গল্প :-
""অন্তঃস্বত্তা মেয়েকে বিয়ে""
.
লেখক:- #Nayem_Ahmed
.
100% কান্না করবেন challenge....শুধু শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন....
.
★------পর্ব :- ১২~~~ ♥
.
.
এদিকে কণার চিঠিটা পড়ে নিজের
অজান্তেই চোখের পানিতে ভেসে যাচ্ছে
বুক, টপ- টপ করে চোখের পানি পড়ে চিঠিটা
ভেঁজে যাচ্ছে। কণাকে দাফন করে, রওনা
দিলাম ' সজিবের কাছে বোনের মৃত্যুর
প্রতিশোধ নিতে। কিন্তু গিয়ে যা দেখলাম
তা দেখায় একেবারে প্রস্তুত ছিলাম না
আল্লাহ এতো বড় শাস্তি দিয়েছে
সজিবকে। সজিব তাঁর মা বাবার লাশের
কাছে বসে কাঁদছে। আঙ্কেল আন্টি রোড
একসিডেন্টে কাল রাতেই মারা যায়।
নিজের অজান্তেই চোখ থেকে দু'ফোটা
অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো। শত্রু হলে কী
হবে, তাঁর মা- বাবাকে সবসময় নিজের মা
বাবা মনে করতাম। আজ তাঁরা দুজন নিশ্চুপ
হয়ে শুয়ে আছে। আঙ্কেল আন্টির লাশের
পাশে বসে পড়লাম। একটা হাত সজিবের
কাঁধে রাখতেই, সজিব চোখের পানি ছেঁড়ে
দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। বুকের মাঝে বোন
হারানোর পাহাড়সম কষ্ট চাঁপা রেখে যে
হাতে নিজের কলিজার টুকরা বোনটাকে
মাটি দিয়েছি, সে হাতেই পাপিষ্ঠ'টাকে
জড়িয়ে ধরলাম! বুকটা ধুঁমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে।
বুকের মাঝে বোন হত্যার প্রতিশোধের আগুন
দাউ-দাউ করে জ্বলছে! এদিকে দেখি সজিব
ছোট বাচ্চার মতো বুকে মুখ লুকিয়ে কান্না
করছে।
.
এই সজিব, মা- বাবা কারো চিরকাল বেঁচে
থাকেনা।যে পাঠিয়েছে আঙ্কেল - আন্টি
তাঁরই ডাকে সাড়া দিয়েছে। এতে আমাদের
কারো কিছু করার নেই! এখন যদি এভাবে
কান্না করিস তাহলে আঙ্কেল -আন্টির
আত্মা কষ্ট পাবে। প্লিজ আর কাঁদিস না।
.
দোস্ত আমার আর আপন বলতে কেউ রইলো
নাহ্!
.
সজিব তুই কি আমাকেও ভুলে গেলি, আমি
কি মারা গেছি। আমার মা-বাবা তোর মা-
বাবার মতোই তো।
.
আমার কথাগুলো শুনে, কেমন যানি অপরাধী
দৃষ্টি নিয়ে তাকালো।এদিকে আঙ্কেল-
আন্টিকে দাফন করার পর বাসায় এসে
পড়লাম।
.
রাতে শুয়ে শুয়ে, ভাবছি আল্লাহর বিচার
সবচেয়ে সুন্দর ও নিখুত বিচার। সজিব এর
জন্য আমার বোনটাকে হারালাম। আর
আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর মা- বাবাকে তাঁর
থেকে দূরে সরিয়ে দিলেন।
.
পরদিন সকালে সজিবের বাসা থেকে ফোন
আসে, সজিব নাকি কিছুই খায়নি।
.
কথাটা শুনে নিজের অজান্তেই কেমন
যানি লাগছে। খুব কষ্ট লাগছে
বিশ্বাসঘাতক'টার জন্য। তাই, আর দেরি না
করে চলে গেলাম সজিবের বাসায় গিয়ে
দেখি এখনো বসে বসে কাঁদছে। কাজের
মেয়েকে খাবার এনে দিতে বললাম।দোস্ত
হা কর।
.
রাজ ভাই আমি খাবোনা।
.
পাগল হয়ে গেলি। কাল থেকে কিছু
খাইসনি, এভাবে না খেয়ে থাকলে অসুখ
করবে হা কর বলছি। এদিকে সজিব'কে
খাইয়ে দিচ্ছি, আর অন্যদিকে কে যেন
কলিজাতে ছুঁড়ি চালিয়ে দিচ্ছে! যে হাতে
আমার কলিজার টুকরা বোনটাকে খাইয়ে
দিতাম,আজ সে হাতে তাঁর খুনিকে খাইয়ে
দিচ্ছি। হাতটা কেমন যেন কাপঁছে। চোখ
দিয়ে বোন হারানো ব্যথায় বিষাদ সিন্ধুর
জল গড়িয়ে পড়ছে। খাওয়া শেষ হলে সজিব
আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো।
.
রাজ, দোস্ত তুই আমাকে ক্ষমা করে দে, তুই
সত্যি অনেক মহান।
.
কি হলো কাঁদছিস কেনো। আর ক্ষমা কেন
চাচ্ছিস?
.
