image
Photoshop69 changed his profile cover
6 yrs

image

image
ABU HANIF changed his profile picture
6 yrs

image
FIB (Official) changed his profile picture
6 yrs

image

image

সারারাত চ্যাটিং করে বুঝানোর পরে মেয়েটা বিশ্বাস করলো সে রাজশাহীর মিস ওয়ার্ল্ড। অনেক কষ্টে কালকে দেখা করার জন্য রাজি করিয়ে ফোনটা রাখলাম। ঘুম পাচ্ছেনা লেপের ভেতর থেকে বের হয়ে লুঙ্গির গিট্টুটা ঠিক করলাম। ঘর থেকে বের হয়ে আব্বাহুজুরের ঘরের সামনে গিয়ে দরজা ধাক্কানো শুরু করলামঃ
.
-আব্বা… ও আব্বা… আব্বাগো…
.
--কিরে কি হইছে?
.
-দরজাটা খুলেন আব্বা।
.
আব্বাহুজুর দরজা খুলে কিছুটা অবাক হয়ে তাকিয়ে বললেনঃ
--কিরে কি হইছে?
.
-ভয় লাগতেছে আব্বা। মনে হচ্ছে ঘরের মধ্যে কে জানি হাঁটতেছে, এই বুঝি ঠ্যাং ধরে তুলে আছাড় মারবে।
.
--মাথা ঠিক আছে?
.
-জ্বী আব্বা আমি আপনার লগে ঘুমামু।
.
আব্বা বিছানায় শোয়া মাত্র নাক ডাকা শুরু করলেন। আবারো ডাকলামঃ
-আব্বা ও আব্বা…
.
--কি রে?
.
-ঘুমাইছেন?
.
--ত্যক্ত করিসনা তো।
.
-আব্বা আমার একা ঘুমাইত্তে ভয় লাগে। কাইল থেকে আপনার লাগে ঘুমামু।
.
--আইচ্ছা ঘুমাইস।
.
দুই মিনিটের মধ্যে আব্বা আবারো নাক ডাকা শুরু করলেন, আবারো ডাকতে শুরু করলামঃ
-আব্বা, ও আব্বা ঘুমাইছেন?
.
--বিরক্ত করতেছিস ক্যান রায়হান।
.
-আব্বা আমার বদঅভ্যাস হইছে নিজের বিছানা ছাড়া ঘুম হইনা আপনি কি আমার সাথে আমার ঘরে গিয়ে ঘুমাবেন প্লিজ…
.
--এই ভোর বেলা বাঁদরামি করছ?
.
-না আব্বা সিরিয়াসলি কইতাছি।
.
--ভালো বুঝছি তুই কি বুঝাতে চাচ্ছিস। এর সমাধান আছে আমার কাছে।
.
-ঘটক কাকারে কল দিবো? নাহ্ এখন কল দেয়া ঠিক হবেনা তাইনা আব্বা? কাইল সকালে দিবো। এখন কল দিলেও তো সমস্যা নাই আব্বা কাকা তো নামাজ পড়ার জন্য উঠছে মনে হয়। কল দেই?
.
--তোর ঘটক কাকার সাথে কথা বলবো সমস্যা নাই। তার ছেলেটা নাকি রাজশাহীতে থাকার জন্য মেস খুঁজতেছে। তোর ঘরে রুমমেট হিসেবে থাকার ব্যবস্থা করে দেই। শুনেছি সে ছাত্র ভালো যদি তার থেকে একটু হলেও ভালো গুন তোর মধ্যে আসে।
.
-না থাক আব্বা আমার এখন ভয় লাগতেছেনা। ভয় কেটে গেছে, যাই নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পরি।
.
বিছানা থেকে নেমে নিজের ঘরের দিকে যাচ্ছিলাম আব্বা ডাক দিলেনঃ
--রায়হান
.
-জ্বী আব্বা।
.
--ইতরামি বাঁদরামি তাফালিং তো বহুত করলা। বড় হইছিস। এখন একটু ভালো হ। ভালো কিছু করবি যাতে দশ গ্রামের মানুষ তোর নাম জানে।
.
-আব্বা দশ গ্রামে দশটা বিবাহ করলে কেমন হয়?
.
--হারামি তুই মানুষ হবিনা। বাপের লগে ফাতরামি করছ।
.
আব্বায় ক্ষেইপা গেছে সো ঘরে এসে জম্পেস ঘুম দিলাম। ঘুম ভাঙ্গলো ভাতিজার ডাকে।
--চাচা ওই চাচা চাচ্চু ওই চাচামিয়া…
.
দরজা খুলে দেখি ভাতিজা মুখ ভোঁতা করে দাঁড়িয়ে আছে।
.
