স্বামী মীর মোশাররফ রোবেনকে তালাক দিয়েছেন চিত্রনায়িকা মুনমুন। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের সখীপুরে মসজিদের সামনে নেচে তুমুল সমালোচনায় পড়েন অভিনেত্রী মুনমুন। এরপরেই জানা গেল মুনমুনের সংসার ভাঙনের ঘটনা। তবে এই ঘটনা ঘটেছে কোরবানি ঈদের সময়। বিষয়টি কালের কণ্ঠকে মুনমুন নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
মুনমুন বলেন, 'আমার তেমন অভিযোগ নেই। দীর্ঘ ১০ বছর আমরা একসঙ্গে ছিলাম, সে শুধু তার স্বার্থের কথাই ভেবে গেছে। সংসারের দিকে মনোযোগ ছিল না। সে সিনেমা বানাতে চাইতো আমি অর্থের যোগান দিতাম। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হতো না। যার কারণে আমি তাকে বলতাম সংসারের দিকে মনোযোগ দিতে। সে দিতো না।'
শারীরিক নির্যাতন করতো উল্লেখ করে কালের কণ্ঠোকে মুনমুন বলেন, 'তাকে আমি আমার নিজের একটি ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়েছিলাম স্টুডিওর জন্য। বিভিন্নভাবে টাকা পয়সা দিতাম। আমিও চাইতাম সে উঠুক, সে নায়ক হতে চাইতো। আমিও সর্বোচ্চ চেষ্টা করতাম, কিন্তু আমাকে শারীরিক নির্যাতন করতো এটা মেনে নিতে পারতাম না।'
রোবেন পেশায় একজন শৌখিন মডেল ও মুনমুনের সঙ্গে যাত্রা-শোসহ পারফর্মার হিসেবে কাজ করেন। কাজ করতে গিয়ে অপেক্ষাকৃত বয়সে ছোট হওয়া সত্ত্বেও মুনমুন তাকে বিয়ে করে সংসারী হন।
চার বছর সেপারেশনে ছিলেন জানিয়ে মুনমুন বলেন, '১০ বছরের মধ্যে চার বছর সেপারেশনে ছিলাম। একটা সময় সে ফিল করতে পেরেছে তার এটা আমাকে জানায়। তারপর ফিরে আসে। তবে ফিরে আসার পরেও সেই আগের মতো হয়ে যায়। সেই টাকা পয়সা নেওয়া, মারধর করা। আর কোনো কাজ নেই তার। নিজের চিন্তায় অস্থির সে, অথচ আমাদের দুইজনের একটি সন্তান রয়েছে সেদিকে তার মনোযোগ নেই। এসব কথা বলাই যেত না তাকে।'
মুনমুন বলেন, 'সব মিলিয়ে দেখলাম রোবেনের সঙ্গে আর একসঙ্গে থাকা সম্ভব না। আসলে শারীরিক নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই যাচ্ছিল। যার কারণে আমি তাকে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেই এবং কোরবানি ঈদের একদিন পরে সেটা কার্যকর হয়।'
মুনমুন বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। প্রায় ৮৫টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। সরকার অশ্লীলতার বিপক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ২০০৩ সালের পর তার চলচ্চিত্রে উপস্থিতি কমে যায়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে মিজানুর রহমান মিজান পরিচালিত রাগী চলচ্চিত্রে খলচরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
মুনমুন ১৯৯৭ সালে বিখ্যাত পরিচালক এহতেশামের মাধ্যমে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পে প্রবেশ করেন। তিনি এহতেসামের সহকারী হিসেবে কাজ করতে এসেছিলেন, কিন্তু তিনি তার অভিনয়ের দক্ষতা দেখে নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব দেন। এহতেসাম পরিচালিত মৌমাছি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিষেক হয় তার।
মুনমুন ২০০৩ সালে সিলেটের একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হলে, যুক্তরাজ্যে চলে যান। ২০০৬ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরে, ২০১০ সালে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এই দম্পতির দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।