Discover postsExplore captivating content and diverse perspectives on our Discover page. Uncover fresh ideas and engage in meaningful conversations
⬛প্রশ্ন: নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয়ে কাপড় ভিজা দেখলে কি করবে?
✅উত্তর: ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে কাপড় ভিজা পেলে তিনটি অবস্থা হতে পারেঃ
প্রথম অবস্থাঃ নিশ্চিত হবে যে, এই ভিজা বীর্যপাতের কারণে হয়েছে। তখন স্বপ্ন স্মরণ থাক বা ভুলে যাক গোসল করা ফরয।
দ্বিতীয় অবস্থাঃ নিশ্চিত হবে এটা বীর্য নয়। তখন গোসল করা ফরয নয়। কিন্তু ঐ ভিজা স্থান ধৌত করা ওয়াজিব। কেননা তখন উহা পেশাবের বিধানের মধ্যে শামিল হবে।
তৃতীয় অবস্থাঃ ভিজাটা কি বীর্যের কারণে না অন্য কারণে বিষয়টি অজানা।
তখন ব্যাখ্যার দাবী রাখেঃ
প্রথমতঃ যদি স্মরণ থাকে যে স্বপ্নে কিছু দেখেছে, তাহলে উক্ত ভিজা বীর্য ধরে নিয়ে গোসল করবে। কেননা উম্মু সালামার হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। তিনি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে প্রশ্ন করলেন, পুরুষ যা স্বপ্নে দেখে থাকে নারী যদি তা দেখে, তবে তাকেও কি গোসল করতে হবে? তিনি বললেন, “হ্যাঁ, যদি সে পানি দেখে।”
? মুসলিম, অধ্যায়ঃ হায়েয, অনুচ্ছেদঃ নারীর বীর্য নির্গত হলে গোসল ওয়াজিব হয়ওয়ার বর্ণনা। হা/৩১১।
এথেকে বুঝা যায় স্বপ্নে কিছু দেখে যদি পানির ভিজা পাওয়া যায়, তবে গোসল করা ফরয।
দ্বিতীয়তঃ স্বপ্নে কিছুই দেখেনি। যদি নিদ্রা যাওয়ার পূর্বে সহবাসের চিন্তা মনে এসে থাকে, তবে উক্ত ভিজাকে মযীর ভিজা মনে করবে।
কিন্তু ঘুমানোর পূর্বে সহবাসের কোন চিন্তা মাথায় না আসলে কি করতে হবে সে ক্ষেত্রে মতভেদ রয়েছেঃকেউ বলেছেন, সতর্কতা বশত: গোসল করা ওয়াজিব।কেউ বলেছেন, ওয়াজিব নয়। এটাই বিশুদ্ধ কথা। কেননা আসল হচ্ছে যিম্মামুক্ত থাকা।
যাজাকাল্লাহু খাইরান।
⬛প্রশ্ন: গোসল করার পদ্ধতি কি?
✅উত্তর: গোসল করার দু’টি পদ্ধতি রয়েছেঃ
প্রথম পদ্ধতিঃ ওয়াজিব পদ্ধতি। আর তা হচ্ছে সমস্ত শরীরে পানি প্রবাহিত করা। অবশ্য কুলি করা ও নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়া এর অন্তর্গত। অতএব যে কোন প্রকারে সমস্ত শরীরে পানি ঢালতে পারলে বড় নাপাকী দূর হয়ে যাবে এবং পবিত্রতা পূর্ণ হয়ে যাবে।
কেননা আল্লাহ্ বলেন, وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا “তোমরা যদি অপবিত্র হও, তবে পবিত্রতা অর্জন কর।”
(সূরা মায়িদা- ৬)
দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ পরিপূর্ণ পদ্ধতি। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেভাবে গোসল করেছেন ঠিক সেইভাবে গোসল করা। নাপাকী থেকে গোসল করতে চাইলে প্রথমে হাত দু’টি কব্জি পর্যন্ত ধৌত করবে, তারপর নাপাকী সংশ্লিষ্ট স্থান এবং লজ্জাস্থান ধৌত করে নিবে। এরপর পরিপূর্ণরূপে সঠিক পদ্ধতি অনুযায়ী ওযু করে নিবে। তারপর মাথায় তিনবার পানি ঢেলে তা ভালভাবে ভিজিয়ে নিবে। সবশেষে সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে ধুয়ে নিবে। এটাই গোসলের পরিপূর্ণ পদ্ধতি।
যাজাকাল্লাহু খাইরান।
⬛প্রশ্ন: ঠান্ডার সময় কেউ যদি নাপাক হয়, তবে কি সে তায়াম্মুম করবে?
