ছাত্রজীবনটা যারা আরামে কাটিয়েছে , ৫ বছর পরের জীবনটা তাঁদের জন্য জাহান্নাম হয়ে গেছে । ঘুরলাম ফিরলাম ,আর খাইলাম টাইপের একটা ছেলে মেয়েকেও আমি কখনো দেখি নাই , প্রাইভেট জব , সরকারী চাকুরী অথবা অন্য ভালো কোন জায়গায় গিয়ে শাইন করতে পেরেছে ।
মেকাপের আস্তর লাগিয়ে যে মেয়েগুলা ক্যাম্পাসে আসতো তাঁদের শেষ পরিণতি ছিল অনার্সের আগেই বিয়ে । অনার্সের পর অনেকেই ঠিক মতো মাস্টার্সটাও করতে পারে নাই ।
যে ছেলেগুলো সারাদিন কবি সাহিত্যিক হয়ে বিভিন্ন জনের উপর ক্রাশ খেতো , ""বান্ধবী ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল "" টাইপের স্লোগান নিয়ে ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখতো তাঁদের খবর নিয়ে দেখুন তো ? একটাকেও ভালো কোন জায়গায় পাবেন না । হয় ফেসবুকে গিটার নিয়ে ছবি দেয় । নতুবা শার্টের বোতাম খুলে একটা রোমান্টিক গানের লাইন ক্যাপশন দিয়ে পিক আপলোড করে ।
এক মেয়ে খুব গর্ব করে বলেছিল তার জুতা আছে ১২ জোড়া । এই ১২ জোড়া জুতা শুধু ক্যাম্পাসে আসার জন্য ইউজ করে সে । বিয়ে বা অন্য কোন অনুষ্ঠানে নতুন জুতা ছাড়া যায় না ।
বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে কলমের হেড থেকে শুরু করে খাতার কাগজ সব কিছু দিয়ে একাই ১৮ সিট দখল করে ফেলা জেনারেশনটা দিন শেষে নিজের একটা সিটের জন্যই লড়ে যায় । আফসোস কেউ তাঁদের জন্য সেই সিটটা ধরে দেয় না ।
একই ক্যাম্পাসে একটা মেয়ে নিজের খরচ জোগায় টিউশনের জোরে । আর অন্য একটা মেয়ে খরচ মেটায় বয় ফ্রেন্ডের মানিব্যাগ থেকে । দুইটা কি এক লেভেলের হইলো ? প্রথমজনের আত্মসম্মানবোধ আছে । পরের জনের আত্মসম্মানবোধ নাই । লেইম পার্সোনালিটি ।
একটা ছেলে নিয়মিত পড়াশুনা করে এভারেজ রেজাল্ট করেছে । অন্যজন গিটার বাজিয়ে সেকেন্ড ক্লাস পেয়ে দর্শন কপচায় । এই দুইজন কি একরকম ? অবশ্যই না । প্রথমটাকে দিয়ে সংসার করা যাবে । পরেরটাকে নিয়ে কবিতা লেখানো যাবে ।
একজন বাহারি লোফার পায়ে বিবিএ ফ্যাকাল্টিতে গিয়ে মেয়েদের ক্রাশ হয়েছে । অন্যজন সেই সুযোগ পায় নাই । গড়পরতা জামাকাপড়েই সুপারহিট । দুইজন কি এক লেভেলের হইলো ? প্রথমজনকে দিয়ে মডেলিং র্যাম্পে হাঁটানো যাবে । পরের জনকে জীবনের মঞ্চে হাটানো যাবে ।
একজন বড় ভাইয়ের রাজনীতি করে বেড়িয়েছে । দোকানে বাকি খেয়ে হুঙ্কার ছেড়েছে । অন্যজন একটা নিপাট সুন্দর জীবন যাপন করেছে । প্রথমজন রাজনৈতিক লবিং করে একটা সেকেন্ড ক্লাস জব পাবে । আর পরের জন নিজের চেষ্টায় সব থেকে সেরা পজিশনটাই পাবে ।
মেকাপটা একটু কমায় দাও ।
আড়ম্বরটা একটু কম করো ।
মেকাপ গলে পড়তে সময় লাগে না । ফেসবুকের ডিপি চেঞ্জ হইতেও টাইম লাগে না । একটু গরম লাগলেই বাহারি রঙের হাতপাখা বের হয় । বাসায় থেকে তিন বেলা সুন্দরভাবে খাওয়া দাওয়া করে রাতের বেলা যারা ডিপ্রেশনের স্ট্যাটাস দেয় তাঁদেরকে চিনে রাখুন ।
দুইদিন পর যখন জিজ্ঞেস করা হবে , কি করেন আপনি ? তখন যেন উত্তরটা বুক ফুলিয়ে দিতে পারেন ।
#collected