গল্প :-
""অন্তঃস্বত্তা মেয়েকে বিয়ে""
.
লেখক:- #Nayem_Ahmed
.
100% কান্না করবেন challenge....শুধু শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন....
.
★------পর্ব :- ১৪ ~~~♥️
.
.
সজিবের ছবিটা, ছিঁড়ে ফেললো গ্যাসের
আগুনে দিয়ে ছবিটাকে জ্বালাচ্ছে। হঠাৎ
ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বাজছে ফোনটা
তুলতেই "
ভাবী ভাইয়াকে আর বাঁচানো গেলো না
হয়তো, ডাক্তার বলেছে ভাইয়া কুমুতে চলে
গেছে। ভাইয়ার লিভার ফ্রিফটি পারসেন্ট
ড্যামেজ হয়ে গেছে। ভাইয়া নাকি বাঁচবে
না ভাবী ( রিত্ত)
.
এদিকে রিত্তের কাছে এমন কথা শুনে মনে
হচ্ছে কেউ কথার কলিজাতে কেউ ছুঁড়ি
চালিয়ে দিচ্ছে। কষ্টে বুকটা তার ফেঁটে
যাচ্ছে।কথা ভাবছে, "আজ আমার জন্যই রাজ
মৃত্যুশর্য্যায়। এতটা ভালোবাসার পরও
তাকে শুধু অবহেলা করেছি। বিয়ের পর
একটি বার বুকে পর্যন্ত জড়িয়ে নেয়নি।"
এসব মনে করে কাঁদতে লাগলো।
.
মা'রে কাঁদিস না কেঁদে কি হবে? আল্লাহ্
তায়ালা কে ডাক। তিনি ছাড়া আর কেউ
বাঁচাতে পারকে না। ( কথার মা)
.
মা আমি কিভাবে বাঁচবো, ওর কিছু হয়ে
গেলে। আমার যে নিঃশ্বাসের সাথে
মিশে গেছে রাজ।( কাঁদতে কাঁদতে
কথাগুলো বললো কথা)
.
মা' তুই কাঁদলে কী রাজ ভালো হবে? ভালো
হবে না। তাই বলছি না কেঁদে আল্লাহর
দরবারে দোয়া কর। আর তুই ও তো
অন্তঃসন্তা রাতেও কিছু খাসনি, আর
এখনো যদি কিছু না খাস তাহলে বাচ্চার
ক্ষতি হবে। তাই ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে।
( কথার মা)
.
আচ্ছা মা তুমি যাও আমি খেয়ে নিচ্ছি।
( কথা)
.
- আমি জানি, আমি চলে গেলে তুই
খাবিনা। একটু বস আসছি, বলে খাবার নিয়ে
এসে মুখে তুলে দিচ্ছে।
.
এদিকে মা খাবার তুলে দিচ্ছে আমি
খাবার দেখে নিজের অজান্তেই কেঁদে
দিলাম।
.
কথা তুই কাঁদছিস কেনো?
.
মা আমার স্বামী তো আজ ৩ দিন ধরে কিছু
খায়নাই। আমি কেমনে খাবো?
.
কি পাগলের মতো কথা বলছিস। প্লিজ তোর
জন্য না হলেও তোর গর্ভের সন্তানের জন্য
হলেও খেয়ে নে।আর রাজ তো তোর
সন্তানের নামও ঠিক করে রেখেছে"
রাইসা"। এখন যদি তুই না খাস তাহলে
বাচ্চার যদি কোন অঘটন ঘটে যায়। এদিকে
তোবাটাও কেমন যেন হয়ে গেছে। তুই ও যদি
এমন করিস, আমি আর তোর বাবা কীভাবে
বাঁচবো। তোর আর তোবার জন্যই তো বেঁচে
আছি।
.
মা তুমি কেঁদেনা আমি খাচ্ছি। খাবার
শেষ করে। ড্রাইভারকে বলে হসপিটালে
আসলাম। হসপিটালের দরজায় পা রাখতেই
বুকটা কেমন যেন কেঁপে ওঠলো। বুকটা কেমন
যেন শূন্য শূন্য লাগছে। হঠাৎ চোখ গেলে
রিত্তের দিকে রিত্ত গাল বেয়ে টপ-টপ করে
পানি পড়ছে।
.
"ভাবী তুমি আসছো" কথাটা বলে রিত্ত
জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। আর বলতে
লাগলো" ভাবী ডাক্তার কি বলছে ভাইয়া
নাকি! এ পর্যন্ত বলে আবারো কেঁদে
দিলো।
.
