-----------------------
বাসে উঠে বসতে না বসতেই পাশের
সীটের একটা সুন্দরী মেয়ে বলে
উঠলো "ও মাই গড! আপনি এতো সুন্দর
কেন? আমার গায়ে হাত দিয়ে বলল
আপনার বডি এতো সুন্দর কেন! নিশ্চই
জিম করেন?
জীবনে আব্বা-আম্মা আমাকে
কালাচাঁদ ছাড়া ডাকে নাই।
গার্লফ্রেন্ড আদর করে কালু ডাকে।
কিন্তু আজ এই বাসে এই মেয়ে আমার
মধ্যে এমন কি দেখে সুন্দর বলল বুঝতে
পারলাম না। মনে মনে লজ্জা
পাচ্ছিলাম।
একটুপর মেয়েটা আমার পাশে বসা ছেলেটাকে বলল "
এই যে ভাই আপনি উঠুন, আমি এই ভাইয়ের পাশে বসতে
চাই।আপনি আমার সীটে বসুন"।
দেখলাম ছেলেটা সুড়সুড় করে
পাশের সারির মেয়েটার সীটে
গিয়ে বসল। মেয়েটা বসল আমার
পাশে। খেয়াল করে দেখলাম
মেয়েটা বেশ সুন্দর।
কয়েকদিন আগে টিভির বিজ্ঞাপন
দেখে একটা ফেসওয়াশ
কিনেছিলাম। বিজ্ঞাপনে বলা
ছিল এই ফেসওয়াশ চার সপ্তাহ
মাখলে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও চকচকে।
কিন্তু দুই সপ্তাহেই যে কাজে
দিবে এটা ভাবিনি।
মেয়েটা এবার বলল "
আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে"?
লোকাল বাসে সুন্দরী মেয়ে পাশে
বসলে সব ছেলেরাই সিঙ্গেল হয়ে
যায়। তাহলে আমি কি দোষ করছি?
তাই মেয়েটাকে বললাম " জ্বী না
আমি সিঙ্গেল"। মেয়েটা এবার
সরাসরি বলল " প্রেম করবেন আমার সাথে"?
মেয়েটার কথা শুনেই মনের মধ্যে জেমস ভাইয়ের " ঝাকানাকা
দেহ দোলানা" গানটা বেজে
উঠলো। সারাজীবন গার্লস স্কুলের
পাশে দাঁড়িয়ে থেকে মেয়ে
পটাতে পারিনি। যে মেয়েকে
প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছি সেই
মেয়ে বলেছে আয়নায় নিজের
চেহারা দেখতে। এক মেয়ে তো
বলেই দিয়েছে কয়লা আর আমার
চেহারার মধ্যে কোনো পার্থক্য
নাই, দুইটাই কালা। ইসস যদি পাশে
বসা সুন্দরী মেয়েটার কথাটা
ভিডিও করে ওদের দেখাতে
পারতাম। মেয়েটাকে উত্তর দিতে
যাবো এর মধ্যে আরেকটা মেয়ে
পাশে এসে দাঁড়ালো।
দাঁড়িয়ে আমার পাশে বসা
মেয়েটিকে বলল " বাসে বসা সুন্দর
ছেলেদের দেখলেই প্রেম করতে
ইচ্ছে করে, না?
এই ছেলেকে আমার
পছন্দ হয়েছে। তুই অন্য কাউকে দেখ"।
দেখলাম আমার পাশে বসা
মেয়েটা উঠে চলে গেলো। এবার
যে মেয়েটা এলো সে আরো সুন্দরী দেখতে। আমি তাড়াতাড়ি ফোন
বের করে সামনের ক্যামেরায়
নিজের চেহারা দেখে নিলাম।
সত্যি এটা আমি নাকি অন্য কেউ।
নিজেকে রেস থ্রির সালমান খান
মনে হচ্ছিল,শুধু চশমাটাই নাই। বাসায়
ভুলে সানগ্লাস ফেলে এসেছি বলে
নিজের উপর রাগ হচ্ছিল। নতুন
মেয়াটা এবার বলল " ওয়াও, আপনি
আমার দেখা সেরা পুরুষ । প্রেম
করবেন আমার সাথে"?
মেয়েটার কথা শুনে বুকের মধ্যে ধপাস ধপাস শুরু
হয়ে গেলো। গর্বে বুক ফুলে উঠলো।
মনে মনে সেই ফেসওয়াশ কোম্পানি
কে অনেক ধন্যবাদ দিলাম।
মেয়েটাকে উত্তর দিতে যাবো
এমন সময় দেখি আরো তিনটা মেয়ে
এসে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
ওরা তিনজন একসাথে বলে উঠলো "
এই ছেলে প্রেম করবে আমার
সাথে?"। এবার আমার পাশের বসা
মেয়েটা উঠে ওদের সাথে
মারামারি শুরু করলো। চারজন মেয়ে
আমার চার হাত পা ধরে বাসের মধ্যে টানাটানি শুরু করলো। একজন
বলে এই ছেলে আমার, আরেকজন বলে
না না এই ছেলে আমার। ওদের
টানাটানি তে আমার গওরিপুর
থেকে কেনা নতুন শার্ট ছিঁড়ে
গেছে। প্যান্ট ছিঁড়া ছিঁড়া অবস্থা।
নিজেকে সালমান খান ভাবা
ছেড়ে টম ক্রুজ ভাবতে শুরু করলাম।
আহা! সুন্দরী মেয়েরা আমাকে
পাবার জন্য আজ মারামারি করে। এই
দিন যে আসবে কল্পনাও করিনি।এর
মধ্যে বাসের হেলপার এক লাঠি
নিয়ে দৌড়ে এসে বলল "
ঐ তোরা সবাই বস, নাহলে কারেন্ট শখ দিবো "
সাথে সাথে চারটা মেয়ে
আমাকে ছেড়ে দিলে আমি গাড়ির
মধ্যে ধপাস করে পড়ে গেলাম।
হেলপার কাছে এসে বলল "
ঐ মিয়া আপনি কখন উঠলেন বাসে?
ও বুঝছি, সিগারেট কিনতে নামছিলাম
তখনি উঠছেন তাইনা?
তাড়াতাড়ি নামেন ভাই, এই বাস পাবনা যাবে।
বাসের মধ্যে যারা আছে তারা
সবাই পাগল। ওদের সবাইকে পাবনার মানসিক হাসপাতালে নিয়ে
যাচ্ছি। হেলপারের কথা শুনে
অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি পাবনার
মানসিক হাসপাতালে।..??
"""""""সমাপ্ত""""""
যারা গল্প পড়তে ভালোবাসেন তারা পেইজে ফলো দিয়ে রাখবেন প্লিজ।