একটা মানুষ তোমাকে পছন্দের তালিকায় রাখছে। অথচ তুমি মানুষটাকে একটুও বোঝার চেষ্টা করছো না। তার মানে একদিন তুমিও তার অপছন্দের তালিকাভুক্ত হবে। কেউ একজন তোমার হাসির পিছনে অবিরাম ছুটছে। সর্বক্ষণ তোমার মুখে হাসি ফুটিয়ে রাখছে। তোমার ভালো মন্দের খরব রাখছে। কেয়ার নিচ্ছে। হাজারো ব্যস্ততায় তোমাকে সময় দিচ্ছে। তার মানে এইনা যে তুমি তার চোখের অশ্রুকণার কারণ হবে। বরং তার মন খারাপের রাতে বুকে আগলে ধরে একটু ভালোবাসা দেওয়ার মত একজন মানুষ হও।
.
সর্বক্ষণ তোমার সাথে যে ছেলেটা ভালোবাসি ভালোবাসি বলে আটার মত লেগে থাকে। তার অনুপস্থিতিতে ও একদিন তোমার মন খারাপ হবে। কাক ভেজা ভোরে কলেজের চৌরাস্তা ধরে মাইলের পর মাইল যে ছেলেটা তোমাকে মুগ্ধ করার জন্য দিনের পর অবিরাম সাধনা করে যাচ্ছে। তার নিস্তব্ধতা ও একদিন তোমাকে ভাবিয়ে তুলবে। বন্ধুদের আড্ডা ছেড়ে যে মানুষটা তোমাকে মাতিয়ে রাখতো হাজারো গল্প গুজবে। তার নিশ্চুপতা থেকে বোঝে নিও এসবের জন্য তোমার অবহেলা গুলোই দায়ি।
.
একজন মানুষ তোমাকে ভালোবাসার অধিকার রাখে। তার মানে এই না যে, তার ভালোবাসাগুলো তুমি অপাত্রে ব্যবহার করবে। আজ যে ছেলেটাকে তুমি অবহেলা করছো, হতে পারে কাল সেই ছেলেটাই তোমার মন খারাপের কারণ হবে। অবহেলা অভিযোগে যে মানুষটার মধ্যখানে দূরত্বের দেয়াল তৈরি করে দিয়েছো। একটা সময় সেই তাকেই তুমি চাইবে। তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অভিমানে ভাগ বসাতে চাইবে। খুনসুটিতে মেতে থাকতে চাইবে। কথা বলার ভঙ্গি দেখে নতুন করে মুগ্ধ হতে চাইবে। কিন্তু ঠিক ততদিনে তুমি তার থেকে দূরত্বে চলে যাবে। অথবা তার পৃথিবীতে নতুন কেউ পা রাখবে, যে চোখ বন্ধ করে শুধু তাকে চায়। তার ভালোবাসা চায়। সারা জীবনের জন্য চায়।
.
তোমার ঔজ্জ্বল্য চেহারায় কেমন যেন ফ্যাঁকাসে একটা ভাব আসবে। যে তোমাকে মিস করতো, আজকাল সেই তাকেই তুমি খুব খুব মিস করো। একটু কাছে পেতে চাও। অধিকার খাটাতে চাও। অভিযোগ করতে চাও। ডাগর চোখে নতুন করে ডুবতে চাও। একসাথে জড়সড় হয়ে একীভবনে জোসনা বিলাস করতে চাও। অথচ ভুলে গেছো সেই তুমিই সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকরণের মুল।
কারোর চকচকে হৃদয়কে কণ্টকিত করে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে একদম কঙ্কাল বানিয়ে তুলছো। অথচ লোকটা ছিলো তোমার ভালোবাসার। ভালো লাগার। তুমি ছিলে তার আশ্বস্ত।
.
ভালোবাসা আপনা-আপনি চলে আসেনা।
অনেক কষ্ট ক্লেশ স্বীকার করে ঝড় বাতাস উপেক্ষা করে নির্ঘুম রাতে সিগারেট জ্বালিয়ে অথবা বালিশের সাথে মাথা ঠেকিয়ে কাঁদতে হয়। তারপর আসে অনাকাঙ্ক্ষিত সেই মুহূর্ত। যাকে আগলে ধরে ভালো থাকা যায়।
মানুষ যেভাবে কোনো একটা ভুলকে কেন্দ্র করে দূরে চলে যায়। ঠিক তেমনি যদি কোনো একটা সঠিক কাজকে কেন্দ্র করে কাছে আসতো। তাহলে অবশ্য দূরত্বের গল্পগুলো কোনোদিন-ই তৈরি হত না। প্রত্যেকটা দূরত্বের গল্প তৈরি হয় অবহেলা অভিযোগ থেকে। ভালোবাসা আর অবহেলা উভয়টা একসাথে পাওয়া যায়। যেমন একজন ভালোবাসে, অন্যজন ঘৃণা করে। তবে অবহেলা উভয় পক্ষ থেকে কখনো একসাথে পাওয়া যায়না। কারণ ভালোবাসা+ ভালোবাসা =রিলেশন। ভালোবাসা + অবহেলা = দূরত্ব। আর অবহেলা+অবহেলা= কিছুনা।
.
কাউকে ঠিক ততটুকু অবহেলা করবেন যতটুকু অবহেলা সে সহ্য করতে পারবে। তবে ততটুকু অবহেলা করবেন না, যতটুকু অবহেলার ফলে মানুষটা হাসি কান্নার মধ্যে তফাৎটাই ভুলে যায়। কাউকে কষ্ট দিতে চান, দেন। তবে ততটুকু কষ্ট অবশ্য দিবেন না। যতটুকু কষ্ট দিলে কষ্টরা সে মানুষটার ব্যথায় ব্যথিত হয়ে কেঁদে ফেলে।
স্বার্থপর হবেন, সমস্যা নাই হোন। তবে অন্যকে কষ্ট দিয়ে নয়। বরং নিজেকে কষ্ট দিয়ে স্বার্থপর হোন। অন্তত অন্যকেউ না জানোক আপনি যে স্বার্থপর।