আমি কি বলে সান্ত্বনা দিবো ভাবতে
পারছিনা। আমি নিজেকেই সান্ত্বনা
দিতে পারবোনা। আমার জন্যই রাজ আজ
এখানে। নিজের কান্না সামলে রেখে
রিত্তকে বললাম" রাজের কিছুই হবেনা "
প্লিজ কান্না করোনা। চলো তোমার
ভাইয়ার কাছে যাই।
.
এদিকে রিত্তকে নিয়ে রাজের বেডে
গেতে,, হৃদয়টা হুঁ, হুঁ করে কেঁদে ওঠলো।
রাজের মুুখে এখনো অক্সিজেন মাক্স
পড়ানো। চাঁদের মতো মুখটা, আধারে ডেকে
গেছে। নিজের চোখের জল আকটাতে
পারছিনা। রিত্ত বাইরে চলে গেলে ,
রাজের কপালে একটা ভালবাসার স্পর্শ
এঁকে দিলাম। তারপর,পা জড়িয়ে ধরে বলতে
লাগলাম, আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি
সত্যি হিরাকে কাচ, কাচকে হিরা ভেবে
ভুল করেছি। আমি তোমাকে ছাড়া
বাঁচবোনা।আমাকে ছেড়ে যেয়োনা
কোথাও সত্যি বাঁচবোনা। এখন তুমি আমার
প্রতিটি নিঃশ্বাসে। তুমি আমার হৃদপিন্ড।
আমার কিছু চাওয়ার নেই পৃথিবীতে,
আল্লাহ্ যেন তোমাকে আমার বুকে
ফিরিয়ে দেয়। আমি যে তোমাকে
ভালবাসি বড্ড বেশি ভালবাসি তোমাকে।
কথাগুলো বলে পা ধরে কাঁদতে লাগলাম।
চোখের পানিতে পা ভিজে যাচ্ছে। হঠাৎ
কারো হাতের স্পর্শ পেলাম মাথায়।
অশ্রুভেজা চোখে উপরের দিকে তাকাতেই
দেখি " (রাজের বাবা)।বাবাকে দেখে
আরো বেশি কান্না করে দিলাম। বাবা
ডাক্তার কি বলছে এসব। আমি বাঁচবোনা
ওকে ছাঁড়া।
.
মা'রে কান্না না করে আল্লাহকে ডাকো।
আর হ্যাঁ আমার ছেলের কিছুই হবেনা।
প্রার্থনা করো আল্লাহর কাছে।
.
হুম বাবা, আল্লাহ যেন ওকে ভালো করে
দেয়।
.
পরে, মা এসে বাসায় নিয়ে যায়। ঠিক মতো
হাঁটতেো পারিনা। আজ ৯ মাস হতে চললো।
বাসায় শুয়ে শুয়ে রাতে ভাবছি, রাজের
ডাইরি সম্পূর্ণ তো পরা হয়নি। তাই
বালিশের নিচে থেকে ডাইরিটা বের করে,
ডাইরিটা বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে, চোখের
জল ছেঁড়ে দিলাম। মাঝরাত ডিমলাইটের
আলোতে ডাইরিটা অদ্ভূত আর রহস্য ময়
লাগছে। কি আছে শেষের দিকে, ভাবতে
পারছেনা। সত্যিই কি রাজ " চরিএহীন,
জারজ টাকে খুন করেছে?
'এসব ভাবতে, ভাবতে ডাইরিটা খুললো,
ডাইরিটা খুলেই পড়তে লাগলো;
..
কণাকে আজ সাদা শাড়িতে কেমন যেন
লাগছে। তাই জিজ্ঞেস করলাম' কণা তুই না
সাদা শাড়ি পছন্দ করিস না তবে কেন এই
শাড়ি পড়েছিস? তোর জন্য তো বৈশাখেও
নীল শাড়ি কিনে দিলাম!
.
ভাইয়া, আমি চাইলেও আর নীল শাড়ি
কখনো পড়তে পারবোনা! ভাইয়া তুমি
আমার হত্যার বিচার করবেনা? আমার
আত্মা যে, সে বিশ্বাসঘাতকের মৃত্যু না
দেখে মুক্তি পাচ্ছেনা!
.
কণার কি সব বলছিস?।হঠাৎ কণার গলার
দিকে তাকাতেই দেখি গলায় দড়ির দাগ!
