Back To Blogs | My Blogs | Create Blogs

কোয়ারেন্টিন শেষে ২১৯ প্রবাসীকে পাঠানো হলো কারাগারে

কুয়েত, কাতার ও বাহরাইন থেকে আসা ২১৯ জনকে পুলিশি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁরা উত্তরা দিয়াবাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য সলাপরামর্শ করছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ রোববার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত দেশে ফেরত এই প্রবাসীদের কারাগারে পাঠান। আদালতকে বলা হয়, পুলিশ গোপন সূত্রে ওই সলাপরামর্শের খবর জানতে পেরেছে।

তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল মুত্তাক্বীন প্রথম আলোকে বলেন, এই ২১৯ জন কুয়েত, কাতার ও বাহরাইনে বিভিন্ন অপরাধে সাজা খাটছিলেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তাঁদের মুক্তি দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল শনিবার তাঁদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হয়েছে। এখন তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে আদালত সূত্রে জানা গেছে, তুরাগ থানার পরিদর্শক শফিউল্লাহ তাঁর আবেদনে বলেছেন, এই ২১৯ জন কুয়েত, কাতার ও বাহরাইনে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। বিভিন্ন মেয়াদে তাঁদের সাজাও হয়েছিল। দেশে আসার পর তাঁদের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। এ সময় বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে তাঁরা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য সলাপরামর্শ করছিলেন বলে গোপন সূত্র খবর পাওয়া যায়। তাঁদের ছেড়ে দিলে দেশে চুরি-ডাকাতি বাড়তে পারে বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানানো হয়।

জানা গেছে, দেশে ফিরে আসা ২১৯ জনের মধ্যে কুয়েত থেকে এসেছেন ১৪১ জন, কাতার ও বাহরাইন থেকে এসেছেন ৩৯ জন করে। তাঁদের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আটক দেখানো হয়েছে। এই ধারায় গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়াই নয়টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে ৫৪ ধারায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ডিবি হেফাজতে তাঁর মৃত্যুর পর বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে ১১ দফা সুপারিশ করে। সুপারিশ মানা না হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)সহ বেশ কয়েকজন বরেণ্য ব্যক্তি।

ওই রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল বিচারপতি মো. হামিদুল হক ও বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের জন্য সাত দফা সুপারিশ করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলেও আগের রায়ই বহাল থাকে।

তারপরও ৫৪ ধারায় হয়রানিমূলক গ্রেপ্তার থেমে নেই বলে মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ রয়েছে।


Akash Ahmed  

124 Blog posts

Comments