Back To Blogs | My Blogs | Create Blogs

নেইমার–এমবাপ্পের দাম সমান আটালান্টার ১৯ বছরের খরচ!

২০১১ সালে মালিকানা হাতবদলের মাধ্যমে কাতারি পেট্রো ডলারের অধীনে আসে পিএসজি। তখন থেকেই ইউরোপসেরা হতে উঠেপড়ে লেগেছে ফরাসি ক্লাবটি। এ জন্য বাজার থেকে তারকা খেলোয়াড় কিনতে তারা বস্তা বস্তা টাকা ঢেলেছে। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি দামে খেলোয়াড় কেনার রেকর্ডও পিএসজির। এ নিয়ে মাঝে-মধ্যেই তারা সমালোচনার শিকার হলেও টাকা ঢালতে পিএসজির মালিক কাতারি ধনকুবের গোষ্ঠী কখনো পিছপা হয়নি। ৯ বছর এভাবে চলার পর অবশেষে টাকা ঢালার গুণাগুণ মিলতে শুরু করল!

না, চ্যাম্পিয়নস লিগের ফয়সালা এখনো হয়নি। কেবল কোয়ার্টার ফাইনালের ধাপ পেরোল পিএসজি। তাতেই এ আলোচনা উঠছে। কারণ, চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির সেমির দেখা পেল ২৫ বছর পর, কাতারি মালিকের অধীনে যা প্রথমবার। এই ৯ বছরে তারা দলবদলের বাজারে কত খরচ করেছে জানলে চোয়াল ঝুলে পড়তে পারে। ইএসপিএনের হিসেব অনুযায়ী, এ সময় মোট ১.৪২ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি) খরচ করেছে পিএসজি।

স্বাভাবিকভাবেই খরচের এই খতিয়ানে নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পের প্রসঙ্গ উঠে আসবে সবার আগে। বর্তমানে এ দুজনই বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার। আর কাল রাতে আটালান্টার বিপক্ষে শেষ আটে পিএসজির জয়ে বড় অবদান ছিল দুই তারকার। গোল না পেলেও দুজনেই গোল করিয়েছেন। ত্রাস ছড়িয়েছেন আটালান্টার রক্ষণে। এর মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকেই স্বপ্নযাত্রা থেমে যায় ইতালিয়ান ক্লাবটির। বিত্তে কিংবা মাঠের শক্তিতে এ দুটি ক্লাবের মধ্যে ব্যবধান আকাশ-পাতাল। কোয়ার্টার ফাইনালের আগে এ নিয়ে রসিকতাও হয়েছে। নেইমারের একার বাৎসরিক আয় আটালান্টার সব খেলোয়াড়ের সমান। যদিও মাঠের খেলায় আর্থিকভাবে ক্লাবটির এতটা পিছিয়ে থাকার ছিটেফোঁটাও বোঝা যায়নি। বরং নির্ধারিত সময়ে শেষ মিনিটের আগ পর্যন্ত ম্যাচে এগিয়ে ছিল আটালান্টাই।

কিন্তু এরপরই ভোজবাজির মতো দৃশ্যপট পাল্টে দেন নেইমার-এমবাপ্পে। দুজনে গোল করান মার্কুইনহোস ও চৌপো মোটিংকে দিয়ে। ম্যাচ শেষে এ দুই তারকাকে নিয়ে আরেকটি মজার তথ্য জানা গেল ইএসপিএনের টুইটে, '২০০১-২০০২ মৌসুম থেকে আটালান্টা তাদের গোটা স্কোয়াডের জন্য যত খরচ করেছে, পিএসজি নেইমার ও এমবাপ্পের পেছনে তার চেয়ে বেশি খরচ করেছে।' এ তুলনাটা হয়েছে নেইমার-এমবাপ্পের দলবদলের অঙ্ক নিয়ে।

'ট্রান্সফারমার্কেট' এর হিসেব অনুযায়ী ২০১৭ সালে ২৪৪.২ মিলিয়ন ডলার খরচায় বার্সেলোনা থেকে নেইমারকে কেনে পিএসজি। পরের বছর এমবাপ্পেকে মোনাকো থেকে ১৪৮.৫ মিলিয়ন ডলারে কেনার প্রক্রিয়া শেষ করে ক্লাবটি। এ দুটি দলবদলে পিএসজির মোট খরচ ৩৯২.৭ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে গত ১৯ বছরে দলবদলের বাজারে আটালান্টার খরচ ৩৮৫.৩ মিলিয়ন ডলার। মজার বিষয় হলো, এই ম্যাচ চলাকালীন এ টুইটে এক ভক্ত মন্তব্য করেন, 'এই তথ্য প্রথমার্ধ শেষের ফলকে আরও হাস্যকর করে তুলেছে। টাকা দিয়ে কখনো দল গড়া যায় না।' প্রথমার্ধ শেষে ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল পিএসজি। কিন্তু টাকার যে গুণাগুণ আছে ম্যাচের শেষ দিকে তা ঠিকই বুঝিয়ে দিয়েছে পিএসজি।
কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের আগে ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম 'লা গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্ত' জানিয়েছিল, পিএসজিতে সব মিলিয়ে নেইমারের বাৎসরিক আয় ৩৬ মিলিয়ন ইউরো। এদিকে আটালান্টার গোটা স্কোয়াডের বাৎসরিক আয় ৩৩ থেকে ৩৬ মিলিয়ন ইউরোর মধ্যে। তবে শুধু নেইমার-এমবাপ্পেই নয়, এডিনসন কাভানি, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ, থিয়াগো সিলভা, ডেভিড লুইজদের মতো তারকাদেরও দলে টেনেছে পিএসজি। লক্ষ্য একটাই চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়।


Akash Ahmed  

124 Blog posts

Comments