দোস্ত আমি না """ এ পর্যন্ত বলতেই পকেটে
থাকা ফোনটা বেজে ওঠলো! স্ক্রীনের
দিকে তাকিয়ে দেখি মা ফোন করেছে।
ফোন ধরতেই মা বাসায় যেতে বলে। সজিব
কি যেন বলতে চেয়েও বলতে পারলো না।
আচ্ছা দোস্ত পরে আবার আসবো মা কেন
যানি জরুরী ফোন করেছে বাসা থেকে।
.
গাড়িতে বসে বসে ভাবতে লাগলাম সজিব
তোকে কীভাবে ক্ষমা করি। তুই যে আমার
কলিজার ভেতর ছুঁড়ি চালিয়ে দিয়েছিস।
যে হাতে বোনকে খাইয়ে দিতাম সসে
হাতে বোনকে কবরে দাফন করেছি। তোকে
ক্ষমা করলে যে আমার বোনটার আত্মা
শান্তি পাবেনা। তুই আমার হৃদপিন্ডে
আগেই ছুঁড়ি ডুকিয়ে দিয়েছিস। তোর
বন্ধুত্বের জন্য নিজের ভালবাসাকে
বন্ধুত্বের কাছে কুরবানী দিয়েছি। কথাকে
নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালবাসতাম।
প্রতিটি রাত কথাকে নিয়ে হাজারো
স্বপ্নের জাল বুনেছিলাম। কিন্তু যেদিন, তুই
আমার কাছে বলেছিলি, তুই কথাকে
ভালবাসিস। সেদিন পৃথিবীটা এক মুর্হুর্তের
জন্য আমার চারপাশটা অন্ধকার হয়ে যায়।
কিন্তু তুই যখন বলেছিলি তুই কথাকে ছাঁড়া
বাঁচবিনা তখন আমার পৃথিবীটাই অন্ধকারে
ঢাকা পড়ে যায়। কারণ তুই শুধু আমার বন্ধু
ছিলিনা ছিলি, আমার ভাই। সেদিন তোর
ঠোঁটের কুণে হাসি ফুটানোর জন্য নিজের
হৃদপিন্ডে ছুঁড়ি ডুকাতেও একবিন্দু
কাপর্ণ্যতা বোধ করিনি । কিন্তু বিনিময়ে
আমার বোনটার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে
আত্মহত্যা করতে বাধ্য করলি । কথা তো
আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে ছিল।আর কণা
ছিল আমার কলিজার টুকরা দুইজনকে তোর
জন্য আজ হারিয়েছি।
.
কথা ডাইরির এই পর্যন্ত পড়ার পর, আর কিছু
দেখতে পারছেনা। চোখ'দুটি ঝাপসা হয়ে
যাচ্ছে। একটা মানুষ এতোটা মহান হয়
কীভাবে, এতটা ভালবাসার পরও নিজের
বন্ধুর মুখের হাসির জন্য নিজের
ভালোবাসাকে কুরবাণী দেয়। আমি তো
রাজকে কখনো ভালো তো দূরের কথা
স্বামী হিসেবেও মানতে পারিনি। শুধু
কষ্টই দিয়েছি।রাজ কী আমাকে ক্ষমা
করবে? চোখ থেকে টপ-টপ করে জল পড়ছে।
ডাইরির পাতা গুলো ঝট লেগে গেছে।
চোখ'টা মুছে আবার পড়তে লাগলো কথা;
মায়ের ফোনে বাসায় এসে শুনতে পারলাম
আজ কণার মৃত্যুর সাতদিন! তাঁই
দোয়া,কালাম পড়বে। ফকির-মিসকিন
খাওয়াবে তাই মা বাজারে যেতে বললো।
.
সারাদিন ক্লান্তি শেষে রাতে, কণার রুমে
গিয়ে বসলাম। হঠাৎ কণার ছবির দিকে চোখ
যেতেই অবাক হলাম। মনে হচ্ছে, কলিজার
টুকরা বোনটা আমায় 'ভাইয়া,ভাইয়া বলে
ডাকছে, মনে হচ্ছে আমার দিকে চেয়ে সে
মুক্তা ঝরা হাসি আবার হাসছে'।এক'পা
দু'পা করে কণা'র ছবিটার কাছে গিয়ে
পলকহীন নয়ন জোড়া নিয়ে চেয়ে রয়েছি।
বোন'টা আমার মিটি-মিটি নয়নে তাঁকিয়ে
মুচকি-মুচকি হাসছে। নিজের অজান্তে
কণা'র ছবিটাতে কাঁপা, কাঁপা হাতে, হাত
ভুলাতে গেলেই। বুকটা কেমন যেন ছ্যাঁত
করে ওঠে।নিঁচের দিকে তাঁকাতেই দেখি,
কণা'র কাঁচের ফ্রেমে বাঁধাই করা ছবিটা
টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে আমার
কলিজা টুকরা, টুকরা হয়ে গেছে। নিঁচ থেকে
কনার ছবি'টা তুলে বুকে জড়িয়ে নিলাম!
বুকটা মনে হচ্ছে কষ্টের সাগর হয়ে গেছে।
চোখ দিয়ে অবিরাম বিষাদ সিন্ধুর জল
গড়িয়ে পড়ছে।
♥-----"To be Continue"--♥ -