টাইব্রেকারে লিভারপুলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন আর্সেনাল | #
Discover postsExplore captivating content and diverse perspectives on our Discover page. Uncover fresh ideas and engage in meaningful conversations
টাইব্রেকারে লিভারপুলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন আর্সেনাল | #
বাংলাদেশি অভিনেত্রী লরেনের লাশ উদ্ধার, দাবি আত্মহত্যার | #
মেসির ‘দশ নম্বর’ জার্সি গায়ে জড়াতে চান বার্সার যে খেলোয়াড় | #
হতাশ হবেন না.......
বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অবসর নেন তখন তার বয়স ৫৫ বছর।
অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন তখন তার বয়স ৬৯ বছর।
ঢাকায় যখন সকাল ৬ টা বাজে, লন্ডনে তখন রাত ১২ টা।
সময়ের হিসেবে লন্ডন, ঢাকার থেকে ছয় ঘণ্টা পিছিয়ে..
এতে কিন্তু প্রমাণ হয় না যে, লন্ডন ঢাকার থেকে স্লো (slow)!
পৃথিবীর সবকিছু আপন গতিতে এবং নিজ সময় অনুযায়ী চলে।
কেউ গ্রাজুয়েশন শেষ করে ২২ বছর বয়সে..
কিন্তু চাকরি পেতে আরো ৫ বছর লেগে যায়।
আবার কেউ ২৭ বছরে গ্রাজুয়েশন শেষ করে পরের দিনই চাকরি পেয়ে যান!
অনেকে ২৫ বছর বয়সে কোম্পানির CEO হয়ে, মারা যান ৫০ বছর বয়সে।
আবার অনেকে ৫০ বছর বয়সে CEO হয়ে, মারা যান ৯০ বছরে।
কেউ ৩৩ বয়সে এখনও সিঙ্গেল,
আবার কেউ ২২ বছর বয়সে বিয়ে করে সন্তান জন্ম দিয়েছেন!
মনে হতেই পারে, পরিচিতদের মধ্যে আপনার থেকে কেউ অনেক এগিয়ে আছেন,
আবার কেউ আছেন অনেক পিছিয়ে।
কিন্তু আপনার ধারনা ভুল..
প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ সময়, অবস্থান এবং গতিতে আছেন।
আগে থাকাদের হিংসা না করে, পিছিয়ে থাকাদের অবহেলা না করে,
সব সময় শান্ত থাকুন।
আপনি এগিয়েও নেই, পিছিয়েও নেই!
আপনার পথ আপনার, অন্যের পথ অন্যের।
শুধু সময়কে গুরুত্ব দিয়ে পরিশ্রম করে যান..
একদিন সফল হবেন।
©copied
বাবার রুমের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম।হঠাৎ মনে হল একটু বাবার রুম থেকে ঘুরে আসি।অনেকদিন হল বাবার রুমে যাওয়া হয় না।বিয়ের পর থেকেই বাবার সাথে আগের মত সময় কাটানো হয় না।শুক্রবারে সময় পেলেই বউকে নিয়ে ঘুরতে চলে যায়।বাবা গেছেন কিছু ঔষধ আনতে।আমি বাবার রুমে ঢুকে দেখি রুমটা খুব এলোমেলো।খুব অগোছালো।ঠিক যেমন একটা ছোট্ট বাচ্চার রুম।বাবার বয়স হয়েছে।শরীরটারও দিন দিন অবনতি ঘটছে।আমার সাথে তার অনেকদিন কথাতো দূরে থাক তার চেহারাটাও দেখি না।সারাদিন অফিস করে রাত করে বাসায় আসি।এসে খেয়ে দেয়ে ঘুমায় পড়ি।সকালে উঠে আবার অফিসে চলে যায়।বাবাকে নিয়ে ভাবার সময় আমার নাই।আমি জুইকে ডাক দিলাম।জুই বাবার রুমে এসে বলল,
-কি হয়েছে এতো চিৎকার করছো কেনো??
-বাবার রুমটা এত অপরিষ্কার আর অগোছালো কেনো??
-তো আমি কি করবো??
