এই তুমি এই রুমে কেন? (আমি)
- কেন কে থাকার কথা? (হবু শালি)
- তোমার আপু কই?
- খুজে দেখেন....
- এহহহহ!!!! আমার কি ঠেকা লাগছে?
- আপনার ঠেকা না তো কি আমার ঠেকা?
- তা নয়ত কি? তোমার বোনরে বিয়ে না করলে কি
এমন হবে আমার?
- ওমা!!!! তাই?? তা কাকে বিয়ে করবেন শুনি?
- কেন তুমি তো আছই...
- যান!!! এভাবে বলবেন না। লজ্জা লাগেনা বুঝি....
- না সিরিয়াসলি তুমি অনেক কিউট। তোমার আপু থেকে
কিন্তু আমার তোমাকে বেশি ভাল লাগে। (ডাহা মিথ্যা!!!!
শুধুই পাম মারতেছি)
- আগে বলবেন না। তাহলে তো আমিই আপনাকে
বিয়ে করতাম। আপসুস!!! এখনতো দেরি হয়ে
গেছে। চলুন পালিয়ে যাই....
- কি বল?? তোমার আপু শুনলে মেরে ফেলবে।
- আরে জানবেই না। আর পালিয়ে গেলে আমাদের
কই পাবে। ( হায়রে!!! খাইছে!!! মাইয়া তো সিরিয়াস
হইয়া গেল। এখন কি করি)
- না না আপু। তুমি মাত্র ফাইভে পড়। আরেকটু বড় হও।
তারপর দুজনে পালাব।
- আম্মুউউউউউউউ..... (এইরে!!!! কেদে দিছে।
প্রিয়াসরে তুই শেষ)
- কি হলো? কাদছ কেন?
- আপনি আমাকে আপু বললেন কেন? আপনি না
আমাকে ভালবাসেন?
- এইইইইই!!!! ভালবাসি কখন বললাম?
- ঐযে বললেন ভাল লাগে।
- ওটা তো এমনিই বলছি।
- কি এমনি? আম্মুউউউউউউ....
- আরে না না। ভালবাসিতো। অনেক ভালবাসি। (কোন
চিপায় পড়লাম)
- গুড বয়!!!! আমরা কালই পালাচ্ছি।
- কাল না। কিছুদিন যাক...
- আম্মুউউউউউউ....
- না না কালই পালাব।
- হুম!!! আমি কাপড় গুছাচ্ছি। আপনিও রেডি হন।
- আচ্ছা.....
.
নিজের কপালে নিজে জুতা দিয়া মারতে মন
চাইতেছে। এত্ত পাম না মারলে কি হইত। বেশি পাকনামি
করতে গেলে এমনি হয়। প্রিয়াস!! সময় থাকতে কিছু
কর। নইলে ইজ্জত বা সম্মান কোনটাই থাকবে না।
.
আসছিলাম মেঘাকে একটু দেখব বলে। মেঘা আমার
হবু বউ। মেঘা আমার এক্স জিএফও। ওর সাথে
ব্রেকাপ হয়ে গেলেও দুর্ভাগ্যবশত ওর সাথেই
বিয়ে ঠিক হলো। তাই আবার প্রেম করার চেষ্টা
করছি ওর সাথে। নইলে তো বিয়ের পর প্রতিদিন
ফাসিতে ঝুলাবে। এমনিতেই রেগে আছে আমার
উপর। আর এখন যদি জানতে পারে যে আমি ওর
ফাইভে পড়ুয়া ছোট বোন রিশার সাথে লাইন মারছি
তবে তো আজ এই ছয়তলা থেকে নিচে ফেলে
দিবে। হইছে আর ভাবতে পারতেছি না। রুম থেকে
বেরোনো দরকার। পিছনে ঘুরতেই.....
.
