রুপালি গিটার ফেলে বহুদূরে চলে গেলেন আইয়ুব বাচ্চু। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার চিরতরুণ সেই ব্যান্ড তারকার কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে গেল চিরকালের জন্য। গিটার হাতে আর মঞ্চ মাতাবেন না তিনি। আজ শুক্রবার ১৮ অক্টোবর তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। কৈশোরজীবন থেকে মঞ্চে নিজেকে উজাড় করে গিটার বাজাতেন, গাইতেন।
প্রথম ব্যান্ড ফিলিংস (১৯৭৮)। এরপর যোগ দেন সোলসে। ১৯৮০ থেকে পরবর্তী এক দশক এই ব্যান্ডে যুক্ত ছিলেন। সোলস ছাড়ার পর ১৯৯১ সালে নিজে গঠন করেন নতুন ব্যান্ড এলআরবি। প্রথমে এলআরবির পূর্ণ অর্থ ছিল লিটল রিভার ব্যান্ড। পরে এই নাম বদলে করা হয় লাভ রানস ব্লাইন্ড।
সংগীতজীবন শুরু ১৯৭৭ সালে। হারানো বিকেলে গল্প আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া প্রথম বাংলা গান। গানটি লিখেছেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। এলআরবির প্রথম অ্যালবামের একদিন ঘুম ভাঙা শহরে গানটিও শহীদ মাহমুদ জঙ্গীর লেখা।
সব ছাপিয়ে আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন গিটারের জাদুকর। গিটারের টুংটাং শব্দই যেন তাঁর সমস্ত দেহমনসত্তাজুড়ে সারাক্ষণ বিরাজমান ছিল।
সর্বশেষ রংপুরে গান করেন আইয়ুব বাচ্চু। ছবি: গান বাংলার সৌজন্যে।
ছেলে আহনাফ তাজোয়ার বাবার কাছে গিটারের দীক্ষা নিয়েছে।
আইয়ুব বাচ্চুর এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব এবং মেয়ে মেয়ে ফাইরুজ সাফরা।
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে মাত্র ছাপ্পান্ন বছরের সময় হাতে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বাবা চেয়েছিলেন ছেলের এমন একটা নাম হবে, যা অন্য কারও নেই। যেমন আইয়ুব আলী, আইয়ুব হোসেনএমন তো হয়-ই। দুটি নাম থেকে আলাদা অংশ নিয়ে রাখা হলো, আইয়ুব বাচ্চু। সেই থেকে তিনি হলেন ওয়ান অ্যান্ড অনলি।
তাঁর অসংখ্য গানের ভেতর কোন ১০টা সেরা, সেটাও বাছাই করা কঠিন কাজ। কী বাদন, কী গান! সুর, সংগীত পরিচালনা-নানা বিষয়ে তিনি ছিলেন পারদর্শী। কোনো কোনো জায়গায় তিনি ছিলেন অনন্য।
মাত্র ৫৬টি বছর। কিন্তু এ সময়টাকে ষোলো আনাই কাজে লাগিয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু।
আইয়ুব বাচ্চু মূলত রক ঘরানার গান করতেন। শ্রোতাদের কাছে ইংরেজি গান, হার্ড রক, ব্লুজ, অলটারনেটিভ রক নিয়ে গেছেন শুরু থেকে। ব্যান্ডসংগীতের প্রতি তারুণ্যের জোয়ারের ধারা ধরে রেখেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। বিভিন্ন সময়ে সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর অনুপ্রেরণা জিমি হেন্ডরিক্স, জো স্যাটরিনি, স্টিভ মুরএমন অনেকেই।