অ্যাডিলেডে কাল ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়ের ঘটনা এখন ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সাধারণ ক্রিকেট অনুসারীদের মুখে মুখে ভারতের ৩৬ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার কাহিনি। বিষয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা আর বিশ্লেষণ।
শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ রথী-মহারথী এই ব্যাটসম্যানদের আমলে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে ধরা হতো বিশ্বসেরা। দ্রাবিড়-লক্ষ্মণরা গেছেন, কিন্তু ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে তার প্রভাব পড়তে দেননি বিরাট কোহলি-মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। খুব বেশি দিন হয়নি ধোনিও জাতীয় দলকে বিদায় জানিয়েছেন। কিন্তু এরপরও ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে কোনো দীনতা নেই। পূজারা, কোহলি, রাহানে...ভারতের এই ব্যাটিং লাইনআপকেও বিশ্বসেরা মানেন অনেকে।
সেই ব্যাটিং লাইনআপই কিনা কাল অ্যাডিলেডে দিবারাত্রির টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মুখ থুবড়ে পড়ল। চূর্ণ হয়ে গেল ভারতের ব্যাটিং-গর্ব। এমন ঘটনা এর আগে কবে কে দেখেছে! ১৯৭৪ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪২ রানে অলআউট হয়েছিল ভারত। এত দিন সেটাই ছিল ভারতের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোর।
নিকট অতীতে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ এভাবে ভেঙে পড়তে দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব। অ্যাডিলেডে কোহলিদের এমন বিপর্যয় দেখে বিস্মিত হয়েছেন প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়েরাও। এর কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটাররাও কম বিস্মিত নন। টেন্ডুলকার-সৌরভ-দ্রাবিড়দের বিপক্ষে খেলা বিশ্বকাপজয়ী পেসার ডেমিয়েন ফ্লেমিংকে একটা প্রশ্ন করেছিল বিবিসি—এমন বিপর্যয় এর আগে কবে দেখেছেন তিনি?
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসারের বয়স এখন ৫০ বছর। স্মৃতি হাতড়ে ৩৮ বছর আগের একটি ঘটনা মনে করতে পারছেন ফ্লেমিং। তখন তিনি অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১২ দলে খেলেন। ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয় নিয়ে ফ্লেমিং বলেছেন, ‘আমি ভারতের ৩৬ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখেছি। এটা অস্বাভাবিক একটি ব্যাপার। সর্বশেষ আমি এমনটা কবে দেখেছি? যদ্দূর মনে করতে পারি, অনূর্ধ্ব-১২ দলে খেলার সময়।’
ভারতের এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ে অনেকেই ব্যাটসম্যানদের দোষ দেখছেন। অনেকে আবার বলছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা অসাধারণ বোলিং করেছেন। ভারতের সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কারই যেমন ব্যাটসম্যানদের দায় দিচ্ছেন না। কেউ কেউ আবার পিচ ও কন্ডিশনের কথা বলছেন। ফ্লেমিং অবশ্য উইকেটের কোনো সমস্যা দেখছেন না।
বিবিসিকে ফ্লেমিং বলেছেন, ‘উইকেট অতটা ভয়ংকর ছিল না। তবে বোলাররা কোনো বাজে বল করেনি।’