- ওমাগ!!! কে আপনি??? প্লিজ আমাকে মারবেন না
প্লিজ। আমি কোন কিছু করি নাই। রিশার সাথে একটু মজা
করছিলাম। এই ছোট বিষয়ের জন্য আমাকে মারবেন
না প্লিজ। প্লিজ.... (আমি)
- প্রিয়াস মজা ছাড়। আমি মেঘা। (মেঘা)
- ওহহহহহ!!! তুমি??? সরি মজা করছিলাম। (জি না!!!! অনেক
ভয় পাইছি। প্রেসটিজ বাচানোর জন্য মজা করার ভাব
নিলাম। মুখে কালা কি জানি লাগাই রাখছে। পুরা পেত্নীর
মত লাগতাছে)
- আমি জানি সেটা।
- মুখে এসব গোবরের মত কি লাগাইছ?
- হুয়াট ডু ইউ মিন বাই গোবর? এসবকে ফেস ক্লিনার
বলে....
- ওহহহহ!!!! এগুলা ফেচ কিলিনার..... আগে বলবা
তো।
- ফেচ কিলিনার না ফেস ক্লিনার।
- হ বুঝছি। যেটা দিয়া কালা মানুষ সাদা হয় আরকি। এই আমার
না একটা নাইজেরিয়ান ফ্রেন্ড আছে। ওরে দিলে
সাদা হবে তো?
- ইইইইইই!!! তোমারে কিন্তু আমি....
- থাক ভয় পাইছি।
- ঐ তুমি রিশারে কি বলছিলা?
- কবে? কখন? কিভাবে?
- রিশা ফেসবুক চালায় না যে ফেসবুকে বলবা। একটু
আগে কি বলছিলা?
- কি জানি!!!!! ওহহহহ হ্যা!!! মনে পড়ছে। দুপুরে কি
দিয়ে খাইছে সেটা জিজ্ঞেস করছি।
- এখন সকাল। দুপুর এখনো হয় নাই।
- মানে গতকাল দুপুরে কি খাইছে সেটা জিজ্ঞেস
করছিলাম।
- ওহহহহ তাই? আমি কি যেন পালানোর কথা শুনছিলাম....
- ওহহহহ হ্যা!!! মানে ও জানি কোন মুভিতে দেখছে
নায়ক নায়িকা পালিয়ে বিয়ে করছে।
- আবার কাকে যেন বিয়ে না করার কথা শুনছিলাম।
- হ্যা। ঐ মুভিতে নাকি নায়িকার বাবা মা বিয়ে করে নাই।
- কি!!!!! তাহলে নায়িকা কেমনে....
- তাইতো..... ভাবার বিষয়...
- আর কত্ত মিথ্যা বলবা?
- কই মিথ্যা বললাম?
- আমি সব শুনেছি।
- ছিঃ!!!! পঁচা মেয়ে। চুপিচুপি অন্যের কথা শুনে।
- আমি পঁচা মেয়ে!!!!! যাও পঁচা মেয়েকে তোমার
বিয়ে করতে হবে না।
- আমি কি সাধে বিয়ে করতেছি নাকি। বাপ মায় জোর
করতেছে তাই। (আস্তে করে)
- কি বললা?
- না মানে তাইলে আর কি? রিশাকে নিয়ে পালাতেই
হবে।
- তোমার পা ভেঙ্গে ফেলব।
- পা কি দোষ করল?
- তাহলেই আর পালাতে পারবেনা।
- তুমি পারবা?
- অবশ্যই ।
- নিষ্ঠুর....
- তোমার থেকে কম।
- হুম জানি।
- আচ্ছা তোমার জিএফের কি খবর?
- জিএফের আর খবর। বিয়ে হয়ে যাচ্ছে এখন
জিএফ দিয়ে কি হবে।
- আহারে....
- মজা নিও না। আচ্ছা আমি আরেকটা বিয়ে করলে
কেমন হয়?
- কি বললা?
- মানে তোমার একটা সতীন হলে কেমন হয়?
- লাস্ট কবে মাইর খাইছিলা মনে আছে?
