করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ খেলা আর অনুশীলন। ফিটনেস ধরে রাখার চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছেন খেলোয়াড়েরা। তবে এই সংকটকালেও নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে কলসিন্দুরে কিশোরী ফুটবলাররা নিয়মিত অনুশীলন করে যাচ্ছেন।
ঝড়-বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি অনেক সময় অনুশীলনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মেয়েরা তবু গ্রামের মেঠো পথ পেরিয়ে, ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো অতিক্রম করে অনুশীলনে যান।
ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর গ্রামের ১০ কিশোরী ফুটবলার বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল ও বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে খেলেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আবাসিক ক্যাম্পে থাকলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই তাঁরা গ্রামে আছেন।
কলসিন্দুরের কিশোরী ফুটবলার সানজিদা, মারিয়া, তহুরারা নেতাই নদের কূলঘেঁষা মাঠে প্রতিদিন ঘাম ঝরাতে আসেন। এখানে তাঁদের কোনো কোচ নেই। ফিটনেসের কাজ চলে ঢাকা থেকে বাফুফের কোচদের নির্দেশনায়। প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলার সময় মেয়েরা জানান, করোনা সংকট কেটে গেলে বাংলাদেশ নারী দলের সামনে আসবে ব্যস্ত সূচি। সে জন্যই ফিটনেস ঠিক রাখতে এই অনুশীলন।
কলসিন্দুরের মেয়েদের শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত এই মাঠ থেকে সবার বাড়ি সমান দূরত্বে নয়। কারও বাড়ি কাছে, আবার কারও বাড়ি দূরে। গ্রামের মেঠো পথে পায়ে হেঁটে যেতে হয় মাঠে। জাতীয় দলে খেলা ফুটবলার তহুরা বলেন, তাঁর বাড়ি থেকে মাঠ পর্যন্ত যেতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে। বৃষ্টি হলে পথে পানি জমে, কাদা হয়। সে জন্য প্রতিদিন অনুশীলনে যাওয়া সম্ভব হয় না। সেদিনগুলোকে অনুশীলন হয় বাড়ির উঠানে, একা একা।
জাতীয় দলের মিডফিল্ডার সানজিদা বলছিলেন, বাড়ি থেকে মাঠে যাওয়ার জন্য একটা সাঁকো পার হতে হয়। ভারী বৃষ্টি হলে মাঝেমধ্যে সাঁকোটি পানিতে তলিয়ে যায়। সেদিন আর অনুশীলনে যাওয়া হয় না। বাড়িতেই ফিটনেস ট্রেনিং করতে হয়। মারিয়া মান্দা জানান, প্রতিদিন বাফুফের কোচদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের নির্দেশনা মেনেই চলে অনুশীলন। এ ছাড়া প্রতিদিনের খাবার এবং বিশ্রামও বাফুফের নির্দেশনায় হয়।
গ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শহরের তুলনায় কম বলে গত মার্চ মাস থেকেই কিশোরী ফুটবলাররা বাড়িতে আছেন। জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলের খেলায় ব্যস্ততা থাকার কারণে গত কয়েক বছর গ্রামে তাঁদের কমই থাকা হয়েছে। করোনাভাইরাস সে সুযোগটা করে দিয়েছে।