-কি করবে মানে?তোমাকে না বলেছি বাবার যত্ন নিতে।
-আমি কি প্রতিদিন শুধু ওনাকে নিয়ে পড়ে থাকবো নাকি।যত্তসব।বাড়ির আরো অনেক কাজ আমাকে করতে হয়।
-তাই বলে বাবার যত্ন নিবে না।
-কেনো?ওনাকে সময় মতো খাওয়াচ্ছি।সময় মতো ঔষধ দিচ্ছি এসব কি যত্ন নেওয়া না।
আমি কিছু বলিনি আর।জানি ওকে কিছু বলে লাভ হবে না।ও এমনই।খুব জেদি।ভালবেসে বিয়ে করেছি।তাই এসব সহ্য করতে হচ্ছে।জুই চলে গেলো রান্নাঘরে।আমি চুপচাপ বাবার ঘর পরিষ্কার করতে লাগলা।।রুমটা পরিষ্কার করার সময় চোখ পড়লো টেবিলে রাখা খাতাটার উপর।বাবা খাতা দিয়ে কি করছে।কৌতুহল বেড়ে গেল কি আছে তা দেখার জন্য।আমি খাতাটা নিয়ে প্রথম পেইজটা খুললাম।প্রথম পেইজে লেখা আছে আমার ডায়েরি।লেখাটা পড়ে খুব অদ্ভুদ লাগলো।আমি পরের পেইজ খুলতেই দেখি।মায়ের একটা পুরানো ছবি।আর তার নিচে লেখা আছে কলিজা।বাবা মাকে অনেক ভালবাসতো।কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর বাবা খুব পাল্টে গেলেন।মা যখন মারা যায় তখন আমি ইন্টারে পড়তাম।ঐসময় বাবা খুব ভেঙে পড়েছিলেন।আমি আর আপুরা মিলে অনেক কষ্টে বাবাকে সেই কষ্টটা ভুলাতে পেরেছি।আমরা তিন ভাই-বোন।আপুরা ভড় আর আমি সবার ছোট।আমার আপুরা মানে ইরা আপু আর জান্নাত আপুর বিয়ে হয়েছে দুইবছর।তারপর থেকে বাবা আর আমি একা থাকি।জুই আর আমার বিয়ে হয়েছে ৬মাস হল।বাবা অনেক আগেই তার চাকরী থেকে রিটায়ার্ড হয়েছেন।আমি পরের পেইজটা উল্টালাম।সেখানে মাকে নিয়ে লেখা অনেক কবিতা আছে।আমি সব পড়ে একটু মুচকি হাসলাম।কয়েক পেইজ উল্টানোর পর লেখা আছে,
-আজ আমার ছোট্ট ছেলেটার বিয়ে।না ছোট্ট না অনেক বড় হয়েছে।সে এখন চাকরি করে।কাব্য এখন দ্বায়িত্ব নিতে শিখেছে।আজ তার বিয়ে।মেয়ে তার পছন্দের।আমি না দেখেই হ্যা করে দিই।আমার ছেলে মেয়ের আশা আমি কোনোদিন অপূর্ণ রাখিনি।তাই তাদের পছন্দ মতো সব করেছি।জুই মা দেখতে খুব মিষ্টি।দোয়া করি তারা যেনো সুখী হয়।
এভাবে কয়েক পেইজ পড়লাম সবগুলোতেই আমাকে নিয়ে লেখা।পরের পেইজ উল্টিয়ে দেখলাম,
-কাব্য এখন খুব ব্যস্ত।নিজের শরীরটাও দিনদিন অবনতি হচ্ছে।কাব্যের সাথে আগের মতো রাতের আকাশ দেখা হয় না।চায়ের দোকানে বসে আর চা খেতে খেতে বাপ-ছেলের আড্ডা দেওয়া হয় না।সারাদিন ঘরে বসে থেকে খুব বিরক্ত লাগে।তাই বউমাকে বলেছিলাম একটা ডায়েরি কিনে দিতে।কিন্তু বউমা আমাকে বলল,
-বাবা এই বয়সে ডায়েরি দিয়ে কি করবেন??
