Back To Blogs | My Blogs | Create Blogs

করোনায় স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রধান উপসর্গগুলো হলো জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। ভাইরাসটি সাধারণত ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়। তবে শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যার কারণও হতে পারে এই ভাইরাস। এর মধ্যে অন্যতম হলো স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা। করোনার সংক্রমণের শিকার হতে পারে মস্তিষ্ক, সুষুম্না কাণ্ড বা স্পাইনাল কর্ড, স্নায়ু ও মাংসপেশিও। তাই এ-সংক্রান্ত উপসর্গগুলোও গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কারও কারও ক্ষেত্রে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, নাকে গন্ধ না পাওয়া বা কম পাওয়া, স্বাদ কমে যাওয়া, খিঁচুনি, পক্ষাঘাত, চেতনা হারানো, হাত-পা ঝিঁঝিঁ করা, কথা জড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গও দেখা দিতে পারে। করোনায় শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হতে পারে, রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। রক্ত জমাট বাঁধলে রোগী স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর প্রদাহও হতে পারে।

বয়স্করাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হন। তাঁদের অনেকেরই আবার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা, কিডনির সমস্যা থাকে। এমন রোগীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ও মৃত্যুঝুঁকিও বেশি। তাই ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। এ ছাড়া অন্যান্য রোগ, যেমন উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলের ওষুধ নিয়মিত সেবন করতে হবে। কেউ কেউ কিছু স্নায়ুরোগের কারণে স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ নিয়মিত সেবন করেন। এসব ওষুধ আবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই এ ধরনের রোগীর এ সময় খুবই সতর্ক থাকতে হবে।

মৃগী রোগ একটি স্নায়ুরোগ। এ সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের যেকোনো ভাইরাসের সংক্রমণ হলে খিঁচুনির প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই মৃগী রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খিঁচুনির ওষুধ নিয়মিত সেবন করতে হবে। এ ছাড়া অনেক রোগী শারীরিক অবসাদ ও প্রচণ্ড হতাশায় ভোগেন। এ জন্য নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করতে হবে এবং প্রয়োজনে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

মনে রাখতে হবে, করোনার কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি কিংবা কার্যকর প্রতিষেধক এখনো উদ্ভাবিত হয়নি। কাজেই এই রোগ থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো প্রতিরোধ। নিয়মিত পুষ্টিকর ও ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খান, পর্যাপ্ত পানি পান করুন। প্রতিদিনই ব্যায়াম করুন। অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবেন না, বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করবেন, সাবান-পানি দিয়ে ঘনঘন হাত পরিষ্কার করবেন এবং সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মেনে চলবেন। ঘরে সংক্রমিত রোগী থাকলে অন্য সদস্যেরও মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। বয়স্ক রোগীদের হঠাৎ অসংলগ্ন আচরণ, চেতনা হারানো, এক দিক অবশ বা মুখ বেঁকে যাওয়া, মাথাব্যথা, ঘ্রাণ কমে যাওয়া ইত্যাদি স্নায়ুজনিত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।


Akash Ahmed  

124 Blog posts

Comments