মেথি আমাদের দেশে বহুল পরিচিত একটি নাম। এটি বিভিন্নভাবে খাওয়ার পাশাপাশি রুপচর্চায়ও ব্যবহৃত হয়ে থাকে এর বিভিন্ন পুষ্টিগুণের জন্য। মেথিকে মসলা, খাদ্য, পথ্যতিনটিই বলা চলে। আসুন আমরা মেথি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
মেথির পুষ্টিগুণ
মেথিতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়াম আছে। এ ছাড়া এতে অল্প পরিমাণে কোলিন, ইনোসিটল, বায়োটিন, বি-ভিটামিনস, জিংক, পটাশিয়াম, সেলেনিয়াম, ফোলেট, ফসফরাস ছাড়াও আইসোলিউসিন নামক এমাইনো অ্যাসিড আছে।
মেথির ব্যবহার
১.
ওজন কমাতে সাহায্য করে: মেথি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ, ফ্যাট মেটাবলিজমে সহায়তা করে, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে আর হজমে সহায়তা করে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
২.
ডায়াবেটিক বা প্রি-ডায়াবেটিক অবস্থায়: মেথি ইনসুলিন হরমোনকে রেগুলেট করে ব্লাড গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে।
৩.
ব্যাড কোলস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডকে কমিয়ে টোটাল লিপিড প্রোফাইলকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৪.
এটি হজমজনিত যেকোনো সমস্যা ঠিক করে। মেটাবলিজম বাড়াতে এবং ইমিউনিটি বুস্ট করতে সহায়তা করে।
৫.
মেথি শরীর থেকে টক্সিন শোষণ করে এবং বের করে দিতে সহায়তা করে।
৬.
ঠান্ডাজনিত যেকোনো সমস্যা, কফ, কাশি দূর করতে সাহায্য করে।
৭.
ব্রেইন ফাংশনে কাজ করে এবং নার্ভ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৮.
চুল ও স্কিন ভালো রাখে। চুল পড়া কমায় ও চুলের গ্রোথ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। স্কিনের গ্লো বাড়ায় এবং ব্রণের ওপর ভালো কাজ করে।
৯.
পেইন ম্যানেজমেন্টে এটি খুবই ভালো কাজ করে। যেকোনো জয়েন্ট পেইন, ব্যাক পেইন, মাসল পুল ইত্যাদিতে খেলে যেমন উপকার পাওয়া যায়, তেমনি যেকোনো তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলেও আরাম বোধ হয়।
১০.
পুরুষদের ক্ষেত্রে: নিয়মিত খেলে এটি টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। এটি স্পার্ম কোয়ালিটির সঙ্গে সঙ্গে স্পার্ম কাউন্ট বাড়াতেও সহায়তা করে।
১১.
নারীদের ক্ষেত্রে: মেথি ইস্ট্রোজেন হরমোনকে ব্ল্যালেন্স করে। PCOD এবং PCOS এ উপকারী। এটি LT ও FSH হরমোন রেগুলেট করে ফার্টিলিটি বাড়াতে সহায়তা করে। পিরিয়ড রেগুলার করে, লেক্টেসন পিরিয়ডে মিল্ক প্রোডাকশন বাড়ায়, UTI এ উপকারী ভূমিকা রাখে।
খাওয়া যাদের জন্য বারণ
গর্ভবতী মা, স্পেশাল মেডিকেশন যেমন-ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিস রোগী, ব্লাড প্রেশার, ব্লাড থিনিং, থাইরয়েড ইস্যু, অ্যাসিড রিফ্লাক্স প্রভৃতি ক্ষেত্রে এড়িয়ে যেতে হবে। বাচ্চা বা ছোটদের সরাসরি খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।
পরিমাণ:
৩-৫ গ্রাম বা প্রায় এক চা-চামচ পরিমাণ ১৮-২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পানি খাওয়া যেতে পারে অথবা গুঁড়া করে ভিজিয়ে সেই পানি খাওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে সর্বোচ্চ পুষ্টি পেতে গুঁড়া করার সময় না ভেজে নেওয়াই ভালো। এ ছাড়া বিভিন্ন তরকারিতে দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়, স্প্রাউট করে খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যাবে। মেথির শাক খাওয়াও অনেক উপকারী।