-কিছু না।একটু লিখালিখি করতাম।
-এত টাকা দিয়ে ডায়েরি না কিনে।অল্প দামে কিছু খাতা কিনে লিখলেই তো হয়।আমি কিছু না বলে খাতা কেনার টাকা নিয়ে নিলাম।এখন খুব লজ্জা হয় বউমার কাছ থেকে টাকা খুজতে।গতমাসে ঔষুধের টাকা খুজতে গিয়ে অনেক বকা শুনতে হয়েছিল।বলেছিল,
-এত দামী ঔষুধ না খেয়ে অল্প দামী ঔষুধ খেলেই তো হয়।
আমি সেদিনও কিছু বলিনি।কিছু কিভাবে বলব।কাব্যকে বললে সে ভাববে আমি মিথ্যা বলছি।সেতো আর আমার কথা ভাবে না।সে এখন নিজের ঘর সংসার নিয়ে ব্যস্ত।আমি চাই না তার সুন্দর সংসারটাকে নষ্ট করতে।এখন যে ঔষুধগুলো খাচ্ছি সেগুলো খুব সস্তা।তাতেও কষ্ট নাই।ছেলের সাথে আছি এইটাই যথেষ্ট।তবে বউমা আমাকে একটুও সহ্য করতে পারে না।আমি কিছু বললেই সে বিরক্ত হয়।কোমরের ব্যাথাটা বেড়েছে।বউমাকে ডাক্তার দেখাতে যাবো বলে কিছু টাকা চাইতে গেলে বউমা বলে,
-সব ঢঙ।
তাই আর বলিনি।বাধ্য হয়ে এই মাসের ঔষুদের টাকাটা বাচিয়ে রেখেছি।ডাক্তার দেখাতে যাবো বলে।কালকে বউমা বলেছিল আমি নাকি তাদের সংসারের বোজা।তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজকে ডাক্তার দেখাতে যাবো।সেখান থেকে বাসায় এসে শেষবারের জন্য ছেলের মুখটা দেখে কালকেই বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাবো।
আমি আর পড়তে পারছিনা।চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।যেই বাবা আমাকে সামান্য কষ্ট কোনোদিন পেতে দেই নিই।সেই বাবা আজ হাজারো কষ্ট ভোগ করছে।জুই এতটাই নিচ।ছিঃ নিজেকে ওর স্বামী বলতেই লজ্জা হচ্ছে।আমি চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।কিছুক্ষণ পর বাবা ফিরে আসলো।এসে আমাকে দেখে বলল,
-বাবা আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
-কি বাবা??
-আমি কালকে বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাবো।আমাকে কি অফিসে যাওয়ার সময় আশ্রমে নামিয়ে দিবি।
-আচ্ছা বাবা।
কথাটি বলে বাবা চলে গেলো।আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিল না।আমার পাশে জুই ছিল।সে খুশি হয়েছে।আমাকে বলল,
-যাক এতদিনে আপদ বিদায় হবে বলে মনে হচ্ছে।কি বল কাব্য।
আমি কিছু বললাম না।রাতে জুইকে বললাম,
-এই শোনো কালকে আমরা ছুটিতে যাবো কক্সবাজার।তুমি তোমার কাপড় চোপড় প্যাক করে রাখিও।
-সত্যি বলছো তুমি??
-হ্যা সত্যি।
জুই খুশি হয়ে রান্না করতে চলে গেলো।বাবা আমাদের সাথে খাইনা অনেক দিন হল।আজকে আসলো খেতে।জুই আব্বার পছন্দের খাবার বানিয়েছে।বাবাতো কাল চলে যাবে তাই।বাবা নিস্তব্ধে খেয়ে চলে গেলো।তার চোখের কোণে অশ্রুগুলো ঠিকই দেখতে পেরেছিলাম।সকালে রেডি হলাম।গাড়িতে আমি,জুই আর বাবা বসে আছি।প্রথমে গেলাম জুইয়ের বাড়িতে।জুইকে বললাম,
-তোমার ব্যাগটা নাও।আর চল একটু তোমার বাবার সাথে দেখা করে আসি।
-কিন্তু ব্যাগ কেনো??
-আরে চলই না।
আমি জুইয়ের বাসায় গেলাম।বাবাও আসলো।বাবাকে নিয়ে এসেছি।সোফায় বসে আছি।জুইয়ের বাবা-মা আমাদের দেখে বলল,
-কিরে জামাই সাহেব অসময়ে যে??
-জ্বি আপনাদের জিনিষ আপনাদের বুঝিয়ে দিতে এলাম।
-আমাদের জিনিষ মানে??
