কোরআন এমন এক পবিত্র ও মহাগ্রন্থ যা নির্ভুল আসমানি জ্ঞানে সমৃদ্ধ। এর রচয়িতা হচ্ছেন এমন একজন মহা জ্ঞানী যিনি সব তথ্য, তত্ত্ব ও নির্ভুল জ্ঞানের অধিকারী। এ মহা গ্রন্থে কোনো সন্দেহ সংশয়ের অবকাশই নেই। আল্লাহতায়ালার ইরশাদ, এই সেই কিতাব যাতে কোনোই সন্দেহ নেই। সূরা বাকারা, আয়াত-১। আবার কোরআন হেফাজতের নিশ্চয়তা দিতে গিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। সূরা হিজর, আয়াত ৯। আবার কেউ ইচ্ছা করলেই কোরআনকে ধ্বংস করে দিতে পারবে না, এ ব্যাপারেও আল্লাহতায়ালা নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, তারা মুখের ফুৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। সূরা সাফফাত, আয়াত-৮।
কোরাআনের সত্যতা প্রমাণের জন্য আল্লাহতায়ালা পৃথিবীবাসীকে এই বলে চ্যালেঞ্জ করেছেন যে, এই কিতাব সম্পর্কে যদি তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মতো একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এসো। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক। সূরা বাকারা, আয়াত ২৩। আজও কেউ প্রমাণ করতে পারেনি যে, কোরআন আল্লাহর কিতাব নয়। মহাগ্রন্থ আল কোরআন মহান রাব্বুল আলামিনের পবিত্র ও সম্মানিত কিতাব।
আল্লাহতায়ালা বলেন, নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন। সূরা ওয়াকিয়া, আয়াত ৭৭। তাই ইমানদাররা এ কিতাবের প্রতি সর্বোচ্চ ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে এটাই ইমানের দাবি। আল্লাহতায়ালার ইরশাদ, এটা শ্রবণযোগ্য কেউ আল্লাহর নামযুক্ত বস্তুগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তার হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত। সূরা হাজ্জ, আয়াত ৩২। কোরআন হচ্ছে মুসলমানদের মর্যাদা ও সম্মানের প্রতীক। কোরআনের কারণেই মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের সেই ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান যে নিজে কোরআন শিখে এবং অন্যদের তা শেখায়। বুখারি, হা/৪৭৩৯। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এই কোরআনের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা বহু জাতির উত্থান ঘটান এবং তাদের উচ্চমর্যাদা দান করেন আবার এ কিতাবের অবজ্ঞা ও অবমাননার কারণে বহু জাতির পতন ঘটান। মুসলিম, হা/১৯৩৪। কোরআনের শিক্ষা ছাড়া মুসলমানের আলাদা কোনো বিশষত্ব, মর্যাদা ও মূল্য নেই।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তির দেহে কোরআনের কোনো অংশ নেই সে একটি পরিত্যক্ত বিরান ঘরের মতো। তিরমিজি, হা/২৯১৩। তার দেহ অমঙ্গল ও অশুভ জিনেসের আশ্রয়কেন্দ্র। হাশরের ময়দানে কোরআন পাঠকের ব্যাপারে কোরআনকে সুপারিশ করার ক্ষমতা প্রদান করা হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কোরআন পাঠ করবে; কারণ কোরআন কেয়ামতের দিন তার পাঠকের জন্য শাফায়াত করবে। মুসলিম, হা/১৯১০।