গত মাসেই খবর বেরিয়েছিল। ভয়ঙ্কর খবর। রাভিন্দর ডান্ডিওয়াল নামে এক লোকের ফেসবুক প্রোফাইলে পরিচয় তিনি 'ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল'এর প্রধান। এই ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল জিনিসটা কি? জানা গেল লোকটা বড় মাপের জুয়াড়ি। ক্রিকেট ও টেনিসে বিস্তর ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত এই ডান্ডিওয়ালকে আগে থেকেই নজরে রেখেছিল আইসিসি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ পাতানো চক্রের 'কেন্দ্রীয় চরিত্র' হিসেবে তাঁকে চিহিৃত করেছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত এই ডান্ডিওয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঞ্জাব পুলিশ কাল তাঁকে গ্রেপ্তারের খবরটি নিশ্চিত করেছে।
কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় ভুয়া টিটোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজনের খবর দিয়েছিল সংবাদমাধ্যম। এর হোতা ছিলেন ডান্ডিওয়াল। গত মাসের শেষ দিকে টুর্নামেন্টটি হয়েছিল ভারতের চন্ডিগড়ের এক গ্রামে। কিন্তু ডান্ডিওয়াল অনলাইনে দেখান তা আয়োজিত হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। তখন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশ হয়েছিল কাজটি সম্ভবত ভারতের কোনো বাজিকরের। করোনাভাইরাস মহামারিতে তিলকরত্মে দিলশান, পারভেজ মাহরুফ, অজন্তা মেন্ডিসদের নিয়ে সেই ভুয়া টুর্নামেন্ট আয়োজনের খবর প্রকাশ হওয়ার পর গ্রেপ্তার হলেন ডান্ডিওয়াল। অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম 'সিডনি মর্নিং হেরাল্ড' গত মাসে জানিয়েছিল, এই ডান্ডিওয়াল থাইল্যান্ড, ব্রাজিল ও মিসরে টেনিস ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত।
ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ায় নানা রকম টিটোয়েন্টি লিগ আয়োজন করে ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত ডান্ডিওয়াল। এর আগে আফগানিস্তানে আফগান প্রিমিয়ার লিগ এবং নেপালে এশিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আয়োজনের সঙ্গেও ছিলেন তিনি। রাজস্থানের হনুমানগড়ে জন্ম নেওয়া ডান্ডিওয়াল থাকতেন মোহালিতে। পুলিশ তাঁকে রোববার গ্রেপ্তার করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। আজ তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা বিসিসিআইয়ের একটি দলের। মোহালি পুলিশ কর্মকর্তা কুলদ্বীপ সিংয়ের চোখে ডান্ডিওয়াল 'ম্যাচ পাতানো কিংবা ভুয়া ম্যাচ আয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ।' অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পুলিশ টেনিস ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে ডান্ডিওয়ালকে খুঁজছে। কুলদ্বীপ বলেন, 'আমরা তাদের সঙ্গে তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে যোগ দিতে প্রস্তুত।'
শ্রীলঙ্কায় সেই ভুয়া টুর্নামেন্টের নাম ছিল 'ইউভিএ টিটোয়েন্টি লিগ'। কুলদ্বীপ জানান, চন্ডিগড়েরর সাওয়ারা গ্রামে স্ট্রোকার্স ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের মাঠ ভাড়া করে টুর্নামেন্টটি আয়োজনের কথা স্বীকার করেছেন কুলদ্বীপ। 'তারা মাঠ ভাড়া করে খেলোয়াড় ও কোচ সংগ্রহ করে ম্যাচ চালাত। তা ফ্যানকোড, ডায়মন্ড, স্কাই, লোটস, টেনবেট, স্পিন অ্যাপসের মাধ্যমে সম্প্রচার করত। দিল্লিতে কিছু বাজিকরের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে। আমরা ঠিক নিশ্চত নই সে এই দলের সদস্য নাকি নিজেই আলাদা কোনো চক্রের হোতা।'