ছোট ভাই গলা ফাটিয়ে শীতকালের রচনা পড়ছে " পৌষ ও মাঘ মাস এই দুই মাস মিলে শীতকাল। এই সময় যুবক ছেলেদের একা একা থাকতে অনেক কষ্ট হয়"। আব্বা পাশে বসে পেপার পড়ছিল। ছোট ভাইয়ের শীতকালীন রচনা শুনে পেপার রেখে লাফ দিয়ে উঠলো।
-ঐ তুই কি পড়িস?
আব্বা, শীতকালীন রচনা পড়ি।
-এই রচনা কোন বইয়ে লিখছে?
আব্বা, বইয়ে এই রচনা নাই। স্যার বলেছে এবার পরীক্ষায় রচনা আসবে "শীতকাল "। তাই বড় ভাইয়ের কাছে থেকে এই রচনা লিখে নিয়েছি। সেইটাই মুখস্থ করছিলাম।
ও তাইলে এইডা বড় হারামজাদার কাজ। মনে মনে সন্দেহ আছিল। ডাক দে বড় হারামজাদাকে।
বাথরুমে বসে সিগারেট খাচ্ছি। এমন সময় ছোট ভাইয়ের ডাক "রিফাত ভাই আব্বা ডাকে। অবস্থা বিশেষ ভালো না। তাড়াতাড়ি আসো।
তাড়াতাড়ি সিগারেট বাথরুমে ফেলে দিয়ে মুখের সিগারেটের গন্ধ দূর করতে টুথপেস্ট খুঁজতে লাগলাম। তখনি মনে হলো টুথপেস্ট আগেরদিন শেষ হইছে। তাই শ্যাম্পুর বোতল থেকে একটু শ্যাম্পু নিয়ে মুখের মধ্যে চালান করে দিলাম। ওরে আল্লাহ এর থেকে বিষ খাওয়া ভালো আছিল। উয়াক থুঁ। সব ফেলে দিয়ে কয়েকবার কুলি করলাম। তারপর আব্বার সামনে গিয়ে হাজির।
-তো বড় সাহেব এতক্ষণ কই ছিলেন? আসতে এতো সময় লাগলো?
আমি কইলাম" জ্বী আব্বা, পড়তেছিলাম। সামনে পরীক্ষা না। এইসময় নিয়মিত পড়ার চেষ্টা করতেছি"। ইনশাআল্লাহ এবার আপনার মুখ উজ্জ্বল করবো ।
- আব্বা রেগে গিয়ে বললেন " ঐ হারামজাদা আমার মুখ কি অন্ধকার নাকি যে উজ্জ্বল করবি? তবে কথা অবশ্য খারাপ বলিস নাই। আগে আমার মুখ উজ্জ্বলই ছিল। তুই যখন এস, এস, সি তে দুইবার আর আর এইচ,এস,সিতে তিনবার ফেইল মারছিস তখনি মুখ কালো হয়ে গেছে। এবার আর সেই মুখ উজ্জ্বল করার দরকার নাই বাবা"। তো বাপজান ছোট বাপজানের রচনা কি আপনি লিখে দিছেন?
এই প্রথম আব্বা আমার লিখা পড়ছে বলে মনে হচ্ছে। তাই খুশিতে বকবক হয়ে বললাম " জ্বী আব্বা, এগুলো হচ্ছে আমার ছোটখাটো প্রতিভা। ছোট ভাই রচনা লিখে চেয়েছে তাই না করতে পারিনি। লিখে দিয়েছি।
- তো আব্বাজান কি কি লিখছেন একটু পড়ে শোনান?
আমি ছোট ভাইয়ের খাতা নিয়ে পড়া শুরু করলাম...
