বিভিন্ন টেলিভিশনে ঈদুল আজহার অনুষ্ঠানমালায় প্রচারিত বেশ কিছু নাটক ও টেলিছবি সাড়া ফেলেছে দর্শকদের মধ্যে। এর মধ্যে একটি আশফাক নিপুণ পরিচালিত ভিকটিম। এতে অভিনয় করেছেন অপি করিম। এ বছর এই একটি টেলিছবির মধ্য দিয়েই অভিনয়ে অনিয়মিত এই শিল্পী রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন এ সময়ের শিল্পীদের দিকে। বুঝিয়ে দিলেন অভিনয়টা সত্তায় মিশে আছে।
বরাবরই উৎসবের সময় পর্দায় দেখা যেত অপি করিমের অভিনয়। বুয়েটে লেখাপড়ার কারণে প্রথম থেকেই নাটকে অনিয়মিত হলেও ঈদ, পূজা, বিশেষ দিনের অনুষ্ঠানমালায় একাধিক নাটক প্রচারিত হতো তাঁর। ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনের ব্যস্ততায় সেই সংখ্যা এখন ১এ এসে ঠেকেছে। কোনো কোনো ঈদে তো সেই একটা কাজও করা হয় না। কিন্তু অপি করিম যখন পর্দায় ফেরেন তখন অভিনয়ে কোনো ঘাটতি থাকে নাএবারের ঈদুল আজহায় এর প্রমাণ মিলল। ঈদে প্রচারিত ভিকটিম টেলিছবিতে তাঁর অভিনয় নিয়ে ঈদের প্রায় ১৪ দিন পরও চলছে আলোচনা।
বাংলাভিশনে প্রচারিত হয় আশফাক নিপুণ পরিচালিত ভিকটিম। এতে অপির সহশিল্পী আফরান নিশো ও সাফা কবির। দৃশ্যধারণ মূলত হয়েছে গত বছরের সেপ্টেম্বরঅক্টোবর মাসে। করোনাকালের কারণে বেশ আগে তৈরি হওয়া এই কাজটি অবশেষে আলোর মুখ দেখলে এই ঈদে।
টেলিভিশনে প্রচারের পরপরই টেলিছবিটি ইউটিউবে ছাড়া হয়। অল্প সময়ের ব্যবধানে সেখানে দর্শকসংখ্যাও বেড়ে যায়। ফেসবুকে ভিকটিম হয়ে ওঠে আলোচনার বিষয়বস্তু, হাল আমলের ভাষায় ভাইরাল। কিন্তু এই ভাইরাল ও ভিউ শব্দে আপত্তি অপির। তিনি বলেন, আগে যখন একটু বেশি পরিমাণে কাজ করতাম, তখনো কোনো দিন দর্শকসংখ্যা কত হবে বা কত লোকে আমার কাজ নিয়ে কথা বলে, ভাইরাল হবেএসব ভেবে অভিনয় করিনি। অভিনয়ে সব সময়ই লক্ষ্য ছিল ভালো কাজ করার। এখনো এই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করি।
কিন্তু ভাইরাল, ভিউ, ট্রেন্ডিংএসব তকমার ভিড় ঠেলে যখন দর্শক নির্মল ভালো লাগার কথা বলেন, তখন অপি অভিনয়ের প্রতি ঠিক পুরোনো সেই আকর্ষণটা বোধ করেন। প্রথমে যখন কাজ শুরু করেছিলাম, তখন উদ্দেশ্য ছিল দর্শককে আনন্দ দেওয়া। এখনো যখন কাজ করার পর জানতে পারি আমার অভিনয় তাঁদের ভালো লাগছে, তখন মনে হয় এখনো সঠিক পথেই আছি। বললেন অপি।
এখনো একেকটা চরিত্র, সেটির অভিব্যক্তি ভীষণ ভাবায় অপি করিমকে। শুটিংয়ের দুই দিন আগে চিত্রনাট্য হাতে পাওয়া, শুটিংয়ের দিন কোনোরকমে পাঁচটা পোশাক নিয়ে চলে যাওয়াএসবের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেন না। অভাববোধ করেন আগের দিনগুলোর মতো সংলাপ ধরে ধরে মহড়া করার, অভাববোধ করেন মহড়ার ফাঁকে ফাঁকে চরিত্রের পোশাক, অঙ্গভঙ্গি, মেজাজ নিয়ে কথা বলার। কিন্তু দুই দিনের শিডিউলে নাটক শেষ করার এই যুগে এখন আর সেই মহড়ানির্ভর কাজের সুযোগ কই? যখন ভিন্নতার আভাস পান অপি, তখন ঠিকই ফিরে আসেন অভিনয়ে। এবার যেমন ফিরলেন ভিকটিম দিয়ে, গত বছর এসেছিলেন মিস শিউলি নিয়ে। অপি করিম বলেন, আমি আসলে পুরো কৃতিত্ব দেব নির্মাতার। এই ঈদে তাঁর আরও দুটি টেলিছবি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ওই দুটি ছিল সর্বজনীন ও সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তৈরি গল্পের। কিন্তু ভিকটিমএর গল্প মনস্তাত্ত্বিক, যা ফুটিয়ে তোলা কঠিন ছিল। পরিচালক আমাকে দিয়ে একেবারে উপযুক্ত অভিব্যক্তি আর অভিনয়টা তুলে ধরতে পেরেছেন।