সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন “SEO” নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা (পর্ব-১)

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন “SEO” নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা (পর্ব-১)

আসসালামু আলাইকুম

আশাকরি সবাই ভালো আছেন।
সবাই ভালো থাকেন ভালো রাখেন এই প্রত্যাশাই করি সব সময়।
আজ কথা বলবসার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEOনিয়ে।
প্রথম যখন সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু
করি, তখন ভাবতাম সবই ফাউল, Google শুধু Paid SEO ( সেক্ষেত্রে প্রতিটি ক্লিকের জন্য সার্চ
ইঞ্জিনকে টাকা দিতে হয়) এর জন্য প্রথম পেইজ এ দেখায় । পরে oDesk একটি কাজ পাওয়ার সুবাদে , SEO নিয়ে কাজ শুরু করি, আমি এত কিছু
ভাবাভাবি না করে শুধু Google SEO starter Guide পড়ে নিয়ামানুযায়ী কাজ শুরু করলাম এবং ২০-২৫ দিনের মাথায় কিছু ভাল ফল পেলাম।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) হচ্ছে এমন এক ধরনের পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি
ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলাযায়। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের
সার্চ রেজাল্টে ওয়েবসাইটি অন্য সাইটকে পেছনে ফেলে সবার আগে প্রদর্শিত হয়।
এই ধরনের সার্চ রেজাল্টকে organe বা Natural সার্চ রেজাস্ট বলা হয়। সার্চ রেজাল্টের প্রথম পৃষ্ঠায় দশটি ওয়েবসাইটের মধ্যে নিজের ওয়েবসাইটকে নিয়ে আসাই সবার লক্ষ্য থাকে। এর কারণ হিসেবে দেখা যায় ব্যবহারকারীরা সাধারণত শীর্ষ দশের
মধ্যে তার কাঙ্কিত ওয়েবসাইটকে না পেলে দ্বিতীয় পাতায় না গিয়ে অন্য কোন শব্দ।
ব্যবহার করে পুনরায় সার্চ করেন। শীর্ষ দশে থাকার মানে হচ্ছে ওয়েবসাইটে বেশি
সংখ্যক ভিজিটর পাওয়া আর বেশি সংখ্যক ভিজিটর মানে হচ্ছে বেশি আয় করা। এজন্য
সবাই মরিয়া হয়ে নিজের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য উপযুক্ত করে তুলেন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সাথে অনেক বিষয় জড়িত। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এক্ষেত্রে প্রথমেই সাইটের জন্য এক বা একাধিক নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড (keyword) বা
শব্দগুচ্ছ বাছাই করতে হয়। কিওয়ার্ড বাছাই করার পূর্বে সময় নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। এমন একটি কিওয়ার্ড বাছাই করতে হয় যাতে এর প্রতিদ্বন্ধী কম থাকে। ধরা যাক অনলাইনে গেম খেলার একটি সাইটের জন্য যদি Play online Game
কিওয়ার্ড বাছাই করা হয়, তাহলে এই শব্দ দিয়ে গুগলে সার্চ করলে ১.৬ কোটি
সাইটের ফলাফল হাজির হবে। তাদের মধ্যে হাজারও জনপ্রিয় সাইট পাওয়া যাবে
যেগুলোকে অতিক্রম করে প্রথম পাতায় আসাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে
কিওয়ার্ডের সাথে আরো কয়েকটি শব্দ যদি যোগ করা যায় তাহলে দেখা যাবে প্ৰতিদ্বন্ধী
ওয়েবসাইটের সংখ্যা কমে আসবে। কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণার জন্য সবচেয়ে ভাল হচ্ছে
গুগল কিওয়ার্ড
https://ads.google.com/home/tools/keyword-planner/

অন পেজ অপটিমাইজেশন:

সাইটের জন্য সঠিক কিওয়ার্ড বাছাইয়ের পর এর বিভিন্ন অংশে এই কিওয়ার্ডটির
প্রতিফলন থাকতে হবে। প্রথমতঃ ওয়েবসাইটের ডোমেইন এর নামে যদি বাছাইকৃত কিওয়ার্ডটি
থাকে তাহলে সবচেয়ে ভাল। দ্বিতীয়তঃ HTML এর Title ট্যাগে কিওয়ার্ড থাকা উচিত।
সাইটের title ট্যাগটি ঠিকভাবে সাজানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই অংশটি একজন
ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনকে সেই পৃষ্ঠায় কি তথ্য রয়েছে তা নির্দেশ করে। তৃতীয়
ও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ওয়েবসাইটের description meta ট্যাগ। এর মাধ্যমে ওই পৃষ্ঠার সারমর্ম লেখা হয়। সঠিকভাবে
এই ধরনের পদ্ধতিকে On Page Optimization বলা হয়।

