কঙ্গনার অভিনন্দনেও মধু আর বিষের মিশেল

Comments · 1124 Views

কঙ্গনা রনৌত বলে কথা! তাঁর অভিনন্দনবার্তায় মিষ্টির সঙ্গে সঙ্গে অপর পক্ষের জন্য তেতো থাকবে না, তা কি হয়? বলিউডের সব সিনেমাকে পেছনে ফেলে ৯৩তম অস্কারে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে মালয়ালম ছবি ‘জাল্লিকাট্টু’। আঞ্চলিক এই ছবিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে অভিনন্দনের ফুল ছোড়াছুড়ি। কিন্তু কঙ্গনার অভিনন্দন ছিল একটু ভিন্ন কায়দার। তাঁর কথায় ছিল মধু আর বিষের মিশেল।
বলিউড, রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্ম, খেলা বা কারও ব্যক্তিগত জীবন—সে যা-ই হোক না কেন, কঙ্গনার একটা মন্তব্য করা চাই-ই চাই। তাই অস্কারে ভারতীয় ছবির প্রতিনিধিত্ব নিয়েও মন্তব্য করলেন এই অভিনেত্রী। অন্য অনেকের মতো কঙ্গনাও ছবিটিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

কঙ্গনা
 
কঙ্গনা
 
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সেই সঙ্গে ‘বলিউড মাফিয়া’দের দিকে আঙুল তুলতেও ভোলেননি। কঙ্গনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘বলিউডের মাফিয়াদের এমনিতেই সমালোচনা করা হয় না। এবার হাতেনাতে তার সুফল পাওয়া গেল। ভারতীয় সিনেমা কেবল চারটি পরিবার (খান, কাপুর, ভাট, ধাওয়ান পরিবার এবং করণ জোহর ও রণবীর-দীপিকা দম্পতিদের নির্দেশ করে) নয়। তারা নিজেদের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল।

বিজ্ঞাপন
 

জুরিবোর্ড সুবিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন। “জাল্লিকাট্টু” সিনেমার পুরো দলকে আমার টুপি-খোলা অভিবাদন।’

‘জাল্লিকাট্টু’ ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
 
‘জাল্লিকাট্টু’ ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

এর আগেও বলিউডের ছবিকে সস্তা ও নিম্নমানের আখ্যা দিয়ে আঞ্চলিক ছবির পাশে দাঁড়িয়েছেন কঙ্গনা। রণবীর সিং-আলিয়া ভাট অভিনীত ‘গাল্লি বয়’ ছবিটিকে গত বছর অস্কারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও আপত্তি ছিল তাঁর। তিনি বলেছিলেন, ‘এটি একটি সাধারণ, মধ্যম মানের, ওভাররেটেড ছবি।’ বলিউডের ছবিকে ডাব করে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু আঞ্চলিক ছবিগুলোকে কেন হিন্দি ভাষায় ডাব করে সারা ভারতে দেখানো হয় না। এটা নিয়েও কতিপয় বলিউড মাফিয়ার দিকে তুলেছিলেন অভিযোগের আঙুল।

কঙ্গনা রনৌত
 
কঙ্গনা রনৌত
 
ইনস্টাগ্রাম

প্রসঙ্গত, ৯৩তম অস্কারে সেরা বিদেশি ভাষার ছবির জন্য এ বছর ভারত থেকে অফিশিয়ালি অস্কারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে মালয়ালম ভাষার ‘জাল্লিকাট্টু’ ছবিটিকে।

নারী পাইলটের ওপর বায়োপিক ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’, অ্যাসিডে আক্রান্ত নারীর জীবনের ওপর নির্মিত ‘ছপাক’, ম্যাথ জিনিয়াসের বায়োপিক ‘শকুন্তলা দেবী’, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অভিনীত আরেকটি বায়োপিক ‘দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক’, বৃদ্ধ নারীর জীবনের ভিন্ন গল্প ‘গুলাবো সিতাবো’, ‘চেকপোস্ট’, ‘সিরিয়াস মেন’, ‘ভোসলে’, ‘দ্য ডিসাইপল’-এর মতো প্রশংসিত ছবিকে পেছনে ফেলে অস্কার মনোনয়নের দৌড়ে টিকে থাকল ‘জাল্লিকাট্টু’। ষাঁড়ের লড়াইয়ের ওপর লেখক এস হরিশের লেখা ছোট গল্প ‘মাওইস্ট’।

‘শকুন্তলা’ ও ‘গুলাবো সিতাবো’ ছবির পোস্টার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
 
‘শকুন্তলা’ ও ‘গুলাবো সিতাবো’ ছবির পোস্টার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

এর ওপর ভিত্তি করেই ছবিটি পরিচালনা করেছেন লিজো জোস পেল্লিসারি। অ্যান্টনি ভার্গিজ, চেম্বন বিনোদ জোস, সবুমন আবদুসামাদ এবং শান্তি বলচন্দ্রন ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া জুরিবোর্ডের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাল্লিকাট্টু’ আঞ্চলিক ভাষার ছবি, ছোট্ট গ্রামের গল্প।

 
 
কঙ্গনা রনৌত
 
কঙ্গনা রনৌত
 
ইনস্টাগ্রাম

কিন্তু গল্পটা যেকোনো দেশের, যেকোনো ভাষার, যেকোনো বর্ণের, ধর্মের। সবচেয়ে বড় কথা, যেকোনো সময়ের মানুষের কাছে সমান প্রাসঙ্গিক, একই অর্থ নিয়ে উপস্থিত। বার্তাটা অত্যন্ত আদিম আর মৌলিক। এই সিনেমার এই আন্তর্জাতিকতা আর তা উপস্থাপনায় পরিচালকের মুনশিয়ানা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কেননা, এটা মানুষের আত্মবিধ্বংসী অধঃপতনের গল্প।

২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ‘জাল্লিকাট্টু’ ছবিটি টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়।
 
২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ‘জাল্লিকাট্টু’ ছবিটি টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়। 
 
সংগৃহীত


২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ‘জাল্লিকাট্টু’ ছবিটি টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়। ২৪তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয় ছবিটি। ৫০তম ভারতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা পরিচালকের পুরস্কার পান এই ছবির পরিচালক। ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবরে ভারতের কেরালায় মুক্তি পায় ছবিটি।

কঙ্গনা রনৌত
 
কঙ্গনা রনৌত
 
ইনস্টাগ্রাম
Comments