#কোরবানি
★কোরবানি কি?
→কোরবানি অর্থ হলো কাছে যাওয়া বা নৈকট্য অর্জন করা, ত্যাগ স্বীকার করা বা বিসর্জন দেওয়া।
ইসলামি পরিভাষায় কোরবানি হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শরিয়তের বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা। কোরবানি করা ওয়াজিব।
★কোরবানি বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত?
১.কোরবানির জন্য প্রয়োজন ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা।
২.কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী হওয়া।
"আল্লাহর কাছে কখনো কুরবানির গোশত বা রক্ত পৌঁছায় না। বরং তাঁর কাছে তোমাদের তাকওয়াটুকুই পৌঁছায়।"
(সূরা হাজ : ৩৭)
★কার উপর কোরবানি ওয়াজিব?
→স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক, মুসলিম যদি ‘নিসাব’ পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকেন, তাঁদের পক্ষ থেকে একটি কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। নিসাব হলো সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর সমমূল্যের নগদ টাকা ও ব্যবসার পণ্য বা সম্পদ।
★কোরবানির পশু?
→১. ছাগল, ২.ভেড়া, ৩.দুম্বা, ৪.গরু, ৫.মহিষ ও ৬.উট
এই ছয় ধরনের পশু দ্বারা কোরবানি দেয়া যায়। এর বাইরে অন্য কোনো পশু দ্বারা কোরবানি বৈধ নয়।
★কুরবানির পশুর বয়স
-উট : পাঁচ বছরের হতে হবে।
- গরু-মহিষ : দুই বছরের হতে হবে।
- ছাগল-ভেড়া-দুম্বা : এক বছর বয়সের হতে হবে।
★এক পশুতে শরীকের সংখ্যা?
→একটি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা দ্বারা শুধু একজনই কুরবানী দিতে পারবে। এমন একটি পশু কয়েকজন মিলে কুরবানী করলে কারোটাই সহীহ হবে না।
আর উট, গরু, মহিষে সর্বোচ্চ সাত জন শরীক হতে পারবে। সাতের অধিক শরীক হলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না।সাতজনে মিলে কুরবানী করলে সবার অংশ সমান হতে হবে। সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কুরবানী করা জায়েয।
★কুরবানীর গোশত বন্টণ?
❌অনেকে একদম মেপে মেপে তিন ভাগ করেন।
✅কুরবানীর গোশতের কিছু অংশ গরীব-মিসকীনকে এবং কিছু অংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। অবশ্য পুরো গোশত যদি নিজে রেখে দেয় তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। যেহেতু আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যেই কোরবানি দিয়ে থাকি সেক্ষেত্রে উত্তম পন্থা অবলম্বন করাই শ্রেয়।
★কোরবানী নিয়ে কতিপয় কিছু বিষয়ঃ
❌উমুকের নামে কোরবানি দিলাম
✅আল্লাহর নামে উমুকের পক্ষ থেকে কোরবানি দিলাম।
❌আমার পিতার পক্ষ থেকে বা মৃত ব্যাক্তির নামে কোরবানি।
✅কোরবানি আপনার উপর ওয়াজিব হয়ে থাকলে আপনাকেই দিতে হবে। নিজের নাম দেওয়ার পর আত্নীয়-স্বজনের নাম যোগ করা যাবে।
➡️যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে।
➡️কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে।
➡️শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ বা সামান্যটুকু উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না।
➡️মৃত ব্যক্তি কোরবানির অসিয়ৎ করে গেলে তার পক্ষ থেকে কোরবানি করা জায়েজ।
?আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে কোরবানি করার ও তার সন্তুষ্টি অর্জন করার তৌফিক দান করুক, আমিন।
(বি.দ্র. :কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে করতে পারেন। জানা থাকলে উত্তর দেওয়া চেষ্টা করব ইং শাহ আল্লাহ।)