কণা বলে চিৎকার দিতেই ঘুম ভেঙ্গে যায়!
ঘুম ভাঙ্গতেই আর বুঝতে বাকি থাকেনা
এটা আমার দুঃস্বপ্ন ছিল।এখনো কণা'র
ভেঙ্গে যাওয়া ছবিটা বুকে।দরজার দিকে
তাকিয়ে দেখি দরজা লাগানো, ভয় ও হচ্ছে
আবার খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে, মনে ভাবলাম
আমি আমার বোন হত্যার প্রতিশোধ ঠিকই
নিবো আর আমার বোনের চল্লিশ দিন
হওয়ার আগেই।
সেদিন রাতে আর ঘুম হলো না প্রতিশোধের
আগুন দাউ-দাউ করে জ্বলছে বুকে। বার বার
কণার কথাটা মনে পড়ছে, "ভাইয়া ওকে
ক্ষমা করোনা"।আমার সর্বনাশ করার
বিচার যে পর্যন্ত না করবে সে পর্যন্ত
আমার আত্মা মুক্তি পাবেনা।
.
পরেরদিন ভাবলাম যেভাবে হোক, আমার
বোন হত্যার বিচার করবো। তাই পরদিন খুব
ভোরে, ঘুম থেকে ওঠে, সজিবের বাসায়
যায়। টার্গেট হচ্ছে, সজিবকে খুন করবো।
যেই ভাবা সেই কাজ হাত পকেটে একটা
ছুঁড়ি লক্ষ গলা বরাবর চালিয়ে দেওয়া।
.
দোস্ত এত সকালে তুই আসলি যে? এখনো তো
কাজের মেয়েই আসেনি।দাঁড়া আমি চা
করে নিয়ে আসছি।
.
আমি শুধু মাথা নাড়ালাম!
.
এদিকে সজিব চা করে নিয়ে আসলো। আমি
চা খাচ্ছি এদিকে সজিবও চা খাচ্ছে। চা
খেতে কাশতে কাশতে লাগলো, সজিব।
হঠাৎ হাত দিয়ে মুখ ধরে ফেললো। সজিবের
হাতে স্পর্ষ্ট রক্ত দেখা যাচ্ছে। সজিব
আমার সামনে থেকে দ্রুত ওয়াশরুমে চলে
গেল।
.
কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বের হতেই,ওর
দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম" তোর
কাশির সাথে রক্ত আসলো কেন কি
হয়েছে"?
.
নারে দোস্ত কিছু হয়নি? (সজিব)
.
প্লিজ দোস্ত আমার কসম বল তো কী
হয়েছে।
.
সজিব দৌঁড়ে এসে বুকে জাপটে ধরলো!মনে
মনে ভাবছি এখনই উপযুক্ত সময়। ছুঁড়িটা
পকেট থেকে বের করে গলায় চালিয়ে
দেওয়ার। নিজের বোনের মৃত্যুর প্রতিশোধ
নেওয়ার কিন্তু পারলাম না। কিন্তু না!
পারলামনা! হাতটা পকেটে না গিয়ে
সজিবের পিঠের ওপর গেলো।
সব রাগ অভিমান ভুলে শক্ত করে জড়িয়ে
ধরে বলতে লাগলাম- কাঁদছিস কেনো? কি
হয়েছে?
.
দোস্ত আমার ব্ল্যাড ক্যান্সার। আমি আর
বাঁচবোনা। আমার এতে কোন দুঃখ নেই।
দুঃখ তোর মনে কষ্ট দিয়েছি। জানিস
দোস্ত আমার মতো অপরাধী এই পৃথিবীতে
আর কেউ নেই হয়তো।
.
সজিব কী বলছিস তুই কী এমন অন্যায়
করছিস। আরে বন্ধুত্বের মাঝে ওমন অপরাধ
ক্ষমা করা যায়। আর তুই কাঁদছিস কেনো
কাঁদবিনা প্লিজ। মনে মনে ভাবছি খুন
করতে এসে নিজেই খুন হয়ে যাচ্ছি মনে হয়
বন্ধুত্বের কাছে।পাপী হলেও যে তাকে
নিজের ভাইয়ের মতো মনে করতাম।হঠাৎ
সজিব দু"পা জাপটে ধরে বলতে লাগলো"
দুস্ত তোর মতো বন্ধুর পায়ে ধরার যোগ্যতাও
আমার নেই তবুও বলছি আমাকে ক্ষমা করে
দে।"
.