"পৌষ ও মাঘ মাস এই দুই মাস মিলে শীতকাল । এই সময় যুবক ছেলেদের একা একা থাকতে কষ্ট হয়"। এই লাইন পড়ে চুপ করে আছি।
-আব্বা চোখ বড়বড় কইরা কইল থামলি কেন?
পড় পড়।
এই সময় রাতে অনেক শীত পড়ে। রাতের বেলা একা একা থাকা খুব কষ্টসাধ্য। হাত পা ঠান্ডায় বরফ হয়ে আসে। বাংলাদেশের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই ঋতুতে বাংলাদেশ বিয়ের হার প্রচুর পরিমানে বেড়ে যায়। তাই বাংলাদেশের বিখ্যাত অনেক লেখক এই ঋতুকে বিয়ের ঋতু বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিয়ের ঋতু নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন।
আমার পরান যাহা চায়,
বিয়ের ঋতু তাই , বিয়ের ঋতু তাই গো !
কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন।
আমি সব ভেঙ্গে ফেলে করবো চুরমার
কেন বিয়ের ঋতু পৃথিবীতে আসে অনেক দিন পরপর ।
গবেষকরা আরো বলেছে যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়াতে এই ঋতুর বিশেষ অবদান আছে। যা পৃথিবীর অন্যান্য জন্মহার কম দেশের কাছে ঈর্ষণীয়।
-আব্বা একটু শোনের পর বুক ধরে ফ্লোরে বসে গেলেন।
আমি বললাম, আরো বলবো আব্বা?
-আব্বা বললেন " যদি বাপকে জীবিত দেখতে চাস তাইলে এইখানেই এই রচনা পড়া বাদ দে"।
কেন আব্বা? এইখানে তো প্রকৃত সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
-আরে রাখ তোর প্রকৃত সত্য । তাড়াতাড়ি ওষুধের বক্স নিয়ে আয়, জীবন গেলো।
দৌড়ে আব্বার ওষুধের বক্স নিয়ে আসলাম।
একটুপর আব্বা বললো, আজ বুঝলাম। আমার বড় ছেলের এতো প্রতিভা কেন।
আমি কাচুমাচু হয়ে বললাম, কেন আব্বা?
-যে ছেলের একটা সামান্য রচনা মানুষের হার্ট অ্যাটাক করাতে পারে। তার সম্পূর্ণ পরীক্ষার খাতা দেখতে কমপক্ষে চার-পাঁচজন মাস্টার অবশ্যই লাগবে। আমি বুঝে গেছি আমার ছেলের মেধার দাম এই দেশে নাই। তোকে আমি উচ্চ শিক্ষার জন্য উগান্ডা পাঠামু বাপজান।
না, আব্বা। আমি আমার এই প্রতিভা দেশের কাজে লাগামু। দেশের মানুষের কাজে লাগামু। দেশের উন্নয়ন করমু।
- আব্বার চোখ বন্ধ।
আব্বা, কথা কও। আব্বা, ও আব্বা?
আব্বা গো..........
শীতকাল
.

