ালে তার কি রিয়েকশন হবে! সে চমকে যাবে তো! হ্যা, ওকে চমকানোর জন্যই তো যাচ্ছি। ভাবতেই আমার মুখের এককোণে হাসি ফুটলো।
..
তখন হঠাৎ-ই কিছু একটা নিচে পড়ার শব্দ হল। মনে হচ্ছিল কিছু সিঁড়ি থেকে পড়ছে। আমি মাথাটা একটু তুলতেই প্রিমার পড়ে যাওয়াটা দেখতে পেলাম। আমি এক পা বাড়াবার আগেই সে আমার পায়ের কাছে এসে পড়লো। ওর নাকে-মুখে রক্ত। মাথা অনেকটা ফেটে গেছে। আমি ওর অবস্থা দেখে প্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলি তবুও ফেললাম না। হাত থেকে ফুলগুলো পড়ে গেল। আব্বু আম্মু তারা দৌড়ে আসলেন। আমি মুর্তির মত দাড়িয়ে থাকলাম। আব্বু ড্রাইবারকে কল দিয়ে বের হতে বললেন। আমি প্রিমাকে কোলে নিয়ে গাড়িতে যাই। এই প্রথম আমি তাকে স্পর্শ করেছি। আলাদা একটা শিহরণ আমায় ছুঁয়ে গেল। তাও ভুল সময়ে।
..
গাড়ি যত দ্রুত যাচ্ছিল ওর রক্তে আমি তত লাল হচ্ছি। ওকে বাহুতে বসিয়ে হাত দিয়ে চেপে রক্ত বন্ধের চেষ্টা করছি কিন্তু পারছিনা। রক্ত ওর ঝড়ছে কিন্তু কষ্ট পাচ্ছি আমি। বুঝতে পারছিনা এ কেমন কষ্ট।
..
প্রিমার রক্তে গাড়ি যখন পুরোটা লাল হয়ে যায় আমরা তখন হাসপাতালে পৌছলাম। ততক্ষনাৎ তাকে ইমার্জেন্সি রুমে তাকে নেয়া হয়। আমি ছানা-মাখা রক্তে ভিজে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসি। ভাবতেই পারছিলাম না এরকম কিছু হবে।
..
কিছুক্ষন পর ডাক্তার এসে বললো অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে ইমিডিয়েটলি ৫ ব্যাগ রক্ত লাগবে। আব্বু ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করলেন রক্তের গ্রুপ কি। ডাক্তার বললো বি পজেটিভ। আমি তখন বললাম আমার রক্তের গ্রুপও বি পজেটিভ। আমি আব্বু আর আমার ছোট ভাই কেবিনে গেলাম। ডাক্তার বললো আমি একা এত রক্ত দিতে পারবো না। তাই আব্বু আর ছোটভাইয়ের গ্রুপ একি থাকায় রক্ত দিলাম।
..
প্রায় ৪ ঘন্টার অপারেশনের পর ডাক্তার বের হল। আমরা সবাই ডাক্তারের কাছে এগিয়ে গেলাম। ডাক্তারের মুখ নিচু করা। কিছুই বলছেন না। আব্বু ডাক্তারকে বললেন আমার বউমা কেমন আছে! কি করছে! আম্মু জিজ্ঞেস করলেন আপনি চুপ করে আছেন কেন কিছু বলুন! ডাক্তার তখন আব্বুর কাধে হাত রেখে মাথা নাড়িয়ে নাসূচক ইশারা দেখালেন।
..
আমি ইশারা দেখে দাড়ানো অবস্থায় পড়ে যাই। ভাই এসে আমাকে সামলালো। আব্বু ডাক্তারকে বলছেন আবার বউমাকে দেখতে! ওর কিছু হয়নি, ওকে ভালো করে চেক করুন!! আব্বু নিস্তেজ হয়ে মাটিতে ঢলে পড়লেন। আম্মু উনাকে চেয়ারে নিয়ে বসালেন। আমি নির্বাক হয়ে যাই। ডাক্তারের কথা আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না।
..
তাই আমি অটি-র ভিতর ঢুকে যাই। ওর থেতলানো মাথায় সেলাই, নাকে ব্যান্ডেজ দেখে আমি আঁতকে যাই। পা যেমন আমার চলতেই চাচ্ছিল না। তবুও একটু একটু করে এগুলাম। আমি কোনদিন ওকে ওর নাম ধরে ডাকিনি। আজ ডাকছি।
..
"প্রিমা, ও প্রিমা!"
..
সে কোম রিসপন্স করছে না। আমি ঢোক একটা গিলে ওর হাত ধরি। হাত বুলাতে থাকি আর ডাকতে থাকি। কিন্তু সে কোন উত্তর দিচ্ছে না। আমার চোখ জলে ভরে যায়। কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। মনে হচ্ছে চোখের পানিতেই ডুবে গিয়েছি। শেষে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।
..
আমার যখন জ্ঞান ফিরে আমি নিজেকে একটা রুমে আবিষ্কার করি। জ্ঞান ফিরতেই আমি প্রিমাকে খুজতে থাকি। আর নার্স আব্বুকে খুজছে যেন বলতে পারে আমার জ্ঞান ফিরেছে। নিজেকে অনেক দুর্বল মনে হচ্ছিল তবুও ওকে খুজতে বের হয়েছি। কয়েকটা নার্স আমাকে প্রায় অচেতন অবস্থায় ধরে রাখে। মেডিসিন একটা আর তার সাথে ইঞ্জেকশন দিল। কয়েকমিনিট দুর্বল ছিলাম তারপর শরীরে আস্তে আস্তে একটু এনার্জি পেলাম।
..
প্রিমার লাশ নিয়ে সবাই বাসায় ফিরছিল। চারিদিকে কান্নার আওয়াজ। হয়ত কেউ হারানোর ব্যথায় কাঁদছে, নয়ত সে আর বেঁচে নেই তাই কাঁদছে। কিন্তু আমি কাঁদছি কষ্টে, নিজের কষ্টে কাঁদছি। তাকে আমি যত কষ্ট দিয়েছি সব যেন উল্টো ঘুরে আমার বুকেই বিধছে। নিজেই নিজেকে আজ মেরে ফেললাম।
..
কফিনে করে ওকে কবরে নিয়ে যাচ্ছি। কয়েকমাস আগে আমি তাকে বিয়ে করে গাড়ি করে আমার বাসায় এনেছিলাম। আর আজকে........। সারাটা রাস্তা আমার চোখের জলে ভিজছিল। সাথে সাথে আবার শুকিয়েও যাচ্ছে। কিন্তু চোখ থেকে ঝড়া বন্ধ হচ্ছে না। এ কেমন শাস্তিভোগ করছি আন্দাজা-ই নেই।
..
সাড়ে তিন ফুট মাটির নিচে যখন ওকে রাখা হল আমার কান্নার বেগ বেড়ে গেল। আমার ইচ্ছে করছিল যেন ওর পাশে যাই। কিন্তু মানুষেরা আটকে রাখলো। বড় বড় বাশের ওপর যখন সবাই মাটি ছিটিয়ে দিচ্ছিল আমার কলিজা ফেটে যাচ্ছিল। ও দূরে চলে গিয়েছে তবুও মনে হচ্ছে কেউ যেন আমার পাশ থেকে ওকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। এগুলো আমি সহ্য করতে পারছিনা, একটুও না।
..
প্রিমা যখন প্রথমবার আমার সামনে কাঁদছিল তখন বিচ্ছিরি লাগছিল শুনতে। এখন ইচ্ছে করছে ওর কান্না শুনেই সারাজীবন কাটিয়ে দিতে। কিন্তু ভাগ্যটা সাথে নেই। শুনেছিলাম দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম দিতে হয়। আজ সেটার মানে বুঝতে পেরেছি।
..
ওকে দাফন করে যখন বাসায় ফিরছিলাম তখন রাস্তায় পুলিশ আটকালো। কিছু বুঝার আগেই ওরা আমাকে তাদের গাড়িতে তুলে নেয়।
..
যেতে যেতে বুঝতে পারলাম কেউ একজন আমার ওপর কেস দিয়েছে। নিজের স্ত্রীকে হত্যার কেস। এটা শুনার আগে যদি আমার কান ফেটে যেত তাহলে দুঃখ পেতাম না।
..
গ্লাস যেভাবে পড়ে ভেঙে চুরমার হয়ে যায় সেভাবে আমার ভরসাও আমাকে ছেড়ে দিল। নিজের ওপর আর কোন নির্ভরতার আশা দেখতে পাচ্ছি না। এরই মধ্যে আমাকে নিজের স্ত্রীর হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হল।
..
..
আজ প্রায় ৪ বছর পেরিয়ে গেল। আমি কারাগারে। পুরনো দিনের কথাগুলো মনে করছিলাম। মনে করছি আমার প্রিমার কথা যাকে একবিন্দু ভালোবাসা দিতে না পেরেও আজও পাগলের মত ভালোবেসে যাচ্ছি। ও চলে যাওয়ার পর আমার যখন নতুন কারাবাস শুরু হয়েছে তখন আমি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু পিছু নামতে হল। সে দুয়া করেছিল আমি যেন আমি সুখে থাকি, ভালো থাকি। তাই আজও ওকে ছাড়া ভালো থাকার চেষ্টা করছি। মুখে তো বলছি ভালো আছি কিন্তু ভেতর থেকে জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি মিথ্যে কথা বলতে বলতে।
..
যে কালো মেয়েকে বলেছিলাম লাইটের নিচে বসলেও দেখা যাবে না আজ সেই মেয়েকে চার দেয়ালের অন্ধকার রুমের মধ্যে চেহারা দেখি। চোখ বন্ধ করলে দু-চোখের আধারেই তার মুখ ভাসে। সব অন্ধকার জায়গায় ওরই ছবি ফুটে উঠে। এক রুমের মধ্যে শত বোল্টেজের আলোকসজ্জ্বায় কোন এক অন্ধকার জায়গা যেমন বেমানান ঠিক একিভাবে প্রিমা বেঁচে থাকতে আমার জীবন ছিল। আর ওর মৃত্যুর পর পুরো রুম অন্ধকার শুধু ওই কোন এক জায়গায় একটু আলো যেমন আবছা আশা দেখায় সেরকম জীবন চলছে। হয়ত এরকমই চলতে থাকবে যতদিন না পর্যন্ত সে আলো দিচ্ছে বা নিজে অন্ধকারে না যাচ্ছি।

