লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গতকালই প্রথম মাঠে নেমেছিল লিভারপুল। গত কয়েক দিনের উদ্যাপনের রেশ বেশ ভালোই পড়েছে তাদের খেলায়। সিটির কাছে ৪-০ গোলে হেরেছে তারা।
অন্যান্য মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটি-লিভারপুল ম্যাচ মানেই অন্য রকম উত্তেজনা। শিরোপাদৌড়ে কে এগিয়ে থাকবে, অনেকাংশেই এ ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করে। এবার ব্যতিক্রম। রেকর্ডসংখ্যক ম্যাচ হাতে রেখেই লিভারপুল ৩০ বছর পর লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে, আর তাই গত রাতে সিটির বিপক্ষে ম্যাচটা লিভারপুলের জন্য ছিল আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার লড়াই।
ম্যাচের আগে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছিল গার্ড অব অনার নিয়ে। আগেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেললে বাকি ম্যাচে প্রতিপক্ষ দলগুলো চ্যাম্পিয়ন দলকে ম্যাচ শুরুর আগে অভ্যর্থনা দেয়। সিটিও লিভারপুলকে এমন সম্মান দেবেআগেই নিশ্চিত করেছিলেন পেপ গার্দিওলা। কিন্তু এই সম্মান লিভারপুল উপভোগ করতে পারল কই? সিটির মাঠে তারা হেরে বসেছে ৪-০ গোলে।
গত কয়েক দিন শিরোপার উৎসব করতে গিয়ে এই ম্যাচের প্রস্তুতি যে অত ভালোভাবে নেওয়া হয়নি, সেটা প্রতিমুহূর্তেই বোঝা গেছে লিভারপুলের খেলা দেখে। ওদিকে গার্ড অব অনার দেওয়া সিটি এই অসম্মানএর শোধ তুলতে চেয়েছে শ্বাসরুদ্ধকর ফুটবল খেলে। প্রথমে দুই দলই সমানে সমান খেলেছে। মোহাম্মদ সালাহর একটা শট পোস্টে লাগে। শুরুর দিকে বেশ কয়েকবার প্রতিআক্রমণে সিটিকে কোণঠাসা করে ফেলেছিল লিভারপুল।
কিন্তু আস্তে আস্তে সিটি লিভারপুলকে চেপে ধরে। সেন্টারব্যাক জো গোমেজের ভুলের সুবাদে পেনাল্টি পায় সিটি। লিভারপুলের সাবেক উইঙ্গার রহিম স্টার্লিংকে অবৈধভাবে ডি-বক্সে ফেলে দেন তিনি। ঠান্ডা মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনিয়া। ম্যাচের তখন মাত্র ২৫ মিনিট।
গোল পেয়ে যেন ক্ষুধার্ত বাঘ হয়ে যায় সিটি। ১০ মিনিট পর দুর্দান্ত আক্রমণের ফলাফল হিসেবে ফিল ফোডেনের বানিয়ে দেওয়া বলে লিভারপুলের জালে দ্বিতীয় গোল দেন স্টার্লিং। প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে ডি ব্রুইনিয়ার বাড়িয়ে দেওয়া বলে এবার গোলদাতার তালিকায় নাম লেখান তরুণ ইংলিশ মিডফিল্ডার ফোডেন।
সিটি যেভাবে খেলছিল, অনায়াসে লিভারপুলকে অনেক বড় ব্যবধানে হারাতে পারত। কিন্তু ছেলেমানুষি কিছু ভুল করে সে ফায়দা নিতে পারেনি। একই কথা বলা যায় লিভারপুলের ক্ষেত্রেও। সাদিও মানে ফাঁকা পোস্টে শট মারা তো দূর, বলে পা-ই দেননি। এর মধ্যে সিটির ডিফেন্দার কাইল ওয়াকারের ধাক্কায় মানে পেনাল্টি বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টি পায় লিভারপুল। কিন্তু ভিএআরের সুবাদে সে যাত্রায় বেঁচে যায় সিটি। দেখা যায়, পেনাল্টি না, বরং ফ্রি-কিক পেয়েছে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা। ৬৫ মিনিটে অ্যালেক্স অক্সলেড চেম্বারলিনের আত্মঘাতী গোলে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় সিটি।
প্রিমিয়ার লিগ নিশ্চিত হওয়ার পর লিভারপুলের লেফটব্যাক অ্যান্ডি রবার্টসন ঠাট্টা করে কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের কাছে শিরোপা উদ্যাপনের জন্য আরও এক দিন ছুটি চেয়েছিলেন। ক্লপ সে প্রস্তাবে রাজিও হয়েছিলেন। দলের খেলা দেখে আগামীকাল থেকেই হয়তো উদ্যাপনের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করবেন এই কোচ!