পেজরেংক (PageRank)

PageRank বা সংক্ষেপে PR হচ্ছে গুগল কর্তৃক ব্যবহৃত এক ধরনের লিংক এনালাইসিস।
এলগরিদম, যা দ্বারা একটি ওয়েবসাইট কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নির্ধারণ করা হয় এবং প্রথম পাতায় থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সর্বোচ্চ পেজরেংক হচ্ছে ১০ এবং সর্বনিম্ন পেজরেংক হচ্ছে ০। গুগল টুলবারের সাহায্যে একটি সাইটের পেজরেংক জানা যায়। টুলবারটি এই সাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।
http://toolbar.google.com/

ব্যাকলিংক (BackLink)

ব্যাকলিংক লিংক হচ্ছে একটি সাইটের পেজরেংক বাড়ানোর মূল হাতিয়ার।
একটি ওয়েবসাইটের কোন পৃষ্ঠায় যদি অন্য একটি সাইটের লিংক থাকে তাহলে দ্বিতীয়
সাইটের জন্য এই লিংককে বলা হয় ব্যাকলিংক বা ইনকামিং লিংক। আর প্রথম সাইটের জন্য এই লিংকটি হচ্ছে আউটগোয়িং লিংক, অর্থাৎ এই লিংকে ক্লিক করে ব্যবহারকারী দ্বিতীয় সাইটে চলে যাবে। এইভাবে একটি ওয়েবসাইটের যত বেশি ব্যাকলিংক থাকবে সেই ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারী আসার প্রবণতা বেড়ে যাবে। পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিনের রোবুট প্রোগ্রাম সেই সাইটকে খুব সহজেই খুজে পাবে। ব্যাকলিংক বাড়ানোর অনেকগুলো
পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পদ্ধতি হচ্ছে,
লিংক বিনিময়, এটি হচ্ছে ভাল পেজরেংকের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাথে নিজের ওয়েবসইটের লিংক বিনিময়, অর্থাৎ অন্য ওয়েবসাইটের লিংক নিজের সাইটে যোগ
করা এবং সেই সাইটে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করানো। এজন্য সাধারণত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের এডমিনিস্ট্রেটরের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে
লিংক বিনিময়ের প্রস্তাব জানানো হয়। আবার লিংক আদান প্রদানের জন্য বিভিন্ন
ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে লিংক বিনিময়ে আগ্রহী ওয়েবসাইটের ঠিকানা পাওয়া
ফোরামে পোস্ট করা হয়। এই পদ্ধতিতে প্রথমে একটি ভাল পেজরেংকের ফোরামের
signature এ নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করতে হয়। তারপর সেই
ফোরামে নতুন কোন পোস্ট করলে বা অন্যের পোস্টে মন্তব্য দিলে লিংকটি সেই
পৃষ্ঠায় প্রদর্শিত হয়।
আর্টিকেল জমা দেয়া। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে নিজের
সাইটের কোন লেখা সেই সাইটগুলোতে জমা দেয়া যায় এবং সেই লেখার মধ্যে
প্ৰয়োজন অনুসারে নিজের সাইটের লিংক দিয়ে ব্যাকলিংক বাড়ানো যায়।

  • ডাইরেক্টরীতে জমা দেয়া: বিভিন্ন ওয়েব ডাইরেক্টরী রয়েছে যেখানে বিনামূল্যে নিজের সাইটের তথ্য এবং লিংক জমা দেয়া যায়।
  • অন্যের ব্লগে মন্তব্য দেয়া: অন্যের রগে মন্তব্য দিয়ে এবং সাথে নিজের সাইটের
    লিংক যুক করেও ব্যাকলিংক বাড়ানো যায়।

আগামী পোষ্টে আলোচনা করব কিভাবে নিজের ওয়েবসাইট এর জন্য নিজে এসইও করবেন।
So, ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন আল্লাহ হাফেজ
জাকারিয়া চৌধুরী

Comments