image

Shahin Mahmud changed his profile picture
6 yrs

image

আসুন আমরা নিজেদের জিনিস কে মৌল্লায়ন করতে শিখি।

__Tnx দিলেন যে ! ! !
_Req Accpect করছেন তাই
__ওহ ! ! যে Req Accpect করে তাকেই Tnx
দেন?
_নাহ! !
__তাহলে আমাকে দিলেন যে !
_ভাব বেড়ে গেলো নাহ! আপনকে Tnx
দিতে ঠেকা পড়ছে।যান ভাগেন
মেয়েটার নামের পাশ থেকে সবুজ
ফোটা উধাও।
আনফ্রেন্ড করে দিছে।
ম্যসেজ এ যেয়ে একটা "সরি"
দিয়ে আসলাম।
পরের দিন
সকালে ফেবুতে ঢুকে দেখি মেয়েটা আবার
রিকুয়েস্ট দিছে।
__Tnx
_Tnx কেনো?
__আবার রিকুয়েস্ট দিলেন তাই।
_যে রিকুয়েস্ট দেয় তাকেই Tnx দেন
নাকি?
__বাহ ভালো নকল করতে পারেন তো ! ! !
_হুম। কি করেন আপনি?
__ছুটো ছুটি
_মানে?
__ঘাড়ে একটা ব্যগ নিয়ে ঘুরে বেড়াই ।
আপনি?
_হি হি হি! ! আপনার মতই।
__হাসলেন ?
_হুম।
__কই ?
_এই যে হাসতেছি।
__বিশ্মাস হয় নাহ
_রিয়েলি হাসছি
__দেখতে পাচ্ছি না যে
_কি করে দেখবেন !!
__ইচ্ছা করলেই দেখাতে পারেন
_কেমনে?
__ল্যপটপ এর সামনে দেখেন
একটা ক্যমেরা আছে ওটা দিয়ে একটা পিক্স
তুলে চ্যাট এ দিয়ে দেন।
_নাহ! !
__তাহলে মিথ্যা বলবেন ও নাহ
_কোনটা মিথ্যা ! !
__আপনি হাসছেন! !!!
(দম করে দেখি ম্যসেজ এ এক টা পিক্স
চলে আসলো।একটা মেয়ে মাথায় সুন্দর
করে কাপড়
দেওয়া।গাল
ভেংচাচ্ছে সাথে মিষ্টি হাসি ফ্রি)
_পাইছেন ! ! !
__এটা আপনি নাহ
_মানে কি কেবল তুলেই দিলাম আর
বলেন
কি না আমি না
__শিওর এটা আপনি নাহ।।
_তাহলে কে শুনি(রাগের ইমো)
__মানুষ কখনি এত্ত সুন্দর হয় নাহ।
এটা নিশ্চিত
কোন পরীর পিক্স
_হি ! হি! ভালো পটাতে পারেন
তো আপনি
__আপনি কি পটতেছেন
_নাহ।।।
৪ মাস পরে
বসে আছি রমনা বটমূলের পাশে।
একটা ফুসকার
দোকানে।ফুসকা আমার
ভালো লাগে নাহ কিন্তু
তবুও সামনে ফুসকা নিয়ে বসে আছি।
আমার সামনে সেই অম্ভব সুন্দর মেয়েটি।
মজা করে ফুসকা খাচ্ছে আর আমার
দিকে তাকিয়ে হাসছে।ওর
খাওয়া দেখে আমার
মন পেট দুটোই ভরে গেছে।
__পটেছো? ??
_নাহ
__শিওর? ??
_100%
পাশাপাশি বসে নাগর দোলায়
চিল্লাপাল্লা করা বাচ্চাদের
দেখছিলাম।কখন
যে ওর একটা হাত আমার হাতের ভেতর
আর ওর
মাথাটা আমার কাধের অপর পড়ল কিছুই
টের
পেলাম নাহ।ওর চুলের মিস্টি গন্ধ আমার
সব
কিছু ঝাপসা করে দিচ্ছে।এ এক অন্যরকম
অনুভুতি।
যা বর্ননা করা যায় নাহ।
উপলব্ধি করা যায়
মাত্র।
_এই ছেলে !!
__হুম
_আমি পটেছি।।।।

image

- চাচা বাদাম কত?
- ৫ টাকা
- দেন।
তা চাচা বেচাকেনা হয় ভালো?
- হয়/হয়না
- কেমন হয় প্রতিদিন?
- দু-তিনশো
- এতে চলে আপনার?
- চলে বাবা কোনোরকম!
- কেন চাচা, ছেলে মেয়ে নেই? ওরা দেখে না আপনার?
- আছে। মেয়ি বিয়ি দিছি, আর ছেলি ঢাকায় থাকে, কলেজে চাকরি করে।
- ছেলে আসেনা দেখতে?
- বছরে এক-দুবার আসে।
- ঈদে আসছিল?
- না।
- বলেন কি! ঈদেও আসেনি দেখতে? কথা হয় ছেলেমেয়ের সাথে?
- হয়। বলে, ব্যস্ত আছে, আসতি পারবে না।"

কলেজ ক্যাম্পাসে বাদাম খেতে খেতে পরিচয় হওয়া এই বৃদ্ধ বাদামওয়ালার ছেড়া একটি বোতামহীন শার্ট, হাতে বাদামের ঝুড়ি, স্যান্ডেলহীন দু'টো পা, পায়ের নিচে অজানা গন্তব্য আর চোখের কোণে লুকোনো একবিন্দু জল ছাড়া তেমন কোনো বড় পরিচয় নেই! সকালে প্রতিদিনের মতো বাদামের ঝুড়ি নিয়ে খালি-পেটে খালি-পায়ে এক'পা-দু'পা করে পথ চলতে থাকেন। অনেকে বাকিতে বাদাম নেন, কিন্তু বাকির টাকা শোধ করেন না! তাতে তার কোনো দুঃখ নেই, নেই কোনো আফসোস।
তার মনের সবচেয়ে বড় আনন্দ হলো কলেজের স্যাররা প্রতিদিন তার কাছ থেকে প্রায় ২০০ টাকার বাদাম কিনেন।
আর তার জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট হলো তার ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে পাওয়া অবহেলা! যে অবহেলা পাওয়ার জন্য নিজের ছেলেকে ২৩ বছর ধরে পড়ালেখা করিয়ে মানুষ করেছে।। ??

