Back To Blogs | My Blogs | Create Blogs

লাভ হয়েছে তারকাদেরই বেশি

ক্রিকেটারদের আন্দোলনের এক বছর আজ। ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ১১ দফা দাবি নিয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা। আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল, ম্যাচ ফি, যাতায়াত, আবাসনসহ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো। সে দাবি আংশিক পূরণ হয়েছে। তবে প্রথম শ্রেণির চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের বেতন বাড়েনি। বরং কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের বেতন ও ম্যাচ ফি বেড়েছে মোটা অংঙ্কে।

এক বছর আগে ১১ দফা দাবি (পরে আরও দুটি যোগ হয়) আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট ডেকেছিলেন দেশের ক্রিকেটাররা। সেদিন সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে মিরপুর একাডেমি মাঠে প্রায় ৬০ জন ক্রিকেটারের উপস্থিতিতে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। তিন দিন পর বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নয়টি দাবি পূরণের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। এক বছর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওই আন্দোলনের ফলে লাভ হয়েছে মূলত তারকা ক্রিকেটারদেরই। অথচ সেদিন আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল ক্রিকেটারদের স্বার্থ রক্ষার জন্য। কিন্তু তাদের ভাগ্যের তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। করোনার এই কঠিন সময়ে সাধারণ ক্রিকেটারদের অধিকাংশকেই টিকে থাকার সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল, ম্যাচ ফি, যাতায়াত, আবাসনসহ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো। সে দাবি আংশিক পূরণ হয়েছে। আরেকটা দাবি ছিল, প্রথম শ্রেণির চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাড়ানো। কিন্তু এ দাবিটি এখনও পূরণ হয়নি। বরং কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের বেতন বেড়েছে। ফলে এখানে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাই লাভবান হয়েছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা বঞ্চিতই রয়ে গেছেন। আরেকটি দাবি ছিল প্রিমিয়ার লিগের দলবদল আগের পদ্ধতিতে ফিরিয়ে নেওয়া। যেখানে পারিশ্রমিকের বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কোনো মানদণ্ড বেঁধে দিতে পারবে না। ক্রিকেটাররা নিজের ইচ্ছামতো ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবেন। এই দাবি পূরণ হওয়াতে লাভ হয়েছে কেবল তারকা ক্রিকেটারদেরই। কারণ তারকা ক্রিকেটাররাই বিশাল অর্থের বিনিময়ে ক্লাবগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেন। এই পদ্ধতিতে সাধারণ ক্রিকেটারদের আদতে তেমন কোনো লাভই হয়নি। বরং পারিশ্রমিকের ব্যাপারে বিসিবির কাছে দায়বদ্ধতা না থাকার অধিকাংশ সাধারণ ক্রিকেটার ক্লাবগুলোর কাছ থেকে টাকাই পান না। মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার তখনই এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাদের কথা তারকাদের কাছে ধোপে টেকেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক ক্রিকেটার মন্তব্য করেন, প্লেয়ার্স বাই চয়েজ বাতিল হওয়ায় বড় জোর চার-পাঁচজন ক্রিকেটার লাভবান হয়েছেন। তাদের পারিশ্রমিক ৩০-৩৫ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ লাখ হয়েছে। কিন্তু বাকি সব ক্রিকেটার পারিশ্রমিকের নিশ্চয়তা হারিয়েছেন।

ক্রিকেটারদের দাবি-দাওয়া আদায়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হলো ক্রিকেটার্স ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সংগঠনের নেতাদের পদত্যাগ চাওয়া হয়েছিল। ক্রিকেটারদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোয়াবের বর্তমান নেতৃত্ব একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন কেবল জহুরুল ইসলাম অমি। কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল জানান, ক্রিকেটারদের নেতৃত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তারা। তখন ক্রিকেটাররা তিন দিনের সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই তিন দিন এখনও শেষ হয়নি। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সারা বছরই মিরপুরে বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধায় অনুশীলন করেন। সে তুলনায় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা সুবিধা পান না বললেই চলে। তাই সারাদেশে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবিও ছিল। কিন্তু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের অনুশীলন-কোচিং সুযোগ-সুবিধা তেমন একটা বাড়েনি। এখানেও বঞ্চিতই থাকলেন তারা। যদিও বিসিবি থেকে বলা হচ্ছে, সারাদেশে অবকাঠামো তৈরি সময়ের ব্যাপার, তারা চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার দাবিটিও গুটিকয়েক তারকার স্বার্থেই।


md Nayan  

54 Blog Mesajları

Yorumlar