বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য পদ হারানো শিল্পীরা জড়ো হয়েছিলেন এফডিসির প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায়। এঁদের কেউ চলচ্চিত্রে কাজ করছেন চার দশক ধরে। কেউবা এক দশক। কিন্তু চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গেল আসরের নির্বাচন শুরুর আগে ভোটাধিকার হারান ১৮৪ জন। শিল্পী সমিতির ভোটাধিকার হারানো শিল্পীরা রাস্তায় নেমে পদত্যাগ চাইলেন বর্তমান কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের।
আজ রোববার সকালে প্রায় শতাধিক শিল্পী এফডিসির গেটে মানববন্ধন করেছেন। যে নেতা শিল্পীদের সম্মান করে না, তাঁকে আমরা চাই না। এমন স্লোগানও দেন তাঁরা। একই সঙ্গে ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার দাবিও তোলেন তাঁরা।
তিন দশক ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সঙ্গে আছেন তাহমিনা হোসেন, চলচ্চিত্রের সবাই তাঁকে বেবি নামে চেনেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ৩০০র বেশি ছবিতে অভিনয় করেছি, অথচ আমাকে কোনো ধরনের কারণ না দেখিয়ে, শুধু ক্ষমতার দাপটে সদস্য পদ বাতিল করেছে! শিল্পীদের মধ্যে এমন বৈরী সম্পর্ক এত বছরের জীবনেও দেখিনি। গত কয়েক বছরে শিল্পী সমিতিতে যা হচ্ছে, নিন্দনীয়। আমিসহ সবার সদস্য পদ ও ভোটাধিকার ফেরত চাই। একই সঙ্গে মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানের স্বেচ্ছাচারী আচরণের জন্য পদত্যাগ চাই।
অসংখ্য সিনেমায় খলচরিত্রে অভিনয় করা জামাল পাটোয়ারী সদস্য পদ হারিয়েছেন। তাঁর দাবি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় জায়েদ খানের প্ররোচনায় তাঁর সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া মিথ্যা মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে তাঁর নামে মামলা করা হয়েছে। ক্ষমতা দেখিয়ে এফডিসিতে ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ জামাল পাটোয়ারী বলেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এফডিসি সরকারি প্রতিষ্ঠান। আমরা যাঁরা কাজ করি, সেখানে সবাই ঢুকবে। জায়েদ খান কে এফডিসিতে ঢুকতে বাধা দেওয়ার। ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশ দিয়ে মানুষকে অপদস্থ করে যাচ্ছে। মিশা সওদাগর তাঁকে সমর্থন দেওয়ায় দুজনের পদত্যাগ চাই। আমরা হারানো সদস্য পদ ফিরে পেতে চাই।
মানববন্ধনের আরও উপস্থিত ছিলেন সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত হিরো আলম খ্যাত অভিনেতা ও প্রযোজক আশরাফুল আলম। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, একাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় ও প্রযোজনা করেও তাঁকে সমিতির সদস্যপদ দেওয়া হয়নি। তিনি বর্তমান কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের দ্রুত পদত্যাগ চান।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের দাবি, মিশা ও জায়েদ পদত্যাগ করলে এফডিসিতে শিল্পীদের মধ্যে আবার সুসম্পর্ক তৈরি হবে। বিশেষ করে, জায়েদ খান শিল্পী সমিতিকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করছেন বলেও তাঁদের অভিযোগ।