কি করছিস, ওঠ বলছি তোর স্হান পায়ে নয়
বুকে। তুই যে অপরাধ বুঝতে পারছিস এতেই
আমি খুশি।
.
দোস্ত তুই সত্যি মহান" জানিস আমি
পৃথিবীর শেষ্ট পাপী। নিজের বন্ধুর সাথে
বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। শুন তাহলে,মরার
আগে না জানা কিছু পাপের কথা তোকে
বলে যায়, পারলে ক্ষমা করে দিস।
.
সত্যি বলতে তোর সাথে ফ্রেন্ডশীপ করি,
তোর বোন কণাকে দেখে। তারপর তোদের
ফ্যামিলির একজন হয়ে যায়। আমার সবসময়
মেয়েদের দেহের উপর লোভ ছিল। আমার এ
বয়সে ৪৩ জন মেয়েকে নষ্ট করেছি। কণাকে
বিয়ের কথা বলে দিনের পর দিন ভোগ
করেছি।
.
কথাগুলো শুনে নিজের অজান্তে চোখ দিয়ে
পানি পড়ছে। বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে। বারবার
কণার হাসিমাখা মুখটা ভেসে আসছে।
তারপরও মনকে কন্টোল করে বললাম,তারপর
কথার সাথে কীভাবে কী হলো?
.
দোস্ত কণার সাথে মজা করার পর আর
ভালো লাগেনি। তাই কণার পাশা- পাশি
আরেকটা খুঁজি এবং পেয়েও যায়। আমি
জানতাম তুই কথাকে জীবনের থেকে বেশি
ভালোবাসতি। আমি গ্রাম থেকে এসে
কথার সাথে, কী কী হয়েছে তোর সব
জেনেও না জানার ভান করেছি। এরপর তুই
প্রতিদিন কথাকে, নামছাড়া চিঠি দিতি,
ফেসবুকে তোর আইডির গল্প পড়ে, তোকে না
দেখেই কথা তোর প্রেমে হাবি-ডুবু খায়।
এবং তুই যদি ভালোনাবাসিস, আত্মহত্যা
করবে কথা। এসব জেনে, সময় মতো, তুই
যেদিন কথার সাথে মিট করতে যাস সেদিন,
চালাকি করে নিঁখুত অভিনয়টা করি।আমি
জানি তুই আমার জন্য তোর ভালবাসা
কুরবাণি দিবি তুই তাই করলি। কথার সাথে
রিলেশন হয়ে যায়। তারপর থেকে চুটিয়ে
প্রেম। কিন্তু কথা অনেক চালাক বিয়ের
আগে কিছু দিতে নারাজ। তাই কথাকে
ভুলানোর জন্য তাদের বাসার নিচে
দাঁড়িয়ে থাকতাম। আর হঠাৎ একদিন দেখি,
তোবা আমাকে ফলো করছে। আমিও তার
সঙ্গ দিলাম। তোবা আমাকে প্রপোজ করলে
আমি কথার কাছাকাছি যাবার জন্য রাজি
হয়ে যায়। আর ফ্রি জিনিস ছাড়া
ভালোনা। তোবাকে নিয়ে মন মত কয়দিন
ইনজয় করতেই, বোকা মেয়ে অন্তঃসন্তা
হয়ে যায়। যার দরুণ এবারশন করতে হয়।
ডাক্তার বলেছে এবারশনের পর থেকে ওই
মানসিক অসুস্থ। বাকি রইলো কথা, কথার
শরীরের প্রতি লোভ দিন দিন বাড়তে
লাগলো আমার। কিন্তু সালি অনেক চালাক
বিয়ের আগে কিছু দিতে নারাজ, তাই
মিথ্যা কাজি অফিসে নিয়ে গোপনে বিয়ে
করি।যা নামেমাএ তারপর কথার সে
কাক্ষিত দেহটাকে নিজের করে পায়।
কিন্তু এত পাপ যে আল্লাহও সয় না তাই মা
- বাবাকে কেড়ে নিলো। মরণব্যাধি
ক্যান্সার হয়েছে শরীরে, তাই আর
বাঁচবোনা ক্ষমা করে দেস।
.
সজিবেরর দিকে এখন তাকিয়ে নিজেকে
ঠিক রাখতে পারলামনা। ফেলকি দিয়ে
রক্ত বের হচ্ছে ছুড়িটা......
.
.
♥-----"To be Continue"---♥