শীতের শুরুতে যে সকল সমস্যাগুলো হতে পারে:
১) সর্দি কাশি: গরমকালে আমাদের শরীর উষ্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলে । তাই হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে গেলে নতুন শীতল আবহাওয়ার সাথে শরীরের খাপ খাইয়ে চলতে গেলে কিছু সমস্যা বা অসুবিধার সৃষ্টি হয় । এসকল সমস্যা থেকেই দেখা দেয় সর্দি-কাশি বা ঠান্ডা লাগা ।
ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক বড় ধরনের রোগ যেমন নিউমোনিয়া হতে পারে । তাই আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের নিজেদেরকেও পোশাক-পরিচ্ছদ ও বাসস্থানে পরিবর্তিত হতে হবে । তাই যদি সর্দিকাশি দেখা দেয় তাহলে গরম কাপড় পরিধান করতে হবে। খাবারের পর গরম পানি খেতে হবে ।
গোসল খুব অল্প সময়ে করতে হবে সম্ভব হলে কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে করতে হবে । যদি সর্দি এর মাত্রা অতিরিক্ত বেশি হয় তবে ক্যাফেইন জাতীয় ট্যাবলেট খেতে হবে । বা ফেক্সোফেনাডিন হাইড্রোক্লোরাইড জাতীয় ট্যাবলেট খেতে হবে । এই জাতীয় ট্যাবলেট প্রতিদিন রাতে একটা করে খেতে হবে ।
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে 120 মিলিগ্রাম এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে 60 মিলিগ্রাম ট্যাবলেট খেতে হবে । অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
২) গলার কন্ঠ পরিবর্তন বা কণ্ঠস্বর ভেঙ্গে যাওয়া: গলার কণ্ঠস্বর অনেক কারণে ভেঙে যেতে পারে তবে ঠান্ডা জনিত কারনে ভেঙ্গে গেলে অবশ্যই গলায় মাফলার বা গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে ।
তাছাড়া আদা চা বা গরম পানি সম্ভব হলে লবণ মিশ্রিত পানি অল্প পরিমাণে দুই থেকে তিন বেলা খাওয়া যেতে পারে ।
৩) গলায় টনসিল দেখা দেওয়া: অনেক সময় আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার কারণে ঠান্ডা লেগে গলায় টনসিল দেখা দেয় । টনসিল দেখা দেওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে যদি ভাইরাসজনিত কারণে টনসিল হয়ে থাকে তাহলে ডক্সিক্যাপ ট্যাবলেট খেতে হবে ।
যদি ভাইরাসজনিত কারণে না হয়ে থাকে অর্থাৎ ঠান্ডা জনিত কারণে হয়ে থাকে তাহলে গরম পানি খাওয়ার ফলেই টনসিল সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
৪) ত্বক ফেটে যাওয়া: এতে শীতকালের প্রধান সমস্যা । শীত কালে ত্বকের শুষ্কতা বেড়ে যায় এবং আদ্রতা কমে যায়। যার কারনে ঠোট মুখ ফেটে যায় । অনেক ক্ষেত্রে ভিটামিন বি এর অভাব জনিত কারনেও ঠোঁট মুখ ফেটে যেতে পারে ।
যদি ভিটামিন জনিত কারনেও ঠোঁট কিংবা মুখের কোন অংশ ফেটে যায় তবে শীতকালে প্রচুর পরিমাণ সবজি পাওয়া যায় যেগুলো ভিটামিন বি সরবরাহ করে থাকে । ঠোঁট ও ত্বকের শুষ্কতা থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই লিপজেলও গ্লিসারিন ব্যবহার করতে হবে ।
আবহাওয়া পরিবর্তনের শুরুতেই ঠোঁটে নিয়মিত লিপজেল ব্যবহার করতে হবে । গোসল করার সময় সাবান কম ব্যবহার করতে হবে । গোসল শেষে শরীর কে আলতো করে মুছে লোশন কিংবা গ্লিসারিন জাতীয় ময়েশ্চার ব্যবহার করতে হবে ।
৫) অ্যালার্জি জনিত সমস্যা : আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে । তাই যাদের এলার্জি রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এলার্জি প্রতিরোধক ওষুধ গ্রহণ করিতে পারেন ।
৬ ) শরীরের বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা: গ্রামাঞ্চলে অনেকেই মনে করে থাকেন যে শীতের শরীর কালো হয়ে যায় । অনেকেই মনে করেন শীতের সময় শরীরে চর্মরোগ দেখা দেয়। এগুলোর কারণ হলো নিয়মিত গোসল না করা এবং আগুনের আশেপাশে থাকা ।
আমাদেরকে অবশ্যই আগুন থেকে সতর্ক থাকতে হবে। নিয়মিত গোসল করতে হবে। কোন যে কোন সমস্যাই সরকারি কিংবা যে কোন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।
অনেক পরিবারে বৃদ্ধ দাদা তাতে কিংবা মা-বাবা ও নানা নানি রয়েছে। শীতে তাদের ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা দেখা দেয় । শরীরে তাদের তাপমাত্রা কমে যায়, যার কারণে অনেক সমস্যা ভুগতে হয়। সেই সকল পরিবারের প্রতি আমার অনুরোধ রইল বৃত্ত বয়স্ক দের প্রতি যত্নশীল হওয়া। প্রয়োজনে তাদের জন্য রুম হিটার ব্যবহার করা ।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সে যেমনই কষ্টকর তেমনি আনন্দদায়ক। শীতে অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেড়ে যায়, যেমন খেজুর রস এবং অনেক শীতকালীন সবজি ফুল ইত্যাদি উৎপাদন হয় ।