গল্প: ♥#পর্দাশীল_বউ♥

লেখক: ♥RK Rasel♥
.
পড়াশুনা শেষ করে এখন জব করছি।ভালো স্যালারি পাই।অফিসের কাজ শেষ করে বাড়িতে যাচ্ছি।কলিং বেল চাপতেই মা দরজা খুলে দিল।ঘরে গিয়ে দেখি মা টেবিলে খাবার রেখেছে সাজিয়ে।
মা:কখন থেকে বসে আছি তোর সাথে একসাথে খাবার খাব বলে।
আমি:তুমি এখনো খাও নি মা?
মা:না একা একা খেতে ভালো লাগে না।তাই তোর জন্য খাবার নিয়ে বসে আছি।মা আমার প্লেটে খাবার বেড়ে দিল৷
মা:কালকে তোর জন্য মেয়ে দেখতে যাব।কালকে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিস।
আমি:মা কি বলছ এসব?আমি এখনই বিয়ে করব না।সবে তো মাত্র জব করছি।আর কয়েকটা বছর যাক না?
মা:কিইই?আরো কয়েক বছর?অসম্ভব আমার বাড়িতে একা থাকতে ভালো লাগে না।সময় কাটে না।তুই সারা দিন অফিসেই থাকিস।তো কালকেই মেয়ে দেখতে যেতে হবে।
আমি:কিন্তু মা?
মা:কোন কিন্তু নয়।কালকে মেয়ে দেখতে যাব কথা ফাইনাল।এখন যা ঘুমিয়ে পড়
আমি:কি আর করা?মার কথা তো মানতেই হবে।তাই রাতে বসকে ফোন দিয়ে ছুটি নিয়ে নিলাম।
{ওও আপনাদের কাছে আমার পরিচয়টাই দেয়া হয় নি।আমার নাম রাসেল(আপনারা সবাই আমায় ভালো করেই চেনেন না চিনলেও বলি আমি RK Rasel)
।আমার বাবা আমার জন্মের আগেই মারা গেছেন।এখন শুধু আমি আর আমার মা বাড়িতে থাকি।আমি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি।আমার অনেক স্বপ্ন পর্দাশীল মেয়ে বিয়ে করব।তাই এখনো কোনো বেগানা নারীর দিকে ভালোভাবে চোখ তুলে তাকাই নি।আর কোনো বেগানা মেয়ের সাথে প্রেম তো দূরে থাক।আমার সব ভালোবাসা তার জন্য জমিয়ে রেখেছি। তার জন্য মানে আমার হবু স্ত্রীর জন্য।এসব কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি।
মা: ( রাসেল এই ওঠ।অনেক বেলা হয়েছে পাত্রী দেখতে যেতে হবে সে কথা মাথায় আছে তোর?ওঠে চালু রেডি হ
তারপর ওঠে ফ্রেস হয়ে মার কাছে গেলাম।
মা:কিরে এখনো রেডি হস নি?
আমি:হচ্ছি তো।
