শুটিং শুরু হলেও ঘরবন্দী অনেক তারকাই এখনো কাজে ফেরেননি। করোনার সংক্রমণের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। পর্দায় এই তারকাদের অভাব বোধ করছিলেন দর্শক। নির্মাতারাও তাকিয়ে ছিলেন তাঁদের দিকে। অবশেষে একে একে শুটিংয়ে ফিরতে শুরু করেছেন তাঁরা। তাঁদের শুটিংয়ের আগে নেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। এমনকি পুরো ইউনিটের করোনা পরীক্ষার কথাও শোনা গেছে।
এ সপ্তাহে শুরু হচ্ছে প্রাণপ্রিয় নামের একটি খণ্ড নাটকের শুটিং। নাটকটির মাধ্যমে কাজে ফিরছেন অপূর্ব-মেহ্জাবীন জুটি। অপূর্ব বললেন, সব পেশার মানুষ কাজ করে যাচ্ছেন। আমি তো অনেক দিন অপেক্ষা করলাম। মহামারি কত দিনে যাবে কেউ জানি না, তাই কাজে নামছি। নাটকটির প্রযোজক-পরিচালক সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সঙ্গে শুটিংয়ের ব্যবস্থা করবেন। সমস্যা মনে না হলে, ঈদের আগে আরও কয়েকটি কাজ করব। তবে ঝুঁকি বোধ করলে আবার ঘরবন্দী হবেন তিনি।
পবিত্র ঈদুল ফিতরে কাজ করা হয়নি মেহ্জাবীনের। তিনি বললেন, পরিস্থিতি বোঝার জন্য একটা কাজ করে দেখছি। তা ছাড়া ঈদের চাপ আছে। গত ঈদেও কাজ করা হয়নি। জমানো সব নাটক দেখানো শেষ। দেখি কতটা নিরাপত্তার সঙ্গে কাজটা করতে পারি।
চাহিদাসম্পন্ন দুই তারকাকে নিয়ে কাজ শুরু করতে যাওয়া প্রযোজক শাহেদ আলী জানালেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিচ্ছেন তিনি। শুটিংয়ের কারিগরি দলের সদস্য কমানো হয়েছে। পুরো ইউনিটের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। তিনি বলেন, বাড়তি খরচ করে পুরো টিমের করোনা পরীক্ষা করিয়েছি। যে কদিন শুটিং চলবে; নায়ক, নায়িকা, পরিচালক ছাড়া টিমের লোকের বাইরে বের হওয়া নিষেধ। হাউসেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।তাঁর সেটে অন্য কোনো প্রযোজক-পরিচালক ঢুকতে পারবেন না। এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা শুটিং চলাকালে বাইরের কাউকে সেটে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছি না। শিডিউল নিয়ে আলাপের জন্য কাউকে না আসার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের টিমের সবাই করোনাভাইরাস পরীক্ষিত। বাইরের কাউকে সেটে নিরাপদ মনে করছি না। পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান বলেন, হয়তো আরও ছয় মাস ঘরে থাকতে পারতাম। কিন্তু দর্শকের কথা ভেবেই কাজে ফেরা। ঈদের আনন্দে দর্শকদের সঙ্গে থাকতে চাই। এই অবরুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দর্শকদের বিনোদন দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।
এ সপ্তাহে মির্জাপুরের একটি বাড়িতে শুটিং শুরু করতে যাচ্ছেন গায়ক তাহসান খান। তাঁর অভিনীত নাটকটির নাম সিঙ্গেল। পরিচালনা করছেন কাজল আরেফিন। স্বাস্থ্যবিধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চার মাস কেউ ছিলেন না এ রকম একটি বাড়িতে শুটিং করতে যাচ্ছি। বাসাটি পরিচ্ছন্ন করা হবে। আমাদের সেটের সবার জন্য একটি করে পিপিই কিনে দিয়েছেন প্রযোজক। ঢাকা থেকে পিপিই পরে গাড়িতে করে ওই বাড়িতে গিয়ে ঢুকব। শুটিং শেষে ফিরব।এ ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট তাহসান বলেন, এই ইউনিটের সবাই এত দিন হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। প্রযোজক-পরিচালক সতর্কতার জন্য যা দরকার, সবই করেছেন। এত দিন পর কাজে ফেরা প্রসঙ্গে তাহসান বলেন, গত ঈদেও কাজ করিনি। অল্প আয়ের কলাকুশলীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। সেবামূলকভাবে অনেককে সহযোগিতা করেছি। এবার কাজে ফিরছি। এতে তাঁদের উপকার হবে, সামষ্টিকভাবে সবাই উপকৃত হব। তবে পরিস্থিতি খারাপ দেখলে শুটিং বাতিল করব।
পুনরায় শুটিং শুরু হতেই কাজে ফিরেছেন জাহিদ হাসান। একে একে এসেছেন মোশাররফ করিম, মমসহ আরও অনেকে। অনেক নির্মাতা অপেক্ষা করছিলেন অপূর্ব, নিশো, তাহসান, মেহ্জাবীন, সাবিলা নূর, সাফা কবিরদের মতো তারকাদের জন্য। সামনে আসছে ঈদুল আজহা। টেলিভিশন ও ইউটিউবে দর্শক এই তারকাদের জন্য অপেক্ষা করবেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এত দিন কাজে ফিরতে রাজি না হলেও সম্প্রতি মত বদলেছেন তারকারা। অনেকেই কাজে ফিরছেন, শিগগির ফিরবেন অন্যরাও। এ সপ্তাহে কাজে ফিরবেন তানজিন তিশা। সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনেই শুটিং করবেন প্রযোজক, পরিচালকেরাও। তবে আফরান নিশো এখনো ফেরার সিদ্ধান্ত নেননি।