""যার যেমন মনে আঘাত বা মনে ভালো লাগে.... তাই কমেন্ট করবে‌"..........

image

>>>>>>>>{এ কেমন ভালোবাসা}>>>>>>>>>

আমার ফোনে বারবার একটা নাম্বার থেকে কল
আসতেছে। but আমি ফোন ধরছি না। নাম্বারটা আমার বহুল পরিচিত। একটা সময় এই নাম্বারে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলেছি। সুখের কথা, দুঃখের কথা কিংবা নিতান্ত অর্থহীন কথা।
?
নাম্বারটা নীলার। আজকে থেকে ঠিক ১বছর আগে যার সাথে আমার প্রেম বিচ্ছেদ হয়েছিল। আধুনিক সমাজের ব্রেক আপ শব্দের সাথে আমি এখনো পরিচিত নই। আমার কাছে বিচ্ছেদ শব্দটাই বেশি মানানসই, বেশি কষ্টের, বেশি অনুভূতির....
?
গত বছরের এই দিনে হঠাৎ করেই নীলা বলল, একটা কথা বলি....
আমি: বললাম, বলো?
নিলা: - রাগ করবে না তো?
আমি :- না।
?
তারপর নীলা দশ সেকেন্ড পর বলল, ইদানিং তোমাকে
আর আমার ভালো লাগছে না। আর কথাটা কিন্তু সিরিয়াসলি। আমি একটু হেসে বললাম, ভালো না লাগলে বিদায় হও। আর অন্য কাউকে খুঁজে নাও, নীলা বলল, আমি কিন্তু সিরিয়াস। তোমার প্রতি আমার যে অন্ধের মতো টান ছিল, সেটা এখন আর নেই। এখন সব কিছু আমার কছে কেমন যেন পানশে মনে হয়।
?
আমি প্রথম বারের মতো খানিকটা চমকে গিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে বললাম, টান কমে যাওয়ার কারণ কী?
ফোনের ওপাশ থেকে নীলা কন্ঠ নিচু করে বলল, জানি না, আমি সত্যিই জানি না। আমি শুধু সেই আত্মছাড়া ভালোবাসা খুঁজে পাচ্ছি না, মনে হচ্ছে এখনই কিছু একটা করা উচিত।
?
আমি বড় করে নিঃশ্বাস ফেলে বললাম, কি করতে চাও,
নীলা তারচেয়ে বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, বিচ্ছেদ। আমাদের বোধহয় আর উচিত না এক রাস্তায় চলা।তোমার প্রতি আমার কোন টান নেই। আর তোমার সাথে আমি থাকলে তোমাকে চিট করা হবে। আর আমি তোমার সাথে চিট করতে পারবো না। আমরা একসময়
যেমন অপরিচিত ছিলাম, ঠিক তেমনি আবার অপরিচিত হয়ে যাব।
?
এবার আমি বললাম, আমার টান তো তোমার জন্য এখনো অনেক রয়ে গেছে,
?
তখন নীলা বলল একটু স্যাক্রিফাইস করো। সব কিছু এখনই মিটিয়ে না নিলে কষ্ট কেবল শুধু বাড়বেই। এবার
আমি নীলা কে বললাম, প্রথম প্রেমে কে পড়েছিল, আমি না তুমি?
নীলা- আমি।
তাহলে সেই তুমিই আবার বিচ্ছেদ চাইছো। প্রেম তোমার, বিচ্ছেদ তোমার। আমি কেবলই শুধু একটা জড় বস্তু? আর আমার মতামত বলতে কিছু নেই?
?
নীলা বলল, আমি জানি তুমি চাইলে আমাকে আটকিয়ে রাখতে পারবে। আর আমার বিশ্বাস তুমি সেটা করতে যাবে না, কারন ভালোবাসা জোর করে হয় না আর রাখাও যায় না। আর এই বিশ্বাসটা রেখো আমি অন্য কাউকে পছন্দ করি না, আর করবও না। আমি বললাম, তার মানে তোমার ডিসিশন ফাইনাল?
?
নীলা - তুমি সাহায্য করলে....
আমি কন্ঠ জোর করে ধরে বললাম, ভালো থাকতে
পারবে তো? নীলা বলল চেষ্টা করব। আর তুমিও ভালো থেকো...
?
আমি মোটেও ভালো থাকতে পারি নি। পরের দিন
সকালেই বুঝতে পারলাম আমার জীবনটা
উলটপালট হয়ে গেছে। কারন প্রতি দিনের মতো গুড মর্নিং এর এসএমএস ফোনে আসে নি। তারপরও আমি ভাবলাম হয়তো এখনি আসবে, কিংবা কিছু পরে। কিন্তু আসে নি...
?
রাতের দিকেও ফোনে কথা বলার মানুষটাকে খুঁজে
পেলাম না। আমার দম বন্ধ হওয়া শুরু হয়ে গেল।
সারা দিনের আটকে রাখা কথা উপচে পড়তে শুরু
করল। আমি আর সহ্য করতে না পেরে মরিয়া হয়ে ফোন করে নীলা কে বললাম, আমার পক্ষে তুমার সাথে কথা না বলে থাকা সম্ভব না। আর তুমি আমার সাথে যেটা করছো সেটা খুব অন্যায় হচ্ছে।
?
নীলা বলল, আমার ভুল আমি স্বীকার করছি, ক্ষমা চাইছি। আর কোন শাস্তি দিতে চাইলে সেটাও মথা পেতে নিতে রাজী আছি। but আগের জায়গায় আর কখনো আমি ফিরতে পারব না।
?
আমি বললাম, আমার নিরুপদ্রব জীবনে এ রকম ঝড়
তোলার কি দরকার ছিল তোমার? নীলা বলল, মানলাম সেটাই আমার অপরাধ। but তোমার থেকে চলে যাওয়াটা আমার অপরাধ না, তোমার কাছে আসাটাই আমার অপরাধ ছিল।
?
আমি বললাম, আচ্ছা কোন ভাবেই কি সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখা যায় না, কেবল বন্ধু হয়েও?
?
নীলা বলল, আমরা কোন দিনই বন্ধু ছিলাম না। আর বন্ধু হয়েও থাকতে পারবে না। তারপর নীলা নাম্বারটা বদলে ফেলল। আর নীলার সাথে যোগাযোগ করার আমার কোন উপায় থাকল না।
?
আমার সব কিছু পাল্টে গেল। ভাত চাবাতে গিয়ে মনে
হয় খড় চাবাচ্ছি। আমর সব কিছু কেমন বিরস লাগে। সবাইকে অসহ্য লাগে। অভ্যাস বশত আগের মতোই রাত পার করে ভোর হয়। but গুড মর্নিং বলার মতো কাউকে পাই না।
?
রাতে স্বপ্ন দেখি নীলা ফিরে এসেছে, আর আমার হাত ধরে বলছে, আমি তোমারি ছিলাম, আর তোমারি আছি ভয়ের কি আছে? প্রচন্ড সুখের আবেশ নিয়ে ঘুম থেকে জেগে যখন বুঝি সে নেই, তখন বুক অসম্ভব খালি খালি লাগে। আর রাতের পর রাত এ রকম বিড়ম্বনাময় স্বপ্ন দেখতে থাকলাম আমি।
?
আমি ক্লাস করা বাদ দিয়ে দিলাম। আর আমার এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেল। কালাম স্যার একদিন আমাকে ডেকে পাঠালেন....
?
- কি ব্যাপার অপদার্থ , ক্লাস করছো না যে? সমস্যা
কি তোমার?
?
আমি কিন্তু চাইলে সহজেই মিথ্যা কিছু বলতে পারতাম। রাগে ক্ষোভে কিছুই আমার মুখ থেকে বের হল না। রাগ
আর ক্ষোভ কি আমার উপর না নীলার উপর সেটাও
আমি বুঝতে পারলাম না।
?
স্যার বললেন, লাস্ট আড়াই মাস তুমি এবসেন্ট। তোমার কী পড়ালেখা ভালো লাগে না? আর কোন কারণ ছাড়াই যদি এরকম করতে থাকো তাহলে বসে, এক কাপ চা খাও, এর মধ্যে আমি তোমার টিসি লেটারটা লিখে ফেলচ্ছি।
?
আমি বললাম, sorry স্যার, আর হবে না।
?
স্যার বললেন, কাল থেকে ক্লাস করো। আর চুল
দাঁড়ি কেটে অবশ্যই ভদ্র হয়ে আসবা। দেখে তো মনে
হচ্ছে ইদানিং গাঁজা ধরেছো।
?
আমি পরের দুই মাসও ক্লাস করলাম না। but উল্টো
স্যারের কথা শোনে নতুন দুইটা আইডিয়া আমার
মাথায় আসল...
?
গাঁজা কেনা বা টানার সাহস আমার কখনোই হবে
না। আমি জীবনে প্রথম সিগারেট ধরলাম। ধোঁয়া গলায় আটকে খুক খুক করে কাশি দিলাম। কষ্ট পেয়ে আমার ভালো লাগছে। আমার অধঃপতন আমাকে আনন্দিত করল।
?
আমার কাছে মনে হত সিগারেটের ফিল্টারের ভেতর