তারপর রেডি হয়ে বাসার গাড়িটা নিয়ে বের হলাম।আমি ড্রাইভিং করছি আর পাশে মা বসে আছে।উদ্দেশ্য পাত্রিদের বাসা৷৷অতপর আমরা পাত্রীদের বাসায় পৌছে গেছি৷পাত্রীদের বাসায় গিয়ে সবাইকে সালাম দিয়ে সোফাতে বসলাম৷কথা বার্তা বলার পর পাত্রীকে আনা হলো৷৷কিন্তু পাত্রীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত ডাকা৷এতে আমি অবাক হই নি৷কারন আমার স্বপ্ন আমি পর্দাশীল মেয়ে বিয়ে করব৷আমার মাও জানে এ কথা৷
পাত্রী:আসসালামু আলাইকুম
আমি:সালাম ফিরিয়ে মনে মনে চিন্তা করতেছি কি সুন্দর কন্ঠ মেয়েটার৷তাকে দেখতে না জানি কত সূন্দর হবে৷আমি চুপ করে বসে আছি৷আমি তো মেয়ের কন্ঠ শূনেই মুগ্ধ হয়ে গেছি৷মনে মনে এসব কথা ভাবছি
এমন সময় পাত্রী আর আমাকে আলাদা কক্ষে পাঠানো হলো৷
আমি:কক্ষে প্রবেশ করে আমি কাশি দিলাম।
আমি:আপনার নাম জানতে পারি??
পাত্রী :হুমমম।আমার নাম মুনিয়া জান্নাত।
আমি:বাহহ সূন্দর নাম তো?
পাত্রী:ধন্যবাদ৷
আমি:তা আপনার মুখটি দেখতে পারি??শুধু তো কথাই বলে যাচ্চি৷
পাত্রী:ওইই কি বল্লেন৷এখন পর্যন্ত আমার মুখ কোন বেগানা পুরুষ দেখে নি৷তো আপনিও দেখতে পারবেন না৷বিয়ের পর বাসর ঘরে ভালো করে দেইখেন৷কিন্তু এখন দেখাতে পারব না৷যদি এই শর্তে বিয়ে করেন তো এই বিয়ে হবে৷না হলে হবে না৷
আমি:ও ও ও আল্লাহ এ তো দেখি পুরাই Dengarus মেয়ে৷(মনে মনে)
জান্নাত:অই কি ভাবছেন মনে মনে??
আমি:কি আর ভাববো৷মুখ না দেখালে তো আর কিছু করার নাই৷একেবারে বাসর ঘরেই দেখবো৷তো এখন আসেন নিচে যাই সবাই অপেক্ষা করতেছে৷
জান্নাত:ঠিক আছে চলেন৷তবে আমি যে আপনাকে মুখ দেখাই নি এটা যেন কেউ জানতে না পারে৷জানলে আপনার খবর আছে বলে দিলাম৷
আমি:ঠিক আছে কাউকে বলব না৷এবার চলেন৷
নিচে গিয়ে আমাদের পছন্দের কথা জানিয়ে দিলাম৷অতঃপর আমাদের বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হলো৷সাতদিন পর আমাদের বিয়ে৷
মিষ্টি মুখ করে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম৷
মা:মেয়ে কেমন দেখলি??
আমি:দেখতে হবে না পছন্দটা কার?আমার মায়ের অবশ্যই পছন্দ হয়েছে৷
(মনে মনে বললাম মেয়ে তো মুখই দেখালো না যেই ডেন্জারাস মেয়ে)
মা:হুমম আমারও মেয়েটাকে অনেক ভালো লেগেছে৷
আমি:হুমম৷