-আপনাদের মেয়েকে।
পাশ থেকে জুই বলল,
-কি বলছো এসব কাব্য??
-হ্যা ঠিক বলছি।আর শুন তোর মত নিচ মেয়েকে বউ হিসেবে না রেখে।আমি সারাজীবন বউ ছাড়াই থাকবো।আর আমি ডিভোর্সের পেপার পাঠিয়ে দিব।সাথে তোর পাওনা সব টাকাও।
বাবা পাশ থেকে আমাকে থাপ্পড় দিয়ে বলল,
-ছিঃ কাব্য ছিঃ।তোকে আমি এজন্যেই মানুষ করেছি।নিজের বউয়ের সাথে কেউ এভাবে ব্যবহার করে।মাফ করবেন বেয়ান সাহেব।আমি কাব্যকে বুঝিয়ে বলবো সব।
জুইয়ের আব্বু আম্মু কিছু না বুঝে বলল,
-কাব্য বাবা কি হয়েছে খুলে বল??
বাবা হয়তো টের পেয়েছে।আমি বাবাকে বললাম,
-আব্বু তুমি গাড়িতে গিয়ে বস।আমি আসছি।
আব্বু যেতে রাজি না।বাধ্য হয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম,
-তোমাকে যেতে বলেছি যাও।
-আব্বু চলে গেলো।
তারপর জুইয়ের আব্বু বলল,
-জামাই সাহেব কি হয়েছে??আমার মেয়ে কি ভুল করেছে??
-কাব্য আমি কি করেছি??আমি তো তোমাকে অনেক ভালবাসি।
-চুপ কর তুই।তুর মতো মেয়ের মুখে ভালবাসি শুনতেই ঘৃণা লাগে।আর হ্যা আপনাদেএ মেয়েকে ভুলেও আমার চোখের সামনে যেনো না দেখি।
-আমার মেয়েটা কি করেছে সেটাতো বলো,
-কি করেনি সেটা জিজ্ঞেস করেন??যেই বাবা আমাকে এতটা বছর কষ্ট করে বড় করেছে।নিজে হাজারো কষ্ট সহ্য করে আমাকে মানুষ করেছে।নিজের কষ্টগুলোকে লুকিয়ে আমাদের ভাই-বোনের সুখের জন্য লড়াই করেছে।সেই বাবাকে আপনার মেয়ে আপদ বলে।বাবা শব্দটা মানে কি সেটা আপনার মেয়ে জানেনা।ওকে শিখিয়ে দিবেন।আর হ্যা জুই তুমিও শুনে রাখো,
-আমার বাবা তোমার কাছে আপদ।কিন্তু আমার কাছে সব কিছুর উর্ধে।আমার কাছে সবচেয়ে দামী।সবচেয়ে প্রিয়।
-জুই আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
-সরি কাব্য আমাকে ক্ষমা করে দাও।
-আমি পারবো না।ক্ষমা করা আমার পক্ষে সম্ভব না।তুমি বাবাকে আপদ মনে করো তাই না।বাবাকে এত কষ্ট দেওয়ার পর কিভাবে ভাবলে আমি তোমাকে মাফ করবো।তোমার জায়গা আমার মনেতো দূরের কথা আমার পায়ের নিচেও না।
আমি চলে আসলাম।গাড়ি স্টার্ট দিলাম।বাবা আমাকে বলল,
-কিরে বউমা কয়??
-ও আজকের পর আর আসবে না।বাবা আমাকে মাফ করে দাও।আমি ভুলে গিয়েছি।ভুলে গিয়েছি তোমাকে সময় দিতে।তুমিই আমার কাছে সব।
এখন আমি আর বাবা চায়ের দোকানে বসে বসে চা খাচ্ছি।আর আড্ডা দিচ্ছি।হুমম বাবার চোখে খুশির ঝলক দেখতে পাচ্ছি।অনেকদিন পর বাবা হাসছেন।তার হাসিমাখা মুখটা দেখিনা অনেকদিন হল।তাকে হাসতে দেখে মনের মাঝে এক আনন্দের ঝড় বয়ে যেতে লাগলো।বাবা ভালবাসি।অনেক ভালবাসি তোমায়।।।
-------------সমাপ্ত------------
??বাবা।??
সংগৃহীতঃঃ