নীলার হৃদপিন্ড ভরে রাখা। আগুন জ্বালিয়ে তার হৃদয় পুড়িয়ে ধোঁয়া করার মাঝে একটা পৈশাচিক আনন্দ হত তখন আমার।
?
তার উপর চুল দাঁড়ি কাটা বন্ধ করে দিলাম। দেড় মাস পর আয়নায় নিজেকে বনমানুষ হিসেবে আবিষ্কার করে অন্য রকম আনন্দ হতে লাগল।
?
আমার কাছে মনে হতে লাগলো আমি ক্লাস মিস করে, না খেয়ে, চুল দাঁড়ি রেখে সিগারেট টেনে নীলার উপর প্রতিশোধ নিচ্ছি। কঠিন প্রতিশোধ। ওর জীবন ভস্ম করে দিচ্ছি।
?
একবার একটা ভয়ানক চিন্তা মাথায় আসলো, আমি নীলার শহরের যাব, আর বাসের টিকিটও কেটে ফেললাম। ইচ্ছে হল ওর বাসার সামনে বস্তা বিছিয়ে গিয়ে শুয়ে পড়ব। তারপর কি হতে পারে সেটা চিন্তায় আসে নি। আমার কাছে মনে হল এটা করলেও বোধহয় নীলা কিছুটা শাস্তি পাবে।
?
ওকে বাস্তবে না পেয়ে কল্পনায় প্রতিদিন শাস্তি দিতে থাকলাম। ছায়া দেখে দেয়ালে মারা প্রতিটা ঘুষি যে আমাকেই আঘাত করছে তখন তা অনুভব হয় নি।
?
নীলা ৩৭ তম বারের মতো কল দিচ্ছে। আমি ফোনের
উপর দিয়ে আঙুল ঘোরাচ্ছি। মস্তিষ্কের একটা অংশ
বলছে ফোন ধরতে। তারপর ঝরঝর করে কেঁদে বলতে,
ওয়েলকাম ব্যাক নীলা। একটা বছর ধরে অপেক্ষা করছি একটা কলের জন্য।
?
আরেকটা অংশ বলছে, খবরদার, ফোন ধরবি না।
আমি মনের দুইটা অংশের দ্বন্ধ উপভোগ করছি। শেষ
পর্যন্ত কে জয়ী হয় সেটার অপেক্ষায় আছি, আমার মনের নিষেধ করা অংশের সৃষ্টি দুই মাস আগে, হঠাৎ করেই বাড়ি থেকে ফোন আসল মা অসুস্থ। তাড়াতাড়ি যেতে হবে। আমি কি অসুখ সেটা না জেনেই দৌড় দিলাম। হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারলাম মা স্ট্রোক করেছেন। স্ট্রোক খুব ক্ষতি করতে পারে নি, হাত পা হালকা অবশ। ডাক্তার বলেছে ঠিক হয়ে যাবে। তবে কেয়ারে রাখতে হবে।
?
মা আমাকে দেখে আমি কিছু বলার আগেই বললেন,
বাবা তোর এ অবস্থা কেন? চেহারার এ কি হাল, অসুস্থ নাকি?
?
মানুষের জীবন পাল্টে যেতে খুব বেশি কিছু লাগে না। শত বছরের হাজারটা ঝড় যে বৃক্ষ নড়াতে পারে না একটা দুই মিনিটের টর্নেডো সেই বৃক্ষ উপড়ে দিতে পারে। মায়ের সামান্য একটা কথা আমার জীবনে এলো টর্নেডো হয়ে।
?
বাড়ির সাথে আমার যোগাযোগ কমে গিয়েছিল। দুঃখ
বিলাস করতে করতে আমি মায়ের খবরই নিই নি।
আজকে মা নিচ্ছেন আমার খবর। এই প্রথম নিজের
কাছে নিজেকে প্রচন্ড অপরাধী মনে হলো। ইচ্ছে হল
গর্তে ঢুকে পড়ি। আমি মায়ের পা চেপে ধরে বসে পড়লাম।
?
আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগল।
পরের দুই সপ্তাহ মাকে নিয়ে অসম্ভব ব্যস্ততায় দিন কাটল। নীলার কথা আমার একবারও মনে পড়ল না। নীলা স্রেফ হারিয়ে গেল। এই সময় আমার সিগারেট খাওয়ার কথা মনে পড়ল না। চুল দাঁড়ি ঠিক করে ভদ্র হয়ে গেলাম।
?
মাকে বাসায় রেখে যখন ফিরলাম তখন আমি নতুন
মানুষ। সিগারেট আর নীলার প্রতি টান ধীরে ধীরে কমে গেল।
?
মাঝরাতে মাঝে মাঝে নীলা উঁকি মারে, দুপুর বেলা টানে নিকোটিন। দুই সময়ই আমি মাকে ফোন দেই, নীলা নিকোটিন হয়ে উড়ে চলে যায়। আর আমি স্বস্তিবোধ করি।
?
নীলার সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন নষ্ট করে দিয়েছি। ওর কুরিয়ারে পাঠানো বই দান করেছি একটা পাঠাগারে, সব এসএসএস ডিলিট করেছি, এক সময় প্রতিটা এসএমএস আমার জন্য পাথর হয়ে বুকে চেপে ধরত। ভালোবাসা মাখানো এসব কথা বাসি হয়ে পঁচে গিয়ে বিষ হয়ে যায়। আমি সব বিষ বাইরে ফেলে দিলাম।
?
নীলার ৩৭ তম ফোনের পর একটা মেসেজ আসল।
তাতে লেখা, {প্লিজ রিসিভ মি...}
?
আমি দুই মিনিট পর রিপ্লে করলাম, ভাষায় বাংলা ইংরেজীর মিশ্রণ দূষণীয় এবং বিরক্তিকর।
?
নীলা রিপ্লে পেয়ে আরো তিন বার কল করল। আমি
ধরলাম না। তারপর আবার মেসেজ করল। দীর্ঘ
মেসেজ....
?
~একটা বছর আমার অনেক যন্ত্রণায় কেটেছে। প্রতি দিন ভেবেছি তুমি নিজে থেকে আমাকে চাইবে। কোথাও কোন ভুল হলো কিনা সেটা আবার বিবেচনা করবে। একটা নাম্বার বদলে ফেললে একটা মানুষ হারিয়ে যায় না। হারিয়ে যাওয়া এত সহজ না,।আমি আবার ফিরতে চাই। মাঝখানের একটা বছর জীবন থেকে বাদ দিতে চাই।
?
আমি পাল্টা জবাব দিলাম...
?
~আমি ফেরাতে চাইনা। রাস্তা আলাদা হয়ে গেছে, আলাদাই থাকুক। আমি এক বছর না, পূর্বের জীবনটাই বাদ দিয়ে দিয়েছি, আর দূর থেকে তোমার জন্য শুভ কামনা রইল।
?
আমি সিম খুলে বাইরে ছুড়ে ফেলে দিলাম। চার তলার জানালা গেষে সিম কার্ড কোথায় গিয়ে পড়েছে কে জানে। আমি মনঃচক্ষে স্পষ্ট দেখলাম সিম কার্ড নয়,
নীলা উড়ে গেল। কেন জানি মনে হল আমার বুক থেকে একটা পাথর সরে পড়ল।
?
এখন আমি প্রতিদিন রুটিন করে মায়ের সাথে গল্প
করি। আমার সময় আশ্চর্য রকম ভালো কাটে। আর মায়ের গল্পে প্রতিদিন শেষ হয় একটা কমন কথা দিয়ে, বাবা তোর জন্য একটা মেয়ে দেখছি, ফুটফুটে মেয়ে। রাজী হবি তো?
?
আমি হেসে হেসে বলি, একটা মেয়ে কতদিন ফুটফুটে
থাকে মা? এর কি ফুটফুটানি রোগ আছে নাকি? আমার মা হাসেন। আর আমার মনে হয় আমি স্বর্গের আশপাশ দিয়ে ঘোরাঘুরি করছি।
?
প্রায়ই নীলার কথা মনে পড়ে। মনে পড়লে মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলি, নীলা আমার গল্পের নায়িকা ছিল, জীবনের নায়িকা না। গল্পের নায়িকা নিজের ইচ্ছেমত হয়, জীবনের নায়িকা ইচ্ছে মতো হয় না। বিধাতার গল্প আলাদা, বিধাতার স্ক্রিপ্ট একান্ত তাঁরই। সেখানে
নীলার নামের জায়গায় সম্ভবত অন্য কারো নাম লেখা আছে।
?
আমি এখন বেশ ভালোই আছি। একবার হওয়া বসন্ত
যেমন আরেক বার, না হওয়া বসন্তর না নিশ্চয়তা দেয়,
ঠিক তেমনি একবারের বিরহ পরের জীবনের বিরহ থেকে আমাকে মুক্তি দিয়েছে।
?
কিছু কিছু জিনিস হারিয়ে যাওয়া মঙ্গলের। হারিয়ে যাওয়া কিছু ফিরে পেতে নেই। ফিরে পেলে সাময়িক আনন্দ হয়, কিন্তু সেটার মূল্য বেশি দিন থাকে না। কারন হারানোর ভয় প্রতিটা দিন ভর করে। তার চেয়ে একেবারে হারিয়ে ফেলাটাই মঙ্গল।
?
মাঝে মাঝে ভাবি নীলা কেমন আছে? তার ভালো থাকার দায়িত্ব তার কাছে। পৃথিবীর যে কেউ যে কারো ভালো চাইতে পারে কিন্তু কেউই কাউকে ভালো রাখতে পারে না। ভালো রাখতে হয় নিজেকেই নিজে।
?
আর এই সুখের ব্যাপার এই নির্মম সত্য বুঝতে আমার খুব বেশি সময় নিতে হয় নি।
?