আমার এক বন্ধু আছে মোজাম্মেল৷ওকে ফোন দিয়ে একটা জায়গায় আসতে বললাম৷
আমি:কিরে দোস্ত কেমন আছিস?
মোজাম্মেল:আলহামদুলিল্লাহ দোস্ত ভালো আছি৷তুই কেমন আছিস?
আমি:আলহামদুলিল্লাহ ভালো৷দোস্ত তোর সাথে অনেক দিন পর দেখা হলো৷তোকে এখন আর আগের মতো সময় দিতে পারি না৷চাকরির ব্যস্ততার জন্য৷
মোজাম্মেল:আমাকে তো ভুলেই গেছিস৷
আমি:দুর বন্ধুকে কখনো ভুলা যায়??দোস্ত আজকে মেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম৷
মোজাম্মেল:কি বলিস?তা মেয়ে পছন্দ হয়েছে?
আমি:হুমম সাত দিন পর আমাদের বিয়ে৷তাই তোকে জানাতে আসলাম৷বিয়ের এক দিন আগেই চলে যাবি আমাদের বাড়ি৷৷
মোজাম্মেল:আমার একমাত্র বন্ধূর বিয়ে আর আমি যাব না?অবশ্যই যাব৷

অতঃপর দেখতে দেখতে সাত দিন চলে গেল৷

এখন বিয়ের পিড়িতে বসে আছি৷
আমার পাশে জান্নাতকে বসানো হলো
এ কি মেয়েতো বিয়েরর দিন ও বোরকা পড়ে আছে৷
যাক বউ কিন্তু আমার অনেক পর্দাশীল৷
অতঃপর আমাদের বিয়েটা হয়ে গেল৷
জান্নাত অনেক কাদতেছে ওর বাবা মাকে জড়িয়ে ধরে৷
আমি ওকে সান্তনা দিয়ে গাড়িতে নিয়ে গেলাম৷
অতপর আমরা বাড়িতে চলে আসলাম৷
ওকে বাসর ঘরে নিয়ে গেল সকলে মিলে৷
আমার বন্ধূ মোজাম্মেল আমার বউয়ের মুখ দেখতে চাচ্ছে৷
কিন্তূ কি করা আমার বউ অন্য কোন বেগানা পুরুষকে মুখ দেখাবে না৷তো কী আর করা আমার দোস্ত আমার বউকে আর দেখতে পারল না৷
অতপর আমাকে বাসর ঘরে পাঠানো হলো৷গিয়ে দরজাটা আটকিয়ে ভিতরে গেলাম৷
আমি:এ কি আমি এটা কি দেখতেছি?এটা মানূষ না আকাশ থেকে নামা হূর পরী৷আমি তো মুগ্ধ হয়ে চেয়ে আছি৷
জান্নাত:এই যে মিষ্টার কি দেখেন এমন করে?আমার বুঝি লজ্জা করে না৷
আমি:ওর কথায় ধ্যান ভাংলো৷তুমি দেখতে এতো সূন্দর??
জান্নাত:হইছে আর পাম দিতে হবে না৷আমি দেখতে খুব পচা৷
আমি:তোমার চেয়ে সূন্দরি মেয়ে পৃথিবীতে আছে কি না সন্দেহ৷যেন আকাশের চাঁদ আমার ঘরে৷
জান্নাত:হইছে আর পাম দিতে হবে না৷আসেন আমাদের জন্য দুই রাকত নফল নামাজ আদায় করি৷
অতপর অযূ করে নামাযে দাড়িয়ে গেলাম৷নামায শেষে আল্লাহর কাছে আমাদের সূখের জন্য দুয়া করলাম৷
অতপর আমরা মোনাজাত শেষ করে বিছানায় বসলাম৷
আমি:আচ্ছা আমাকে তোমার কেমন লাগছে?
জান্নাত:আপনি এখন আমার স্বামী৷আপনি যেমনই হোন আপনিই আমার সব৷কারন একজন মেয়ের কাছে তার স্বামীই সব৷আর আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগছে৷
আমি:হুমমম৷অনেক ভাগ্য করে তোমার মতো বউ পেয়েছি৷
অতপর আমরা সুখের সাগরে ভাসতে লাগলাম(এই যে পাঠকগন এত কিছু পড়তে হয় না)
অতপর সকালে আমার বউয়ের ডাকে ঘুম ভাংলো৷
জান্নাত:এই যে এখন উঠেন৷উঠে নামাজে যান৷
আমি:বউয়ের দিকে চেয়ে তো আমি পুরাই ক্রাসিত৷তাই মনে দুস্টূমি চাপলো৷বউকে ধরলাম জড়িয়ে৷
জান্নাত: এই এই কি করতেছ৷সারারাত অনেক দুস্টুমি করছো৷এখন গোসল করে তারাতারী নামাজে যাও৷দেরি হয়ে যাচ্ছে৷
আমি:প্লিজ একটা ইয়ে দেই আগে৷
জান্নাত:দরজা খোলা কেউ দেখে ফেলবে৷
আমি:আমার বউ আমি যা খুশি করব৷তাতে কার কি৷বলেই একটা ইয়ে দিলাম ইয়ে মানে পাপ্পি৷
অতপর গোসল করে নামাজে গেলাম৷
নামাজ শেষ করে বাড়ি এসে দেখি মাকে রান্নার কাজে হেল্প করছে জান্নাত৷
আমি:জান্নাততত এক গ্লাস পানি দিয়ে যাও তো৷
জান্নাত:আসতেছি গো৷
আসতেই পাপ্পি দেওয়ার জন্য জন্য এগিয়ে যাচ্ছি আর ও পিছিয়ে যাচ্ছে৷দেয়ালে ওর পিঠটা ঠেকে গেল আমি কাছে যেতেই চোখটা বন্ধ করে ফেললো ও৷
মা:জান্নাততত এই দিকে আসো তো মা৷
আমি::ওফফ ডাক দেওয়ার আর সময় পেল না৷
জান্নাত পানির গ্লাসটা রেখেই মুখ ভেংচিয়ে চলে গেল৷৷
(সমাপ্ত)


৷ভুল ত্রুতি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আর গল্পটা কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন৷

image