আপনাদের কাছে আমার এতটুকু অনুরোধ, এইসব মানুষদের কাছ থেকে বাদাম কিনুন আর না কিনুন, কখনো খারাপ ব্যবহার করবেন না।

যতটুকু বুঝি ততটুকু জানাবো।আর না জানলে আপনাদের কাছ থেকে শিখবো।

image

.রাত ১২:৪৫ এ facebook এ এক অচেনা ছেলে knock করলো।.....
..
.
:-হ্যালো নিরব ভইয়া কেমন আছেন?
.
:-জ্বি ভালো। আপনি?
.
:-ভালো নেই।
.
:-কেনো কি হয়েছে?
.
:-আচ্ছা আপনার ফোন নাম্বারটা একটু দিবেন?
.
:-কি করবেন?
.
:-একটু কথা বলতাম।
.
:-0170★★★★★★★
.
১২:৫০ এ কল আসলো। প্রথম রিসিভ করতে চাইনি।কিন্তু বার বার কল দেওয়াতে রিসিভ করলাম।
.
:-ভাই আমি সাজিদ একটু আগে যাকে নাম্বার দিলেন।
.
:-হুম বুঝতে পারছি।
.
:-ভাইয়া একটা কথা রাখবেন।
.
:-রাখার মতো হলে রাখবো।
.
:- ভাইয়া আপনি তো ভালো গল্প লেখেন।
.
:-কে বললো?
.
:-আমি আপনার সব গল্পগুলো পড়ি।সত্যি অসাধারন।
.
:-আপনাকে ধন্যবাদ।
.
:-ধন্যবাদ দেওয়ার দরকার নেই।
একটা help করলেই চলবে।
.
:-হুম কি help বলেন চেষ্টা করবো।
.
:-আমার জীবনের একটা গল্প লেখবেন।
.
.
.
আমি ভাবলাম ভালোই হলো। অনেক দিন রোমান্টিক গল্প লেখিনা।
.
:-কি গল্প?
.
:-আচ্ছা
.
আচ্ছা বলে ভাইটা যেনো তার অতীতে ডুব দিল।.....
.
.
আমার একটা পাগলী ছিলো......
পাগলিটা আমাকে ধরে খুব কান্না করছিল আর বলছিল..
.
:-আমার কিছু চাই না শুধু একটু ভালোবাসবা তাহলেই চলবে।
.
আচ্ছা অনেক ভালোবাসবো তোমায়। এখন বাসায় যাও, রাত হয়ে এলো।
.
:-তাহলে একবার ভালোবাসি বলো।
.
:-হ্যা ভালোবাসি।
.
:-তাহলে আমার কপালে একটা চুমু দেও।
.
----আমি ওর কপালে ছোট্ট একটা চুমু দিলাম।----
.
:-হইছে এবার যাও।
.
:-আচ্ছা যাচ্ছি।
.
:-আর আমার ফোনটা আজ রাতের জন্য নিয়ে যাও।
কালকে তোমাকে একটা নতুন ফোন কিনে দিব।
যাও কোথাও দেরি করবে না সোজা বাসায় চলে যাবে। বেশি রাত জাগবে না।
.
:-আচ্ছা
.
....বাসায় চলে আসলাম।.....
.
.
.
পরেরদিন অনেক মানা করার পরও আমাকে একটা ফোন কিনে দিলো,সাথে অনেক জায়গায় ঘুরালো।
.
.
পাগলীটা যখম আমার সাথে পার্কে বসে আইসক্রিম খাচ্ছিল,তখন ওকে খুব খুশি দেখাচ্ছিলো।
.
.
আসলেই মেয়েটা অন্য রকম আমার প্রতি ওর তেমন চাওয়া পাওয়া নেই। একটাই চাওয়া অনেক ভালোবাসতে হবে।
.
(হ্যা আমি আমার জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি ওকে।)
.
.
রাত ১২:১৫ মিনিট হঠাৎ পাগলীটার ফোন।..
রিসিভ করলাম।
.
:-খেয়েছ?
.
:-হ্যা খেয়েছি।তুমি?
.
:-খেয়েছি, আজ একটু আমার বাড়ির নিচে আসবে তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।
.
:-আচ্ছা wait করো যাচ্ছি।
.
.
(মহারানীর হুকুম কি আর করবো)
গিয়ে দেখি পাগলীটা বেলকুনিতে দাড়িয়ে আছে,আমাকে দেখে মুচকি হাসি দিলো।