দেশে আর বিদেশে মানুষের মধো তপাৎ,,

image

মানবতা_আজ_কোথায়?

এক ভদ্রলোক ডিম বিক্রেতা জিজ্ঞেস করলো'
ডিম কত করে বিক্রি করছেন?
বৃদ্ধ বিক্রেতা বললো' স্যার পাঁচ টাকা করে প্রতিটি। স্যার বললো, আমি ৬টি ২৫ টাকা দেব, না হয় চলে যাবো! বৃদ্ধ বিক্রেতা উত্তর দিলো, আসেন স্যার নিয়ে যান আপনার দামে। কারণ সারাদিন একটিও বিক্রি করতে পারিনি। আপনার মাধ্যমেই আজকের বিক্রি শুরু।। স্যারটি ডিম কিনে জিতে গেছে ভেবে চলে গেল।

তারপর স্যারটি তার দামী গাড়ীতে চড়ে তার বন্ধুর সাথে অভিজাত রেস্তোরাতে গেলো। সেখানে, সে আর তার বন্ধুরা তাদের পছন্দসই অনেককিছু অর্ডার করলো। কিন্তু তারা যা অর্ডার দিলো তার স্বল্প খেলো আর বেশিরভাগ রেখে দিলো। তারপর সে বিল দিতে গেল।বিল আসলো ১৪০০টাকা। সে দিলো ১৫০০টাকা এবং রেস্তোরা মালিককে বললো বাকিটা রেখে দিতে।
এ ব্যাপারটা রেস্তোরা মালিকের কাছে খুবই স্বাভাবিক হতে পারে কিন্তু দরিদ্র ডিম বিক্রেতার কাছে খুবই বেদনাময়।

ইস্যুটা হচ্ছে, আমরা যখন হত দরিদ্র মানুষদের কাছ থেকে কিছু কিনি, কেন আমরা দেখাই আমাদের ক্ষমতা কত?
এবং তাদের কাছে কেন এতো উদার হই যাদের ঐ বদান্যতা মোটেও প্রয়োজন নেই?
বিষয়টি নিয়ে আমরা যদি একটু চিন্তা করি তাহলে দেখতে পাই যারা অভাবে থেকেও মানুষের কাছে হাত পেতে কিছু না নিয়ে কর্ম করে পেটে কিছু খাবার দিতে চায় আমরা কেন তাদের পারিনা একটু বেশী মূল্য দিতে ?
ভদ্রতার ছাদরে আসলে আমরা আমাদের মূল্যবোধকে হারিয়ে পেলেছি ... যখনি কোন অসহায়, বৃদ্ধ, গরীব লোকের কাছ থেকে কিছু ক্রয় করবেন তখন তাকে মূল্যের চেয়ে একটু বেশী দিবেন ...
আসুন আমরাও নিজেদের বদলাতে চেষ্টা করি ...
সৃষ্টির সকল প্রাণীকে ভালবাসতে শিখি,,,,
অসহায় মানুষকে আপন ভাবতে শিখি...