- হুম। স্নেহার হাতে গতকাল। তবে মিষ্টি মাইর।
(স্নেহা আমার বর্তমান জিএফ)
- তুমি ঠিক হবা না। এ বিয়ে হবে না।
- সত্যি?
- তুমি খুশি?
- অবশ্যই। অনেক। আমি স্নেহাকে খুশির সংবাদটা দিচ্ছি
দাড়াও।
- হুম। যাও।
- দেখ। ডিসিশন পাল্টাবা না কিন্তু।
- মোটেও না। তুমি জান আমি কতটা সিরিয়াস।
- ওকে গেলাম।
- হুম। আর এসো না।
- বাই।
.
মেঘার কথাগুলোতে কেমন জানি লাগল। ও কি সত্যিই
না করে দিবে। একটুও ভালবাসেনা আমাকে।
আমিতো ভাবছিলাম ও এখনো ভালবাসে আমাকে।
আমিতো ওকে ভালবেসে ফেলছি। আর ঠিকই
তো করেছে। একসময় আমিও ওর ইমোশনের
দাম দেই নি। ও কেন দিবে।
.
মনটা এখন খুব খারাপ। মেঘাকে দেখতে প্রতিদিন ওর
বাসায় যাওয়া হয় না। কারণ ও না করেছে ওর বাসায়
যেতে। আগে বাসার সামনে দাড়াতাম। এখন সেটাও
করিনা। আজ স্নেহার সাথে দেখা করার কথা। যথারীতি
গেলাম। কিন্তু অন্যদিনের মত প্রাণবন্ত নই আমি।
ভেতরটা কেন জানি দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। বারবার
মনে একটা কথাই আসছে "মেঘা আমাকে ভালবাসে
না"। স্নেহার কাছে যেতেই স্নেহা বলে উঠল...
.
- একদম বসবেনা। (স্নেহা)
- কেন কি করলাম আবার? (আমি)
- কি করছ? দেখাচ্ছি কি করছ....
.
স্নেহা ওর ফোনে কি যেন খুঁজছে। এবার আমার
সামনে কিছু ছবি ধরল। এসব কি!!! কেমনে সম্ভব!!!
আমার সাথে মেঘার সেলফি। এসব স্নেহার ফোনে
কিভাবে আসল। কে দিছে ওরে এসব।
.
- এসব তুমি কিভাবে পেলে? (আমি)
- সেটা তোমার জেনে কি লাভ? আগে বল এটা
কে? (স্নেহা)
- আগে বল কে দিয়েছে?
- এই মেয়েটাই দিয়েছে।
- কি!!!! সত্যি? কখন?
- আজ। দিয়ে বলল ও নাকি তোমার হবু বউ। আমি যেন
তোমার সাথে আর না মিশি।
- সত্যি?
- হুম। কিন্তু তুমি এত্ত খুশি হচ্ছ কেন? ও কে?
- ও আমার হবু বউ।
- কি? তুমি আমার সাথে চিট করলে? লুচু, লম্পট,
বদমাইশ........ ব্রেকাপ তোর সাথে...
- থ্যাংকস।
- জীবনেও সুখ পাবিনা।
- তোর মত শকুনের দোয়ায় আমি গরু মরমু না।
- দেইখা নিমু তোরে।
- ছবি তুইলা দিমু? সারাদিন দেখবি।
- লুচ্চা একটা.....
- হেহেহে!!! সেম টু ইউ....
.
স্নেহা আমাকে এত্ত গালি দিল। কিন্তু আমার মোটেও
খারাপ লাগছে না। কেন জানি মনে হচ্ছে আমি
মেঘাকে ফিরে পেয়েছি। মেঘাও আমাকে
ভালবাসে। নইলে মেঘা কেন স্নেহাকে এসব ছবি
পাঠাবে আর এসব বলবে।
.