-কিরে কি হইছে? চেহারার মধ্যে লোডশেডিং ক্যান?
.
--চাচা কুত্তার লেজ কখনো সোজা হয়না।
.
-সেটা তো তোরে দেখেই বুঝা যায়। কাহিনী কি সেটা বল।
.
--নতুন গার্লফ্রেন্ড ও ব্রেকআপ করছে।
.
-ক্যান? তুই না সেদিন বললি তোর গার্লফ্রেন্ড তোরে প্রচন্ড ভালোবাসে। লাভ লেটার ও দেখাইলি তার। আমি নিজেই তো লেটার পড়লাম কতো আবেগ দিয়া লেখছে হালিম বাবু, আমার গুলুমুলু এনার্জি বাল্ব। তোমাকে ইত্তু ইত্তু গুলা ভালুবাসি। উম্মাহ্… নিশ্চই তুই কোন দোষ করছিস।
.
--চাচা লেটারটা আমার জন্য ছিলোনা।
.
-তো?
.
--মাইয়া লেটার লিখছিলো আরেক হালিমর জন্য ওর বান্দবী ভুল করে আমারে লেটার দিয়া গেছে। আইজ সকালে আইসা বলতেছে সরি ভাইয়া লেটারটা আপনার জন্য না ফেরত দেন।
.
-ফেরত দিছিস?
.
--ওইটা তো কাঠের ফ্রেমে বাঁধাই করে দেয়ালে ঝুলায় রাখছিলাম। মেয়েকে বললাম আমি চিঠি ছুঁড়ে মারবো তুমি ধইরো। মেয়ে বলছে আচ্ছা…
.
-তারপর?
.
--মাথা বরাবর ছুঁড়ে মারছি মেয়ের মাথা ফাইটা গেছে। বিচার নিয়ে গেছিলো আব্বুর কাছে আব্বু বাড়ি থেকে বের করে দিছে।
.
-আর তুই চলে আসছিস আমার ঘুম নষ্ট করতে?
.
--তো কি করাম? কার কাছে যাবো আর।
.
-আসছিস ভালো করছিস যা তোর দাদার ঘরে যা এক্টু…
.
--ক্যান?
.
-তোর দাদাকে গিয়ে বলবি দাদা আমি একা ঘুমাইতে পারিনা। ভুতে ভয় পাই, এখন থেকে আমি তোমার বাড়িতে তোমার সাথে ঘুমাবো।
.
--ক্যান কমু? দাদায় পিডাইবো।
.
-আজাইরা পিডাইবো ক্যান লম্বা করে একটা সালাম দিবি তারপর যা শিখিয়ে দিছি বলবি।
.
-আচ্ছা…
.
আবারো লেপের তলে এসে শুয়ে পড়লাম। একটু পর আব্বার ঘর থেকে বাটা স্যান্ডেলের বারির থপাস থপাস শব্দ শুনতে পেলাম ভাতিজার কন্ঠ শোনা যাচ্ছেঃ
--দাদা আমি সরি…
--দাদা মুই সরি…
--দাদা আমি সরি…
--দাদা ছেড়ে দে প্লিজ…
.
হারামজাদা ভাতিজার একটু পিডানি দরকার ছিলো। মাইরের উপর কোন অষুধ নাই। বেটা বেশি বজ্জাত হইছে আমার ঘুম নষ্ট করে। মেয়ের দিকে ফ্রেমে বাঁধাই করা লাভ লেটার ছুঁড়ে মারে। খাক একটু মাইর খাক।
বিকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখে পাউডার স্নো দিলাম। চুলে তেল পানি মিকসড করে চুল খাঁড়া করলাম। সুন্দর দেখে একটা শার্ট পরে বের হলাম। রেস্ট্রুরেন্টে ডুকতে যাচ্ছিলাম কিন্তু দারোয়ান বাঁধা দিলো। দেখি দারোয়ান পায়ের দিকে তাকিয়ে আছে নিচে তাকিয়ে দেখি অতিরিক্ত এক্সাইটম্যান্টের কারনে তাড়াহুড়া করে দুটা দুরকমের জুতা পরে এসেছি। বাধ্য হয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকলাম সুন্দরীর অপেক্ষায়। সুন্দরী সাথে থাকলে কেউ পা তো দূরের কথা আমার দিকেও তাকাবেনা সো আটকানোর প্রশ্নই আসেনা।