image

#গল্পঃদুষ্টু_বউ

(৪র্থ ও শেষ পর্ব)
↓↓
লেখকঃ (RK Rasel)
.
--চলে গেছে মানে? (আমি)
.
--হ স্কুলে চলে গেছে। কি নাকি কাজ
আছে।(আম্মু)
.
--আচ্ছা। আমি তাহলে যাই।।
রিক্সা করে স্কুল যাচ্ছি, আজ মনে হচ্ছে
রিক্সা চলছে না।। রাস্তাও বুঝি আর
ফুরোচ্ছে না।। কি কাজ থাকতে পারে
ওর?
না তেমন কোন কাজওতো নেই,, আর
প্রাইভেট স্যারেরতো আজ পড়া নাই।।
তবেকি কারো সাথে দেখা করতে
আসছে,, মেজাজটা বেশ খারাপ হচ্ছে।।
রিকসা থেকে নেমে ভাড়া দিচ্ছি-
.
--মামা এই নাও
.
--কত দিলেন মামা?
.
--কেন ১৫ টাকা
.
--মামা ২০ টাকা তো।।
.
--১৫ টাকা দিছি ওটাই রাখো
.
--মামা আপনে ২০ টাকাইতো দিতে
চাইছেন।।
--দুর রাখো।।
কখনো রিকসা ওয়ালা মামাদের সাথে,
উচু গলায় কথা বলি না, কিন্তু কেন যানি
আজ বকা দিলাম। পরে আবার গিয়ে ৫
টাকা দিয়ে আসলাম।।
ক্লাসে ঢুকে যে সিন দেকলাম তা
দেখে মাথা গরম হয়ে গেলো।।
আমার বউ অন্য ছেলের সাথে হাসি
তামাসা করছে।। কেমন কাছে গিয়ে
কথা বলছে।।
ওদের মাঝেকি তবে কিছু আছে?
ওরাকি তবে একে অপরকে,,,,,
.
না না কি সব ভাবছি আমি, আর ও চলে
গেলেতো আমার খুশি হওয়ার কথা।।
আমার এমন লাগছে কেন।। কেমন যেন
মনে হচ্ছে, যেমনটা প্রিয় কোন জিনিস
হারালে লাগে।। ভাবতে ভাবতে
গিয়ে সান্তাকে ডাকলাম-
.
--সান্তা, শোন
আমার দিকে তাকিয়ে মুখ ঘুড়িয়ে
নিলো,, মনে হলো আমি যেন বিরক্ত
করছি ওকে।।
--সান্তা,, এইদিকে শোন
.
--কি হইছে? (একটু রেগেই বল্লো)
.
--এদিকে একটু শোন
.
--যা বলার এখানেই বল।।
.
--না কিছুনা।।
.
বলেই চলে আসলাম।। আমি কি কম নাকি,
গিয়ে টিনার সাথে আমিও হাসি
তামাশা শুরু করে দিলাম। বেশ অনেক
ক্ষন ধরে হাসি তামাসা করছি কিন্তু ও
কোন রকম রিসপন্স করলো না।। আজ ওর
মাঝে আর রাগ দেখতে পেলাম না। আজ
আর চোখ গরম করলো না, বেশ স্বাভাবিক
ভাবেই বসে আছে।। তবেকি সত্যি ও ঐ
ছেলেটার সাথে কোন রিলেশনে
জড়িয়েছে?
.
কেন জানি আজ আর ক্লাসে মন বসছে না,
যে মেয়ে দিনে অনেক বার তাকাতো
সে আজ ভুলেও একবার তাকায়নি।।
.
স্কুল ছুটির পর বাসায় যাবো, কিন্তু
রিকসা পেলাম না।। তাই দুজন হেটেই
যাচ্ছি আর মাঝে মাঝে কথা বলছি--
.
--ঐ ছেলেটা কে রে?
.
--কেও না
.
--ও,, পছন্দ করিস?
.
--তাতে তোর কি?
.
--না এমনি,, তোদের ভাল মানাবে
.
--জানি,, ও কাল ওর আম্মুকে আমার কথা
বলবে।।
.
--এত ফাষ্ট তোরা?
.
--হুম
.
--আমার উপর রেগে আছিস?
.
--কেন? রাগ করবো কেন?
.
--না, এমনি মনে হলো,, আজ যে বিছানা
ভিজালি না, দুষ্টমিও করলি না।।
.
--কে বলছে করি নি,, আজ ওরে (ঐ ছেলে)
কিল দিছি পিঠে।।
.
--ও,, আচ্ছা তারাতারি হাট
.
কেন যানি খুব খারাপ লাগছে, আজ ও অন্য
কারো সাথে দুষ্টোমি করছে।। কিছু
ভাল লাগছে না।। বলতে ইচ্ছে করছে,
সান্তা তুই আমার সাথে দুষ্টমি করবি, আর
কারো সাথে না।। কিন্তু সে সুযোগটা
হয়তো আর নেই।।
.
বাসায় গিয়ে দেখি খেয়ে দেয়ে দেখি
সান্তা ব্যাগে কাপড় গুছাচ্ছে।।
.
--কিরে কই যাস? (আমি)
.
--কাল বাড়ি যামু
.
--কেন?
.
--তোগো বাড়ি থাইকে তোরে দিসটাব
কইরে লাভ নাই।। কাল আম্মু আব্বু
আসবো।।
.
--তুই কোথাও যেতে পারবি না।
.
--আমাকে যেতেই হবে।।
.
কেন যানি জোর করতে পারলাম না,
কারন এ বাসা থেকে যাওয়ার কারনটা
যে আমি।। খুব কষ্ট হচ্ছে।। বুকের
ভেতরটা কেমন যেন করছে,, কাঁদতে
পারছি না।। আম্মুর কোলে মাথা রেখে
কাঁদতেছি আর আম্মু বলছে
.
--কিরে কি হইছে?
.
--আম্মু অনেক পেট ব্যাথা করছে। (সত্য
কথাটা বলতে পারলাম না যে সান্তার
জন্য খারাপ লাগছে)
.
--পানি দিয়ে ঔষধটা খা।।
.
--না খাবো না, এমনিতেই চলে যাবে।।
.
রাতে আর খেলাম না, শুয়ে পড়লাম।।
সান্তা আমার পাশে আর একটা কম্বল
নিয়ে শুয়ে আছে।। কেও কিছু বলছি না।
অনেক ক্ষন পর আমিই কথা শুরু করলাম।।
.
--সান্তা,,,,,,,,,, ওই সান্তা,,,, ঘুমাইছিস?
.
--কি হইছে বল।।
.
--কালকি সত্যি তুই চলে যাবি?
.
-- হ,, থাইকা কি করুম বল।।
.
--হ তাইতো,,
.
(বলেই কাঁদতে শুরু করলাম)
.
--অই পাগল কাঁদস কেন?
.
--না কাদি না এমনি।
.--কান্না থামা,, আমি কোথাও যামু না,,
ওই পাগল, কান্না থামা
.
--তাইলে ক কাল যাবি না।।
.
--কাঁদলে যামুগা।।
.
--না কাদুমনা।।
.
--তুই একটা পাগল।। তোরে ছাইড়া কই
যামু
.
--হ,,,, সকালে তাইলে ঐ পোলা কেরা
আছিলো।
.
--ও আমার খালাতো ভাই, আমার মেঝ
খালার ছেলে।
.
--আমি কিছু জানিনা, কারো সাথে কথা
বলবি না।।
.
--নিজে যে টিনার সাথে...
.
--তোরে চেতাইবার লিগাই তো।।
.
--হ আমিও বুঝছি, এর জন্যইতো খালাত
ভাই আর আমি মিলা এই প্লেন করছি।।
.
--ইও,, দুষ্টু
.
---না দুষ্টি,,
.
--তাহলে বল আর দুষ্টামি করবি না
.
--না করুম না।।
.
সেদিন একটা কম্বাল ছুড়ে ফেলে দুইজনে
এক কম্বলেরই নিচে,, আমার উপর দিয়ে ও
পা দিয়েছে আর আমি ওর উপর দিয়ে
হাত দিয়ে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে
শুয়েেআছি। কেন জানি খুব ভাল
লাগছে।।নিজেকে পরিপূর্ন লাগছে।।
যাক বাচা গেলো, কাল থেকে তবে আর
দু্ষ্টোমি করবে না,, আর চলেও যাবে না।
ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।।
সকাল বেলা আবার ওর সেই
চিল্লাচিল্লি শুনে ঘুম ভাংলো।।
.
--আন্টি আন্টি দেখে যাও,,দেখে যাও
আন্টি তোমার ছেলে কি করছে।।
.
--কি করছে মা? ( আম্মু)
.
--এই দেখো আন্টি, তোমার ছেলে আমার
কামিছ পড়ে বসে আছে।।
.
হায় হায় এটা কি হলো, আমি কামিছ
পড়লাম কিভাবে।। হায় হায় ইজ্জত বুঝি
গেলো।। না না এটা আমি পড়ি নি।।
এটা নিশ্চই অন্য কেও করেছে, এটা
নিশ্চই ওর কাজ, মানে আমার "দুষ্টু বউ
"এর।।।
সমাপ্ত
.
(বিঃদ্রঃ বাল্য বিবাহ আইনত অপরাধ।
.
কিছু কথা-- গল্পটার স্থান,কাল, পাত্র, ঘটনা
সবই কাল্পনিক।।তাই কারো সাথে
কিছু মিলে গেলে বা অনুভুতিতে আঘাত
হানলে আমি কোন ভাবেই দায়ী নই।।
বানান সহ বিভিন্ন ভুল ক্ষমা করে
দিবেন)