.
:-রাগ করেছো? কি করবো বলো তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করলে আমি কি করবো?
আমার তো ঘুমই আসছিল না। তোমাকে দেখলাম এখন ঘুম আসবে,ঠিক আছে সোনা এখন যাও।
আর হ্যা গিয়েই ঘুমিয়ে পড়বে বেশি রাত করবে না।
.
:-আচ্ছা ঠিক আছে শুভ রাত্রি।
.
.
.
.
(এভাবেই কেটে যাচ্ছিল আমাদের ভালোবাসার দিন গুলো।অনেক সুখী ছিলাম আমরা।)
.
.
.
হঠাৎ একদিন পাগলিটা অসুস্থ হয়ে পড়লো।
.
আজ ২দিন হলো ওর সাথে দেখা হয়নি কথাও না। যার সাথে ২ঘন্টা কথা না বলে থাকতে পরতাম না। তার সাথে ২দিন কথা হয় নি।
.
.
ফোন দিলে রিসিভ করে ওর মা।আমাদের সম্পর্কের কথা ওর মা বাবা কেউ জানতো না।
.
.
ও এক হাসপাতালে ছিল, ওর এক বান্ধবির সহযোগিতায় ২দিন পর ওকে দেখার সৌভাগ্য হলো।
.
কিন্তু কথা বলার ভাগ্যটুকু হয়নি।ও তখন ঘুমিয়ে ছিল।জানালার বাইরে থেকে দেখছিলাম।
.
পাগলীটাকে দেখার পর বুকের ভিতর কেমন জানি মোচড় দিয়ে উঠলো।
.
চোখ মুখ কালো হয়ে গেছে। অনেক শুকিয়ে গেছে মেয়েটা। খুব কষ্ট লাগছিল ওকে দেখে।
.
.
ইচ্ছে করছিল ওর কপালে আলতো করে একটা চুমু দিতে।খুব ইচ্ছে করছিল ওকে জড়িয়ে ধরে আদর করে শান্তনা দিতে।
সব ঠিক হয়ে যাবে,,.........
.
.
কিন্তু ভিতরে জাওয়ার সাহস পাইনি ওর মা ছিল। ( কি পরিচয়ে ওকে দেখেতে যাবো। তাছাড়া পাগলীটা আমায় দেখলেই পাগলামি শুরু করে দিবে)
.
.
এক নজর দেখে বাসায় চলে আসলাম।ওকে দেখার পর থেকে কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগছিল।
.
মনে হচ্ছিল কি যেন হারিয়ে ফেলছি আমি।রাতে গলা দিয়ে কিছু নামলো না।
.
শুয়ে পড়লাম অনেক রাত পার হয়েগেল দুচোখের পাতা এক করতে পারছিনা।
.
খুব টেনশন হচ্ছে ওর জন্য সারা রাত আল্লাহ্ কে ডাকলাম।
.
আল্লাহ্ ওকে সুস্থ করে দাও। ওকে পাওয়া আমার শত জনমের ভাগ্য ওর মতো করে আমাকে আর কেউ ভালোবাসবে না।
.
ও আমার কাছ থেকে হারিয়ে গেলে আমিও নিজেকে হারিয়ে ফেলবো।
.
.
প্লিজ আল্লাহ্ আমার জীবনের সব ভালো কাজের জন্য ওকে সুস্থ করে দাও।
.
ভোর বেলার দিগে চোখের পাতা গুলো ভারি হয়ে আসলো। সকাল ৭টায় ঘুম থেকে উঠলাম তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
.
না খেয়েই হাসপাতালের দিক রওনা হলাম।
গিয়ে আবার সেই জানালার পাশে দাড়ালাম। কিন্তু পাগলী টাকে দেখতে পেলাম না। বুকটা ধক ধক করে উঠলো।সারা হাসপাতাল খুজলাম পেলাম না।
.
.
.
পরে এক ডাক্তারের কাছে জানতে পারলাম।আজ ভোরবেলা আমার পাগলীটা আমাকে চির একা করে স্বার্থপরের মতো তার আসল ঠিকানায় চলে গেছে। তার নাকি ক্যান্সার ছিল।
.
.
সারাদিন কিভাবে ছিলাম আমার মনে নেই। পাগলের মতো কেদেছি সারাদিন।