আধ ঘন্টা লেট করে সুন্দরীর আগমন ঘটলো। তাকে দেখে তো আমি ক্রাশিত। টানা টানা চোখ, গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁট, দুধে আলতা গায়ের রঙ। কিন্তু সমস্যা হলো সাথে দুটো বডিগার্ড বান্দবী। একটা জিনিস বুঝিনা প্রত্যেকটা আহামরি সুন্দরীর কেন যেন এক দুটা বডিগার্ড চেহারার খাইসটা ভাবওয়ালি বান্ধবী থাকে। ওই সুন্দরীর থেকে তার বান্ধবীদের নখরা থাকে বেশি, ঢং থাকে বেশি, ভাব থাকে বেশি। এগুলারে দেখলে ইচ্ছা করে আলকাতরায় চুবিয়ে পিচঢালা রাস্তায় শুইয়ে বুল্ডুজার চালিয়ে দেই।
সুন্দরীকে বলেছি কি খাবেন সে বলেছে ব্লাক কফি খাবে ভালো কথা। তার সাথের খাইসটা দুইটা চিকেন ফ্রাই, বার্গার, পিজ্জা আর কি কি যেন নাম না জানা জিনিস অর্ডার করলো। জীবনে প্রথম এগুলার নাম শুনলাম। মনে মনে বললাম খোদার কসম তোরা যদি খেতে না পারিস তাহলে তোদের ঘাড় ধরে মুখে ঠেসে দিয়ে হাতুড়ি বেলচা দিয়ে গিলায় দিবো।
লঙ্গরখানার নাম শুনেছিলাম জীবনে প্রথমবার দেখার সুযোগ হলো। খাওয়া শেষ করে ঢেকুর তুললো। উপর দিয়ে ঢেকুর তুলেছে নাকি নিচ দিয়ে ঢেকুর তুলেছে সেটা জানিনা।
ওয়েটার পরিচিত ছিলো বন্ধু মানুষ, কানে কানে এসে বিলটা বলে গেলো।
.
খাওয়া শেষে সুন্দরী বললোঃ
--ভাইয়া কি কিছু বলতে চান?
.
দুমিনিট চুপ করে থাকলাম। সুন্দরীর চাঁদ মুখখানা দেখলাম। কোমল ঠোঁটের মিষ্টি হাসি দেখলাম তারপর উঠে দাঁড়ায়ে বললামঃ
-তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে অনুমতি দিলে সেটা নিয়ে আসি?
.
সুন্দরীর বান্ধবী কোল্ড ড্রিংসে স্ট্র ডুবিয়ে কোক খাচ্ছিলো সেই বললোঃ
--টেডি বেয়ার এনেছেন বুঝি? নাকি ফুলের তোড়া এনেছেন? শুধু ওকে দিলে কিন্তু হবেনা আমরাও ওর সাথে আছি ভুলে যাবেন না কিন্তু।
.
মনে মনে বললামঃ
“হারামজাদি তোরে ইচ্ছা করতেছে ঘাড় ধরে টেবিলে মধ্যে ঠুয়া মারি। কোক খেতে স্ট্র লাগে না? বাসায় তো প্লাস্টিকের বোতলে মুখ লাগায় মোজো খাও। চিকেন ফ্রাই, বার্গার, পিজ্জা আহা বাসায় বেগুনের ভর্তা আর মুলার ঝোল খাও সেটা বুঝিনা আমি।”
.
--কি হলো ভাইয়া কি ভাবতেছেন?
.
-নাথিং তিনজনের জন্যই সারপ্রাইস আছে, আসতেছি আমি।
.
রেস্ট্রুরেন্ট থেকে বের হয়ে ভাবলাম দুনিয়া উল্টায় গেলেও এই সুন্দরী জিন্দেগীতেও পটবেনা। কি দরকার ইনভেস্ট করার। দশটাকা রিক্সাভাড়া দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। ফোনটা বেঁজেই যাচ্ছে। ভাতিজাকে ফোনটা দিয়ে বললামঃ
-ধর কল রিসিভ করে একটা বিরহের গান শুনা তাদেরকে।
.
ভাতিজা কল রিসিভ করে গান শুরু করলোঃ
--আমি তো ভালা না ভালা লাইয়া থাকো ও ইয়ো ইয়ো ও চিকি চিকি……
.
ভাতিজার মুখের দিকে তাকিয়ে বললামঃ
-এগুলান কি?
.
--ডিজে সং চিকি চিকি
.
আমিও মনে মনে বললাম ও চিকি চিকি। ভাতিজা বললোঃ
--চাচ্চু গালি দিচ্ছে তো। একটা মেয়ের কান্নাও শুনতে পেলাম।
.
-তুই গান শুনাইতে থাক।।
©©©(কালেক্টেড)©

Didarul Alam changed his profile picture
6 yrs

image

image

image