image

#গল্প:দুষ্টু_বউ (৩য় পর্ব)
↓↓
লেখক: ( RK Rasel)
.
-আন্টি আন্টি দেখে যাও, তোমার ছেলে বিছানা নষ্ট করে ফেলেছে।। এই বুড়া বয়সে।।
--কি করছিস এটা? (আম্মু)
.
--কিছু করি নি তো,,
.
--তাহলে বিছানা ভেজা কেন?
.
-- ও ভিজাইছে।
.
--ও ভিজাইলে ওর জমা ভেজা থাকবো, তোর প্যান্ট ভেজা কেন?
.
-- আন্টি আগে বলতা তোমার ছেলের এ অভ্যাস আছে, তাহলো আমার ভাতিজার পেমপার্স নিয়ে আসতাম,, পড়ে ঘুমাইতো।। (সান্তা)
.
--তুই কিন্তু বেশি কথা বলস (আমি)
.
--ইইইই বিছানা নষ্ট করতে পারবা, কেও বলতে পারবো না।
.
বলতে বলতে দুজনে রুম থেকে চলে যায়, যাওয়ার আগে কি যেন ইঙ্গিত করে সান্তা।। কিন্তু কি তা বুঝলাম না।।
তাহলেকি সত্যি সত্যি বিছানা নষ্ট করে দিলাম,, খাটের তলা থেকে স্যান্ডেল বের করতে গিয়ে দেখি খালি পানির জগ, তার মানে বজ্জাতটার কাজ।।
কিসের পাল্লায় পড়লামরে ভাই।।। ভাবতে ভাবতে গোসল করে স্কুলের জন্য রেডি হতে হতে
৮.৩০ বেজে গেছে। । বিয়ের পর প্রথম স্কুল আজ।।
দুইজনে রিকসায় যাচ্ছি।। রিকসাটাও যেন ওর দখলে।। কোন রকম একটু বসে যাচ্ছি আর রিকসাওয়ালা বল্লো।।
.
--মামা গালফ্রেন্ড নাকি?
.
--গালফ্রেন্ড হলেতো ব্রেক আপ কইরা বাইচাই যাইতাম।। (আমি)
.
--তাইলে কি?
.
--এইডে আমার দজ্জাল বউ।।
.
--অই তুই আমারে দজ্জাল কইলি কেন?(সান্তা)
.
--তোরে কি কইবো?
.
--মামা কওতো আমার মত সুন্দরি মেয়ে ওর মত বাদর মার্কা পোলায় পাইবো?
.
. (রিকসাওয়ালা আমাদের দিকে ঘুড়ে তাকিয়ে)
.
--না পাইবো না।
.
হায়রে কপাল, রিকসাওয়ালা মামাও ওর পক্ষ নিলো। কোথায় যাবো।। নাহ আর না ওরে আমি মজা দেখাবো।।
.
--অই তুই ঐ মায়ার দিকে তাকিয়ে ছিলি কেন?
--কই নাতো।।
.
-- হ তাকিয়ে ছিলি। দেক কারো দিকে তাকাবি না, নইলে তোর খবর আছে।।
.
আমি অন্য কারো দিকে তাকালে অনেক রাগ করে,, তাহলে অন্য কারো সাথে প্রেম করতে দেখলে কি অবস্থা হবে।। ও ইয়েস,, দাড়াঁও মেয়ে তোমার প্রতিষোধ নিচ্ছি।।
.
স্কুলে সেরা ১০ সুন্দরিদের মধ্যে ও নিজেও আছে। আর কাটা দিয়েই কাটা তুলতে হবে।।। টিনাও সেরা সুন্দরিদের মধ্যে ১ জন।। তবে টিনার সাথে আজ থেকে প্রেম করবো,, টিনা আমাকে আগে থেকেই পছন্দ করে। ওর সাথেই রিলেশন করবো।। এ মেয়ের সাথে সংসার করা যাবে না।
.
স্কুলে গিয়েই টিনার সাথে ঘেসে ঘেসে কথা বলছি, আর হাসাহাসি করছি দুজন।। আরেক জন লুচির মত ফুলতেছে।। এটাইতো চেয়েছিলাম।। যাক বাচা গেছে স্কুলের কেও জানে না যে আমাদের বিয়ে হইছে।।
.
স্কুল ছুটির পর আবার রিকসায় বাড়ি যাচ্ছি,, কিন্তু এবার আর কথা নেই।।মাথা নিচু করে বসে আছে।। বাসায় গিয়েই আম্মুকে বলছে।।
.
--আন্টি আমি বাসায় যাবো।।
.
--কেন বাসায় যাবে কেন? তোমার আব্বু আম্মুতো হজ্জ থেকে আসে নি।। তুমি একা বাড়িতে। না না এখানেই থাক।।
.
--না আন্টি আমি বাসায় যাবো..
.
-- পাজিটা কিছু করছে?
.
--না
.
-- বকছে?
.
--না,, এমনিতেই বাসায় যাবো।।
.
--কোথাও যাওয়া হচ্ছে না।। কাপড় ছেড়ে গোসল করে খেতে আস।।
.
আম্মুর কথায় বাধ্য হয়ে থাকছে।। আমার কি, গেলে ভাল হতো বেঁচে যেতাম।। সাবধানে থাকতে হবে, আবার কোন মতলব আটছে জানিনা।।
.সেদিনের মত রাতে খেয়ে দেয়ে ঘুমাতে গেলাম। খেতে বসে ওকে দেখা যায় নি,, রুমে এসে দেখি ও আলাদা কম্বল নিয়ে শুয়ে আছে।। আজ কম্বল ভিজায় নি, কোন মতলবও করে নি।। যাক বাবা আজ শান্তিতে ঘুমানো যাবে।। কিন্তু ঘুম যেন আসছে না।। দুষ্টমি করলো না কেন? ওর দুষ্টমিতে একটু একটু রাগ হলেও বেশ ভালই লাগতো।। আজ ভাললাগাটা মিছ করছি।।
আজ আর ঘুম আসলো না। মধ্যরাত হয়ে গেছে কিন্তু ঘুম আসলো না।। আজ ওর পাঁ'টাও আমার উপর দিয়ে দেয় নি।। আমার উলটো দিকে মুখ করে শুয়ে আছে।। যাক বাবা ঘুমাই সকাল সকাল ওর আগে উঠতে হবে নইলে আবার কোন কান্ড করে বসবে।।
.
সকালে উঠতে উঠতে তাও ৮টা বেজে গেছে।। কাজ সেরেছে আজ আবার কি করেছে,, বিছানা চেক দিলাম, না ভেজা না।। আয়নার সামনে গেলাম, না মুখেও কিছু নেই।। কেন জানি খুব খারাপ লাগছে।। মনে হচ্ছে কি যেন নেই।। সবকিছুর মাঝেও কি একটা যেন নেই।। ভাবতে পারছি না।।
.
গোছল করে স্কুলের জন্য রেডি হয়ে ৯ টায় নাসতা করতে বসছি। কিন্তু ওকে দেখলাম না।। কেন যেন খুব জানতে ইচ্ছে করছে দুষ্টুটা কোথায়।।
.
--আম্মু,,
.
--কি বল?
..
--না কিছু না।।
.
--ওকে খা,,
.
--আম্মু, সান্তা কই? দেখছি না যে।
.
--ও তো চলে গেছে...
↓↓
চলবে..................
(দুঃখিত, গল্পটা দেরিতে দেয়ার জন্য। আমি একটু অসুস্থ। পরের পার্ট শিঘ্রই দেয়ার চেষ্টা করব।)

