করোনা সংক্রমণের তীব্র গতির মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণের কৌশল ভালো কাজ করছে। ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই ভাইরাসটি একদম ক্ষতিকর নয়।
৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হোয়াইট হাউসের আঙিনায় নিয়ন্ত্রিত এক সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব কথা বলেন।
যদিও হোয়াইট হাউসের করোনা টাস্কফোর্সের সদস্য ও সংক্রামক রোগের শীর্ষ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি গত সপ্তাহেই বলেছেন, আমেরিকা করোনা নিয়ন্ত্রণে সঠিক পথে নেই। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি নাজুক হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ফাউসি।
কিন্তু ভাষণে ট্রাম্প বলেন, গড়ে এক লাখ সংক্রমণের মধ্যে ১০২ জনের কিছু বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। করোনাভাইরাস শনাক্তে বিশ্বের সবচেয়ে ভালো টেস্টিং যুক্তরাষ্ট্রে হচ্ছে। এ বছর শেষ হওয়ার আগেই প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন চলে আসার আশা করছেন তিনি।
দেশটির ২৪৪তম স্বাধীনতা দিবসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমেরিকার বীরেরা নাৎসিকে পরাজিত করেছে। ফ্যাসিস্টদের হতাশ করেছে, কমিউনিস্টদের পরাজিত করে আমেরিকার মূল্যবোধ ও নীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে। আমেরিকার বীরেরা জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের জীবনের শেষ পর্যন্ত তাড়া করেছে।
নৈরাজ্যবাদী, উত্তেজনা সৃষ্টিকারী ও লুটতরাজকারীদের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, বহু ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো ধারণা নেই, তাঁরা কী করছেন। এখন র্যাডিক্যাল বাম ও মার্কসবাদীদের পরাজিত করার সময় এসেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন থেকে করোনাভাইরাস আসার আগে আমেরিকা সমৃদ্ধির পথে যাত্রা করছিল। এ ছাড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে নিজের সাফল্যের কথাও বলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যদিও আমেরিকার অধিকাংশ রাজ্যে সংক্রমণ বাড়ছে রেকর্ড পরিমাণ। ১ লাখ ৩০ হাজার মৃত্যুর সঙ্গে প্রতিদিন নতুন সংখ্যা যোগ হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের কড়া সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি সম্প্রতি মেনিয়াপোলিসে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশেরও সমালোচনা করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, মিডিয়া এসব বিক্ষোভে মদদ দিচ্ছে।
মার্কিন উদারনৈতিক মিডিয়া ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে বিভেদ সৃষ্টির বক্তব্য বলে উল্লেখ করেছে। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বিভক্তিকেই উসকে দিচ্ছেন বেশ চতুরতার সঙ্গে। নির্বাচনের মাত্র চার মাস আগে জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে থাকা ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। এসব বক্তব্য দিয়ে আমেরিকার উদারনৈতিক মহলের সঙ্গে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ আন্দোলন আর লুটতরাজকে একসঙ্গে ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন।