করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকে বিশ্বব্যাপী সবাই ঘরবন্দী। বন্ধ স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। হাজার হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক লকডাউন শুরুর পর শিক্ষা ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ অনিশ্চয়তার মধ্যেই ছিলেন। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করে।
বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলো যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে যেন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও শিক্ষাবর্ষের ক্ষতি না হয়। ঢাকার মালিবাগে অবস্থিত কানাডিয়ান ট্রিলিনিয়াম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলও (সিটিআইএস) এর ব্যতিক্রম নয়। কয়েক মাস ধরেই সিটিআইএস অনলাইনে জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এর সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস করাচ্ছে।
সিটিআইএসের ভাষ্য, তারা সব সময় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে প্রচেষ্টা থাকে। তাই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা প্রদানের জন্য তারা বেশ সফলতার সঙ্গেই অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করে মার্চ মাসে লকডাউন শুরুর পর থেকেই।
সিটিআইএসের প্রিন্সিপাল রোজা মারিয়া গঞ্জালেস হেরাঞ্জ বলেন, শিক্ষার্থীরা স্কুলে শারীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও অনলাইনে তাদের শিক্ষা ও ক্লাসে কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না; বরং অনলাইনে ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কোভিডপরবর্তী বিশ্বের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করছে।
অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সুবিধা সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রিন্সিপাল রোজা মারিয়া গঞ্জালেস হেরাঞ্জ বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের ঘরে বসেই নিরাপদে ক্লাস করতে পারছে। অভিভাবকেরা জানেন, তাঁদের সন্তান বাইরে অন্য শিক্ষার্থী বা শিক্ষকদের সংস্পর্শে আসছে না এবং বাড়িতেই নিরাপদে থাকছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা এখন থেকেই শিখতে পারছে কীভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হয় বা ঘরে বসেই অফিসের কাজ করা যায়, যা ভবিষ্যতে তাদের প্রয়োজন হবে।
সিটিআইএসের শিক্ষাপদ্ধতি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন ছাত্রছাত্রীরা একটা সুন্দর পাঠ্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিখতে পারে। এবং ভবিষ্যতে বিশ্বের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায়।
সিটিআইএসের শিক্ষাপদ্ধতি সম্পর্কে প্রিন্সিপাল রোজা মারিয়া আরও বিশদভাবে বলেন, অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা জুম ও গুগল ক্লাসরুম প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছি। শিক্ষার্থীরা ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমেই শিক্ষক ও তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাস করছে। ঘরে বসে নিজে শিখি পদ্ধতিতে সময় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিজের কাজ সম্পাদন করতে শিখছে। প্রয়োজন হলে অনলাইনে শিক্ষকদের প্রশ্ন করতে পারছে। এ ছাড়া অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীরা আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে পড়াশোনা করছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সিটিআইএস দিন দিন তাদের অনলাইন শিক্ষাক্রমকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায় এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য যোগ্য ও উপযুক্ত করে তোলা যায়, সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। সিটিআইএসের অনলাইন ক্লাস প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত চলছে। এ ছাড়া ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন www. ctis. edu. bdএ। করোনাকালে দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী যেখানে এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে, সেখানে সিটিআইএসের এই অনলাইন ক্লাসের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।