Back To Blogs | My Blogs | Create Blogs

হাসপাতালের দিনগুলো দ্রত ভুলে যেতে চান সেলিম চৌধুরী

চোখের সামনে জলজ্যান্ত মানুষকে নিষ্প্রাণ, নিথর হয়ে যেতে দেখেছেন। তারপরও নিজেকে ধরে রাখতে হয়েছে। ভেঙে পড়েননি এতটুকু। মনোবল ধরে রেখে কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরী এখন সুস্থ। হাসপাতালের বিভীষিকাময় কোভিড-১৯ ইউনিট থেকে এখন তিনি নিজের গ্রামের বাড়ি মৌলবীবাজারে। ৬ জুলাই করোনাক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেটের নর্থইস্ট হাসপাতালে। গত বুধবার হাসপাতাল থেকে ছুটি মিলেছে তাঁর। আজ পেয়েছেন কোভিড১৯ নেগেটিভ রিপোর্ট।

প্রথম আলোকে সেলিম চৌধুরী জানান, ১৫ জুলাই রাতে হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি। এখন বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছেন। সেলিম চৌধুরী বলেন, ডাক্তার বলেছেন, বাইরের পৃথিবী নিয়ে না ভাবতে। চিন্তামুক্ত থেকে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বলেছেন। সাদা বিছানা ছাড়লেও মানসিক অবস্থার এখনো উন্নতি হয়নি তাঁর। করোনার প্রভাব রয়ে গেছে মনে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসাটাই এখন চ্যালেঞ্জ।

সেলিম চৌধুরী বলেন, করোনা কিছু লক্ষণ রেখে গেছে মাথায়। আমি ঠান্ডা মাথার মানুষ। অথচ হুটহাট খুব রাগ হয়ে যাচ্ছে আমার। করোনার আগে কখনো এমন হয়নি। আসলে রোগ শরীর ছেড়ে গেলেও মনের মধ্যে প্রভাব রেখে গেছে। একটা যুদ্ধ শেষে বেরিয়ে এসেছি। যুদ্ধের রেশটা যেন রয়ে গেছে। মনে একধরনের অশান্তি রয়েছে। বুঝতেই পারেন, শরীরে-মনে অনেক বড় ধকল গেছে।

হাসপাতালের দিনগুলো দ্রত ভুলে যেতে চান তিনি। কতগুলো মৃত্যু হয়েছে আমার ইউনিটে, আমি বলতে পারব না। ডাক্তার আমাকে শুধু বলতেন, কোথায় কী হচ্ছে আপনি চিন্তা করবেন না। আপনি ভালো আছেন, শুধু এটা ভাবুন। আপনার অবস্থা অত খারাপ না। আমি ডাক্তারের নির্দেশ মেনে চলতে চেষ্টা করতাম, জানান করোনাজয়ী শিল্পী।

বাড়িতে ফিরে কীভাবে সময় কাটছে তাঁর? সেলিম চৌধুরী জানান, তিনি সুরের মানুষ। গান শুনছেন। গানের চর্চা করছেন। বাড়ির দেখাশোনা করছেন। কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে বলেছেন ডাক্তার। তাঁর কথা মেনে চলছেন। কথায় কথায় সেলিম চৌধুরী জানান, তাঁর অসুস্থতার সময়ে সংগীতের মানুষেরা খোঁজখবর নিয়েছেন। অনেক সময় কথা বলতে পারেননি, তাঁর স্বজনদের কাছে প্রিয় শিল্পীর ব্যাপারে খবরাখবর নিয়েছেন।

সেলিম চৌধুরী বলেন, অসুস্থ না হলে বুঝতে পারতাম না, এত মানুষ আমাকে ভালোবাসেন। বিশেষত গানের জগতের মানুষেরা প্রতিদিন আমার কুশল জানতে চেয়েছেন। আমি সবার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সবাইকে। সবার কাছে দোয়া চেয়ে সেলিম চৌধুরী বলেন, খারাপ যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারত। কত মানুষ চলে যাচ্ছেন। আমি ফিরে এলাম। এ জন্য ওপরওয়ালার কাছে বেশি বেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি অবসরে।

শিল্পী জানান, কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাঁকে একটি করোনামুক্ত হওয়ার সনদ দিয়েছেন আজ শনিবার।

উল্লেখ্য, সেলিম চৌধুরী লকডাউনের আগে ঢাকা থেকে তাঁর গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের শমসেরনগরে চলে আসেন। জুনের শেষ দিকে জ্বরে পড়েন। পরে জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। ৬ জুলাই সিলেট শহরের নর্থস্টার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানেই ১০ দিন চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।


Akash Ahmed  

124 Blog posts

Comments