image

#গল্প_দুষ্টু_বউ (২য় পর্ব)
↓↓
লেখক: RK

কি করবো কিছুই বুঝতেছি না, আম্মু ওর
হাতে মানে ক্ষমতা ওর হাতে।।
জোট সরকারকে আমি বিরোধী দল কি
করতে পারবো।
কিন্তু করতে হবে, ভাবতে ভাবতে
মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি এলো। এক গ্লাস সরবত
বানিয়ে নিয়ে গেলাম।-
.
-সান্তা, সান্তা
.
-ওই আমার নাম ধরে ডাকলি কেন?
.
-তুইনা আমার আদরের বউ।
.
-বাহ বা,, এত পীরিত,, নিশ্চই কোন মতলব
আছে
.
-তুইযে কি বলিস, মতলব করবো কেন,
তাছাড়া তোরে সেই কবে থেকেই আমার
ভাল লাগতো, তোর দিকে তাকিয়ে
থাকতাম। (পুরাই ফাপড়)
.
-ওই মুখ ছুটাইস না, তুই তাকাইতি
শ্রাবণীর দিকে।।
.
(এই মেয়ে দেখি আমাকে আগে থেকেই
ফলো করছে, ফাপর দিয়েও কাপড়
ছিড়লো না।। উলটা ধরা খেলাম)
.
.-দুর কি যে বলিস, তুইতো আমার সব,
আমার আদুড়ি।
.
--হইছে হইছে কি করতে হইবো সেটা
বল।।
.
- এই সরবতটা খা।। তোর জন্য বানিয়ে
এনেছি।।
.
--এত ভালবাসিস আমাকে?
.
-হুম, তুই বুঝিস না?
.
-হুম বুঝছি। দে গ্লাসটা
(গ্লাসটা নিয়েই চিল্লাতে থাকে,)
.
--আন্টি, আন্টি,, আন্টি,,,,
.
-- আন্টিরে ডাকস কেন,, ওই থাম থাম
আম্মুরে কেন?
.
--কি হইছেরে মা? ( আম্মু)
.
--আন্টি, তোমার ছেলে আমারে কি যেন
খাওয়াইতে চাইছিলো, এই সরবতে
মিসেয়ে
.
--সত্যি? ছিজান বল এমন করেছিস?
.
-- না আম্মু কিছু নাই ওটায়।।
.
--তাহলে তুই খাঁ।।
.
(এই সেরেছে,, এটা খেলেতো টয়লেটে
গিয়ে বসে থাকতে হবে)
.
--না আম্মু একটু আগে অনেক পানি
খেলাম।।।
.
-আন্টি খাবেনা দেইখেন।। কার এডের
ভিতর কিছু দিছে।।
.
দুই জনের চিল্লা চিল্লিতে সরবতটা
বাধ্য হয়ে খেলাম।। খাওয়ার
ঘন্টাখানেকের মধ্যে একশন শুরু।। গুনে
গুনে ১৭ বার টয়লেটে যাই।। শেষবার
টয়লেটে যাওয়ার আগে দেখি টয়লেট
তালা দেওয়া।। আম্মুও পাশের বাড়ি
গেছে।। নিশ্টই এটা বজ্জাত মায়াটার
কাজ।।
.
-ওই বাতরুমে তালা দিছে কে? (আমি)
.
-আমি।
.
-তুই ভয় পাসনা আমারে? আবার বলস
"আমি"
.
- তোরে? আর ভয়? হি হি হি
.
-হাসি থামা আর চাবি দে।
.
-না,, চাবিও দিমু না হাসিও থামামুনা,,
হি হি হি, হো হো হো।। (আরো যেন
বেশি হাসি শুরু করলো, এদিকে আমার
যায় যায় অবস্থা)
.
-দেনা চাবিটা?
.
-তাইলে ক আর আমার পেছনে লাগবি না
.
--আইচ্ছা, এবার চাবিটা দে
(পেটে খুব গন্ডগোল করছে। মনে হয়
প্যান্ট নষ্ট হয়ে যাবে।।)
--এই নে এবারের মত দিলাম,, আমার
সাথে লড়তে আইলে তোর অবস্থা খারাপ
করে ফেলবো।।
.
চাবিটা নিয়ে বাতরুমে, গেলাম ইস
আরেকটু দেরি হলে প্যান্ট নষ্ট হয়ে
যেত।। মেয়েটাকে জব্দ করতে হবে।।
আজ বাতরুমে যেতে যেতে অবস্থা
শেষ।। দাড়াঁবার শক্তি পাচ্ছি না।।
ভাবতেছি আর মনে মনে বলছি-সখী
রাতে আসো দেখাবো মজা।।। বাতরুম
থেকে বের হয়ে দেখি ও দাড়াঁনো।।
.
--ভিতরে বইসে বইসে কি ভাবলি,,
আমারে জব্দ করবি?
.
--না না, তা কেন,,, (ও জানলো কেমনে
আমি বসে বসে ওকে জব্দ করার কথা
ভাবছি,, মেয়েটাকি তবে কালা জাদু
জানে?)
.--দেক আমার সাথে পাঙ্গা লবি না।।
মায়া মানুষের সাথে পাঙ্গা লইলে তার
ফল ভাল হয় না।।
.
--থাক বাবা, তুই তোর মত আমি আমার
মত।।
.
--জি না,, আমি যা বলুম তোরে তা শুনতে
হইবো।।
.
--ইস আমার ঠেকা পড়ছে!!
.
-করবি নাতো? ঠিক আছে তোরে দেখে
নেবো।।
.
সেদিন রাতে বসে খাচ্ছি সবাই,
খাবারটা বেশ মজা হইছে।। আহ কি মজা,
গরুর মাংশটা বেশ হইছে।। তাই আম্মুকে
জিজ্ঞাস করলাম-
.
-আম্মু গরুর মাংশ কে রান্না করছে?
.
-সান্তা,, কেন?
.
-একটুও মজা হয় নাই। (মজা কিন্ত ঠিকই
হইছে, বাট উলটা টা বল্লাম,, বলতে
চাইছিলাম মজা হইছে বাট ও রান্না
করছে তাই বল্লাম মজা হয় নাই )
.
-মজা হয় নাই? কাওরে খাইতেতো কেও
জোর করতাছে না।। আন্টি আপনার কেমন
লাগছে?
.
-- হুম, অনেক মজা হইছে।। (আম্মু)
.
--আন্টি তোমার মজা লাগলেই হইবো।।
.
মজার মাংশ প্লেটে রেখে উঠতে ইচ্ছে
হচ্ছিলো না। কিন্তু ইজ্জতের একটা
ব্যাপার সেপার আছে। উঠে রুমে
গেলাম।। আজ নিজের কম্বল আলাদা
এনেছি। আজ আর আমাকে জ্বালাতে
পারবে না।।
.
কিন্তু যা ভাবলাম তার উলটোটা হলো।।
ও জগ দিয়ে পানি আনলো। ভাবছিলাম
আমার কম্বলটা ভিজাবে।। একি সে
নিজের কম্বলটাই ভিজালো। আবে মায়া
নিজেরটা নিজেই ভিজাইলো, মাথা
খারাপ হইলো নাকি। যাইহোক আমারটা
ভিজায় নি তো।।
.
কম্বল ভিজিয়ে বাইরে চলেগেলো।।
এবার দেখি আম্মুকে নিয়ে এসে
রিপোর্ট-
.
--আন্টি দেখো তোমার ছেলে কি করছে?
.
--কি করছে?
.
--আমার কম্বলে পানি ঢেলে দিছে।।
.
(বলেই নেকা কান্না শুরু করছে, আর
আমাকে লুকিয়ে, লুকিয়ে ভেঙাচ্ছে।।
আল্লাহ কোথায় এসে পড়লাম।।)
.
-- আম্মু আমি ভিজাই নি, ও নিজেরটা
নিজেই ভিজাইছে।।
.
---থাক, আর বলতে হইবো না।। যা দুইটায়
এক কম্বল নিয়েই ঘুমা।।
.
কিছু করার নেই, একই কম্বলের নিচে
দুজনে শুতে হলো কিন্তু কম্বলটা কালকের
মত আবার নিজেই দখল করে নিলো।।
আম্মুকে ডাকতে চাইলাম
.
--আম্মু, আম্মু
.
-বুইড়া পোলা আম্মুরে কেন?
.
-দেখামু কতটুকু কম্বল দিছস।।
.
--ও তাই,, দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা,, তোর
কষ্ট করা লাগবেনা আমিই ডাকি।।
আন্টি আন্টি
.
--অইে চুপ চুপ।। আর করুম না
.
--কানে ধর
.
--না,,
.
-- আন্টি,,,,
.
- ধরছিতো,,
.
--এবার ঘুমা।। কিছু করার চেষ্টা করবি
তার ফল ভাল হবে না।।
কিছু বল্লাম না, ঘুমিয়ে পড়লাম।। সারা
দিনের ধকলে শরির ক্লান্ত থাকায়
ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
প্রতিদিনের মত আজও মাঝরাতে ঘুম
ভেঙে যায়।। ঘুম ভাংতেই দেখি তার
একটা পাঁ আমার উপর দিয়ে ঘুমাচ্ছে।।
ইচ্ছে হচ্ছে পাঁ টা ভেঙে দেই।। কিন্তু
শত হলেও আমার বউতো।। তাই আমিও ওর
উপর হাত দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।। সকাল
বেলাই ওর চিল্লাচিল্লি শুনে ঘুম
ভাংলো,।। আম্মুকে ডাকছে-
.
-- আন্টি, আন্টি দেখে যাও তোমার
ছেলে কি করছে।।
.আবার কি করলাম,
আবার কোন মতলব আটলো দুষ্টুটা?
↓↓
চলবে...................

