পাকিস্তানের বিপক্ষে ত্রিমুখী দুশ্চিন্তায় ইংল্যান্ড

Comments · 1167 Views

পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ড এরই মধ্যে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে। কিন্তু ব্যাপারটা এমন নয় যে ওল্ড ট্রাফোর্ডে প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে খুব দাপটের সঙ্গে খেলেই হারিয়েছে তারা। ম্যাচের পাঁচ দিনের চার দিনই পাকিস্তান ইংল্যান্ডের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে। ২৭৭ রানের লক্ষ্য নিয়ে ম্যাচটা তো প্রায় হারতেই বসেছিল ইংলিশরা। ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসার পর জস বাটলার আর ক্রিস ওকসের বীরত্বে জেতে ইংল্যান্ড। আজ সাউদাম্পটনে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগে খুব ফুরফুরে মেজাজে থাকার সুযোগ নেই ইংল্যান্ডের। দ্বিতীয় টেস্টের আগে অন্তত তিনটি ব্যাপারে দুশ্চিন্তা থাকছেই তাদের।

ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা:

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ তর্কযোগ্যভাবে বিশ্বসেরা। তবু ভালো বোলিং আক্রমণের সামনে তাদের দুর্বলতা মোটামুটি প্রকাশ্য। একটু শক্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে দেশের মাটিতেই ইংলিশ ব্যাটিংয়ের ভেঙে পড়ার নজির আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে সিরিজে সেই দুর্বলতা দেখা গেছে। পাকিস্তান তো তাদের বোলিং আক্রমণ দিয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখেই ফেলেছিল ইংল্যান্ডকে। ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে দুই ইনিংসেই ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েছে। দ্বিতীয় টেস্টের আগে তাই মিডল অর্ডার নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকছে স্বাগতিকদের। এ দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বেন স্টোকসের অনুপস্থিতি। বাবার অসুস্থতার জন্য স্টোকস সিরিজ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখন বড় ভরসা তাদের অধিনায়ক জো রুট। অধিনায়ককে খুব একটা উজ্জ্বল দেখাচ্ছে না ব্যাট হাতে। স্টোকসবিহীন ইংল্যান্ডের জন্য রুটের ফর্মহীনতাও বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে দ্বিতীয় টেস্টে। এ জায়গায় রুটের পাশাপাশি ওলি পোপকেও ভালো করতে হবে।

উইকেটের পেছনে তথৈবচ বাটলার:

জস বাটলার ওল্ড ট্রাফোর্ডে উইকেটরক্ষক হিসেবে যেমন খেলেছেন, তাতে তিনি নিজেই ভয়ে ছিলেন টেস্ট ক্যারিয়ার না শেষ হয়ে যায়! শেষ পর্যন্ত বাবার অসুখের মানসিক চাপ নিয়েও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৫ রানের ইনিংস খেলে জয় এনে দেন দলকে। তবে গত বছর থেকেই খুব একটা ফর্মে নেই বাটলার। উইকেটের পেছনে পারফরম্যান্স ভালো না, ব্যাট হাতেও তিনি অধারাবাহিক। টেস্টে উইকেটরক্ষক হিসেবে তাঁর সামর্থ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেছে। বিশেষ করে স্পিনারদের বিপক্ষে। স্পিনারদের বিপক্ষে উইকেটের পেছনে তিনি রান দেওয়াতে সবচেয়ে এগিয়ে। ডম বেসের বলে খুব সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন তিনি। মিস করেছেন স্টাম্পিং। উইকেটরক্ষক হিসেবে তাঁর সীমিত সামর্থ্য প্রমাণিত। তাই ব্যাট হাতে তাঁকে দারুণ কিছুই করতে হবে।

অ্যান্ডারসনের ফর্ম ও ফাস্ট বোলিং:

ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টে ফাস্ট বোলারদের মধ্যে কাকে কাকে খেলাবে, এটা একটা বড় ব্যাপার। জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড, স্যাম কুরান, মার্ক উড, জফরা আর্চারএঁদের মধ্যে কে কে!

অ্যান্ডারসন আর ১০ উইকেট পেলেই টেস্ট ইতিহাসের প্রথম ফাস্ট বোলার হিসেবে ৬০০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়বেন। কিন্তু ওল্ড ট্রাফোর্ডে জিমি তাঁর বয়স আর দীর্ঘ ক্যারিয়ারের ক্লান্তির ছাপ রেখেছেন। ভালো করতে না পেরে তাঁকে হতাশ ও রাগান্বিত মনে হয়েছে ওল্ড ট্রাফোর্ডে। সহজ কথায় অ্যান্ডারসনের বোলিং পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে বড় কোনো প্রভাব রাখতে পারেনি। ম্যাচে মাত্র ১ উইকেট পেয়েছেন তিনি। অ্যান্ডারসনের পাশাপাশি জফরা আর্চারও খুব উজ্জ্বল ছিলেন না প্রথম টেস্টে। গতি দিয়ে বোলিং করতে পারেননি। শরীরী ভাষাও তেমন শক্তিশালী ছিল না। সাউদাম্পটনে দ্বিতীয় টেস্টের আগে ফাস্ট বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনার জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।

Comments