একদিন এক বাবা তার ছেলেকে একটি পুরোনো টি-শার্ট হাতে দিয়ে বলে এটির কত দাম হতে পারে? ছেলেটি বলে এক ডলার। তার বাবা তাকে সেটি দুই ডলারে বিক্রি করার জন্য বলে। সে অনেক চিন্তা করছিল। পুরোনো টি-শার্ট কিভাবে সে দুই ডলারে বিক্রি করবে। কিশোর ছেলেটি পুরোনো ও ময়লা টি-শার্টটিকে ধুয়ে পরিষ্কার করল। এরপর রোদে শুকিয়ে পুরোনো কাপড়ের স্তুপের নিচে রেখে সমান করল টি-শার্টটি। তারপর দীর্ঘ ছয় ঘন্টা চেষ্টার পর সে পাতাল রেলের এক যাত্রীর কাছে টি-শার্টটি দুই ডলারে বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছিল। তার বাবা তার কাজে খুশি হয়েছিল।

পরের দিন ঠিক একই রকম একটি ময়লা টি-শার্ট ছেলেটিকে দিয়ে বলে তা ২০ ডলারে বিক্রি করতে। এই ২০ ডলার তার পরিবারের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। ছেলেটি তার বাবার কথায় হেসেছিল। কারণ এত পুরোনো জামা ২০ ডলারে কোনভাবেই বিক্রি সম্ভব না। তবুও সে চেষ্টা করে দেখলো। প্রথমে তা সুন্দর করে ধুয়ে পরিষ্কার করল। সে আগের দিনের দুই ডলার দিয়ে কিছু রঙ ও তুলি কিনল। সে তার এক বন্ধুর কাছে গেল যে কিনা ভালো ছবি আঁকাতে পারতো। তার বন্ধু ঐ টি-শার্টটির উপর একটা মিকিমাউসের ছবি একে দিল। তারপর সে জামাটি বিক্রি করার জন্য অনেক জায়গায় গেল। প্রায় সারাদিন চেষ্টার পর শহরের ধনী শিশুদের কিন্ডারগার্ডেন এর এক শিশুর অনেক পছন্দ হয়ে গেল এবং সেটা কিনার জন্য বায়না ধরল। শিশুটির বাবা জামাটি ২০ ডলারে শুধু কিনলেনই না তাকে আরো পাঁচ ডলার বখশিশও দিল। আর এই ২৫ ডলার ছিল তার পরিবারের সারা সপ্তাহের উপার্যন যা সে একদিনেই আয় করেছিল।

ছেলের উদ্দীপনা দেখে বাবা অনেক আনন্দিত। পরেরদিন একই ভাবে আরেকটি পুরোনো জামা ছেলেটিকে দিয়ে তা ২০০ ডলারে বিক্রি করার জন্য বলে। এবারে ছেলেটি খুব চিন্তা করে আর ভাবতে থাকে কিভাবে সে এই কাজটি করতে পারে। সে সময় আমেরিকায় ‘ চার্লস এঞ্জেলস ’ চলচ্চিত্রটি ছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে। ছবিটির নায়িকা ফারাহ ফওলার নিউইয়র্কে আসেন চলচ্চিত্রটির প্রোমোশনের কাজে। প্রেস কনফারেন্স শেষে যখন তিনি গ্রীণরুমে যান তখন দেখেন এক ছোট কিশোর দাঁড়িয়ে আছে। সে তার টি-শার্টে অটোগ্রাফ চায়। এমন ফুটফুটে ছোট ছেলেটির আবদার তিনি ফেলতে পারেন নি। পরের দিন মাইকেল ব্রুকলিনের নিলাম ঘরে যান মিস ফারাহ ফাওলারের নিজের হাতে অটোগ্রাফ দেয়া জামাটি নিলামে বিক্রি করার জন্য। নিলামে ছেলেটি টি-শার্টটিকে ১২৫০ ডলারে বিক্রি করতে সক্ষম হন।

ছেলেটি যখন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ছিল, পড়াশুনায় একদম ই ভালো লাগছিলনা তখন সে তার বস্তির পাশের টিলার উপরে প্রতিদিন বসে থাকত আর সূর্যাস্ত দেখত। ঠিক তেমন সময় ছেলেটির বাবা তাকে পাশে ডেকে নিয়ে বললেন,” তুমি টি-শার্ট বিক্রি থেকে কি শিক্ষা পেলে?” ছেলেটি তখন অনেক চিন্তা ভাবনা করে গম্ভীর ভাবে উত্তর দিয়েছিল, “ Where there’s a will, there’s a way.”

এই গল্পটি ছিলো American basketball player মাইকেলের জর্ডানের ।
সংগৃহীত