করোনার প্রকোপে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য কমান্ডো ছবির শুটিং বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা শাপলা মিডিয়ার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নায়ক দেব-এর প্রতিষ্ঠান দেব এন্টারটেইনমেন্ট ভেঞ্চারস যৌথভাবে ছবিটি প্রযোজনা করছিল। এ দুই প্রতিষ্ঠান মিলে বেশ কিছু ছবি করবে বলে শোনা গিয়েছিল। কমান্ডোর বাকি অংশের শুটিং, সাংসদ হিসেবে নিজের নির্বাচনী এলাকার কাজসহ নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন এই টালিউড তারকা।
কমান্ডো ছবির শুটিং আবার কবে শুরু হবে?
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর ঠিক আগে আমরা প্রায় ১০ দিন শুটিং করেছিলাম। তারপর তো শুটিং বন্ধ হয়ে গেল। এটি বড় বাজেটের, বড় আয়োজনের ছবি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বাকি কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। তাই পুনরায় শুটিং শুরু করা নিয়ে এখনই কিছু বলা মুশকিল।
কমান্ডো টু, কমান্ডো থ্রি, সেরা, আশ্রয়, সমাপ্তি, অধ্যায়, কালবেলা, খোয়াবনামা, পিলু ও লকডাউন নামে অনেকগুলো ছবির নাম শোনা যাচ্ছে। আপনার প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশের শাপলা মিডিয়া একত্রে ছবিগুলো করবে শোনা যাচ্ছে। এ রকম পরিকল্পনা কি সত্যিই করেছিলেন?
শাপলা মিডিয়ার সঙ্গে কমান্ডো ছবির কাজ করছি। তাদের সঙ্গে কাজ করে ভালো লেগেছে। আশা করি, পর্যায়ক্রমে অনেকগুলো কাজ করব। কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে। আপাতত দুটি ছবির শিডিউল করা হয়েছে। কমান্ডোর গল্পের প্রয়োজনে দেশের বাইরে শুটিং করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে অনেকগুলো মানুষ নিয়ে বিদেশে গিয়ে শুটিং করা যাচ্ছে না। তাই আপাতত একটু ভিন্নধারার, ছোট পরিসরের নতুন দুটি ছবির কাজ শুরু করতে চাই। দুই দেশের শিল্পী-কলাকুশলী নিয়ে নিয়ম মেনে কাজ করব। করোনাপরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলেও সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করে জুলাই মাসের শেষে ছোট ইউনিট নিয়ে কাজ শুরু করতে পারব।
চলচ্চিত্র থেকে দেব এখন সাংসদ। ছবি: ফেসবুক থেকে
চলচ্চিত্র থেকে দেব এখন সাংসদ। ছবি: ফেসবুক থেকে
নতুন ছবি দুটির নাম কী?
ছবি দুটির নাম এখনই বলব না। কাজ শুরু করার আগে প্রচার-প্রচারণার একটি হিসাব-নিকাশ আছে। শুটিংয়ের আগে আগে বড় আয়োজন করে ছবি দুটির নাম ঘোষণা করতে চাই।
গত বছর বাংলাদেশের জয়া আহসানকে নিয়ে কাজের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এই ছবি দুটোয় কি তিনি থাকছেন?
থাকতে পারেন। ছবির জন্য শিল্পী, কলাকুশলী নির্বাচন শুরু করেছি। এর মধ্যে একটি ছবিতে জয়া আহসান থাকতে পারেন। জয়া আহসানের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা আছে। আগে থেকে তাঁকে নিয়ে কাজের পরিকল্পনা করে রেখেছি। এখন দেখা যাক কী হয়।
টনিক ও হবুচন্দ্র নামে আপনার দুটি ছবি মুক্তির কথা ছিল। সেগুলো কি মুক্তি পাবে?
মে মাসে মুক্তির কথা ছিল। করোনাভাইরাসের কারণে আটকে গেছে। দুটিই আমার নিজের ঘরের ছবি, টনিক-এ আমি অভিনয় করেছি। মাঝে সিনেমার সব ধরনের কাজ বন্ধ ছিল, এখন খুলেছে। গ্রাফিকসের কাজ চলছে।
পশ্চিমবঙ্গে সিনেমার শুটিং করা, প্রেক্ষাগৃহ খোলার কোনো খবর আছে?
বেশ কিছুদিন আগেই শুটিংয়ের অনুমতি পাওয়া গেছে। ডাবিং, সম্পাদনাসহ পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শুরু হয়েছে। তবে শুটিং এখনো ঠিক সেভাবে শুরু হয়নি। টেলিভিশন ধারাবাহিকগুলোর শুটিং চলছে। সিনেমা হল খোলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার ছবি করছেন দেব। ছবি: ফেসবুক থেকে
বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার ছবি করছেন দেব। ছবি: ফেসবুক থেকে
সাংসদ হিসেবে করোনাকালে মানুষের জন্য কী করলেন?
করোনায় কর্মহীন অসহায় মানুষের জন্য কিছু কাজ তো করছিই। এটি আমার দায়িত্ব। আমার নির্বাচনী এলাকায় মাঝেমধ্যে যাচ্ছি। ভারতজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে আমার নিবার্চনী এলাকা পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করেছি, টানা ৩১ মে পর্যন্ত। আবার খাবার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর বাইরে করোনাপরিস্থিতির মধ্যে সেখানকার মানুষের চিকিৎসাসহ নানা খাতে সরকারি তহবিল থেকে এক কোটি রুপি সহযোগিতা দিয়েছি।
নিজের এলাকার বাইরে?
আমাদের রাজ্যের যেসব শ্রমিক বাইরে গিয়ে আটকা পড়েছিলেন, তাঁদের অনেককেই নিজ খরচে ফেরার ব্যবস্থা করেছি। নেপালে প্রায় ৫০০ শ্রমিক আর্থিক সংকটে পড়ে ফিরতে পারছিলেন না। তাঁদের ফেরার ব্যবস্থা করেছি। জম্মুকাশ্মীর থেকে শ খানেক শ্রমিককে ফিরিয়েছি। রাশিয়ায় আটকে পড়া ৭৫ জন মেডিকেল ছাত্রকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছি। রাশিয়া টু কলকাতা সরাসরি বিমান নেই, আসতে হবে মুম্বাই হয়ে। কিন্তু মুম্বাইয়ে এসে তাঁদের ১৪ দিন আটকে থাকতে হবে। আর্থিক সমস্যার কথা জানিয়ে তাঁরা আমাকে মেইল করেছিলেন। আমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সরাসরি কলকাতায় আসার ব্যবস্থা করেছি। ২৭ জুন তাঁরা দেশে ফিরবেন।