মাঝে মাঝে কোচ হিসেবে তাঁকে খুব দুর্ভাগা মনে হয়। ক্যারিয়ারে প্রথমবার কোচের দায়িত্ব নিয়েই মাত্র আড়াই মৌসুমে তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, দুইটি ক্লাব বিশ্বকাপ, একটি লা লিগা সহ মোট ৮টা ট্রফি! অথচ জিনেদিন জিদানকে কোচ হিসেবে প্রাপ্য সম্মান দিতে অনেক তথাকথিত ফুটবলবোদ্ধারই আপত্তি। তাদের কাছে জিদান স্রেফ ভাগ্যবান এক কোচ! আসলেই কি তাই? স্রেফ ভাগ্যের জোরে মাত্র আড়াই মৌসুমে এত কিছু জেতা সম্ভব?
এমনকি দ্বিতীয় দফায় যখন গত বছর মার্চে আবার রিয়াল মাদ্রিদের দায়িত্ব নিলেন, তখনো দলের অবস্থা খুব একটা সুবিধার না। কে ভেবেছিল, এক বছরের মধ্যে সেই দলটাই আবার লা লিগার শিরোপার সুবাস পেতে শুরু করবে!
জিদান এমনই। তাঁকে বড় বড় ফুটবল দার্শনিক কোচদের সঙ্গে কেউ তুলনা করুক না না করুক তাতে কিছু যায় আসে না। তিনি নিজের কাজটা করে যাচ্ছেন এবং সবচেয়ে ভালোভাবেই করছেন। আর তাই তো জিদানেরই এক সময়ের সতীর্থ ও পরের রিয়াল মাদ্রিদের সহকারী কোচ আইতর কারাঙ্কা বলেছেন, আরও একবার জিদান তার জাদুর স্পর্শ নিয়ে ফিরে এসেছেন। সার্জিও রামোস, করিম বেনজেমা, থিবো কর্তোয়ারা নিজেদের সেরা ছন্দ খুঁজে পেয়েছে। আর রিয়াল মাদ্রিদের সবাই যখন এমন ছন্দ ফিরে পায়, তখন একের পর এক ফল আসবে, এটাই স্বাভাবিক।
করোনা-বিরতি কাটিয়ে মাঠে ফেরার পর রিয়াল মাদ্রিদকে আসলেই অপ্রতিরোধ্য লাগছে। যেন লা লিগার জেতার পণ করেই নেমেছে জিদানের দল। ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যান সিটির কাছে ২-১ গোলে হারের পর এখন পর্যন্ত টানা ৭ ম্যাচ অপরাজিত জিদানের দল। লা লিগায় প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে, দুই দলেরই বাকি ৪টি করে ম্যাচ।
এর মধ্যে অনেকে বলছেন রেফারির সাহায্য নিয়ে জিতছে রিয়াল। প্রশ্ন তুলেছেন বিলবাওয়ের বিপক্ষে পাওয়া রিয়ালের পেনাল্টি নিয়ে, যেটি থেকে গোল করে সার্জিও রামোস জিতিয়েছেন রিয়ালকে। এ নিয়ে চলছে বিতর্ক। তবে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্ডার আইতর কারাঙ্কা এসব পাত্তা দিতে রাজি নন, এটা তো পুরোনো কথা। যখন রিয়াল মাদ্রিদ জিততে থাকে, রেফারিং নিয়ে কথা হয়ই। আমি বরং টানা সাত ম্যাচ অপরাজিত থাকা নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী। শীর্ষ লিগের যেকোনো দলের চেয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ধারাবাহিক। এ কারণেই ওরা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।