তিন ঘন্টা যাবত মেঘাদের বাসার সামনে দাড়িয়ে আছি।
কেউ বাইরে আসছে না এমনকি বারান্দায়ও না। অন্যদিন
দাড়ালে এত্তক্ষনে দশবার মেঘাকে দেখা যায়।
আজ আসছে না। হঠাৎ মনে হলো গেট দিয়ে কে
যেন বেরোচ্ছে। মেঘা..... সোজা আমার
সামনে এসে দাড়াল। জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে
আছে। তবে চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছে
অনেক খুশি।
.
- এটা কি হলো? (আমি)
- কোথায় কি হলো? (মেঘা)
- স্নেহাকে এসব পাঠানোর মানে কি?
- কি পাঠাইছে? আর কে?
- তুমি স্নেহাকে আমাদের দুজনের সেলফি পাঠাইছ
কেন?
- পাঠাইছি কে বলল? পাশে বসে শেয়ারইটের
মাধ্যমে দিয়ে আসছি।
- সেটা কেন?
- মন চাইছে তাই।
- মন চাইলেই হবে না। স্নেহা আমার জিএফ।
- আমার হঠাৎ মনে হলো যে আমার হবু বরের অন্য
কোন জিএফ থাকতে পারবে না। একমাত্র জিএফ হব
আমি। তাই দিয়ে আসছি।
- হবু বরটা কে?
- যার জিএফের সাথে ব্রেকাপ ঘটাইছি।
- কিভাবে হলাম। সেদিন না বললেন বিয়ে ক্যান্সেল।
- তো কি হইছে? এখন বলতেছি বিয়ে হবে।
- সরাসরি বললেই পারেন যে " প্রিয়াস তোমাকে
ছাড়া আমার চলবে না। ভালবাসি তোমাকে"।
- বুঝেন যখন বলেন কেন?
- তাও তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই। অনেকদিন
তোমার মুখ থেকে ভালবাসি শুনিনা।
- না বলব না।
- প্লিজ....
- না
- তাহলে আর কি। দেখি স্নেহাকে বুঝিয়ে....
- বলছি তো। এমন করছ কেন...
- হুম বল।
- ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি..... হইছে?
- হুম।
- এবার তোমার উত্তরটা....
- ভালবাসিনা, বাসবও না, বাসার চেষ্টাও করব না।
- বিয়ে ক্যান্সেল।
- এই না না।
- ভালবাসিতো। অনেক অনেক।
- হুম গুড বয়। চল বাসায় চল।
- না। তুমি না করেছিলে।
- এহহহ!!! সাহেব সব মনে রেখেছে।
- হুম সব মনে থাকে।
- বিয়ের পরও স্মৃতিশক্তিটা যেন এমনি থাকে।
- থাকবে। কিন্তু তোমাকে মনে রাখতে পারব না।
- কি???
- হ্যা!!! কারণ আমি তো তোমাকে ভুলবই না।
- স্টুপিড একটা।
- পেত্নী একটা।
- হুম!!! বিয়েটা হোক। কে পেত্নী বুঝাব নে।
- থ্রেড দিচ্ছ??? প্রিয়াসকে থ্রেড??? হুহ..
- হুম দিচ্ছি। কি করবা?
- ভালবাসব না।
- মেরে ফেলব।
- বিধবা হবা।
- না। হবনা।
- গুড।
- হু।
- আচ্ছা শোননা রিশার কি খবর?পালানোর জন্য রেডি
তো?
- রেডি হলে কি করবা? পালাবা?
- অবশ্যই।
- তুমি মানুষ হবা না। ব্রেকাপ....
- বিয়ে ক্যান্সেল নাকি?
- না। তোমাকে ঠিক করতে হবে তো.....
.
যাক তাহলে মেঘা আমাকে ঠিক করার দায়িত্বটা
নিচ্ছেই। বিয়ে হব্বে।।। হুহ।।।। কেউ আসবেন না
কিন্তু।।।। সবাইর.
.
খাওয়ানোর মত টাকা নাই।।।...