Back To Blogs | My Blogs | Create Blogs

উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য পানির দাম বাড়াবে ওয়াসা

রাজধানীতে আরেক দফা পানির দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে ঢাকা ওয়াসা। তবে সব এলাকায় দাম বাড়বে না। যেসব এলাকায় উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি বসবাস করেন সেসব এলাকায় পানির দাম বাড়ানোর আভাস দিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান।

 

শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ঢাকা ওয়াসার প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাকসিম এ খান বলেন, ‘পানির যা উৎপাদন খরচ, তার চেয়ে অনেক কম দামে পানি দেওয়া হয়। বাকিটা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। দুঃখজনক হলো, এই ভর্তুকি উচ্চবিত্তরাও পাচ্ছেন, যদিও তাঁদের তা পাওয়া উচিত না। আমরা এখন চিন্তা করছি, এলাকাভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণ করব। নিম্ন আয়ের মানুষের ব্যবহারের পানির দাম বাড়বে না, তবে কমানো হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু অন্যান্য জায়গায় পানির দাম বাড়বে।’

 

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সবাই আর এক দামে পানি পাবে না। উচ্চ ও মধ্যবিত্ত এলাকার মানুষকে পানির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি দিতে হবে, কম টাকায় পানি পাবেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

 

২০১০ সালে ঢাকা শহরের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ বৈধ পানির সংযোগের বাইরে ছিল। এখন ঢাকার প্রায় শতভাগ মানুষ বৈধভাবে পানি পায় বলেও জানান তাকসিম এ খান।

 

সম্মাননা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী উত্তম কুমার রায়। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের (পানি সরবরাহ অনুবিভাগ) অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ডিএসকের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মাহমুদুর রহমান ও নিম্ন আয়ের মানুষের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সরবরাহ করা পানির দাম কমাতে ঢাকা ওয়াসা প্রতি আহ্বান জানান।

 

নিম্ন আয়ের এলাকার ‘আদর্শ গ্রাহক’দের সম্মাননা জানাতে ঢাকা ওয়াসার বুড়িগঙ্গা হলে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মূলত ২০১১ সাল থেকে ঢাকার বস্তি এলাকায় বৃহৎ পরিসরে বৈধ পানির সংযোগ দেওয়া শুরু হয়। এখন শহরের বিভিন্ন বস্তিতে ৭ হাজার ৪৮৩টি বৈধ সংযোগ রয়েছে।

 

নিম্ন আয়ের মানুষদের বিল পরিশোধের প্রবণতা সম্পর্কে তাকসিম এ খান বলেন, টাকার অভাব নেই—এমন গ্রাহকদের কাছে ৭০ লাখ টাকা পানির বিল বকেয়া আছে, অথচ নিম্ন আয়ের মানুষদের বকেয়া নেই। যাঁরা সক্ষম, তারা বিল দেন না। যাঁরা সক্ষম নন, তাঁরা সঠিকভাবে পানির ব্যবহার করেন এবং নিয়মিত বিল দেন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ঢাকায় এক হাজার লিটার পানি ১৪ টাকায়, চট্টগ্রামে ১২ টাকায় সরবরাহ করা হয়। ভারতের দিল্লিতে (মূল শহরে) এক হাজার লিটার পানির দাম নেওয়া হয় ৪৩ রুপি, তবে শহরতলিতে পানির দাম কম। কারণ, শহরতলিতে নিম্ন আয়ের মানুষ বাস করে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ মানুষ নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের আওতায় আসবে বলেও ঘোষণা দেন হেলালুদ্দীন আহমদ। এ ছাড়া নিয়মিত পানির বিল পরিশোধ করায় নিম্ন আয়ের মানুষদের তিনি ধন্যবাদ দেন। উচ্চবিত্তরা এ থেকে উৎসাহিত হতে পারেন বলেও তিনি মত দেন।

 

অনুষ্ঠানে নিম্ন আয়ের এলাকায় (বিশেষ করে বস্তিতে) ৭ হাজার ৪৮৩ জন বৈধ গ্রাহকের মধ্যে ২৫ জন গ্রাহককে সম্মাননা দেওয়া হয়। ঢাকা ওয়াসা, ‘দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে)’ এবং ওয়াটারএইড বাংলাদেশ যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল।

 

নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বৈধভাবে পানি সরবরাহ সম্পর্কে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, ‘নয়াদিল্লিতে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ মানুষ ‘ইনফরমাল সেক্টরে’ থাকে। সেখানে পানির ব্যবস্থাপনার বিষয়টি ব্যবস্থাপকদের হাতে নেই। সেটি মাস্তানদের হাতে। একসময় আমাদের কড়াইল বস্তিতেও মাস্তানদের মাধ্যমে পানি দেওয়া হতো, আমরা সেটিকে উচ্ছেদ করেছি।’ আগামী বছরের মধ্যে ঢাকার শতভাগ বস্তি বৈধ সংযোগের আওতায় আসবে।


Akash Ahmed  

124 Blog posts

Comments
Scarlett Angel 40 w

?