চিনি মসজিদ
চিনি মসজিদ (‘চীনা মসজিদ’ নামেও পরিচিত) রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে অবস্থিত। মসজিদটি নীলফামারী সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সৈয়দপুরে অবস্থিত। মসজিদে একসঙ্গে প্রায় পাঁচ শতাধিক লোক নামাজ আদায় করতে পারে।
ইতিহাস
১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী ও হাজী মুকু নামের দুজন স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দপুর শহরের ইসবাগ এলাকায় ছন ও বাঁশ দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় তা টিনের ঘরে রূপান্তরিত করা হয়। পরে এলাকার লোকেরা মসজিদটি নির্মাণের লক্ষ্যে একটি তহবিল গঠন করেন। এরপর শুরু হয় মসজিদের নির্মাণ কাজ।
১৯২০ সালে হাজি হাফিজ আবদুল করিমের উদ্যোগে মসজিদটির প্রথম অংশ পাকা করা হয়। এই সময় এর দৈর্ঘ্য ছিলো ৪০ ফুট ও প্রস্থ ৩৯ ফুট। নকশা ওকারুকাজের জন্য কলকাতা থেকে মর্মর পাথর ও চিনা মাটি দিয়ে তৈরি হয়। ১৯৬৫ সালে মসজিদের দক্ষিণ দিকের দ্বিতীয় অংশ পাকা করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আমলে মসজিদের উত্তর দিকে তৃতীয় অংশ তৈরি হয়।
২০২১-এ মসজিদের চিনা পাথর খসে পরছে এবং গম্বুজে ফাটল ধরেছে।
মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে মসজিদের দেয়ালে চিনামাটির থালার ভগ্নাংশ ও কাঁচের ভগ্নাংশ বসানো হয়। এই পদ্ধতিকে ‘চিনি করা’ বা ‘চিনি দানার কাজ করা’ বলা হয়। এখান থেকেই মসজিদের নাম হয় চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ। সৌন্দর্যের কাজে ব্যবহৃত চিনামাটির উপকরণসমূহ কলকাতা থেকে আনা হয়। ঐতিহাসিক এই মসজিদের নকশা করেন মো. মোখতুল ও নবী বক্স।
মসজিদ নির্মাণে মুঘল স্থাপত্য শৈলী অনুসরণ করা হয়েছে।[৪] মসজিদের দেয়ালে ফুলদানি, ফুলের ঝাড়, গোলাপ ফুল, একটি বৃত্তে একটি ফুল, চাঁদতারাসহ নানা চিত্র অঙ্কিত আছে। মসজিদ তৈরিতে প্রচুর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়। ২৭টি মিনার রয়েছে মসজিদটিতে। ছোট ছোট ৩২টি মিনারসহ ৩টি বড় গম্বুজ। মসজিদটি দ্বিতল। প্রবেশ পথের উপরে আজান দেবার জন্য মিম্বার রয়েছে। মসজিদে ২৪৩টি শংকর মর্মর পাথর রয়েছে। মসজিদের বারান্দা সাদা মোজাইকে বাঁধানো। মসজিদের সম্পূর্ণ অবয়ব রঙিন পাথরে মোড়ানো। মসজিদটি দুই ধাপে বর্ধিত করা হয়। মসজিদে প্রবেশের জন্য উত্তরে ও দক্ষিণে একটি করে দরজা রয়েছে। মসজিদের দোতলায় একটি ভবনসহ পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

image
image
image
image