.
.
.
ভেবে ছিলাম সব কিছুর বিনিময়ে আমি ওকে পেয়েছিলাম।আমি আর কিছু চাই না।
.
কিন্তু আল্লাহ যে এভাবে নিঃস্ব করে ওকেও কেড়ে নিয়ে যাবে সেটা কখনই ভাবিনি।
.
.
বিকেলে ওর জানায়ার হলো।জানাযায় গেলাম।কিন্তু ওকে শেষ বারের মতো দুচোখ ভরে দেখার সুযোক টাও আল্লাহ আমাকে করে দিলো না।
.
ওর কবরে তিন মুঠো মাটি দিয়ে সেই পরিচিত দিঘির পারে গেলাম।
.
এখানে বসে গত শুক্র বারেও আমরা সময় কাটিয়েছি।
বাদামের খোসাগুলো এখনো পরে আছে প্রতিটা খোসাতে ছিল ওর হাতের স্পর্শ।
.
সেখানেই কান্ন করে দিলাম হাতে কয়েকটা খোসা নিয়ে।
.
.
বাসার পথে রওনা হলাম। কেমন জানি চেনা পথ গুলো আজ অচেনা মনে হচ্ছে।
.
.
কিছুক্ষন হাটার আর ধাপ ফেলতে পারছি না। খুব কষ্ট করে হেটে চলেছি।
.
.
হাটছি আর পাগলিটার কথা মনে করে কাদছি। বুকের বাম পাশে অজানা এক তীব্র ব্যাথা।
সন্ধার পর বাসার ছাদে উঠে আকাশের দিকে মুখ করে মৃত মানুষের মত নিজেকে এলিয়ে দিলাম।
.
.
আজকের পর থেকে আর কেউ আমাকে মাঝরাতে ফোন দিয়ে বলবে না।একটু বাসার নিচে আসবে?
.
তেমাকে দেখার খুব ইচ্ছা করে,সারা রাত জেগে থাকলেও কেউ বলবে না।
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো কিন্তু।
.
আর কেউ বলবে না আমার কপালে একটা চুমু দেবে।
.
কোনোদিন হয়তো আর কারো মুখে শুনতে পারবো না আমাকে একটু জরিয়ে ধরবে?
.
মিটি মিটি চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি আকাশ ভরা তারার মেলা।
.
কোথায় জানি শুনেছি মানুষ মরার পর তারা হয়ে আকাশে থাকে।
.
আমি সেই লক্ষ কোটি তারার মাজে আমার সেই পাগলীটাকে খুজতে থাকি।
.
.
কিন্তু আপসোস এমন করে কে ভালোবাসবে আমাকে।.....
.
.
.
.
কথা গুলো বলতে বলতে সাজিদ কান্না করে দিলো.....
.
আমি কি করবো বুঝতে পারছিনা। আমার অজানতেই চোখ দেখে পানি পরছে। মুখ দেখে কোনো কথাই বেরচ্ছে না। কোনো রকম সাজিদরে বল্লাম ফোনটা রাখো কিছুক্ষন পর আমি ফোন দিতেছি।
ফোনটা কাটার পর আমিই কান্না করে দিলাম।
.
.
কেউ যদি অবহেলা করে চলে যায় সেটা মানা যায়। কিন্তু এভাবে চলে গেলে সেটা কি মানা যায় বলুন?