তার দোয়ার বরকতে পক্ষাঘাত রোগী ভাল হয়ে যাওয়া
____________________
তার দোয়ার বরকতে পক্ষাঘাত রোগী ভাল হয়ে যাওয়া:


হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন কিতাবের মধ্যে আল্লামা তাজুদ্দীন ছুবকীর “কিতাব তাবকাত থেকে” বর্ণনা করেছেন যে, একবার আমীরুল মোমেনীন হযরত আলী (رضي الله عنه) তার দুই শাহাজাদা হযরত ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইন (رضي الله عنه) এর সাথে কাবা শরীফের হেরমের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। মধ্যরাত্রিতে হঠাৎ শুনতে পেল, একজন ব্যাক্তি খুবই গর্জন করে নিজ প্রয়োজনের জন্য দোয়া করতে লাগলেন এবং অধিক কান্নাকাটি করতে লাগলেন। তিনি এই কান্নাকাটির আওয়াজ শুনে হুকুম দিলেন যে, ঐ ব্যাক্তিকে আমার কাছে নিয়ে আস। তখন ঐ ব্যাক্তিকে এমন অবস্থায় উপস্থিত করা হল যে, তার শরীরের এক পার্শ্ব পক্ষাঘাত রোগ আক্রান্ত ছিল। তিনি মাটিতে হেঁচড়ে হেঁচড়ে চলে তার সামনে এসে পড়লেন। তখন তিনি তার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে উত্তর দেন, হে আমীরুল মোমেনিন আমি চরিত্রহীন অবস্থায় বিভিন্ন প্রকার গুনাতে লিপ্ত থাকতাম। আমার পিতা খুবই পূর্ণবান, সৎকর্মশীল ও শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী মুসলমান ছিলেন। আমাকে বারবার পাপ থেকে নিষেধ করতেন। আমি একদিন আমার পিতার উপদেশে অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে প্রহার করলাম এতে আমার পিতা খুবই চিন্তিত হয়ে ও মনে কষ্ট নিয়ে, কাবার হেরমের মধ্যে এসে আমার জন্য বদ দোয়া করতে লাগলেন। তার বদদোয়া অবস্থায় অর্থাৎ এখনো তার বদ দোয়া শেষ হয়নি হঠাৎ আমার শরীরের এক পার্শ্বে পক্ষাঘাত হলে আমি জমিনে হেঁচড়ে চলতে লাগলাম। এ অদৃশের শাস্তিতে আমার বড়ই শিক্ষা লাভ হলো। আর আমি কান্না করে করে আমার পিতা থেকে নিজ অমার্জনীয় অপরাধের ক্ষমা চাইলাম। আমার পিতা স্বীয় পৈতৃক স্নেহের কারনে অপরাগ হয়ে আমার প্রতি দয়া করলেন এবং আমাকে ক্ষমা করলেন। অতঃপর তিনি বললেন বৎস যেখানে আমি তোমার জন্য বদদোয়া করেছিলাম সেখানে আমি তোমার জন্য সুস্থতা ও শান্তির জন্য দোয়া করব। তখন আমি ও আমার পিতাকে নিয়ে উটের উপর আরোহন করে মক্কা মুয়াজ্জামার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলাম,একেবারে হঠাৎ করে উষ্ট্রিটি এক স্থানে পলায়ন করতে লাগলেন। আর আমার পিতা উহার পিঠ থেকে পড়ে দুটি পাথরের মাঝে পড়ে মারা গেল। এখন আমি একাকী কাবা শরীফের হেরমের মধ্যে এসে রাতদিন কান্না করে আল্লাহ থেকে নিজের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি। আমীরুল মোমেনীন তার সকল কথা শুনে বললেন হে মানুষ যদি বাস্তবিক তোমার পিতা তোমার উপর সন্তুষ্ঠ হয়ে থাকে তাহলে তুমি ধৈর্য ধারণ কর। কারন আল্লাহ তায়ালাও তোমার উপর খুশী হয়ে গেল। তিনি বললেন হে আমিরুল মুমেনীন আমি শপথ করে বলছি যে,আমার পিতা আমার উপর খুশী হয়ে গিয়েছিলেন। আমীরুল মোমেনীন হযরত আলী (رضي الله عنه) ঐ ব্যক্তি ক্রন্দন অবস্থার উপর শপথ করে তাকে শান্তনা দিলেন এবং কয়েক রাকাত নামাজ পড়ে তার সুস্থতার জন্য দোয়া প্রার্থনা করলেন এরপর বললেন হে ভাগ্যবান লোক উঠে দাঁড়াও ইহা শুনা মাত্র সে কোন কষ্ঠবিহীন উঠে দাড়িয়ে গেল,আর সুস্থ মানুষের মত চলতে লাগল। তিনি বললেন হে লোক যদি তুমি শপথ করে এ কথা না বলতে, যে তোমার পিতা তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাহলে আমি কখনো তোমার জন্য দোয়া করতামনা। (হুজ্জাতুল্লাহ)

image