৮ জুলাই একটি নাটকের শুটিং ইউনিটের দুজন সদস্যের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে যায় ওই নাটকের শুটিং। নাটকটির অভিনয়শিল্পীরাসহ সেটের প্রায় সব কলাকুশলী কোয়ারেন্টিনে চলে যান। ওই রাতেই খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা ও এর আশপাশের শুটিংবাড়িগুলোয় আতঙ্ক শুরু হয়। এর পরপরই বেশ কিছু পরিচালক ও অভিনয়শিল্পী সামনের কাজের শিডিউল বাতিল করেছেন। যাঁরা এখনো করছেন, তাঁরা নিচ্ছেন বাড়তি সতর্কতা।
১৫ ও ১৬ জুলাই শুটিংয়ের শিডিউল বাতিল করেছেন পরিচালক শিহাব শাহিন। তিনি বলেন, খবরটি জানার পর কিছুটা আতঙ্কিত হয়েছি। তাই আপাতত শুটিং করব না। আগ্রহ পাচ্ছি না। এই ঈদে হয়তো আর কাজ করা হবে না।
শিহাব শাহিন জানান, মাসের শেষ দিকে আফরান নিশোকে নিয়ে আরেকটি কাজ করার আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু এই খবরের পর নিশো এখন আর কাজ করতে চাইছেন না।
যে শুটিং সেটের দুই সদস্যের করোনা শনাক্ত হয়, সেই নাটক পরিচালনা করছিলেন মিজানুর রহমান আরিয়ান। সেখানে অভিনয় করছিলেন অপূর্ব ও মেহ্জাবীন চৌধুরী। তাঁদের শুটিং সেটেই করোনা শনাক্ত হওয়ায় আতঙ্কিত নিশো। তিনি বলেন, পরিকল্পনা করেছিলাম ঈদের আগে দু-একটি কাজ করব। কিন্তু এ ঘটনার পর পরিবারের কথা মাথায় রেখে আর শুটিং করার ইচ্ছা হচ্ছে না।
ঢাকার বাইরে থেকে এক ঘণ্টার একটি কাজ শেষ করে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা ফিরেছেন তাহসান খান। শুটিং সেটে করোনা শনাক্তের খবরে এখন আর কোনো কাজ করতে চান না তিনি। তাহসান বলেন, আপাতত আর কাজ করছি না। কাউকে শিডিউলও দিইনি। এই পরিস্থিতিতে ঈদের আগে আর কাজ না করার সম্ভাবনাই বেশি।
৮ ও ৯ জুলাই করোনার মধ্যে প্রথমবারের মতো শুটিংয়ে অংশ নেন সাফা কবির। শুটিং ইউনিটে করোনা শনাক্ত হওয়ার খবরে আপাতত তিনি কাজ করছেন না আর। সাফা বলেন, কিছুটা ভয় পেয়েছি। সামনে এক সপ্তাহ নতুন কোনো কাজ হাতেও নিচ্ছি না, শুটিংও করব না। তবে ২০ জুলাইয়ের পর দু-তিনটি কাজের শিডিউল দেওয়া আছে। পরিস্থিতি বুঝে কাজগুলো করব।
১২ জুলাই থেকে টানা দুটি কাজের শুটিং করার কথা ছিল তানজিন তিশার। কিন্তু এ খবরের পর সব শুটিং বাতিল করেছেন তিনি। ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু শুটিংয়ের জন্য পুবাইলে আছেন। সেখান থেকে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ঘটনাটি জানার পর মানসিকভাবে শান্তি পাচ্ছি না। কাজ করতে গিয়ে চিন্তা হচ্ছে, না জানি কখন কী হয়! কিন্তু তারপরও কিছু করার নেই। ঈদের নাটকের কাজ চলছে। কাজ বন্ধ করলে নাটকসংশ্লিষ্ট সবারই সমস্যা হবে। শুটিং ইউনিটে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরটি জানার পর আরও বেশি সতর্ক হয়েছেন সবাই।
এ ব্যাপারে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসির বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমরা চিন্তিত। তবে প্রতি ইউনিটকে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করার ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সাবধানতা অবলম্বন করে এর মধ্য থেকেই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।