গল্প :-
""অন্তঃস্বত্তা মেয়েকে বিয়ে""
.
লেখক:- #Nayem_Ahmed
.
100% কান্না করবেন challenge....শুধু শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন....
.
★------পর্ব :- ১৬~~২~ ♥
নার্সকে বের হয়ে যেতে বললাম কিছুক্ষণের জন্য। নার্স প্রথমে না করলেও পরে আর অনুরোধে না করতে পারেনি।
.
নার্স চলে গেলে রাজের বুকেতে নিজের মাথাটা রাখলাম। চোখের পানিতে কাঁপড় ভেঁজে যাচ্ছে।বুকটাতে মাথা রেখে কেঁদে কেঁদে বলছি প্লিজ রাজ আমাকে ছেঁড়ে যেয়োনা। আমি বাঁচবোনা। তোমার বুকে না পারো এই অপরাধী মেয়েটাকে তোমার পায়ের নিচে একটু জায়গা দিয়ে। তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারবে? তুমি নি বলেছিলে বাঁচতে হয় একসাথো মরতে যতি হয় একসাথে মরবে। তাহলে কেন আমাকে ছেঁড়ে চলে যাচ্ছো। আমি পবিএ কুরআন নিয়ে কসম করেছি, তোমাকে আর কষ্ট দিবো না। তুমি, আমাকে আর দূরে সরয়ে দিয়োনা। তুমি না আমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে চেয়েছ। বৃষ্টির রিম ঝিম ফোঁটার সাথে, কথা বলতে চেয়েছো আমার হাত ধরে। ধরবে না আর আমার হাত। কদম ফুল হাতে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে বলবে না আমাকে ভালোবাসো? তুমি না আমার কুলে শুয়ে জ্যোস্না দেখতে চেয়েছিলে,দেখবে না? কথা বলছো না কেন। আমি জানি আমি বড্ড বেশি অপরাধী, তবুও বলছি তোমায় আমাকে রেখে যেয়োনা। তিল তিল করে তোমার জন্য ভালোবাসা জমিয়ে রেখেছি। একটিবার শুধু আমাকে বউ বলে ডাকো! কি হলো " কলিজার টুকরা" কথা বলছো না কেন? মরার আগে আমাকে গলা টিপে মেরে যাও।কাঁদতে কাঁদতে, সমানে রাজের মুখে, কপালে বুকে চুপু খাচ্ছি। আর কাঁদছি। কলিজাটা ফেঁটে বের হয়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে জীবনটা কেউ টেনে বের করে নিচ্ছে। বুকের মাঝে চিনচিনরে ব্যথাটা আরো তীব্র হচ্ছে। হঠাৎ পিছনে তাঁকিয়ে দেখি নার্স কাঁদছে।
.
ম্যাডাম প্লিজ রোগীর সাথে এমন করবেন না। এতে রোগীর ক্ষতি হবে। আপনাকে না করার ক্ষমতা নেই আমার। আমাদের মনেও ভালবাসা রয়েছে। কিন্তু আপনি যা করছেন তাতে পেশেন্টের ক্ষতি হবে।প্লিজ আপনি পেশেন্টকে একা থাকতে দেন।
.
নার্সের কথায় কিছু বলতে পারছিনা। রিত্ত পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে কিছু বলছেনা। শুধু কেঁদেই যাচ্ছে।
.
রিত্ত তুমি কাঁদছো কেন?
.
ভাবী একটু বাহিরে আসবেন, কথা আছে আপনার সাথে।
.
আচ্ছা চল, কি যেন বলতে চেয়েছিলে? এখন বল।
.
ভাবী কীভাবে যে কথাটা বলি,তবুও বলতে হবে। জানো, ভাবী আমার ভাইয়াটা যে ভিতরে ভিতরে এতটা কষ্ট পাচ্ছে তা আগেই বুঝতে পেয়েছিলাম।এটাও বুঝতে পেয়েছিলাম,যে তুমি ভাইয়াকে অবহেলা ছাড়া কিছু দিতে পারনি। কারণ আমিও একটা মেয়ে ছেলেদের মুখের দিকে তাকালে ভিতরের কষ্টটা আঁচ করতে পারা যায়। আর আমার তো ভাইয়া, দুই দেহের এক আত্মা। জানো ভাবী, ভাইয়া মৃত্যুর ক্ষণ গুনছে, শুধু মৃত্যু বরণ করেছে এ কথাটা ডাক্তারের কাছ থেকে শুনা বাকী! আর আমি এটাও জানি যে, ভাইয়ার এ অবস্হায় জন্য তুমি দায়ী। আহ সকালে তোমার আলমারীতে ভাইয়ার লেখা সুসাইড নোটের মতো আরেকটা সুসাইড পায়। ওটা দেখে বুঝতে বাকি থাকে না যে, ভাইয়াকে তুমি নিজের হাতে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়েছো। ভাইয়া সত্যিটা জেনেও হাসি মুখে মৃত্যুটা মেনে নিতে তোমার দেওয়া দুধটুকু খেয়ে নিয়েছে। ছিঃ ভাবী ছিঃ লজ্জা করছে আজ মেয়ে বলে পরিচয় দিতে, লজ্জা করছে তোমাকে