image

#গল্পঃঃদুষ্টু্_বউ
↓↓
লেখক: RK
.
আম্মু আম্মু ঐ মেয়েটা নাকি আমার সাথে
শুবে।।
আমার বিছানায়। কেমন লাগে বলো।।
এমনিতেই আমার রাতে লুঙ্গি ঠিক
থাকে না, তার উপর আবার এই মেয়ে যে
দুষ্টু।। না না আম্মু, আমার রুমে আমি একা
থাকবো।।
.
তখন থেকে আমি আম্মুকে বলেই যাচ্ছি,
বলেই যাচ্ছি কিন্তু আম্মু কিছু বলছে না।
শুধু মুচকি মুচকি হাসছে।।
বিরক্ত হয়ে শুতে আসলাম।।
কিন্তু সেই মেয়েটা আমার বিছানা দখল
করে আছে।। কি পাজিরে ভাই, কিছু
বল্লেই সাপের মত ফনা তুলে। কিছু
বলতে পারি না।
না জানি কি করে বসে।। কিছু বলার
আগেই আন্টি আন্টি করে আম্মুকে ডাকে।
আর কি সব বানিয়ে বানিয়ে বলে আম্মুর
হাতে আমাকে জব্দ করে।।
এই পাজি মেয়েটাকে আম্মু আমার গলায়
ঝুলিয়ে দিয়েছে।।
.
একদিন যেই ক্লাসে একটু কলম
চেয়েছিলাম বলে কেমনই না করলো।।
আমাকে সারা ক্লাস ভেঙিয়েছে।।।
.
আম্মুযে কি করলো, পাজি আর ফাজিল
মেয়েটারে আমার গলায় ঝুলিয়ে
দিলো।
.
.ক্লাসের সবাই যদি জানে আমাদের
দুজনের বিয়ে হইছে, তবেতো শেষ।। তার
উপর আবার আমি মাত্র ১৬ বছর বয়সি। এত
পিচ্চি বয়সে বিয়ের কথা বল্লে কেমন
যেন হাসে।। যাইহোক
সাত পাঁচ না ভেবে ওকে ডাকলাম।।
.
-ওই শোন।
.
-কি হইছে? (এমন ভাব নিলো যেন রুমটা
ওর)
.
-আমার রুমে, আমারই বিছানায় শুয়ে
বলছো কি হইছে?
.
-তোর রুম,? তোর বিছানা? নাম লেখা
আছে?
.
-নাম লিখা লাগবে না, এগুলো আমার
.
- বল্লেই হলো আমার,, এগুলো আমার, আমি
আগে শুইছি আমার।।
.
কিসের পাল্লায় পড়লামরে বাবা, আমার
বিছানা দখল করে, বলছে তার
বিছানা।।
এই ছিলো আমার কপালে। বাসর রাতে
নাকি কত রোমেন্টিক কথা বার্তা বলে,
বউ আর বর।।
আমার বউ, ইস যেন ধানি লঙ্কা।।
কি আর করার, শীতের ভেতর ছোট লেপটা
নিয়ে পাশাপাশি শুয়ে আছি, কিন্তু
লেপটা যেন তার একাই লাগবে।। টেনে
পুরোটা নিজেই দখল করে রেখেছে।
তাই বিরক্ত হয়ে বল্লাম-
.
-দেখ ভাল হচ্ছে না কিন্তু
.
-অই অই তুই আমারে কি ভাল দেখাবিরে?
.
-তোরে ধইরে পিটামু।
.
-ইইইইইইই,,, আইছে বীরপুরুষ,,রাত্রে নিজের
লুঙ্গি ঠিক রাখা পারে না, আসছে
আমার সাথে পাঙ্গা লইতে।।
কিছু বল্লাম না, এ মেয়ে দেখি সবই
জানে, ইজ্জতের ১২ টা বাজিয়ে দিবে
নইলে।।
ঘুমানোর চেষ্টা করছি আর ভাবছি,,
১৬ বছরে কোন ছেলে যেন বিয়ে না
করে নইলে আমার মত ফাইসা যাইবো।।।
.
মাঝরাতে কেনযানি ঘুমটা ভেঙে যায়।
ঘুম থেকে উঠে দেখি ও ঘুমিয়ে আছে,
এলোচুলে যেন ওর প্রতি কেমন যেন
একটা আকর্ষন হচ্ছে,, ইচ্ছে করছে ওর এলো
চুল গুলো ঠিক করে দিই।।
ডিম লাইটের আলোতে, ওকে যেন সর্গের
পরীর মত লাগছে।।
আমি ছুয়ে দিতেই, চ্যা চ্যা করে
চিল্লায় ও।।
.
--অই অই মায়া মানুষের শরিরে হাত দেস?
আন্টি আন্টি..
(বলতে বলতেই চেচায়, আমি হাত দিয়ে
মুখটা চেপে ধরতেই সজরে কামড় বসিয়ে
দেয়।।)
--মা গো বাবা গো,,, আমাকে কামড়
দিয়ে মেরে ফেল্লো গো।।
এবার ও আমার মুখ চেপে ধরে। আমি কিছু
বল্লাম না।।
.
--কিরে কামড় দিবি না? (ও)
.
-না দিবো না,, আমি তোর মত ফাজিল
না।।
.
--আমি ফাজিল হইলে তুই ফাজিলের
জামাই,, হি হি হি
.
-হাসিছ না হাসিছ না, হাতটা জইলে
গেছে
.
--কই দেখি দেখি
.
---না দেখা লাগবো না, কামড় দিয়া অহন
আবার ঢং
.
-কি আমি ঢং করি?
.
-তা নাইলে কি,, যা ঘুমা আমারেও
ঘুমাইতে দে।।
.
সেদিনের মত ঘুমিয়ে পড়লাম, সকালে
ঘুমথেকে উঠে দেখি, পাজিটা
ঘুমাচ্ছে।। ইচ্ছে হচ্ছিলো পাতিলের
তলাটা ঘষে সাদা মুখটা কালো করে
দিই। কিন্তু দিলাম না।।
ঘড় থেকে উঠে আমার নিত্য দিনের
অভ্যাস সূর্যটা দেখা, তাই দেখতে
বেরুলে, সবাই আমার দিকে তাকিয়ে
হাসে। কিছু বুঝে উঠার আগে তুমুল
হাসি।। অতিপতি করে আয়নার সামনে
গিয়ে দেখি! গালে পাওডার, ঠোঁটে
লিপিষ্টিক, কপালে টিঁপ। এগুলো
বজ্জাতটার কাজ।। বজ্জাত মেয়েটার
আজ খবর করছি,, আজ ওর একদিন কি আমার
একদিন।। বলতে বলে বেশ রেগে মেগেই
রুমে গেলাম কিন্তু কোথাও খুজে পেলাম
না।। শেষে দেখি আম্মুর পেছনে গিয়ে
লুকিয়েছে।।। একি সর্বনাস হলো আমার।
আমার আম্মুটাকেও দখল করে ফেলেছে।।
এ মেয়েকে যে করেই হোক দ্রুত
তাড়াতে হবে।।
.
চলবে............