✅উত্তর: নাপাক হলেই গোসল করা ওয়াজিব।
কেননা আল্লাহ বলেন,
وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا
“তোমরা যদি অপবিত্র হও, তবে পবিত্রতা অর্জন কর।” (সূরা মায়িদা- ৬)
কিন্তু রাতে যদি শীত প্রচন্ড হয় এবং ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে সক্ষম না হয়, তবে সম্ভব হলে পানি গরম করে নিবে। কিন্তু পানি গরম করার ব্যবস্থা না থাকলে তায়াম্মুম করবে এবং নামায আদায় করবে। কেননা আল্লাহ্ বলেন,
وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنْ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمْ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ مِنْهُ مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ حَرَجٍ وَلَكِنْ يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
নাপাকী থেকে তায়াম্মুম করার পর তোমরা যদি অসুস্থ হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ পেশাব-পায়খানা করে অথবা স্ত্রীদের স্পর্শ করে, তারপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর। স্বীয় হস্তদ্বয় ও মুখমন্ডল মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে কোন অসুবিধায় ফেলতে চান না, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান এবং তাঁর নে’য়ামত সমূহ পূর্ণরূপে দান করতে চান, যাতে তোমরা তাঁর কৃতজ্ঞতা করতে পার।”
(সূরা মায়েদা-৬)
পানি না পাওয়া পর্যন্ত সে পবিত্রই থাকবে। পানি পেয়ে গেলে গোসল করা ওয়াজিব।
কেননা সহীহ বুখারীতে ইমরান বিন হুছাইন কর্তৃক দীর্ঘ হাদীছে প্রমাণিত হয়েছে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা জনৈক ব্যক্তিকে দেখলেন, মানুষের সাথে নামায আদায় না করে আলাদা হয়ে বসে আছে। তিনি প্রশ্ন করলেন, “নামায পড়লে না কেন?” লোকটি বলল, আমি নাপাক হয়ে গেছি, কিন্তু পানি নেই। তখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “তুমি মাটি ব্যবহার কর, সেটাই তোমার জন্য যথেষ্ট।” এরপর পানি এল, তখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে পানি দিয়ে বললেন, এটা তোমার শরীরে বইয়ে দাও।
?বুখারী, অধ্যায়ঃ তায়াম্মুম, অনুচ্ছেদঃ পানির বদলে পবিত্র মাটিই মুসলিম ব্যক্তির ওযু। হা/৩৪৪।
এ থেকে বুঝা যায়, পানি পেলেই তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা তায়াম্মুমকারীর জন্য ওয়াজিব। চাই ছোট নাপাকীর ক্ষেত্রে হোক বা বড় নাপাকীর ক্ষেত্রে।
তায়াম্মুমকারী বড় নাপাকী থেকে পবিত্রতা অর্জন করলে পুনরায় নাপাক না হওয়া পর্যন্ত বা পানি না পাওয়া পর্যন্ত পবিত্র অবস্থাতেই থাকতে পারবে। তাই প্রত্যেক নামাযের জন্য বারবার তায়াম্মুম করবে না। অবশ্য ছোট নাপাকী হলে তা থেকে পবিত্রতার জন্য তায়াম্মুম করবে।
যাজাকাল্লাহু খাইরান।
Md Mujahidul Islam Jihad
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?