ভাবী বলে পরিচয় দিতে। একটা মেয়ে স্বামীর বাড়িতে আসে কেন জানো? সবাই জানলেও তুমি জানো না জানবে কীভাবে যে মেয়ে স্বামীকে মারার প্ল্যান করতে পারে তাঁর কাছে জানতে চাওয়াটা বোকামী। আচ্ছা আমি বলছি শোন; প্রতিটা মেয়ে লালশাড়ী পড়ে স্বামীর বাড়িতে আসে। প্রতিটি মেয়ে যখন, কবুল! কবুল! কবুল! তিনবার পড়ে নেয় তখন তাঁর মনে এক প্রকার ভালবাসা সৃষ্টি হয়। কারণ বিয়ে পবিএ সম্পর্ক মহান আল্লাহ্ তায়ালার বিধানগুলির একটি। তিনবার কবুল একটা মেয়েকে নতুন জীবন দান করে। সারাজীবন পাশে থাকার জন্য আশ্রয় হিসেবে একটা বটবৃক্ষ পায় একটি মেয়ে। বাবার বাড়িতে যেমন সে বটবৃক্ষটি থাকে বাবা তেমনি বিয়ের পরে বটবৃক্ষটি হলো তাঁর স্বামী। স্বামী যতই খারাপ হয়, স্বামীর খেদমত করেই জান্নাত হাসিল করতে হয়। স্বামীকে বুঝাতে হয় কোনটা ভাল কোনটা খারাপ, স্বামীর হৃদয় জয় করে নিতে হয় ভালবাসা দিয়ে। আর প্রতিটা মেয়ে যেমন লালশাড়ী পড়ে স্বামীর বাড়িতে আসে তেমনি বের হয় সাদা পোষাক পড়ে। আর আপনি সেই স্বামীকে নিজে হাতে খুন করার জন্য এসব করেছেন। আমার ভাইয়ার কি অন্যায় ছিলো, আপনাকে পাগলের মতো ভালবাসা, নাকি আপনার জন্য লুকিয়ে কান্না করাটা আমার ভাইয়ার অপরাধ ছিলো। জানি বলতে পারবেন না, জানেন আপনার গর্ভের সন্তান যখনি শুনতে পেয়েছে মেয়ে হবে সেদিন থেকে প্রতিদিন একটা করে পুতুল কিনে নিয়ে এসে, কণা আপুর রুমের আলমারিতে রেখে দিতো। আর আপনি সেই পুতুল বাহিরে ফেলে দিয়েছেন। বাহ্ খুব মহৎ আপনি, খুব মহৎ, ভালবেসে বকুল ফুলের মালা নিয়ে এসেছিল আর আপনি পায়ের নিচে ভালবসসে আনা ফুল গুলো পিষ্ঠ করেছেন। কানের ঝুমকো জোড়া আপনি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছেন। ভাইয়ার ভালবাসা কি এতই অপবিএ ছিল যার জন্য ডাস্টবিনে জায়গা হয়।লজ্জা করে মেয়ে বলে পরিচয় দিতে যে কিনা নিজের ভালবাসার মানুষটিকে চিনতে পারেনা। আপনি নারী জাতির কলঙ্ক। আপনার পাপের ছাঁয়া যেন ভাইয়ার উপরে না পড়ে। আমি চাইনা আপনার জন্য ভাইয়া নতুন করে কষ্ট পাক। আপনার জন্য আমি আমার ভাইয়াকে হারিয়ে ফেলছি। কি চান আপনি, আপনার জন্য আমাদের সুখের সংসারের হাসি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর হ্যাঁ আপনাকে ভাইয়া ডির্ভোস দিয়ে দিয়েছে। আপনি আর আমাদের পরিবারের কেউ নাহ্। আপনাকে কখনো যেন আর ভাইয়ার পাশে না দেখি। আপনি ভাইয়ার পবিএ মুখটা পর্যন্ত দেখতে পারবেন না। আপনি একটা খুনী! শুধু খুনি না স্বামীর খুনি। আমার ভাইয়ার কিছু হয়ে গেলে আমি আপনাকে ছাঁড়বোনা। ( কেঁদে কেঁদে কথা গুলো বলল রিত্ত)
.
রিত্তের কথা শুনে টপ-টপ করে পানি পড়ছে চোখ থেকে। কলিজাটা ফেঁটে যাচ্ছে। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। চোখের সামনে বারবার রাজকে অপমান করার অবহেলা করার, ঘৃণা করার, রাজকে ঘুমের ওষধ খাওয়ানোর দৃশ্য মনে পড়ছে। কি করবো, রিত্তের কাছে কী বলবো। আমি যে সত্যিই অপরাধী। রাজকে দেখার অধিকারটুকুও হারালাম। একবার রিত্তকে বলতে চেয়েছিলাম রাজ আমাকে ডির্ভোস দিলেও আমি ডির্ভোস পেপারে সাইন করেনি। কিন্তু কোন মুখ নিয়ে বলবো। কান্না ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই।
.
রিত্ত চলে গেলে, কাঁদছি, আর ভাবছি রাজকে শেষ বারের মতো একবার দেখে চলে যাবো। আর আমার অভিশপ্ত ছাঁয়া নিয়ে পাশে দাঁড়াবো না আর। এদিকে ঠিকমতো হাঁটতে পারছিনা। রাজের কেবিনে ডুকতেই দেখি........ ♥
.
.
♥-----"To be Continue"---♥